ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে তাঁর দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি আলোচনার সম্ভাবনাকে ‘অর্থহীন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। দুই দেশের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা ও পাল্টাপাল্টি হুমকির মধ্যে তাঁর এই মন্তব্য সামনে এলো।
গত মাসে ট্রাম্প ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার আহবান জানান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিয়মিতভাবে ইরানকে সামরিক হামলার হুমকিও দিয়ে আসছেন।
গত সপ্তাহেই ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেছিলেন, ‘যদি তারা (ইরান) কোনো চুক্তি না করে, তাহলে বোমা হামলা হবে।’
আলোচনার আহ্বানে ওয়াশিংটনের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আরাগচি গতকাল রবিবার বলেন, ‘আপনারা যদি আলোচনাই চান, তাহলে হুমকি দেওয়ার কী মানে?’
ওয়াশিংটনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার সম্ভাবনা প্রত্যাখ্যান করলেও পরোক্ষ আলোচনার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়ে আসছে তেহরান। আরাগচির গতকালের বিবৃতি সেই মনোভাবেরই প্রতিফলন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদের নীতির প্রতিফলন ঘটিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগের অংশ হিসেবে ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।
মার্কিন প্রশাসন ইরানের তেল রপ্তানি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করার লক্ষ্যে ইরানের বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে আসছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই কৌশল ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে; যদিও ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে, তারা পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে চায় না। দেশটি দীর্ঘদিন ধরে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ইচ্ছার কথা অস্বীকার করে আসছে। পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে ৯০ শতাংশ পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়ামের প্রয়োজন হয়।
তবে তারা ৬০ শতাংশ পর্যন্ত পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এই পরিশুদ্ধতার মান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাছাকাছি উল্লেখ করে সতর্ক করেছে আইএইএ।
ইরান ২০১৯ সাল থেকে পারমাণবিক তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়েছে। এর এক বছর পর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে তেহরানের ২০১৫ সালে হওয়া পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। তিনি তখন ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
সূত্র : আলজাজিরা, এএফপি