প্রতিদিনের আমল

আল্লাহর কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাইবেন যেভাবে

ইসলামী জীবন ডেস্ক
ইসলামী জীবন ডেস্ক
শেয়ার
আল্লাহর কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাইবেন যেভাবে

পবিত্র রমজান মাসে মহান আল্লাহর কাছে জান্নাত চাওয়া এবং জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি চাওয়া সবার কর্তব্য। হাদিস শরিফে এ বিষয়ে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, 

ما سأل رجلٌ مسلمٌ اللهَ الجنةَ ثلاثًا، إلَّا قالتِ الجنةُ : اللهم أدخلْهُ الجنةَ، و لا استجارَ رجلٌ مسلِمٌ اللهَ منَ النارِ ثلاثًا، إلَّا قالتِ النارُ : اللهمَّ أجرْهُ منِّي

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যখন কোনো মুসলিম আল্লাহর কাছে তিনবার জান্নাত চায় তখন জান্নাত বলে, হে আল্লাহ, আপনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করান। যখন কোনো মুসলিম জাহান্নাম থেকে তিনবার মুক্তি চায় তখন জাহান্নাম বলে, হে আল্লাহ, আপনি তাকে মুক্তি দিন।

’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪০৪৩)

অন্য হাদিসে এসেছে, 

قالَ النَّبيُّ صلَّى اللَّهُ عليهِ وسلَّمَ لرَجُلٍ: كَيفَ تقولُ في الصَّلاةِ، قالَ: أتَشَهَّدُ وأقولُ: اللَّهمَّ إنِّي أسألُكَ الجنَّةَ، وأَعوذُ بِكَ منَ النَّارِ أما إنِّي لا أُحسنُ دَندنتَكَ ولا دَندنةَ مُعاذٍ فقالَ النَّبيُّ صلَّى اللَّهُ عليهِ وسلَّمَ: حولَها نُدَنْدنُ

আবু সালিহ (রহ.) কয়েকজন সাহাবি (রা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসুল (সা.) এক ব্যক্তিকে বললেন, তুমি নামাজে কী দেওয়া পাঠ কোরো? লোকটি বলল, আমি তাশাহুদ পড়ি। এবং এই দোয়া পড়ি: 

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল জান্নাতা ওয়া আউজুবিকা মিনাননার।

অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে জান্নাত চাচ্ছি এবং আপনার কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাচ্ছি।

বর্ণনাকারী বলেছেন, আমি আপনার ও সাহাবি মুয়াজ (রা.)-এর আওয়াজ স্পষ্টভাবে বুঝতে পারিনি।

নবী করিম (সা.) বলেন, ‘আমরা তার আশপাশে ঘুরি। অর্থাৎ জান্নাতের জন্য দোয়া করি। (আবু দাউদ, হাদিস : ৭৯২)

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আজকের নামাজের সময়সূচি, ২৪ মার্চ ২০২৫

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আজকের নামাজের সময়সূচি, ২৪ মার্চ ২০২৫

আজ সোমবার ২৪ মার্চ ২০২৫, ১০ চৈত্র ১৪৩১, ২৩ রমজান ১৪৪৬
ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়সূচি নিম্নরূপ—

জোহরের সময় শুরু ১২টা ৮ মিনিট। 

আসরের সময় শুরু - ৪টা ২৮ মিনিট।

মাগরিব- ৬টা ১৪ মিনিট।

এশার সময় শুরু - ৭টা ২৮ মিনিট।

আগামীকাল ফজর শুরু - ৪টা ৪৬ মিনিট।

আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত - ৬টা ২ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয়- ৬টা ১০ মিনিটে।

সূত্র : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকা।
 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
প্রশ্ন-উত্তর

কয়েকজন পালাক্রমে ইতিকাফ করে ১০ দিন পূরণ করলে হবে?

