ক্রীড়া প্রতিবেদক : কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে সাবিনা খাতুনসহ ১৮ ফুটবলার অনড় অবস্থান নিলে ভিন্ন পরিকল্পনায় যেতে হয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে। আরব আমিরাতে সফরে দল পাঠাতে হলে এ ছাড়া আর উপায়ও ছিল না। সাফ জেতা আটজনের সঙ্গে নতুন আরো ১৫ ফুটবলারকে নিয়ে দল সাজাতে হয়েছে বাটলারকে। আনকোরা দল নিয়ে তাই কোনো রকম উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল না।
বরং উন্নতির কথাই বারবার বলেছেন বাংলাদেশ কোচ। র্যাংকিংয়ে ১৬ ধাপ এগিয়ে থাকা দলের বিপক্ষে প্রত্যাশিত দুটি ম্যাচেই জুটেছে হার। তবে আফিদা খন্দকার-শাহেদা আক্তাররা যেভাবে খেলেছেন, পিছিয়ে পড়ে গোল করেছেন; এমন মানসিকতায় সন্তুষ্ট ফেডারেশন সভাপতি তাবিথ আউয়াল।
গতকাল দুপুরে মেয়েরা দেশে ফেরার পর বিকেলে বাফুফে ভবনে গিয়ে দেখা করেছেন তাবিথ।
সাক্ষাৎ পর্বে মেয়েদের উৎসাহ দিয়েছেন বাফুফে সভাপতি। নতুনদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি। মেয়েদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তাবিথ গণমাধ্যমে কথা বলেননি। তবে বাফুফে সহসভাপতি ফাহাদ করিম এ ব্যাপারে কালের কণ্ঠকে বলেছেন, “কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে লড়াই করার জন্য মেয়েদের অভিনন্দন জানিয়েছেন সভাপতি (তাবিথ)। মেয়েদের বলেছেন ‘গোল খেয়ে আবার গোল করা বড় ব্যাপার। এর মানে তোমরা হাল ছাড়নি। কখনো ভাববে না যে তোমরা বাইরের কেউ, তোমরা এই সফর থেকেই জাতীয় দলের খেলোয়াড়। যতটুকু শুনেছি এবং আমি বিশ্বাস করি, তোমরা ভালো খেলেছ।’ এ ছাড়া পরবর্তী সফর থেকে আরো সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।”
২৩ জনের যে দল আমিরাত গিয়েছিল তাঁদের মধ্যে বয়সভিত্তিকের পর জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা ছিল সেন্টার ব্যাক আফিদা ও ফরোয়ার্ড শাহেদা আক্তারের। দুজনের কাঁধেই ছিল গুরুদায়িত্ব, সঙ্গে নতুনদের পরিবেশ ও পরিস্থিতি বোঝানোর কাজটাও করতে হয়েছে। সিনিয়ররা না থাকায় চ্যালেঞ্জও বেশি ছিল বলে মানছেন মেয়েরা। সংকটের মুহূর্তে আমিরাত সফর অনেক কিছু শিখিয়েছে, বলছেন শাহেদা আক্তার, ‘আমিরাতের চার-পাঁচজন ওদের দেশের, অন্য সবাই প্রবাসী। ওরা শারীরিকভাবে আমাদের চেয়ে এগিয়ে। আর আমরা এই দল নিয়ে এবারই প্রথম মাঠে নেমেছি। অনেক কিছু শিখে এসেছি আমরা। আশা করি, ভবিষ্যতে কাজে লাগবে এটা।’
তিন সপ্তাহের প্রস্তুতিতে আমিরাতে যায় বাংলাদেশ দল। প্রস্তুতির ঘাটতির কথা বললেও এই দল নিয়ে আশাবাদী শাহেদা, ‘একসঙ্গে আরো কিছুদিন অনুশীলন করতে পারলে আমার মনে হয় আরো ভালো করতে পারতাম। সাফল্য তো এত তাড়াতাড়ি আসে না। সময় দিতে হবে। সময় দিলে আশা করছি এই দলও ভালো করবে।’ কোচ পিটার বাটলারও ধৈর্য ধরার কথা বলছেন, ‘এই সফর নিয়ে যদি বলি, মেয়েদের নিয়ে আমি ভীষণ গর্বিত। ফুটবলের সঙ্গে আমি দীর্ঘদিন আছি। জিততে হবে, জিততে হবে—আমি এই মানসিকতার নই। উন্নতি করতে হলে ধৈর্য ধরতে হবে।’ আপাতত ক্যাম্প বন্ধ থাকছে। ঈদের পর আবার ক্যাম্পে ফিরবেন মেয়েরা।