আজকের নামাজের সময়সূচি, ১১ এপ্রিল ২০২৫

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আজকের নামাজের সময়সূচি, ১১ এপ্রিল ২০২৫

আজ শুক্রবার ১১ এপ্রিল ২০২৫, ২৮ চৈত্র ১৪৩১, ১১ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়সূচি নিম্নরূপ—

জুমার সময় শুরু- ১২টা ৩ মিনিট। 

আসরের সময় শুরু - ৪টা ৩০ মিনিট।

মাগরিব- ৬টা ২২ মিনিট।

এশার সময় শুরু - ৭টা ৩৮ মিনিট।

আগামীকাল ফজর শুরু - ৪টা ২৬ মিনিট।

আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত - ৬টা ১৮ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয়- ৫টা ৪৩ মিনিটে।

সূত্র : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকা।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

হাদিসের কথা

যেসব কাজ সবচেয়ে বড় পাপ

ইসলামী জীবন ডেস্ক
ইসলামী জীবন ডেস্ক
শেয়ার
যেসব কাজ সবচেয়ে বড় পাপ

বিভিন্ন হাদিসে গুরুতর পাপ সম্পর্কে আলোচনা এসেছে। একটি হাদিসে শিরিকের পাশাপাশি মাতা-পিতার অবাধ্যতাকে শিরিকের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, 

 عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ قَالَ‏:‏ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم‏:‏ مَا تَقُولُونَ فِي الزِّنَا، وَشُرْبِ الْخَمْرِ، وَالسَّرِقَةِ‏؟‏ قُلْنَا‏:‏ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَالَ‏:‏ هُنَّ الْفَوَاحِشُ، وَفِيهِنَّ الْعُقُوبَةُ، أَلاَ أُنَبِّئُكُمْ بِأَكْبَرِ الْكَبَائِرِ‏؟‏ الشِّرْكُ بِاللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ، وَعُقُوقُ الْوَالِدَيْنِ، وَكَانَ مُتَّكِئًا فَاحْتَفَزَ قَالَ‏:‏ وَالزُّورُ‏.‏

ইমরান ইবন হুসায়ন (রা.) বলেছেন, নবী করিম (ﷺ) বলেছেন, ‘তােমরা ব্যভিচার, মদ্যপান ও চুরি সম্পর্কে কী বলো?’ সাহাবারা বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই বেশি জানেন। রাসুল (সা.) বললেন, ‘এগুলো হচ্ছে জঘন্য পাপাচার এবং এর কঠিন শাস্তি রয়েছে।

’ তিনি বললেন, ‘আমি কি তােমাদের সবচেয়ে বড় কবিরা গুনাহ সম্পর্কে জানাব না? তা হলো আল্লাহর সঙ্গে শিরিক করা এবং পিতামাতার অবাধ্যতা।’ তিনি হেলান দেওয়া অবস্থায় ছিলেন। এরপর তিনি সােজা হয়ে বসলেন এবং বললেন, ‘এবং মিথ্যা কথা বলা।’ (আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৩০)

মন্তব্য
প্রতিদিনের আমল

ঘরে প্রবেশকালে রাসুল (সা.) যে দোয়া পড়তে বলেছেন

ইসলামী জীবন ডেস্ক
ইসলামী জীবন ডেস্ক
শেয়ার
ঘরে প্রবেশকালে রাসুল (সা.) যে দোয়া পড়তে বলেছেন

ঘরে প্রবেশ ও ঘর থেকে বের হওয়ার সময় ঘরবাসীর নিরাপত্তার জন্য আল্লাহকে স্মরণ করা জরুরি। রাসুল (সা.) ঘরে প্রবেশ ও ঘর থেকে বের হওয়ার সময় একটি দোয়া পড়তে বলেছেন। এরপর সালাম দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে।  

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَ الْمَوْلَجِ ، وَخَيْرَ الْمَخْرَجِ ، بِسْمِ اللَّهِ وَلَجْنَا، وَبِسْمِ اللَّهِ خَرَجْنَا، وَعَلَى اللَّهِ رَبِّنَا تَوَكَّلْنَا