ইসলামী জীবন ডেস্ক
ইসলামী জীবন ডেস্ক
শেয়ার
কয়েকজন পালাক্রমে ইতিকাফ করে ১০ দিন পূরণ করলে হবে?
প্রতীকী ছবি

প্রশ্ন : আমাদের মসজিদে রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করার লোক খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই সবাই মিলে এটা নির্ধারণ করে নেয় যে লোকজন পালাক্রমে ১০ দিন ইতিকাফ করবে। প্রশ্ন হলো, এর দ্বারা এলাকার সবার পক্ষ থেকে ইতিকাফ আদায় হবে?

-মাসরুর, ঝিনাইদহ

উত্তর : ইতিকাফ মাসনুন আদায় হওয়ার জন্য একই ব্যক্তিকে রমজানের শেষের ১০ দিন ইতিকাফ করতে হয়। সুতরাং প্রশ্নে বর্ণিত পদ্ধতিতে ইতিকাফ আদায় হবে না, বরং মহল্লার সবার জিম্মায় সুন্নতে মুয়াক্কাদায়ে কিফায়া থেকে যাবে।

(বুখারি, হাদিস : ২০২৭, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ১৩/১৫২-১৫৬, ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ৫/৪৯০)

সমাধান : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা
 

মন্তব্য

মেসিডোনিয়ান মুসলিমদের ইফতার

মো. আবদুল মজিদ মোল্লা
মো. আবদুল মজিদ মোল্লা
শেয়ার
মেসিডোনিয়ান মুসলিমদের ইফতার
সংগৃহীত ছবি

পূর্ব ইউরোপের দেশ মেসিডোনিয়ার জনসংখ্যা তিন কোটি। যার ৪০ ভাগই মুসলিম। ইউরোপের অমুসলিম দেশগুলোর মধ্যে মেসিডোনিয়ায়ই মুসলিম জনসংখ্যার হার সবচেয়ে বেশি। স্পেনে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ইউরোপের নানা দেশে মুসলিম ধর্মপ্রচারক ও জ্ঞানান্বেষীরা ছড়িয়ে পড়েন।

তাঁদের মাধ্যমে মেসিডোনিয়া সর্বপ্রথম ইসলামের পরিচয় লাভ করে। মুসলিম ধর্মপ্রচারকরা সেখানে মসজিদ ও ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।

১৩৮২ খ্রিস্টাব্দে উসমানীয় শাসকরা মেসিডোনিয়া বিজয় করেন এবং তাঁদের সহযোগিতায় সেখানে দ্রুত ইসলাম ছড়িয়ে পড়ে। ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত প্রথম বলকান যুদ্ধ পর্যন্ত তুর্কিরাই কার্যত মেসিডোনিয়া শাসন করে।

উসমানীয় শাসকরা মেসিডোনিয়ায় বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। উসমানীয় শাসনামলে গড়ে তোলা পাঁচ শতাধিক মসজিদ এখনো মেসিডোনিয়ায় টিকে আছে।

মুসলিম শাসন অবসানের পর মেসিডোনিয়ার মুসলিম জনসংখ্যা ক্রমেই কমতে থাকে। ১৯২১ থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত মুসলিম জনসংখ্যা ৩১ ভাগ থেকে ২৪ ভাগে নেমে আসে।

১৯৭১ সাল থেকে মুসলিম জনসংখ্যা আবারও বাড়তে থাকে। বর্তমানে মেসিডোনিয়ার মুসলিম জনসংখ্যার হার ৪০ ভাগ, যা ২০৫০ সাল নাগাদ ৫৬ ভাগে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মেসিডোনিয়ার মুসলিম জনগণের বেশির ভাগই আলবেনীয় ও তুর্কি বংশোদ্ভূত। বাকিরা বসনিক ও স্থানীয়।

মেসিডোনিয়া ইউরোপিয়ান দেশ হলেও এখানকার মুসলিম জীবনে তুর্কি সংস্কৃতির প্রভাবই বেশি।

