ড. ইউনূসকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সম্পর্ক জোরদারের বার্তা দিলেন ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ড. ইউনূসকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সম্পর্ক জোরদারের বার্তা দিলেন ট্রাম্প

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের জনগণ ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করার বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। 

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্টের শুভেচ্ছা বার্তাটি প্রকাশ করা হয়েছে। 

শুভেচ্ছা বার্তায় ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আমেরিকান জনগণের পক্ষ থেকে, আমি আপনাকে এবং বাংলাদেশের জনগণকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এই পরিবর্তনের সময় বাংলাদেশের জনগণের জন্য গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং বর্ধিত নিরাপত্তার জন্য সক্ষমতা তৈরির একটি সুযোগ এনে দিয়েছে।

 

ট্রাম্প বলেছেন, আসন্ন এই গুরুত্বপূর্ণ বছরে আমাদের অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উন্মুখ। আমি আত্মবিশ্বাসী যে আমরা আমাদের সম্পর্ক জোরদার করার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে পারব এবং ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলে আঞ্চলিক নিরাপত্তা উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করতে পারব। স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আপনার এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন।  
 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আজ খুশির ঈদ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আজ খুশির ঈদ

এক মাস রোজার পর আনন্দের বারতা নিয়ে বাংলাদেশে আবার এল খুশির ঈদ। মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় এই উৎসব আজ সোমবার উদযাপন হচ্ছে সারা দেশে। দীর্ঘ ছুটিতে গ্রামে প্রিয়জনের কাছে পৌঁছেও গেছেন মানুষ। নগরী ও শহরে যারা রয়ে গেছেন তারাও দীর্ঘ অবকাশে পরিবার, প্রতিবেশী ও বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ আয়োজনের ব্যবস্থা করে রেখেছেন।

আরো পড়ুন
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঈদের প্রধান জামাত ষাট গম্বুজ মসজিদে

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঈদের প্রধান জামাত ষাট গম্বুজ মসজিদে

 

আগের রোজার ঈদে ছুটি ছিল ছয় দিনের, সঙ্গে যোগ হয়েছিল বাংলা নববর্ষ উদযাপনের উপলক্ষ। এবার অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাহী আদেশে ৩ এপ্রিল সরকারি ছুটি ঘোষণায় অন্তত ৯ দিনের ছুটি পেয়েছেন চাকরিজীবীরা। আবার ২৬ মার্চের বন্ধের পর যারা বৃহস্পতিবার ছুটি নিতে পেরেছেন তারা পেয়েছেন আরো দুদিন বেশি।

এ লম্বা ছুটি আর মহাসড়কগুলোর বাকি থাকা নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার ফলে এবার স্বস্তি আর নির্বিঘ্নে গ্রামে ফিরতে পেরেছেন ঘরমুখো লাখো মানুষ।

শেষ সময়েও রাজধানী ছেড়েছেন অনেকে; ফাঁকা হয়ে গেছে সদাব্যস্ত ঢাকার সড়ক।

আরো পড়ুন
যেভাবে ইতিহাস হলো শোলাকিয়া

যেভাবে ইতিহাস হলো শোলাকিয়া

 

ইসলামের ধর্মীয় বিধান অনুসরণ করা হয় সাধারণত হিজরি বর্ষপঞ্জির চান্দ্র মাসের হিসাবে। সেই মোতাবেক এবার রমজান মাসের সিয়াম সাধনা শুরু হয়েছিল খ্রিষ্টীয় দিনপঞ্জির ২ মার্চ।

২৯ রমজান রবিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠকে বসে।

বাংলাদেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়। এরপর সোমবার ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

জাতীয় ঈদগাহে নামাজ আদায় করলেন প্রধান উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
জাতীয় ঈদগাহে নামাজ আদায় করলেন প্রধান উপদেষ্টা

রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাতে নামাজ আদায় করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

সোমবার (৩১ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত জামাতে ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক। ক্বারী হিসেবে ছিলেন বায়তুল মোকাররমের মুয়াজ্জিন মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান।

প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও নামাজ আদায় করেন প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ হাজারো মুসল্লি।

দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ শেষে সমগ্র মুসলিম উম্মাহসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

এদিকে, জাতীয় ঈদগাহ ছাড়াও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মোট পাঁচটি জামাত আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, বায়তুল মোকাররমে ঈদের জামাতের সূচি সকাল ৭টা, ৮টা, ৯টা, ১০টা এবং ১০টা ৪৫ মিনিট।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ইতিহাসের পাতায় জাতীয় ঈদগাহ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ইতিহাসের পাতায় জাতীয় ঈদগাহ

আজ দেশের মুসলিম উম্মাহর জন্য আনন্দের দিন। সকালে নামাজ দিয়ে শুরু হয় ঈদের দিনের 'আনুষ্ঠানিকতা'। দেশের প্রধান ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় ঈদগাহে। এই জামাত ঘিরে থাকে বিশেষ নিরাপত্তা।

হাজার মুসল্লির সমাগম ঘটে ঈদগাহে।

মূলত বাংলাদেশের জাতীয় ঈদগাহ মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুইটি অনুষ্ঠান ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার নামাজ পড়ার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ। এটি ঢাকা জেলার সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গনে অবস্থিত। এ ঈদগাহে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রসাশনিক ব্যক্তিবর্গ ঈদের নামাজ আদায় করেন।

জাতীয় ঈদগাহ হচ্ছে বাংলাদেশ সরকার কতৃক নির্ধারিত একটি ঈদের নামাজের স্থান। এখানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান, সংসদ সদস্য, রাজনীতিক, সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নানা বয়সী মানুষ নামাজ আদায় করে থাকেন।

এবারও রাজধানীতে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান জামাতে অংশ নেবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, রাজনীতিবিদসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক ইমাম হিসেবে এ জামাতে দায়িত্ব পালন করবেন। ক্বারি হিসেবে থাকবেন বায়তুল মোকাররমের মুয়াজ্জিন মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান। সেখানে একসঙ্গে প্রায় ৩৫ হাজার মানুষের নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

ইতিহাস

স্বাধীনতার আগে থেকেই হাইকোর্টের পাশের জায়গাটি ছিল ঝোপ-জঙ্গলে পূর্ণ। সেই জায়গার মাঝে ছিল একটি পুকুর।

১৯৮১-৮২ সালের দিকে সেই ঝোপ-জঙ্গল কিছুটা পরিষ্কার করা হয়। তার পাশাপাশি সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে রয়েছে একটি মাজার। জায়গাটি একটু পরিচিত হয়ে উঠলে সেখানে ছোট পরিসরে শামিয়ানা টানিয়ে ঈদের নামাজ পড়ানো শুরু হয়। এর পরে ১৯৮৫ সালের দিকে সেই পুকুরটি ভরাট করে ফেলে কর্তৃপক্ষ। পরে ১৯৮৭-৮৮ সালের দিকে ওই ঈদগাহকে জাতীয় ঈদগাহ হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। বর্তমানে বাংলাদেশ হাইকোর্টের অধীনে ঈদগাহটি পরিচালিত হলেও তার দেখভাল করে গণপূর্ত বিভাগ। ২০০০ সালে দুই ঈদেই ঈদগাহ প্রস্তুতের দায়িত্ব পায় ঢাকা সিটি করপোরেশন।

চারদিকে লোহার প্রাচীর দেওয়া বিশাল মাঠটিতে রয়েছে একটি মূল ফটকসহ কয়েকটি ফটক। কিবলার দিকে রয়েছে একটি মেহরাব। মেহরাবটি মূলত পাঁচটি মিনারে তৈরি। জাতীয় ঈদগাহে একটি জামাতে অন্তত এক লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। সেখানে একই জামাতে নারীদের নামাজ আদায়ের জন্য থাকে ভিন্ন ব্যবস্থা। এখানে ২০ হাজার নারী একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।

