বিশ্বের সবচেয়ে বিশুদ্ধ বরফ দাবি করে আরব আমিরাতের দুবাই শহরের বিভিন্ন বার ও রেস্টুরেন্টে এখন বরপের মাত্র ছয়টি কিউব ২৪৯ দিরহামে বিক্রি হচ্ছে, যা বাংলাদেশি টাকায় আট হাজার ২১৯ টাকার ওপরে। জাহাজযোগে এসব বরফ আনা হচ্ছে গ্রিনল্যান্ডের কোনো হিমবাহ থেকে। জাহাজের তেল পুড়িয়ে ২০ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মরুর দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে এসব বরফ খণ্ড বেচে টাকা কামানোর এই পন্থাটি নানাভাবে সমালোচিত হচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে, গ্রিনল্যান্ডের যেসব হিমবাহ থেকে ক্রেনযোগে এসব বরফ আনা হচ্ছে, সেসব হিমবাহের বয়স কমপক্ষে এক লাখ বছর।
ব্যবসায়ীদের যুক্তি হচ্ছে, হিমবাহের এসব বরফ গলে গলে সাগরের পানিতে মিশে যাওয়ার চেয়ে অত্যন্ত ব্যয়বহুল পানীয়তে পরিণত হওয়া মোটেও মন্দ কিছু নয়।
গ্রিনল্যান্ড থেকে জাহাজযোগে দুবাইয়ের কিয়ুজ এলাকার নেচারাল আইস ফ্যাক্টরিতে চলতি বছর ২২ টন ওজনের প্রথম বরফ খণ্ডটি আনা হয়। এই ফ্যাক্টরির সহমালিক আহমদ আল মাজরুয়ি বলেন, বরফ খণ্ডটি ফ্যাক্টরিতে পৌঁছার পর এটার আকাশচুম্বী চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে।
ত্রিভুজ আকৃতির ও আকাশি রঙের প্যাকেটে ভরে আর্কটিক বরফ কিউব আকারের কাস্টমারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
রমজানে এই কিউবের চাহিদা অনেক বেশি। গত জানুয়ারি থেকেই এই ধরনের বরফ বিক্রি শুরু হয়েছে দুবাইয়ে। বিভিন্ন মদের বারে এই বরফের দাম সবচেয়ে বেশি। ফ্রুট জুসের দোকানেও এই বরফ মিলছে। এই বরফের স্বাদ চেখে দেখতে ধনীরা এখন বিভিন্ন হোটেলে প্রাইভেট পার্টি আয়োজন করছে। প্রতি দশজনের একটি পার্টিতে খরচ হচ্ছে ৩৫ হাজার দিরহাম। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, হিমশৈলটির নমুনা গবেষণাগারে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হয় কোনো অণুজীব বা ব্যাকটেরিয়া এর মধ্যেই নেই। তারপর বরফ গ্রিনল্যান্ড থেকে জাহাজে করে পাঠানো হয় দুবাইয়ে।
আর্কটিক আইস কম্পানির দাবি, প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করার অভিনব একটি উপায় এটি।
সমালোচকদের মতে, দুবাই এরই মধ্যে নিজস্ব বরফ তৈরি করছে। সে ক্ষেত্রে জীবাশ্ম জ্বালানিচালিত জাহাজে হাজার হাজার মাইল দূরে এটি পাঠানোটা মোটেই কাজের কিছু নয়। খুব কম লোকই সম্ভবত তাদের কোক, কফি বা ককটেলের বরফ কোথা থেকে আসছে তা নিয়ে চিন্তা করে। তবে এটি যে একটি বড় ব্যবসা তাতে সন্দেহ নেই। সূত্র : খালিজ টাইমস