বিশ্বজুড়ে শুল্ক আরোপের মাধ্যমে ট্রাম্প অর্থনৈতিক সংকট ডেকে আনছেন। এমনকি কানাডা ও মেক্সিকোতে আজকে অর্থনৈতিক সংকটের যে আভাস পাওয়া যাচ্ছে তার জন্য দায়ী ট্রাম্প। এমনটাই মনে করেন এই দুই দেশের বেশির ভাগ নাগরিক। কানাডা ও মেক্সিকোর নাগরিকদের বড় একটি অংশ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা শুল্ক আরোপের পক্ষপাতী এবং এখন অনেকেই দেশটিকে আর মিত্র নয়, বরং ‘শত্রু’ হিসেবে দেখছেন।
গত শনিবার প্রকাশিত ‘দ্য থ্রি অ্যামিগোস সার্ভে’ নামের একটি জরিপে এই চিত্র দেখা গেছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছেন, তাঁরা বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের জন্য মার্কিন জনগণকে নয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দায়ী করছেন। জরিপ অনুসারে ৬৪ শতাংশ কানাডিয়ান ও ৫৯ শতাংশ মেক্সিকান এমনটাই মনে করেন।
তবে এই ভিন্নমত থাকা সত্ত্বেও ৪৩ শতাংশ কানাডিয়ান ও ৩৫ শতাংশ মেক্সিকান যুক্তরাষ্ট্রকে এখন ‘শত্রু দেশ’ হিসেবে বিবেচনা করছেন।
শুল্কসংক্রান্ত বিষয়ে ৮৭ শতাংশ কানাডিয়ান ও ৮৪ শতাংশ মেক্সিকান মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ওপর শুল্ক আরোপ তাদের নিজ নিজ দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দারাও শুল্ক নিয়ে বিভক্ত মতামত পোষণ করেছেন। ৫২ শতাংশ মনে করেন এসব শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর হবে। অন্যদিকে ২৯ শতাংশ মনে করেন এতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
অর্থনৈতিক ইস্যু নিয়ে এই জরিপটি ২৮ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত পরিচালিত হয় কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে। এতে অংশ নেন যথাক্রমে এক হাজার ৬২৮ জন কানাডিয়ান ও এক হাজার ১৩ জন মার্কিন নাগরিক। পাশাপাশি ২৬ থেকে ৩১ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত মেক্সিকোতে জরিপে অংশ নেন এক হাজার তিনজন, যাঁদের বয়স ছিল ১৮ বা তার বেশি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অর্থনৈতিক স্বাধীনতা’ এনে দিতে বিশ্বজুড়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে শুল্কের খড়্গ চাপিয়েছেন, তার ধাক্কা সামলাতে হবে মার্কিনদেরও। গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা জারি করে ট্রাম্প দেশটিতে প্রবেশ করা শত শত কোটি ডলারের পণ্যে ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন।
যেসব দেশকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘সবচেয়ে খারাপ’ বলে বিবেচনা করেছেন, সেসব দেশের ওপর তিনি চাপিয়েছেন ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কের বোঝা।
এতে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের যেসব দেশ থেকে নিয়মিত পণ্য কিনে থাকে সেসব দেশের প্রায় সবাই দেশটিতে রপ্তানি করা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে পোশাক থেকে শুরু করে কফি—সব কিছুতেই বাড়তি অর্থ গুনতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষকে। সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি, রয়টার্স