মাঠের আকৃতি

ঢাকার জাতীয় ঈদগাহ মাঠের আয়তন ২ লাখ ৭০ হাজার ২৭৭ বর্গফুটের বেশি। জাতীয় ঈদগাহ মূলত একটি প্রশস্ত ফাকা মাঠ। ঈদের পূর্বে এ মাঠকে সাজানো হয় নামাজের উপযোগী করার জন্য। সম্পূর্ণ মাঠ নামাজের উপযোগী করতে কয়েক হাজার শ্রমিক প্রয়োজন হয়। আনুমানিক বলতে গেলে, প্রতিবার ঈদগাহ ময়দানে প্যান্ডেল নির্মাণের জন্য ৪৩ হাজার বাঁশ ও প্রায় ৩শ’ মন রশির প্রয়োজন হয়।

বাংলাদেশের জাতীয় ঈদগাহের ইতিহাস অনেক পুরোনো। ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনাভাইরাসের প্রকোপে ঈদের নামাজ জাতীয় ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হয়নি।

বায়তুল মোকাররমে এ বছর পাঁচটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

প্রথম জামাত

সকাল ৭টায় প্রথম ঈদ জামাতে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মুহিববুল্লাহিল বাকী। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররমের মুয়াজ্জিন হাফেজ মো. আতাউর রহমান।

দ্বিতীয় জামাত

সকাল ৮টায় দ্বিতীয় জামাতে ইমাম থাকবেন সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান। মুকাব্বির থাকবেন প্রধান খাদেম মো. নাসিরউল্লাহ।

তৃতীয় জামাত

সকাল ৯টায় তৃতীয় জামাতে ইমাম থাকবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস ড. মাওলানা মুফতি ওয়ালিউর রহমান খান। মুকাব্বির থাকবেন খাদেম মো. আব্দুল হাদী।

চতুর্থ জামাত

সকাল ১০টায় চতুর্থ জামাতে ইমাম থাকবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অনুবাদ ও সংকলন বিভাগের সম্পাদক ড. মুশতাক আহমদ। মুকাব্বির থাকবেন খাদেম মো. আলাউদ্দীন।

পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত

সকাল পৌনে ১১টায় পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাতে ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মো. আব্দুল্লাহ। মুকাব্বির থাকবেন খাদেম মো. রুহুল আমিন।


 

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

যেভাবে ইতিহাস হলো শোলাকিয়া

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
যেভাবে ইতিহাস হলো শোলাকিয়া

দেশের সবচেয়ে বড় ঈদুল ফিতরের জামাতের জন্য প্রস্তুত কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। এবার ১৯৮তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টায় শুরু হবে। এতে ইমামতি করবেন ১৫ বছর আগে রাজনৈতিক কারণে বাদ দেওয়া ইমাম মুফতি আবুল খায়ের মুহাম্মদ ছাইফুল্লাহ।

মুসল্লিদের জন্য থাকছে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার মুসল্লি আরো বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এই ঈদগাহ ময়দানটি কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ ও ঐতিহ্যবাহী ঈদগাহ ময়দান। প্রতিবছর এ ময়দানে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

কালের স্রোতে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানটি পরিণত হয়ে উঠেছে একটি ঐতিহাসিক স্থানে।

এ ময়দানের বিশাল জামাত গৌরবান্বিত ও ঐতিহ্যবাহী করেছে কিশোরগঞ্জকে। বর্তমানে এখানে একসঙ্গে তিন লক্ষাধিক মুসল্লি জামাতে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শুরুর আগে শর্টগানের ফাঁকা গুলির শব্দে সবাইকে নামাজের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য সঙ্কেত দেওয়া হয়।

কিশোরগঞ্জ শহরের পূর্বে নরসুন্দা নদীর তীরে এর অবস্থান। 

১৮২৮ সালে শোলাকিয়ায় প্রথম ঈদের জামাত হয়। ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হয়বত খান কিশোরগঞ্জে জমিদারি প্রতিষ্ঠার পরপরই এই ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন। এ মাঠের জন্য ১৯৫০ সালে দেওয়ান মান্নান দাদ খান সাড়ে তিন একর জমি ওয়াক্ফ করে দেন। পরবর্তী সময়ে জমির পরিধি আরো বৃদ্ধি পায়।

