যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ

  • লন্ডন, প্যারিসের মতো বড় বড় শহরেও বিক্ষোভ হয়েছে
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর ধনকুবের মিত্র ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে লস অ্যাঞ্জেলেসের ক্যালিফোর্নিয়ায় গত শনিবার যোগ দেয় হাজারো মানুষ। ছবি : এএফপি

  যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর ধনকুবের মিত্র ইলন মাস্কবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, স্থানীয় সময় গতকাল রবিবার যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অন্তত ১২ শতাধিক জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর ধনকুবের মিত্র ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে এটাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে আমেরিকানদের অধিকার ও স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ চালাচ্ছেন।

গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকারীদের উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্য ও বেশ কয়েকটি দেশে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এসব বিক্ষোভে অংশ নেয় লাখ লাখ মানুষ। এই বিক্ষোভের নাম দেওয়া হয়েছে হ্যান্ডস অফ!হ্যান্ডস অফ! আন্দোলনকারীরা ধনকুবেরদের ক্ষমতা দখলের অবসান চায়

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের ক্যাপিটল, ফেডারেল ভবনগুলোর সামনে, কংগ্রেসনাল দপ্তর, সোশ্যাল সিকিউরিটি সদর দপ্তর, পার্ক ও সিটি হলগুলোর সামনে এসব বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এই বিক্ষোভের আয়োজকরা বলেছেন, আমরা নিশ্চিত করতে পারি তারা আমাদের কথা শুনতে পাচ্ছে।

এই আয়োজনের প্রচারপত্রে লেখা ছিল, আমাদের গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ, চাকরি ছাঁটাই, গোপনীয়তার ওপর আক্রমণ অথবা আমাদের পরিষেবার ওপর আক্রমণের কারণে আপনি যেভাবেই সংঘবদ্ধ হোন না কেনএই মুহূর্তটি আপনার জন্য। আমরা এই সংকটের বিরুদ্ধে একটি বিশাল, দৃশ্যমান, জাতীয় প্রত্যাখ্যান গড়ে তুলতে চাই।

এই বিক্ষোভের আয়োজক সংগঠনগুলোর অন্যতম ইন্ডিভিসিবলের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ছয় লাখ মানুষ এসব বিক্ষোভে যোগ দেবে জানিয়ে স্বাক্ষর করেছে। লন্ডন, প্যারিসের মতো বড় বড় শহরেও কিছু বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ইন্ডিভিসিবলের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন নাগরিক অধিকার সংগঠন, অবসরপ্রাপ্ত কর্মী, নারী অধিকার গোষ্ঠী, শ্রমিক ইউনিয়ন ও এলজিবিটিকিউ প্লাস আন্দোলনকারীরা এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

আয়োজকরা জানিয়েছেন তাঁদের দাবি তিনটি : ধনকুবেরদের ক্ষমতা দখলের এবং ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যাপক দুর্নীতির অবসান; শ্রমজীবীরা নির্ভর করে এমন সরকারি স্বাস্থ্য ইনস্যুরেন্স কর্মসূচি (মেডিকেইড), সামাজিক নিরাপত্তা ও অন্যান্য কর্মসূচির জন্য ফেডারেল তহবিল হ্রাস বন্ধ করা এবং অভিবাসী, ট্রান্সজেন্ডার লোকজন ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণের ইতি ঘটানো।

ওয়াশিংটন ডিসিতে হ্যান্ডস অফ! বিক্ষোভ চলাকালে মার্কিন কংগ্রেসের অনেক প্রতিনিধি এসব সমাবেশে যোগ দেন।

তাঁদের অনেকেই মঞ্চে উঠে ট্রাম্প প্রশাসন নিয়ে কথা বলেন।

তাঁদের মধ্যে মেরিল্যান্ডের ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি জেমি রাসকিন বলেন, মুসোলিনির রাজনীতি ও হার্বাট হুভারের অর্থনীতি নিয়ে আছেন এমন একজন প্রেসিডেন্ট থাকলে কোনো ভবিষ্যৎ নেই। আমাদের (রাষ্ট্রের) প্রতিষ্ঠাতারা এমন একটি সংবিধান লিখেছিলেন যেখানে আমরা স্বৈরশাসক দিয়ে শুরু হয়নি, প্রস্তাবনায়আমরা জনগণ বলা হয়েছে।

নগরীর ওয়াশিংটন স্মৃতিস্তম্ভে জড়ো হওয়া কয়েক হাজার মানুষের সমাবেশে রাসকিন আরো বলেন, নৈতিক কোনো মানুষই অর্থনীতির পতন ঘটানো একজন স্বৈরশাসক চান না, যিনি সব কিছুর দাম জানেন, কিন্তু কোনো কিছুরই মূল্য বোঝেন না।

বিক্ষোভ সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের অনেকের হাতেই ট্রাম্প প্রশাসনের নিন্দা জানিয়ে লেখা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড শোভা পাচ্ছিল। ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন লোকজন প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার জন্য দেশটির বিভিন্ন এলাকা থেকে রাজধানীতে গিয়ে হাজির হয়। ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল মলের সামনে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীরা হেই হো, ট্রাম্প গোটা গো স্লোগান দিতে থাকে।

এখানে অনেকের হাতেই বিভিন্ন দাবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড ছিল। এর একটিতে লেখা ছিলআমাদের সংবিধান রক্ষা করো, আরেকটিতে আমাদের অধিকার থেকে হাত সরাও। এই বিক্ষোভে মিনেসোটার ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি ইলহান ওমর বলেন, আপনি যদি এমন একটি দেশ চান যা এখনো যথাযথ প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস করে, আমাদের তার জন্য লড়াই করতে হবে।

লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভকারীরা প্রায় এক মাইল লম্বা মিছিল নিয়ে সিটি হলের দিকে যায়। এ সময় তারা স্লোগান দেয়, জনগণকে ক্ষমতায়ন করো; তাদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, শিক্ষা থেকে হাত সরাও, প্রতিরোধ করো, প্রতিরোধ করো। এর পাশাপাশি বোস্টন, শিকাগো, নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের আরো বহু শহরেহ্যান্ডস অফ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সূত্র : রয়টার্স, সিএনএন

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দিল রাশিয়া

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দিল রাশিয়া

বন্দিবিনিময় চুক্তির আওতায় রুশ বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে রাশিয়া। লস অ্যাঞ্জেলেসের বাসিন্দা কেসেনিয়া কারেলিনা এক বছরের বেশি সময় ধরে রুশ কারাগারে বন্দি ছিলেন। ২০২৪ সালে রাশিয়ার ইয়েকাতেরিংবার্গ শহর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ইউক্রেনে মানবিক সহায়তা দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দাতব্য প্রতিষ্ঠানকে অনুদান দেওয়ায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে ১২ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

কারেলিনার মুক্তির বিনিময়ে রাশিয়া ও জার্মানির দ্বৈত নাগরিকত্বে থাকা আর্থুর পেত্রোভকে মুক্তি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি ২০২৩ সালে সাইপ্রাসে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। রাশিয়ায় অবৈধভাবে মাইক্রোইলেকট্রনিকস রপ্তানির অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তর করা হয়েছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে এই বন্দিবিনিময় হয়।
সূত্র : বিবিসি

 

মন্তব্য
সংক্ষিপ্ত

ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলায় তিনজন নিহত

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলায় তিনজন নিহত

ইয়েমেনের রাজধানী সানায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় গত বুধবার রাতে সানার সাবিন এলাকায় এই হামলা চালানো হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা এই কথা জানিয়েছেন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে হুতি সংবাদ সংস্থা সাবা জানিয়েছে, সানার সাবিন এলাকায় মার্কিন বিমান হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন।

এর আগে হুতি বিদ্রোহীরা জানান, স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার রাতে হোদেইদা এলাকার কামরান দ্বীপে মার্কিন বিমান হামলায় নারী, শিশুসহ ১৩ জন নিহত হয়েছেন। ১৫ মার্চ ওয়াশিংটন ইরান সমর্থিত হুতিদের বিরুদ্ধে অভিযান তীব্র করার পর থেকে ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের অধিকৃত এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই বিমান হামলা চলছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর হুতিরা লোহিত সাগর এবং এডেন উপসাগর দিয়ে চলাচলকারী জাহাজ এবং ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা অব্যাহত রাখে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতির সময় তাঁরা হামলা বন্ধ করে দেন।
সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের

ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় গত বুধবার এক বিবৃতিতে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ এ তথ্য জানিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেহরানের সঙ্গে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সরাসরি আলোচনার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করার পর এই নিষেধাজ্ঞার খবর এলো।

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, ইরানভিত্তিক পাঁচটি প্রতিষ্ঠান ও একজন ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্তদের সবাই ইরানের পরমাণু প্রকল্পের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট বলে জানিয়েছেন মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট।

স্কট বেসেন্ট বলেন, ইরান সরকারের বেপরোয়া পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির প্রচেষ্টা আমেরিকার জন্য একটি গুরুতর হুমকি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য হুমকি। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং বৃহত্তর অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির এজেন্ডা ব্যাহত করার জন্য আমাদের পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের পক্ষ থেকে কোন কোন কম্পানি ও ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, তা উল্লেখ করা হয়নি।

তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা পাওয়া পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দুটি আগে থেকেই কালো তালিকাভুক্ত। সূত্র : এপি

 

মন্তব্য

নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্টে আদিবাসী বিল প্রত্যাখ্যান

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্টে আদিবাসী বিল প্রত্যাখ্যান

নিউজিল্যান্ড প্রতিষ্ঠাকালীন চুক্তি পুনরায় সংজ্ঞায়িত করার একটি বিতর্কিত বিল পার্লামেন্টে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। ওই চুক্তির আওতায় নিউজিল্যান্ডে আদিবাসী মাওরি ও অ-মাওরি উভয়ের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দ্য ট্রিটি প্রিন্সিপালস বিলটির পক্ষে ১১টি এবং বিপক্ষে ১১২টি ভোট পড়ে। এর কয়েক দিন আগে একটি সরকারি কমিটি বিলটি এগিয়ে নেওয়া উচিত নয় বলে সুপারিশ করেছিল।

প্রস্তাবিত আইনের মাধ্যমে ১৮৪০ সালে ওয়েতাঙ্গি চুক্তির নীতিগুলোকে আইনত সংজ্ঞায়িত করার প্রচেষ্টা হয়েছিল। এর প্রতিবাদে গত বছর পার্লামেন্টের বাইরে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেয়।

মূলত ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসক এবং আদিবাসী মাওরি সম্প্রদায়ের ৫৪০ জন গোষ্ঠীপ্রধানের মধ্যে শান্তিচুক্তি হিসেবে ১৮৪০ সালে ওয়েতাঙ্গি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে মাওরিদের স্বার্থ রক্ষা করা হয়েছে।

বিলটি ব্যাপকভাবে ব্যর্থ হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছিল। কারণ বেশির ভাগ প্রধান রাজনৈতিক দল এটি বাতিলের জন্য ভোট দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বিলটি পার্লামেন্টে উত্থাপন করেছিল ডানপন্থী অ্যাক্ট পার্টি। গতকাল বৃহস্পতিবার শুধু এই দলের এমপিরাই বিলের পক্ষে ভোট দেন।

দলটির নেতা ডেভিড সেমুর এ বিষয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। সূত্র : বিবিসি

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