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরা মাওলাজি, ওয়া খাইরাল মাখরাজি, বিসমিল্লাহি ওয়ালাজনা, বিসমিল্লাহি খারাজনা, ওয়া আলাল্লাহি রব্বিনা তাওক্কালনা।

অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে উত্তম প্রবেশ ও উত্তম বের হওয়া প্রার্থনা করছি। আল্লাহর নামে প্রবেশ করছি এবং আল্লাহর নামে বের হচ্ছি। এবং আমাদের রব আল্লাহর ওপর ভরসা করছি।

হাদিস : আবু মালিক আল-আশআরি (রা.) বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ঘরে প্রবেশ করছে সে যেন এই দোয়া পড়ে।

এরপর ঘরবাসীকে সালাম দিয়ে প্রবেশ করে।

মন্তব্য

বাঙালি সংস্কৃতিতে ইসলামের প্রভাব

আতাউর রহমান খসরু
আতাউর রহমান খসরু
শেয়ার
বাঙালি সংস্কৃতিতে ইসলামের প্রভাব

ভাষাসৈনিক ও সাংবাদিক মাহবুব আনাম বলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি হচ্ছে মুসলমান, আমাদের ধর্ম এবং আমাদের ঐতিহ্য—সব মিলেই আমাদের সংস্কৃতি। সেই সংস্কৃতিকে যদি আমরা এগিয়ে নিয়ে না যাই, তাহলে আমাদের মস্ত বড় ভুল হবে।’

মানবসমাজে যে বর্ণিল ও বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি বিদ্যমান, ইসলাম তাকে আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন মনে করে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের প্রত্যেকের জন্য শরিয়ত ও স্পষ্ট জীবনপ্রণালী দান করেছি।

’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৪৮)

উল্লিখিত আয়াতে ‘জীবনপ্রণালী’ দ্বারা ভাষা, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ জীবনঘনিষ্ঠ সব কিছুই উদ্দেশ্য। সংস্কৃতি বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর পরিচয়কে পৃথক করে। তাই পরিচয় নির্ণয় করে এমন সংস্কৃতি যদি দ্বিনবিরোধী না হয়, তাহলে তা রক্ষা করা প্রয়োজন। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মানুষ! আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী থেকে, পরে তোমাদের বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হতে পারো।

’ (সুরা : হুজুরাত, আয়াত : ১৩)

সংস্কৃতি ও ইসলামী সংস্কৃতি

বিখ্যাত ব্রিটিশ কবি টি এস এলিয়ট বলেন, ‘সংস্কৃতি হলো বিশেষ স্থানে বসবাসকারী বিশেষ লোকদের জীবনধারা ও জীবনপদ্ধতি, যার বৈশিষ্ট্য হলো ভাবগত ঐক্য ও প্রকাশক্ষেত্রের সৌন্দর্য।’(নোটস টুওয়ার্ডস দ্য ডেফিনিশন অব কালচার, পৃষ্ঠা-১৩)

উল্লিখিত সংজ্ঞার আলোকে বলা যায়, মুসলমানদের জীবনধারা ও জীবনপদ্ধতিই ইসলামী সংস্কৃতি, যা মুসলমানের অভিন্ন বিশ্বাস ও দৈনন্দিন আচরণের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। ইসলামী চিন্তাবিদ ও লেখক আবদুস শহীদ নাসিম বলেন, ইসলামী বিশ্বাস, মূল্যবোধ ও মূলনীতির আলোকে যে জীবনবোধ, জীবনচেতনা, সমাজচেতনা ও মানবতাবোধ সৃষ্টি হয়, সেগুলোই ইসলামী সংস্কৃতি। (শিক্ষা সাহিত্য সংস্কৃতি, পৃষ্ঠা-১৯)

ইসলামী সংস্কৃতির স্বরূপ

১৯৮২ সালে মেক্সিকো শহরে ইউনেসকো সংস্কৃতি বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করে, যাতে বলা হয়, ‘কোনো একটি একক সংস্কৃতি তার সর্বজনীনতা স্বীকার করার পক্ষে যথেষ্ট নয়।