খাদ্যাভ্যাস থেকে শুরু করে ধর্মীয় উদযাপন পর্যন্ত সব কিছুতেই তারা তুর্কি সংস্কৃতির অনুসারী। দীর্ঘদিন তুর্কি শাসনাধীন থাকায় এর প্রধান কারণ। মূলত তুর্কি রীতি রমজান উদযাপন করে মেসিডোনিয়ার মুসলিমরা তাদের সোনালি অতীতকেই স্মরণ করে থাকে। বলকান অঞ্চলের মুসলিমদের মধ্যে মেসিডোনিয়ান মুসলিমরাই রমজানের আগমনে সবচেয়ে বেশি উল্লসিত হয়।

মেসিডোনিয়ার সর্বস্তরের মুসলিম; এমনকি ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ও পণ্ডিতরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিলে রমজানকে স্বাগত জানায়। সাধারণ মানুষের মাঝে উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা ছড়িয়ে পড়ে। মসজিদে মসজিদে ধর্মীয় আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। মসজিদে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় বিশেষ অতিথিদের উপস্থিত করা হয়। কখনো কখনো বলকান অঞ্চলের অন্যান্য মুসলিম দেশ থেকে ইসলামিক স্কলারদের আমন্ত্রণ করা হয়।

বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের মুসলিমদের মতো রমজানে মেসিডোনিয়ান মুসলিমরাও ইবাদতে মনোযোগী হন। দিনরাতের দীর্ঘ সময় মসজিদে কাটায়। প্রতিটি মসজিদে তারতিলের সঙ্গে কোরআন খতম করা হয়। রমজান মাসে মেসিডোনিয়ার মুসলিমরা পারস্পরিক সম্পর্ক জোরালো করে। তারা পরস্পরের সঙ্গে দেখা করে উপহার দেয়। ধনীরা দরিদ্রদের মাঝে প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে। তারা তুর্কিদের মতো তোপধ্বনিতে রমজানকে স্বাগত জানায় এবং মসজিদগুলোয় আলোকসজ্জা করে। বর্ণিল আলোয় সাজিয়ে তোলে মসজিদগুলোকে। শেষ রাতে সাহরির জন্য পরস্পর জাগিয়ে দেওয়াও একটি মেসিডোনিয়ান মুসলিম সংস্কৃতি।

মেসিডোনিয়ার মুসলিমরা সম্মিলিতভাবে ইফতার করতেই পছন্দ করে। তারা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ইফতারের আয়োজন করেন। প্রত্যেকে তার সামর্থ্য অনুযায়ী তাতে অংশগ্রহণ করে। প্রতিটি ইফতারস্থলে শতাধিক মানুষ একত্র হয়। এসব ইফতার অনুষ্ঠানেই ধনীরা দরিদ্র ব্যক্তিদের হাতে তাঁদের জাকাত ও ফিতরার অর্থ তুলে দেন। রমজানের শুরু থেকেই তাঁরা জাকাত আদায় শুরু করেন। যেন দরিদ্র মুসলিমরা জাকাতের অর্থ পেয়ে স্বস্তির সঙ্গে রমজান কাটাতে পারে।

ইসলাম ওয়েব ডটনেক অবলম্বনে

মন্তব্য

রোজার মাধ্যমে মুমিনের প্রশান্তি অর্জন

আলেমা হাবিবা আক্তার
আলেমা হাবিবা আক্তার
শেয়ার
রোজার মাধ্যমে মুমিনের প্রশান্তি অর্জন

যেকোনো ইবাদত মুমিনের হৃদয়ে প্রশান্তি বয়ে আনে। তবে রোজা রেখে মুমিন অন্য সব ইবাদতের তুলনায় অধিক প্রশান্তি খুঁজে পায়। কেননা রোজাদারের জন্য আল্লাহ যে পুরস্কার ঘোষণা করেছেন তা যেমন প্রেমময়, তেমনি অতি সম্মানের। যেমন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা বলেন, মানুষের প্রতিটি কাজ তার নিজের জন্যই—রোজা ছাড়া।

