<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) এলাকায় ভবন নির্মাণে কোন বিধিমালা অনুসরণ করতে হবে সেটা নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে নকশা অনুমোদন প্রায় বন্ধ রয়েছে। আর এই কারণে সহস্রাধিক ভবন নির্মাণের নকশার অনুমোদন আটকে আছে। নকশা অনুমোদনে জটিলতাসহ ১০ দফার দাবি উঠেছে। বরিশাল নাগরিক অধিকার আন্দোলন সেই দাবি বাস্তবায়নের জন্য বিসিসিকে সাত দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সময়ের সঙ্গে বিসিসির ইমারত নির্মাণ বিধিমালা পাল্টেছে। এতে নাগরিক সুবিধার চেয়ে অনেকাংশে ভোগান্তিই বেড়েছে। কারণ বারবার বিধি পাল্টানোর কারণে নতুন বাড়ি তৈরির পরিকল্পনার নকশা অনুমোদন দীর্ঘ সময় আটকে থাকছে। তবে কর্মকর্তারা বলছেন, দুটো বিধিমালা অনুসরণ করতে গিয়ে অনুমোদনে সময় যাচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চাচা-ভাতিজার দ্বন্দ্বের কারণ : </span></span></strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিসিসির</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ চালু করেন। সেখানে ২০ ফুট দীর্ঘ রাস্তা না থাকলে বাড়ির নকশা অনুমোদন দিতেন না। তার আগে প্রকৌশলী ও বাড়ির মালিকরা বিধিমালা ১৯৯৬ অনুসারে করতেন। ফলে ২০০৮ বিধিমালার কারণে ১৯৯৬ সালের বিধিমালা অনুসরণকারীরা বিপাকে পড়েন। এমনকি ২০০৮ বিধিমালা কার্যকর নিয়ে নাগরিকদের মাঝেও একটা বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলে নকশা জমা দেওয়ার হার কমে যায়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাদিক আবদুল্লাহর চাচা আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচনী ইশতেহারে তিনি বাড়ির নকশা অনুমোদনের হয়রানি বন্ধের অঙ্গীকার করেছিলেন। তিনি দায়িত্ব নিয়ে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ বাদ দিয়ে ১৯৯৬-এর বিধিমালা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেন। ফলে যাঁরা আগে ২০০৮ অনুযায়ী আবেদন করেছিলেন, তাঁরা সেটি নিয়ে বিপাকে পড়েন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভুক্তভোগীরা যা বলছেন : </span></span></strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নগরীর</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বিএম কলেজ রো এলাকার বদিউজ্জামান নামের এক বাড়ির মালিক বলেন, ২০০৮-এর বিধিমালা মেনে বাড়ির নকশার কাজ করে অনুমোদনের জন্য জমা দিয়েছিলাম। পরবর্তী সময়ে সর্বশেষ মেয়রের সময় ১৯৯৬ বিধিমালা কার্যকর করা হয়। এতে নকশা আটকে যায়। এখনো সেই নকশা আটকে আছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অপর ভুক্তভোগী বাংলাবাজার এলাকার তানিয়া হামিদ বলেন, পাঁচ-ছয় মাস ধরে নকশা অনুমোদনের কাজের কোনো অগ্রগতি নেই।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নাগরিকদের ১০ দফা : </span></span></strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বরিশাল</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নাগরিক অধিকার আন্দোলনের ব্যানার গত বুধবার নগর ভবনের সামনে মানববন্ধন করে ১০ দফা দাবি তোলা হয়েছে। দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ১৯৯৬-এর উপবিধি (৭) অনুসারে ৪৫ দিনের মধ্যে নকশা অনুমোদন দিতে হবে। গেজেটবহির্ভূত ও অকার্যকর মাস্টার নকশার অজুহাত দাঁড় করানো বন্ধ করতে হবে। শহরের অধিকাংশ সড়কের প্রশস্ততা কম থাকায় গতানুগতিক ও প্রচলিত নিয়মে নকশা অনুমোদন দিতে হবে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ ছাড়া ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ১৯৯৬ বহির্ভূত ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র প্রথা বাতিল করতে হবে। নকশা অনুমোদনের ফি নির্ধারণ করতে হবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বরিশাল নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ১০ দফা দাবি আগামী সাত দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন না হলে বৃহত্তর আন্দোলন ঘোষণা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিসিসি যা বলছে : </span></span></strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিসিসির</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে এক থেকে ছয়তলা ভবনের নকশার জন্য আবেদন জমা আছে ৬৮০টি। আর সাততলা থেকে এর বেশি উচ্চতার ভবনের নকশার অনুমোদনের আবেদন জমা পড়েছে ৩৭টি। তবে ভবন নির্মাণের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, আটকে থাকা নকশার সংখ্যা এক হাজার ৪০০ কাছাকাছি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিসিসির রাজস্ব কর্মকর্তা বাবুল হাওলাদার বলেন, একটি বাড়ির জন্য পানির লাইন ও হোল্ডিংয়ের প্রয়োজন। আর এ দুটি খাত থেকেই আমাদের রাজস্ব আসে। ফলে নকশা পাসের সঙ্গে যেহেতু এ দুটি বিষয় সম্পৃক্ত, তাই কয়েক মাস ধরে এর প্রভাব রাজস্ব খাতেও পড়ছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী বলেন, যাচাই-বাছাই শেষে যেসব নকশা নিয়মের মধ্যে পাওয়া যাবে, সেগুলো পাস করে দেওয়া হবে। তবে দুটো বিধিমালা অনুসরণ করতে গিয়ে আনুমোদনে সময় যাচ্ছে। তাই অনেকের ধারণা, নকশা অনুমোদন হচ্ছে না।</span></span></p>