পৃথিবীর অন্যান্য সংস্কৃতির সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়তেই হবে এবং এই সম্পর্ক স্থাপনের মধ্য দিয়ে সে তার নিজের অস্তিত্ব প্রমাণ করবে। সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য ও বৈচিত্র্য একে অন্যের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।’ (আমাদের সংস্কৃতি : বিচার্য বিষয় ও চ্যালেঞ্জসমূহ, পৃষ্ঠা-১৬)

সংস্কৃতির এই সম্মিলন ও আত্তীকরণের বৈশিষ্ট্যকে ইসলাম অস্বীকার করে না, বরং ইসলাম পৃথিবীর যেকোনো ইতিবাচক সংস্কৃতি গ্রহণের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে। ড. হাসান জামান লেখেন, ‘ইসলামী জীবনদর্শন সব দেশ, কাল, দর্শন ও তমদ্দুন থেকে বিনয়ের সাথে যা কিছু সুন্দর মহান চিরন্তর, কল্যাণকর, তাকে সাদরে বরণ করে নিতে উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছে বারে বারে। তবে যেসব ভাল জিনিস গ্রহণ করা হলো, তাকে ইসলামী ভাবধারায় সমৃদ্ধ ও তৌহীদবাদ দ্বারা সঞ্জীবিত করে তুলতে হবে।

ইসলামী সংস্কৃতি সব মানুষের, সব জাতির, দেশের ও কালের সংস্কৃতি।’ (সমাজ, সংস্কৃতি ও সাহিত্য, পৃষ্ঠা-২)

তিনি আরো বলেন, ‘বিভিন্ন সংস্কৃতি ও ভাবধারার সার্থক অনুপ্রবেশ ইসলামের কাম্যও। এ জন্যই ইসলামে মৌলিক নীতি অক্ষুণ্ন রেখে সামাজিক চাহিদা ও পরিবেশমাফিক নীতিকে বাস্তবে রূপায়িত করতে বলা হয়েছে। এর নাম ইজতিহাদ।’ (সমাজ, সংস্কৃতি ও সাহিত্য, পৃষ্ঠা-২)

বাঙালি সংস্কৃতিতে ইসলামের প্রভাব

সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ইসলামের মূলনীতি ‘আত্তীকরণের’ কারণেই বাংলা অঞ্চলে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর স্থানীয় বহু সংস্কৃতি মুসলিম সমাজে যুক্ত হয়েছে, তেমনি স্থানীয় সংস্কৃতিতেও এসেছে নানামুখী পরিবর্তন। বর্তমানে চর্চিত বাঙালি সংস্কৃতির অন্তরাত্মার সঙ্গে ইসলামের গভীর সেতুবন্ধ রয়েছে। ইসলাম আগমনের পর এই অঞ্চলের ভাষা, পোশাক, খাদ্যের পাশাপাশি সামাজিক বিন্যাস পর্যন্ত পরিবর্তন হয়ে যায়। ঔপনিবেশিক মুসলিম বিদ্বেষী ব্রিটিশ শাসন এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় দুই শ বছরের প্রবল প্রতাপশালী হিন্দু জমিদারির প্রভাবে বাঙালি সংস্কৃতিতে মুসলমানের প্রভাব কিছুটা ম্রিয়মাণ হয়েছে সত্য, তবে এটা ধ্রুব সত্য যে বাঙালি সংস্কৃতিতে মুসলমানের ‘অংশ ও অবদান’ অন্য যেকোনো জাতি-গোষ্ঠীর তুলনায় অনেক বেশি দৃশ্যমান। অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান তাঁর এক প্রবন্ধে বাঙালি সংস্কৃতিতে ইসলাম ধর্মের প্রভাব সম্পর্কে বলেন, ‘আমাদের সংস্কৃতিতে যেসব বিভিন্ন উপকরণের মিশ্রণ ঘটেছে, তার মধ্যে ধর্মীয় উপকরণটি প্রধান ও প্রবলতম। প্রধান ও সংখ্যাগরিষ্ঠদের ধর্ম হিসেবে ইসলামের প্রভাব বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে একটি প্রবল প্রভাব। এর সঙ্গে অবশ্য বৌদ্ধ প্রভাব, হিন্দু প্রভাব ও খ্রিস্টান প্রভাব মিলিত হয়েছে।’ (আমাদের সংস্কৃতি : বিচার্য বিষয় ও চ্যালেঞ্জসমূহ, পৃষ্ঠা-১৮)

