<p style="text-align:justify"><span style="color:#c0392b">শুভ্র ফুল ঝিণ্টি। নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এই ফুল ফোটে। আমাদের দেশে সাধারণত সাদা, লালচে ও বেগুনি রঙের ফুল দেখা যায়। সাদা ঝিণ্টি খাড়া, কাঁটাহীন, প্রায় এক মিটার উঁচু উপগুল্ম, শাখা রোমশ। গাছ ঝোপাল, অনেক ডালপালা, কাণ্ড কৌণিক, রোমশ ও সবুজ</span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শীতকালে ফুলের দীনতা প্রকৃতির মতো নিজের মনকেও অনুজ্জ্বল করে তোলে। তবে কখনো কখনো আবার প্রকৃতি চমকেও দিতে পারে। কয়েক বছর আগে এমনই ঘটনা ঘটেছিল শীতের একদিন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গাছ ভর্তি শুভ্র রঙের একটি ফুল দেখার পর ভেবেছিলাম, ভিনদেশি কোনো শীতের ফুল। অসংখ্য সাদা ফুল শুভ্র আভা ছড়িয়ে আলোকিত করে রেখেছে গোটা প্রাঙ্গণ। ফুলটি দেখে বেশ আনন্দ পেয়েছিলাম। এই ফুল আগে কখনো দেখিনি। স্থানীয় নাম ঝিণ্টি, জান্তি, ঝুটি বা বনপাথালি। ইংরেজি নাম </span><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">Philippine Violet, Crested Philippine Violet </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">. এটি আমাদের বুনো ফুল। একসময় ঢাকায়ও অঢেল ছিল। জন্মাত প্রাকৃতিকভাবে। রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চল এবং ঢাকার কোথাও কোথাও হলুদ রঙের ফুল দেখা গেলেও সাদা রঙের ফুল অনেকটাই দুষ্প্রাপ্য। বলধা গার্ডেনের সিবিলিতে নীলচে-বেগুনি এবং ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত বোটানিক্যাল গার্ডেনে হলুদ রঙের ফুল দেখা যায়। এদের লাল রঙের ফুলের নাম কুরুবক। রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কর্ণমূলে কুন্দকলি, করুবক মাথে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> অন্যত্র আছে </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কুরুবকের পরত চূড়া </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কালো কেশের মাঝে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাদা ঝিণ্টি </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">(Barleria cristata) </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খাড়া, কাঁটাহীন, প্রায় এক মিটার উঁচু উপগুল্ম, শাখা রোমশ। গাছ ঝোপাল, অনেক ডালপালা, কাণ্ড কৌণিক, রোমশ ও সবুজ। পাতা ডিম্ব-লম্বাকৃতি, অখণ্ড, চার থেকে সাত সেন্টিমিটার লম্বা, ওপরে সবুজ, নিচে হালকা রোমশ, বিন্যাস বিপ্রতীপ। পাতা সরল, প্রতিমুখ, সবৃন্তক, পত্রবৃন্ত এক থেকে আড়াই সেন্টিমিটার লম্বা, পত্রফলক উপবৃত্তাকার-দীর্ঘায়ত থেকে বল্লমাকৃতির ও অখণ্ড। স্পাইক যৌগিক, ঘন, ফুল চার থেকে সাত সেন্টিমিটার লম্বা। মঞ্জরিপত্র অনুপস্থিত, মঞ্জরিপত্রিকা পাঁচ মিলিমিটার লম্বা, কিনারা ঈষৎ দাঁতানো। বৃতি গভীরভাবে চার খণ্ডিত, পেছনের বৃত্তাংশ বৃহত্তর এবং প্রায় দেড় সেন্টিমিটার, ডিম্বাকৃতি-বল্লমাকার এবং স্পষ্টভাবে জালিকাকার। ফুল একক বা গুচ্ছবদ্ধ। দলনল ফানেল আকৃতির, দলমণ্ডল প্রায় পাঁচ সেন্টিমিটার লম্বা, বাইরে গ্রন্থিল-রোমশ, ধুতরাকৃতি এবং পাঁচ লতিযুক্ত। পুংকেশর চারটি, অসমান, অবিকশিত পুংকেশরগুলো পাঁচ মিলিমিটার লম্বা হতে পারে। পরাগধানী দীর্ঘায়ত ও দুই কোষবিশিষ্ট। রেশমি-বাদামি রঙের বীজগুলো গোলাকার। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ফুল ফোটার মৌসুম। আমাদের দেশে সাধারণত সাদা, লালচে ও বেগুনি রঙের ফুল দেখা যায়। ভারত, পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ঝিণ্টির বিস্তৃতি লক্ষ করা যায়। গাছের বিভিন্ন অংশ সর্পদংশনের প্রতিষেধক। তা ছাড়া কাশি ও শরীরের ফোলা কমাতে পাতার নির্যাস ব্যবহার্য। ভারতের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ এই গাছের মূল ও পাতার নির্যাস রক্তস্বল্পতা, কাশি ও প্রদাহ রোগে কাজে লাগায়। উদ্যান সজ্জায় এদের বর্ণবৈচিত্র্য কাজে লাগানো যেতে পারে। সাধারণত বেড়ার ধারেই এরা মানানসই।</span></span></span></span></span></p>