হঠাৎ মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ রংপুরের নাগরিক জীবন। নগরীর সেনপাড়া এলাকার বাসিন্দা মঞ্জু মিয়া জানান, পাঁচ দিন ধরে জ্বর ছেলে ও মেয়ের। ডেঙ্গু হলো কি না এই সন্দেহ তিনি ডাক্তার দেখাতে দুই সন্তানকে নিয়ে গেছেন রংপুর মেডিক্যালে।
গোমস্তাপাড়ার বাসিন্দা মনির হোসেন বলেন, পাশে শ্যামাসুন্দরীর ক্যানেল।
এই ক্যানেল মশা উৎপাদনের কারখানা। এখন শীতকাল শেষের পথে। চারপাশে মশার উৎপাত বাড়ছে, কিন্তু মশা নিধনে কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ে না। আগে কাউন্সিলর ছিলেন, সেখানে অভিযোগ দিতে পেরেছি, এখন সেই সুযোগও নেই।
শুধু মনির আর মঞ্জুর মিয়ার এলাকা নয়, প্রায় সব পাড়া-মহল্লায় একই অবস্থা। ইফতারি ও সেহরির সময় মানুষ মশার জ্বালায় নিদারুণ ভোগান্তিতে পড়ছে। কয়েল, স্প্রে ও ইলেকট্রিক ব্যাট ছাড়াও মশারি টানিয়েও মশার অত্যাচার থেকে রেহাই পাচ্ছে না তারা।
নগরবাসী বলছে, জনপ্রতিনিধি না থাকার কারণে সিটি করপোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছে।
আর সিটি করপোরেশন বলছে, এখন প্রজনন মৌসুম বলে মশার উৎপাত বেড়েছে।
নগর ভবন সূত্র জানিয়েছে, মশার লার্ভা ধ্বংসের যে ওষুধ তা পর্যাপ্ত নেই। মশা নিধনের ওষুধ কিনতে সম্প্রতি টেন্ডার হওয়ার কথা থাকলেও তা এখনো হয়নি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দিনের বেলায় খোলা জায়গায় বসে থাকলেও মশার ভনভন শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে মানুষ। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে মশার এ উপদ্রব বেড়ে যায় কয়েক গুণ।
নগরীর আরসিসিআই এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, ‘এই শহরে ২৫ বছর ধরে বাস করছি। এত মশা এই শহরে আর দেখিনি। পাঁচ মিনিটের জন্যও ঘরের জানালা খোলা পেলে, সব মশা এসে ঢুকে পড়ছে।’
তবে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, ড্রেন পরিষ্কার করে স্প্রে মেশিনের মাধ্যমে লার্ভিসাইড ওষুধ ছিটানো হচ্ছে মশার ডিম ধ্বংসের জন্য।
রংপুর সিটি করপোরেশনের (রসিক) মশোক নিধন কার্যক্রমের প্রধান ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।’
লার্ভিসাইড ওষুধ ও ফগার মেশিনের ওষুধের মজুদ যা আছে তাই দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। ওষুধ কিনতে দরপত্র আহবান করা হয়েছে। ওষুধ এলে মশক নিধন কার্যক্রম আরো জোরদার করা হবে।