তিনি বাংলা অঞ্চলে মুসলিম শাসনামলে হওয়া বেশ কিছু সাংস্কৃতিক পরিবর্তন তুলে ধরেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো—

১. মানুষে-মানুষে ভেদাভেদ দূরীকরণের মাধ্যমে একটি সাম্যবাদী প্রবৃত্তির প্রতিষ্ঠা।

২. নগর নির্মাণ ও নগরায়ণের মাধ্যমে এ দেশের সংস্কৃতির গ্রামীণ প্রকৃতির মধ্যে পরিবর্তন সাধন।

৩. স্থাপত্য শিল্পে একটি নতুন মাত্রা সংযোজন এবং মসজিদ ও দুর্গের স্থাপত্যরীতির পরিবর্তন।

৪. দেশজ ভাষা চর্চায় উৎসাহ প্রদান এবং একটি উদার অসাম্প্রদায়িক ভাবপ্রকল্পের জন্মদান।

৫. সেন আমলে সংস্কৃত ভাষার যে প্রভাব ছিল সেই প্রভাব দূরীকরণ।

৬. বাংলা ভাষার রূপ ও রীতির পরিবর্তন (আধুনিকায়ন অর্থে) এবং প্রচুর পরিমাণে আরবি, ফারসি শব্দের আত্তীকরণ।

৭. বাঙালির খাদ্যাভ্যাস ও রন্ধনপ্রণালীতে পরিবর্তন ও বৈচিত্র্য আনয়ন। (প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-২৩)

বাঙালির সংস্কৃতিতে মুসলমানের অংশ

বিশিষ্ট ভাষাসৈনিক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবী মাহবুব আনাম বাঙালি সংস্কৃতিতে মুসলমানের অংশ নির্ধারণ করে বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ যেটা, তাকে বঙ্গ বলা হতো। আসল বাংলা আমাদের এই পূর্ব বাংলা। এর ইতিহাস খুঁজলে দেখা যাবে, এই পূর্ব বাংলার ইতিহাস হচ্ছে বাংলাদেশের ইতিহাস। আমরা আজ একটা স্বাধীন জাতি। আমাদের যেমন নিজস্ব একটা ব্যক্তিত্ব আছে, সমষ্টিগতভাবেও তেমনি একটা সত্তা আছে। আমাদের যে মেজরিটি, সে মেজররিটি হচ্ছে বাঙালি মুসলমান। সেই সংস্কৃতিটাই আসল বাঙালি সংস্কৃতি।’ (আমাদের সংস্কৃতি : বিচার্য বিষয় ও চ্যালেঞ্জসমূহ, পৃষ্ঠা-২৫)

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের যুব সম্প্রদায় ভাবছেন যে, বাঙালি বলতে এক বিশেষ সম্প্রদায়ের বিশেষ ভাবধারা, বিশেষ চলাফেরা, বিশেষ কাপড়-চোপড় বুঝি বাঙালি। এটা কিন্তু তাদের একদম ভুল ধারণা। সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি হচ্ছে মুসলমান, আমাদের ধর্ম এবং আমাদের ঐতিহ্য—সব মিলেই আমাদের সংস্কৃতি এবং সেই সংস্কৃতিকে যদি আমরা এগিয়ে নিয়ে না যাই, তাহলে আমাদের মস্ত বড় ভুল হবে।’ (প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-২৭)