তা আমার জন্য, আমি নিজেই তার পুরস্কার দেব। আর রোজাদারদের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিসকের ঘ্রাণের চেয়ে বেশি সুগন্ধযুক্ত।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৯২৭)

রোজাকে আল্লাহ নিজের দিকে সম্বোধন করে বলেছেন, ‘রোজা আমার জন্য’। যা একজন আল্লাহপ্রেমী মুমিনের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

মুহাদ্দিসরা বলেন, রোজা ‘রিয়া’ বা প্রদর্শনপ্রিয়তামুক্ত হওয়ার কারণেই আল্লাহ তাকে নিজের দিকে সম্বোধন করেছেন।

ইমাম কুরতুবি (রহ.) বলেন, ‘অন্যান্য ইবাদতে ‘রিয়া’ (অন্যকে দেখানোর আগ্রহ) থাকলেও রোজার ক্ষেত্রে তা নেই। রোজা সম্পর্কে শুধু আল্লাহই জানেন। এ জন্য আল্লাহ রোজাকে নিজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করেছেন।

আর ইবনুল জাওঝি (রহ.) বলেন, ‘প্রায় সব আমলই কাজের মাধ্যমে প্রকাশ পায় এবং কাজগুলোর খুব কমই অন্যকে দেখানোর মোহ থেকে মুক্ত থাকে। কিন্তু রোজা এর বিপরীত।’

আল্লামা ইবনু আবদিল বার (রহ.) বলেন, অন্য সব ইবাদতের ওপর রোজার মর্যাদা প্রমাণের জন্য আল্লাহ বলেছেন, রোজা আমার জন্য। আবু উমামা (রা.)-কে রাসুলুল্লাহ (সা.) যেমনটি বলেছিলেন, ‘তুমি রোজাকে আঁকড়ে ধরো, যেহেতু এর কোনো বিকল্প নেই।’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২২২০)

পৃথিবীর ভালো কাজের প্রতিদান ও মন্দ কাজের শাস্তি আল্লাহ নিজে দেন।

তার পরও উল্লিখিত হাদিসে আল্লাহর ভাষ্যে বলা হয়েছে, আমি তার পুরস্কার দিই। হাদিসের ব্যাখ্যাকাররা বলেন, নিজে দেওয়ার দ্বারা রোজা বিশেষ মর্যাদা ও প্রতিদান প্রদান উদ্দেশ্য।

ইমাম কুরতুবি (রহ.) বলেন, আমলের সাধারণ হিসাব আল্লাহ মানুষের সামনে প্রকাশ করে দিয়েছেন। আল্লাহ নিজ ইচ্ছা অনুযায়ী আমলের প্রতিদান ১০ থেকে সাত শ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করেন। রোজা এর ব্যতিক্রম। আল্লাহ রোজাদারের জন্য সীমাহীন প্রতিদান রেখেছেন।

এক বর্ণনা অনুসারে আল্লাহ বলেছেন, আমিই রোজার প্রতিদান হয়ে যাই। একজন মুমিনের জন্য এর থেকে প্রশান্তি ও পরিতৃপ্তির কথা কী হতে পারে যে আল্লাহ তার জন্য হয়ে যাবেন!

শায়খ ইবনে উসাইমিন (রহ.) বলেন, হাদিসটি নানাভাবে রোজার মর্যাদা প্রমাণ করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব আমলের মধ্যে রোজাকে নিজের জন্য বিশেষায়িত করেছেন। কেননা রোজার মাধ্যমে আল্লাহর জন্য বান্দার নিষ্ঠা প্রকাশ পায়। এ আমলের রহস্য আল্লাহ ও তাঁর বান্দা ছাড়া অন্যরা জানে না। সুতরাং আল্লাহর ভয়ে ও তাঁর প্রতিদান লাভের জন্য সে তা পরিহার করে। বান্দার এই নিষ্ঠার পুরস্কার হিসেবে আল্লাহ সব ইবাদতের মধ্যে নিজের বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

আল্লাহ সবাইকে রোজার প্রশান্তি অর্জনের তাওফিক দিন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