বান্দার সৌভাগ্যের মূল ভিত্তি হলো, আল্লাহর ভালোবাসা। যার অন্তরে মহান আল্লাহর ভালোবাসা আছে, তার আত্মা প্রশান্ত হয়। তার অন্তরে হিদায়াতের আলো প্রজ্বলিত হয়। তার দুনিয়া ও আখিরাত সাফল্যমণ্ডিত হয়।
বান্দার সৌভাগ্যের মূল ভিত্তি হলো, আল্লাহর ভালোবাসা। যার অন্তরে মহান আল্লাহর ভালোবাসা আছে, তার আত্মা প্রশান্ত হয়। তার অন্তরে হিদায়াতের আলো প্রজ্বলিত হয়। তার দুনিয়া ও আখিরাত সাফল্যমণ্ডিত হয়।
তাই তো নবীজি (সা.) মহান আল্লাহর ভালোবাসা বৃদ্ধির দোয়া করতেন। তিনি দোয়া করতেন—‘হে আল্লাহ! আমি আপনার ভালোবাসা, আপনার প্রেমিকদের ভালোবাসা এবং সেই আমলের ভালোবাসা চাই, যা আমাকে আপনার মহব্বতের নিকটবর্তী করবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩২৩৫)
কারণ আল্লাহ যখন কোনো বান্দাকে ভালোবাসে তখন আসমানের অধিবাসীরাও তাকে ভালোবাসতে শুরু করে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা যদি কোনো বান্দাকে ভালোবাসেন তখন জিবরাইল (আ.)-কে ডাক দেন এবং বলেন, নিশ্চয়ই আমি অমুক লোককে ভালোবাসি, তুমিও তাকে ভালোবাস।
এই হাদিসটি দেখলে পবিত্র কোরআনের সেই আয়াতটি মনে পড়ে যায়, যেখানে আল্লাহ বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনে এবং সত্ কাজ করে, পরম করুণাময় অবশ্যই তাদের জন্য (বান্দাদের হৃদয়ে) ভালোবাসা সৃষ্টি করবেন।’ (সুরা : মারইয়াম, আয়াত : ৯৬)
বর্তমান যুগে চারদিকে ফিতনা ছড়িয়ে পড়েছে, মানুষের মধ্যে গাফিলতি জেঁকে বসেছে, দুনিয়াবি আকর্ষণে মানুষের মনে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের উচিত আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়া এবং তাঁর মহব্বত অর্জনের উপায় অনুসন্ধান করা।
নিম্নে আল্লাহর ভালোবাসা অর্জনের কিছু উপায় তুলে ধরা হলো—
কোরআন তিলাওয়াত : পবিত্র কোরআনের তিলাওয়াত এবং তা নিয়ে গবেষণা মানুষকে কল্যাণের দিকে ধাবিত করে। তাই আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা বাড়াতে বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করা যেতে পারে।
ফরজ ইবাদতের পাশাপাশি নফল আমল করা : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ বলেন, ...আমার বান্দা সর্বদা নফল ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকবে। এমনকি অবশেষে আমি তাকে আমার এমন প্রিয় পাত্র বানিয়ে নিই যে আমিই তার কান হয়ে যাই, যা দিয়ে সে শোনে...। (বুখারি, হাদিস : ৬৫০২)
নিজের ইচ্ছার চেয়ে আল্লাহর ইচ্ছাকে অগ্রাধিকার দেওয়া : নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তিনটি জিনিস যার মধ্যে পাওয়া যায়, সে ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করবে—(১) আল্লাহ ও তাঁর রাসুল তার কাছে সর্বাধিক প্রিয় হওয়া, (২) কাউকে কেবল আল্লাহর জন্য ভালোবাসা, (৩) কুফরে ফিরে যাওয়া এতটাই অপছন্দ করা, যেমন—আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়া অপছন্দ করে।’ (বুখারি, হাদিস : ১৬)
আল্লাহর সুন্দর নাম ও গুণাবলি সম্পর্কে জানা : আল্লাহর গুণবাচক নাম সম্পর্কে জানা এবং সেগুলোর অর্থ ও গুরুত্ব অনুধাবনের চেষ্টা করা। কেননা মহান আল্লাহ বলেছেন, বান্দাদের মধ্যে কেবল জ্ঞানীরাই আল্লাহকে ভয় করে। (সুরা : ফাতির, আয়াত : ২৮)