আল্লাহ সবাইকে সঠিক বুঝ দান করেন। আমিন।

মন্তব্য

পাপ ও পুণ্যের বোঝা বহন করবে যারা

মাইমুনা আক্তার
মাইমুনা আক্তার
শেয়ার
পাপ ও পুণ্যের বোঝা বহন করবে যারা

মানুষের ওপর যেসব কারণে বিপদ আসে, তার অন্যতম হলো গুনাহ। গুনাহর কারণে জলে-স্থলে বিপর্যয় নেমে আসে। তার প্রভাব মানুষের জীবনযাত্রায় পড়ে। সর্বত্র অশান্তি ও নিরাপত্তাহীনতা ছড়িয়ে পড়ে।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের এ ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষের কৃতকর্মের দরুন স্থলে ও সমুদ্রে ফাসাদ প্রকাশ পায়। যার ফলে আল্লাহ তাদের কতিপয় কৃতকর্মের স্বাদ তাদের আস্বাদ করান, যাতে তারা ফিরে আসে। (সুরা : রুম, আয়াত : ৪১)

শুধু সতর্ক করেই শেষ করেননি, বরং পূর্ববর্তীদের যারা মহান আল্লাহর নাফরমানি করেছে, তাদের পরিণাম কী হয়েছে, তা দেখার জন্য ভ্রমণ করারও নির্দেশ দিয়েছেন।

এর পরের আয়াতেই মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘বলো, তোমরা জমিনে ভ্রমণ করো। অতঃপর দেখো পূর্ববর্তীদের পরিণাম কিরূপ হয়েছিল। তাদের বেশির ভাগই ছিল মুশরিক।’ (সুরা : রুম, আয়াত : ৪১-৪২)

তাই মুমিনের উচিত সব ধরনের গুনাহ থেকে বিরত থাকা এবং গুনাহর কাজে কাউকে সহযোগিতা করা থেকে সতর্ক থাকা।

কারণ ইসলামে পরস্পর সহযোগিতার ভিত্তি হলো তাকওয়া। সৎকাজে একে অপরকে সহযোগিতা করা জরুরি। তবে গুনাহর কাজে তথা আল্লাহর নাফরমানির কাজে সহযোগিতা করা নিষেধ। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘সৎকর্ম ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পরের সহযোগিতা করো। মন্দকর্ম ও সীমা লঙ্ঘনে পরস্পরের সহযোগিতা কোরো না।
আর আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ আজাব প্রদানে কঠোর।’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ২)

গুনাহর কাজে সহযোগিতার সবচেয়ে ভয়ংকর দিক হলো, তা বান্দার আমলনামায় বহুগুণে গুনাহ যোগ করতে থাকে, তার সহযোগিতার কারণে যদি কোনো গুনাহর প্রচলন ঘটে যায়, তাহলে মানুষ যত দিন সে গুনাহে লিপ্ত থাকবে, সাহায্যকারী তত দিন গুনাহে লিপ্ত সব মানুষের গুনাহের সমপরিমাণ গুনাহের ভাগীদার হবে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি হেদায়েতের দিকে ডাকে, সে তার অনুসারীদের সমপরিমাণ সওয়াব পাবে এবং তাতে তার অনুসারীদের পুরস্কারে কোনোরূপ ঘাটতি হবে না। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বান করে, তার জন্য তার অনুসারীদের সমপরিমাণ গুনাহ হয় এবং এতে তার অনুসারীদের পাপের বোঝা কিছুমাত্র কমবে না।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২০৬)

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যদি কোনো ব্যক্তি অত্যাচারিত হয়ে খুন হয়, তাহলে সেই খুনের একাংশ (পাপ) আদম (আ.)-এর প্রথম পুত্রের (কাবিল) ওপর বর্তায়। কেননা সে সর্বপ্রথম খুনের প্রথা প্রচলন করেছিল। (মুসলিম, হাদিস : ৪২৭১)

অতএব, আমাদের সবার দায়িত্ব গুনাহ থেকে বিরত থাকা এবং আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন এমন কাজে অংশগ্রহণের মাধ্যমে কাউকে সহযোগিতা করা থেকে বিরত থাকা।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