আরো পড়ুন
যেভাবে একটি অন্যায়ের সম্মিলিত প্রতিবাদ হলো

যেভাবে একটি অন্যায়ের সম্মিলিত প্রতিবাদ হলো

 

দেওয়ান মান্নান দাদ ছিলেন হয়বত খানের বংশধর। হয়বত খান ছিলেন বীর ঈশা খাঁর ষষ্ঠ অধস্তন পুরুষ। যে কারণে শুরু থেকে এ মাঠের সঙ্গে জমিদারির একটি ঐতিহ্য রয়েছে। হয়বতনগর সাহেববাড়ির বাসিন্দা সৈয়দ আলী আজহারের লেখা ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ বইয়ে ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ প্রতিষ্ঠার পেছনে হয়বতনগর জমিদারদের অকৃত্রিম অবদানের বিষয়টি উল্লেখ আছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন জমিদারি ঐতিহ্যে ঘোড়ার গাড়িতে স্টেজ বানিয়ে তার ওপর সিংহাসন বসিয়ে বাহিনী নিয়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে শোলাকিয়া ঈদগাহে আসতেন জমিদারেরা। আসার পথে প্রজাদের উদ্দেশে বিভিন্ন ধরনের মুদ্রা ছিটাতেন। এ ছাড়া ইটনা হাওরের জমিদারসহ বিভিন্ন এলাকার জমিদারেরা নানা ধরনের নৌকায় করে এ ঈদগাহে নামাজ পড়তে আসতেন। জমিদারদের এসব তুলকালাম কাণ্ড আর স্বয়ং জমিদারদের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন বলে দূরদূরান্ত থেকে অসংখ্য লোকজন শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে নামাজ আদায় করতে আসতেন। ঈদের আনন্দের পাশাপাশি আগত মুসল্লিদের জন্য এটা ছিল বাড়তি আকর্ষণ। এভাবেই এ মাঠের ঐতিহ্য গড়ে ওঠে।

আরো পড়ুন
খুলনায় ঈদের রাতে চার স্থানে সন্ত্রাসী হামলা, তিনজন গুলিবিদ্ধ

খুলনায় ঈদের রাতে চার স্থানে সন্ত্রাসী হামলা, তিনজন গুলিবিদ্ধ

 

জনশ্রুতি আছে, মোগল আমলে এখানকার পরগনার রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল শ লাখ টাকা; অর্থাৎ এক কোটি টাকা। কালের বিবর্তনে শ লাখ থেকে বর্তমান শোলাকিয়া হয়েছে। অন্য আরেকটি বিবরণে রয়েছে, ১৮২৮ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহে সোয়া লাখ মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করেন। সেই থেকে ঈদগাহটি একসময় শোয়ালাকিয়া ঈদগাহ মাঠ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। লেখক মু. আ. লতিফের লেখা কিশোরগঞ্জের ইতিহাস-ঐতিহ্য বইয়েও এ দুটি বর্ণনা রয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, এবারও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সাজানো হয়েছে সব আয়োজন। ঈদের দিন ঈদগাহে আসার প্রতিটি রাস্তায় থাকবে তল্লাশিচৌকি। মোতায়েন থাকবে বিপুলসংখ্যক র‍্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্য। সাদাপোশাকে দায়িত্ব পালন করবেন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন। থাকবে সেনাসদস্যদের বিশেষ টহল। তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েন থাকবে। সব মিলিয়ে দেড় হাজারের ওপরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন উপস্থিত থাকবেন।

আরো পড়ুন
সাত বছর পর পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করলেন খালেদা জিয়া

সাত বছর পর পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করলেন খালেদা জিয়া

 

মাঠে নজরদারির জন্য ইতিমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে ছয়টি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। এ ছাড়া ঈদ জামাতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ক্যামেরাযুক্ত শক্তিশালী চারটি ড্রোন মুসল্লিদের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করবে। তিনটি আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে মেটাল ডিটেক্টরের তল্লাশির মাধ্যমে মুসল্লিদের মাঠে প্রবেশ করানো হবে। ঈদগাহে মুসল্লিরা শুধু জায়নামাজ ও জরুরি প্রয়োজনে মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। তবে ছাতা, ব্যাগ ও অন্যান্য ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকছে।