আল্লাহর অসংখ্য নিয়ামতের কথা স্মরণ করা : কারণ আমাদের যা কিছু আছে, সব তাঁরই দেওয়া, ভালোবাসার উপযুক্ত একমাত্র তিনিই। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের কাছে যে কোনো নিয়ামত আছে, তা আল্লাহর পক্ষ থেকে।’
(সুরা : নাহল, আয়াত : ৫৩)
আল্লাহওয়ালাদের সাহচর্য গ্রহণ করা : রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মানুষ তার বন্ধুর ধ্যান-ধারণার অনুসরণ করে থাকে, তাই তোমাদের প্রত্যেককে দেখা উচিত কাকে সে বন্ধু বানাচ্ছে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৭৮)
সম্পর্কিত খবর
আয়াতের অর্থ : ‘তোমাদের মধ্যে যারা আইয়িম (জীবনসঙ্গীহীন) তাদের বিয়ে সম্পাদন কোরো এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা সৎ তাদেরও। তারা অভাবগ্রস্ত হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। যাদের বিয়ের সামর্থ্য নেই, আল্লাহ তাদের নিজ অনুগ্রহে অভাবমুক্ত না করা পর্যন্ত তারা যেন সংযম অবলম্বন করে এবং তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীদের মধ্যে কেউ তার মুক্তির জন্য লিখিত চুক্তি চাইলে তাদের সঙ্গে চুক্তিতে আবদ্ধ হও...’ (সুরা : নুর, আয়াত : ৩২-৩৩)
আয়াতদ্বয়ে বিয়েতে অভিভাবকের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
শিক্ষা ও বিধান
১. হানাফি মাজহাব অনুসারে সাবালক নারী ও পুরুষ নিজে নিজে বিয়ে করলে তা বৈধ। যদিও তা অপছন্দনীয়।
২. ইসলামের শিক্ষা হলো নারী ও পুরুষ উভয়ে অভিভাবকের মাধ্যমে বিয়ে করবে। সাবালক ব্যক্তিও যদি অভিভাবক ছাড়া বিয়ে করে, তবে তাকে তিরস্কার করা হবে।
৩. বিয়ের সব ধরনের সক্ষমতা আছে এমন ব্যক্তি যদি বিয়ে না করলে গুনাহে লিপ্ত হওয়ার ভয় করে, তবে তার জন্য বিয়ে করা ওয়াজিব।
৪. বিয়ের চাহিদা অনুভব করে অথচ তার আর্থিক সামর্থ্য নেই এমন ব্যক্তি রোজা রাখবে।
৫. আয়াত দ্বারা বোঝা যায়, অধীন ব্যক্তিদের বিয়ের উদ্যোগ ও ব্যবস্থা গ্রহণ করা অভিভাবকদের দ্বিনি দায়িত্ব। (মাআরেফুল কোরআন : ৬/৪০২)
সুরা : আহজাব
এই সুরায় সামাজিক জীবনের বিভিন্ন শিষ্টাচার, আহজাব যুদ্ধ ও বনি কুরাইজা সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। শুরুর দিকে দত্তক নেওয়া শিশুর বিধান সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। মহানবী (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের বিশেষ মর্যাদার কথা তুলে ধরা হয়েছে। পর্দার বিধান বর্ণনা করা হয়েছে।
আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত
১. ওহির অনুসরণ করো। (আয়াত : ২)
২. মুমিনের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। (আ. : ৩)
৩. মানুষকে পিতৃপরিচয়ে ডাকো। (আ. : ৫)
৪. পৃষ্ঠপ্রদর্শন কোরো না।
৫. রাসুল (সা.)-এর জীবনে রয়েছে উত্তম আদর্শ। (আয়াত : ২১)
৬. রাসুল (সা.)-এর আনুগত্যে দ্বিগুণ পুরস্কার। (আয়াত : ৩১)
৭. পরপুরুষের সঙ্গে কোমল ভাষায় কথ বোলো না। (আয়াত : ৩২)
৮. তোমরা ঘরে অবস্থান কোরো। (আ. : ৩৩)
৯. মুহাম্মদ (সা.) শেষ নবী।
১০. সকাল-সন্ধ্যা আল্লাহর জিকির কোরো। (আয়াত : ৪১-৪২)
১১. আমন্ত্রণকারীর অনুমতি ছাড়া ঘরে প্রবেশ কোরো না। (আয়াত : ৫৩)
১২. নারীদের কাছে চাইতে হবে আড়াল থেকে। (আয়াত : ৫৩)
১৩. রাসুল (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠ কোরো। (আয়াত : ৫৬)
১৪. মানুষকে কষ্ট দিয়ো না। গুজব রটিয়ো না। (আয়াত : ৫৮ ও ৬০)
১৫. সদা সত্য কথা বলো। (আয়াত : ৭০)
সুরা : সাবা
