যুক্তরাষ্ট্রের একটি শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় এক গবেষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হামাসের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে। তার নির্বাসিত হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। নিয়োগকর্তা ও মার্কিন কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।
ওয়াশিংটন ডিসির জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্টডক্টরাল ফেলো বদর খান সুরির গ্রেপ্তারের ঘটনা এমন এক সময় ঘটল, যখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণের দুই মাস পর বৈজ্ঞানিক গবেষণার স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এর আগে বুধবার এক ফরাসি মহাকাশ বিজ্ঞানীকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা দেওয়ায় ফ্রান্সের সরকার নিন্দা জানিয়েছে। ওই বিজ্ঞানী হিউস্টনে একটি সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। কর্মকর্তারা তার স্মার্টফোন তল্লাশি করে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির বিরুদ্ধে তথাকথিত ‘বিদ্বেষপূর্ণ’ বার্তা পান।
এরপর তাকে ফেরত পাঠানো হয়।
জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ড. খান সুরি একজন ভারতীয় নাগরিক, যিনি ইরাক ও আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠা বিষয়ে তার ডক্টরাল গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার জন্য যথাযথভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেয়েছিলেন। আমরা তার কোনো বেআইনি কর্মকাণ্ডের বিষয়ে অবগত নই এবং তার আটকের কোনো কারণও পাইনি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, সুরি জর্জটাউনের আলওয়ালিদ বিন তালাল মুসলিম-খ্রিস্টান বোঝাপড়া কেন্দ্রের একজন ফেলো।
এ বিষয়ে প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করা পলিটিকোর তথ্য অনুযায়ী, ভার্জিনিয়ার আর্লিংটনে সোমবার তার বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার আইনজীবী পলিটিকোকে জানিয়েছেন, তিনি সুরির মুক্তি দাবি করেছেন, তবে এ বিষয়ে জানতে এএফপির অনুরোধের তাৎক্ষণিক কোনো জবাব দেননি।
মার্কিন স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা বিভাগের (ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি) মুখপাত্র ট্রিসিয়া ম্যাকলফলিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে বলেছেন, ‘সুরি জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বিদেশি শিক্ষার্থী, যিনি হামাসের প্রচারণা চালাচ্ছিলেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইহুদিবিদ্বেষী মতামত ছড়াচ্ছিলেন।’
তিনি আরো অভিযোগ করেন, সুরির ‘একজন পরিচিত বা সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, যিনি হামাসের একজন জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা।’
তিনি জানান, পররাষ্ট্র দপ্তর মার্কিন অভিবাসন আইনের একটি ধারা অনুযায়ী সুরিকে নির্বাসিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, কোনো ভিসাধারীর উপস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির জন্য হুমকি হয়ে উঠলে তাকে নির্বাসিত করা যেতে পারে।
উল্লেখ্য, হামাস যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত।
জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, ‘আমাদের সম্প্রদায়ের সদস্যদের মুক্ত ও উন্মুক্ত অনুসন্ধান, আলোচনার অধিকার রয়েছে, এমনকি যদি সেই ভাবনাগুলো কঠিন, বিতর্কিত বা আপত্তিকর হয় তাও।’
সুরির আইনজীবীর দাখিল করা আবেদনের বরাত দিয়ে পলিটিকো জানিয়েছে, সুরির স্ত্রী একজন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক। এই দম্পতি বিশ্বাস করেন, তাদের লক্ষ্যবস্তু করার কারণ, সরকার সন্দেহ করে, তারা ইসরায়েল সম্পর্কে মার্কিন নীতির বিরোধিতা করেন।