মুসল্লিদের বিশ্বাস, বড় জামাতে অংশ নিলে বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। এমন বিশ্বাস থেকে ঈদের দিন মুসল্লিদের ঢল নামে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে। কয়েক লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করেন একসঙ্গে। পুরো এলাকা জমসমুদ্রে পরিণত হয়। শোলাকিয়ার ঈদ জামাত সবার কাছে বাড়তি আনন্দ ও তাৎপর্যপূর্ণ।

এদিকে, শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের ইমাম নিয়ে দীর্ঘদিনের বিতর্কের অবসান ঘটিয়েছে পরিচালনা কমিটি। ১৫ বছর আগে রাজনৈতিক কারণে বাদ দেওয়া আলোচিত ও সবার গ্রহণযোগ্য ইমাম মুফতি আবুল খায়ের মুহাম্মদ ছাইফুল্লাহকে ফেরানো হয়েছে। তিনি এবার ঈদ জামাতে ইমামতি করবেন। 

এ প্রসঙ্গে ইমাম মুফতি আবুল খায়ের মুহাম্মদ ছাইফুল্লাহ বলেন, ‘ইমামতি ফিরে পেয়ে আমি খুশি। আশা করি ভবিষ্যতে আর কেউ ধর্মীয় বিষয় নিয়ে জোর জবরদস্তি করবে না। এবার জামাতে এক লাখ নতুন মুসল্লি যুক্ত হবে।’ 

আরো পড়ুন
আওয়ামী লীগের সময়ে মানুষ স্বস্তিতে ঈদ করতে পারেনি : সারজিস

আওয়ামী লীগের সময়ে মানুষ স্বস্তিতে ঈদ করতে পারেনি : সারজিস

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল ১০টায় ঐতিহ্য ও রেওয়াজ অনুযায়ী জামাত শুরুর আগে পরপর তিনবার বন্দুকের ফাঁকা গুলি ছুড়ে এ ময়দানে শুরু হবে ঈদুল ফিতরের জামাত। শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে আসা মুসল্লিদের সুবিধার্থে ঈদের দিন কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ ও ভৈরব-কিশোরগঞ্জ রোডে শোলাকিয়া এক্সপ্রেস নামে দুটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে।

জায়নামাজ এবং মোবাইল ছাড়া কোনও কিছু নিয়ে মাঠে প্রবেশ না করার জন্য মুসল্লিদের উৎসাহিত করছে প্রশাসন। র‍্যাব-১৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি নাইমুল হাসান বলেন, ‘নিরাপত্তা জোরদার করতে পোশাকের পাশাপাশি সাদাপোশাকেও র‍্যাব সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। নাশকতাকারী, ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ, পকেটমার, মলম পার্টিসহ অন্য অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা কন্ট্রোল রুম স্থাপন করবো। ওয়াচ টাওয়ার থাকবে, এর মাধ্যমে আমরা সার্ভিলেন্স করবো।’

আরো পড়ুন
জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত

জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত

 

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, ‘ঈদ জামাতকে ঘিরে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। এখানে ছয় লাখের ওপরে মুসল্লি হয়। এবার মুসল্লির সংখ্যা বাড়তে পারে। সে অনুযায়ী নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করতে ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার, চারটি ড্রোন ক্যামেরাসহ পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। এ ছাড়া সাদাপোশাকে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত থাকবে। আশা করি, নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করে ঘরে ফিরতে পারবেন।’

স্থানীয় সূত্র জানায়, শোয়ালাকিয়া ঈদগাহ মাঠে ৭০০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করার সুযোগ পান। মাঠের ভেতর জায়গার সংকুলান না হওয়ায় মূল মাঠের তিন পাশের রাস্তাঘাট, আশপাশের বাড়িঘরের ছাদ, উঠান, নরসুন্দা নদীর পাড়সহ বিভিন্ন জায়গায় আরও শত শত মুসল্লি নামাজ আদায় করেন। 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