মহান আল্লাহর হামদ পাঠের মাধ্যমে এই সুরা শুরু করা হয়েছে। এরপর এ কথার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে যে কিয়ামত অবশ্যই কায়েম হবে। তারপর দাউদ ও সুলায়মান (আ.)-এর ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। পাখি ও পাহাড় দাউদ (আ.)-এর সঙ্গে মহান আল্লাহর তাসবিহ পাঠ করত। আর বাতাস সুলায়মান (আ.)-এর অধীন ছিল। এরপর ইয়েমেনের সাবা নগরীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মুশরিকদের ঈমানের দাওয়াত দিয়ে সুরাটি শেষ করা হয়েছে।
আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত
১. আল্লাহর আয়াত মিথ্যা প্রমাণের চেষ্টা কোরো না। (আয়াত : ৫)
২. জ্ঞানীরা কোরআনের সত্যতা নিয়ে সংশয় রাখে না। (আয়াত : ৬)
৩. প্রাকৃতিক দুর্যোগ আল্লাহর অবাধ্যতার ফল। (আয়াত : ১৬)
৪. কারো পাপের দায় কেউ বহন করবে না। (আয়াত : ২৫)
৫. মহানবী (সা.) মানবজাতির জন্য সুসংবাদদাতা। (আয়াত : ২৮)
৬. মানুষের জীবনকাল নির্ধারিত। (আয়াত : ৩০)
৭. বিত্তশালীরাই দ্বিন থেকে বেশি বিমুখ। (আয়াত : ৩৪)
৮. আল্লাহ সত্যের দ্বারা অসত্যের বিলোপ ঘটান। (আয়াত : ৪৮)
সুরা : ফাতির
এই সুরায় সৃষ্টিজগতের বিভিন্ন বস্তু উল্লেখ করে আল্লাহর একত্ববাদের প্রমাণ দেওয়া হয়েছে। ওহি নিয়ে ফেরেশতাদের আগমন বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে। বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীদের অন্ধ ও চক্ষুষ্মানের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। বৃষ্টি, ফল-ফসল, কয়েক স্তরে মানবসৃষ্টি, নোনা পানি থেকে সাগরের মিঠা পানি পৃথক করা, রাত-দিনের একের পর এক আগমন, চন্দ্র-সূর্যের নির্দিষ্ট নিয়মের অধীন হওয়া, হরেক রকম বৃক্ষ ও প্রাণী ইত্যাদি বর্ণনা করে আল্লাহর অস্তিত্বের প্রমাণ দেওয়া হয়েছে। এই সুরায় মহানবী (সা.)-কে বাশির ও নাজির তথা সুসংবাদদানকারী ও সতর্ককারী ঘোষণা করা হয়েছে। মূর্তিপূজার অসারতা বর্ণনা করে সুরা শেষ করা হয়েছে।
আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত
১. আল্লাহর অনুগ্রহ স্বীকার কোরো। (আয়াত : ৩)
২. সন্তান আল্লাহর অনুগ্রহ। (আয়াত : ১১)
৩. সমুদ্রে আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধান কোরো। (আয়াত : ১২)
৪. আলো আর আঁধার কখনো সমান নয়। (আয়াত : ১৯-২১)
৫. জ্ঞানীরাই আল্লাহকে বেশি ভয় করে। (আয়াত : ২৮)
৬. দান করলে সম্পদ বৃদ্ধি পায়। (আয়াত : ৩০)
৭. কুফরি আল্লাহর ক্রোধ বৃদ্ধি করে। (আয়াত : ৩৯)
৮. আল্লাহ পাপীদের অবকাশ দেন, তবে তা নির্ধারিত কালের জন্য। (আয়াত : ৪৫)
গ্রন্থনা : মুফতি আতাউর রহমান
যেকোনো ইবাদত মুমিনের হৃদয়ে প্রশান্তি বয়ে আনে। তবে রোজা রেখে মুমিন অন্য সব ইবাদতের তুলনায় অধিক প্রশান্তি খুঁজে পায়। কেননা রোজাদারের জন্য আল্লাহ যে পুরস্কার ঘোষণা করেছেন তা যেমন প্রেমময়, তেমনি অতি সম্মানের। যেমন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা বলেন, মানুষের প্রতিটি কাজ তার নিজের জন্যই—রোজা ছাড়া।
রোজাকে আল্লাহ নিজের দিকে সম্বোধন করে বলেছেন, ‘রোজা আমার জন্য’। যা একজন আল্লাহপ্রেমী মুমিনের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
পৃথিবীর ভালো কাজের প্রতিদান ও মন্দ কাজের শাস্তি আল্লাহ নিজে দেন।
