<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কুলা বা কুলো শস্যাদি ঝাড়ার ডালাবিশেষ একটি পাত্র বিশেষ। বাঁশের চাটা দিয়ে এটি হাতে তৈরি করে থাকে গ্রামের কারিগররা। বড় সমতল চ্যাপটা এই কুলার আকৃতি অনেকটা ইংরেজি ডি অক্ষরের মতো। তিন দিকের বাঁকা অংশ উঁচু কানাওয়ালা হয়ে থাকে। সামনের সোজা দিকে কোনো কানা থাকে না। শস্যাদি এই কানা ছাড়া অংশ দিয়ে কুলায় তুলে ঝাড়া শেষে আবার এই দিকটি দিয়েই ঢেলে নেন গৃহিণীরা। গ্রামাঞ্চলে নবান্ন উৎসব থেকে শুরু করে গৃহস্থালির নানা কাজে কুলার বহুল ব্যবহার হয়ে থাকে। চাল বাছা, ধান থেকে খুড়কুটো আলাদা করা, মাটি থেকে আবর্জনা সংগ্রহসহ নানা কাজে কুলার ব্যবহার আছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছাই ফেলতে ভাঙা কুলা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বাগধারাটির কথা হয়তো এরই মধ্যে জেনেছ। কুলা ভেঙে গেলে এটি খাদ্যশস্য বাছার কাজের বদলে ছাই ফেলা, আবর্জনা ফেলার মতো কাজে ব্যবহার করা হয়। সেখান থেকেই উৎপত্তি হয়েছে বাগধারাটি। ঢেকিতে ধান ভানার সময়ও কুলা কাজে লাগে। বর্তমানে কুলার ব্যবহার দিন দিন কমে আসছে। বাঁশের দাম বেড়ে যাওয়া, পাশাপাশি প্লাস্টিকের তৈরি কুলা সহজলভ্য হওয়ায় কারিগররা বাঁশের কুলা তৈরিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন। তাতে একদিকে যেমন ঐতিহ্যবাহী এই বাঁশের কুলার কদর কমছে, অন্যদিকে প্লাস্টিকের কুলার কারণে পরিবেশদূষণ বাড়ছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গৃহস্থালির কাজ ছাড়াও শৌখিন আরো নানা কাজে কুলার ব্যবহার দেখা যায়। বাঁশের তৈরি কুলার ওপর সুঁই ও রঙিন সুতার সাহায্যে নানা ছবি, নকশা, ছড়া, ছন্দ, লেখা ফুটিয়ে তুলে দেয়ালসজ্জার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করেন গ্রামের নারীরা। বিশেষ করে বিয়ের তারিখ, সন্তানের জন্মদিন কুলার মধ্যে সুঁই-সুতায় লিখে ঘরে টাঙিয়ে রাখতে দেখা যায়। এ ছাড়া গায়েহলুদ ও বিবাহের নানা আচার-অনুষ্ঠানে কুলার ব্যবহার রয়েছে। কুলার মধ্যে হলুদ, পানপাতা, আমপাতা, দুর্বা ঘাস সাজিয়ে গায়েহলুদের অনুষ্ঠানের আচার সম্পন্ন করতে দেখা যায়। পাশাপাশি নৃত্যশিল্পেও কুলার ব্যবহার করেন শিল্পীরা। কোমরে, হাতে ও মাথায় কুলা দিয়ে নৃত্যের তালে তালে নাচতে দেখা যায় নৃত্যশিল্পীদের। এখনো গ্রামের হাটবাজার ও গ্রামীণ মেলায় কুলা বিক্রি করতে দেখা যায়। গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত কুলায় সাধারণত কোনো রং ও নকশা থাকে না। তবে গৃহসজ্জার জন্য ব্যবহৃত কুলায় লাল, হলুদসহ নানা রঙের নকশা মেলে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:right"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আতিফ আতাউর</span></span></strong></span></span></span></p>