শায়খ ইবনে উসাইমিন (রহ.) বলেন, হাদিসটি নানাভাবে রোজার মর্যাদা প্রমাণ করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব আমলের মধ্যে রোজাকে নিজের জন্য বিশেষায়িত করেছেন। কেননা রোজার মাধ্যমে আল্লাহর জন্য বান্দার নিষ্ঠা প্রকাশ পায়। এ আমলের রহস্য আল্লাহ ও তাঁর বান্দা ছাড়া অন্যরা জানে না। সুতরাং আল্লাহর ভয়ে ও তাঁর প্রতিদান লাভের জন্য সে তা পরিহার করে। বান্দার এই নিষ্ঠার পুরস্কার হিসেবে আল্লাহ সব ইবাদতের মধ্যে নিজের বলে ঘোষণা দিয়েছেন। আল্লাহ সবাইকে রোজার প্রশান্তি অর্জনের তাওফিক দিন।
পূর্ব ইউরোপের দেশ মেসিডোনিয়ার জনসংখ্যা তিন কোটি। যার ৪০ ভাগই মুসলিম। ইউরোপের অমুসলিম দেশগুলোর মধ্যে মেসিডোনিয়ায়ই মুসলিম জনসংখ্যার হার সবচেয়ে বেশি। স্পেনে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ইউরোপের নানা দেশে মুসলিম ধর্মপ্রচারক ও জ্ঞানান্বেষীরা ছড়িয়ে পড়েন।
১৩৮২ খ্রিস্টাব্দে উসমানীয় শাসকরা মেসিডোনিয়া বিজয় করেন এবং তাঁদের সহযোগিতায় সেখানে দ্রুত ইসলাম ছড়িয়ে পড়ে। ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত প্রথম বলকান যুদ্ধ পর্যন্ত তুর্কিরাই কার্যত মেসিডোনিয়া শাসন করে।
মুসলিম শাসন অবসানের পর মেসিডোনিয়ার মুসলিম জনসংখ্যা ক্রমেই কমতে থাকে। ১৯২১ থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত মুসলিম জনসংখ্যা ৩১ ভাগ থেকে ২৪ ভাগে নেমে আসে।
মেসিডোনিয়া ইউরোপিয়ান দেশ হলেও এখানকার মুসলিম জীবনে তুর্কি সংস্কৃতির প্রভাবই বেশি।
বলকান অঞ্চলের মুসলিমদের মধ্যে মেসিডোনিয়ান মুসলিমরাই রমজানের আগমনে সবচেয়ে বেশি উল্লসিত হয়। মেসিডোনিয়ার সর্বস্তরের মুসলিম; এমনকি ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ও পণ্ডিতরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিলে রমজানকে স্বাগত জানায়। সাধারণ মানুষের মাঝে উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা ছড়িয়ে পড়ে। মসজিদে মসজিদে ধর্মীয় আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় বিশেষ অতিথিদের উপস্থিত করা হয়। কখনো কখনো বলকান অঞ্চলের অন্যান্য মুসলিম দেশ থেকে ইসলামিক স্কলারদের আমন্ত্রণ করা হয়।
বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের মুসলিমদের মতো রমজানে মেসিডোনিয়ান মুসলিমরাও ইবাদতে মনোযোগী হন। দিনরাতের দীর্ঘ সময় মসজিদে কাটায়। প্রতিটি মসজিদে তারতিলের সঙ্গে কোরআন খতম করা হয়। রমজান মাসে মেসিডোনিয়ার মুসলিমরা পারস্পরিক সম্পর্ক জোরালো করে। তারা পরস্পরের সঙ্গে দেখা করে উপহার দেয়। ধনীরা দরিদ্রদের মাঝে প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে। তারা তুর্কিদের মতো তোপধ্বনিতে রমজানকে স্বাগত জানায় এবং মসজিদগুলোয় আলোকসজ্জা করে। বর্ণিল আলোয় সাজিয়ে তোলে মসজিদগুলোকে। শেষ রাতে সাহরির জন্য পরস্পর জাগিয়ে দেওয়াও একটি মেসিডোনিয়ান মুসলিম সংস্কৃতি।
মেসিডোনিয়ার মুসলিমরা সম্মিলিতভাবে ইফতার করতেই পছন্দ করে। তারা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ইফতারের আয়োজন করেন। প্রত্যেকে তার সামর্থ্য অনুযায়ী তাতে অংশগ্রহণ করে। প্রতিটি ইফতারস্থলে শতাধিক মানুষ একত্র হয়। এসব ইফতার অনুষ্ঠানেই ধনীরা দরিদ্র ব্যক্তিদের হাতে তাঁদের জাকাত ও ফিতরার অর্থ তুলে দেন। রমজানের শুরু থেকেই তাঁরা জাকাত আদায় শুরু করেন। যেন দরিদ্র মুসলিমরা জাকাতের অর্থ পেয়ে স্বস্তির সঙ্গে রমজান কাটাতে পারে।
ইসলাম ওয়েব ডটনেক অবলম্বনে