এলইডি বাল্ব দেখেই বোঝা যাবে কতটা বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
এলইডি বাল্ব দেখেই বোঝা যাবে কতটা বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী

কোনো কম্পানির এলইডি বাল্ব দেখেই গ্রাহকরা বুঝতে পারবেন যে সেটি বেশি, নাকি কম বিদ্যুৎ খরচ করবে। পাশাপাশি তুলনামূলক কম বিদ্যুতে বেশি আলো কোন কম্পানির বাল্বে পাওয়া যাবে তা চিহ্নিত করবে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। এই মান প্রণয়ন করার পর কম্পানিভেদে স্টার রেটিংও দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে সম্প্রতি রাজধানীর গুলশান-২-এ অবস্থিত হোটেল ওয়েস্টিনে ‘মিনিমাম এনার্জি পারফরম্যান্স স্ট্যান্ডার্ডস (এমইপিএস) ফর এলইডি অ্যান্ড লুমিনারিজ’ বিষয়ক একটি টেকনিক্যাল কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

সেখানে জানানো হয়, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের বিষয়টি প্রাধান্য দিয়ে কম বিদ্যুতে বেশি আলো উৎপন্ন হয় এমন এলইডি ল্যাম্পসের স্ট্যান্ডার্ড প্রণয়ন করবে (বিএসটিআই)। বিএসটিআইয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এখন বাজারে মানসম্পন্ন এলইডি আছে। কিন্তু এখন প্যাকেট গায়ে স্টার রেটিং দিয়ে গ্রাহকদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে কোনটা বেশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। এতে কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে মানদণ্ডও নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।
যাতে অংশীজনদের মতামতও নেওয়া হবে। যাতে বিদ্যুৎ খরচের সর্বনিম্ন কর্মদক্ষতা বাল্বগুলোতে বজায় থাকে। এতে সর্বোচ্চ পাঁচতারা দেওয়া হবে। কম্পানিগুলোর তৈরি করা বাল্বের কর্মদক্ষতা অনুযায়ী এই রেটিং দেওয়া হবে।
কোন কম্পানি তিনতারা পেল। তখন গ্রাহকরা বুঝতে পারবে, ওই বাল্ব সর্বোচ্চ ভালো মানের না। আর কম্পানিও বুঝতে পারবে আরো বেশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাল্ব বানাতে হবে। এতে বাজারে যেসব নিম্নমানের বাল্ব আছে সেগুলো দূর হয়ে যাবে। ওই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ক্ল্যাসপ ও বিএসটিআই।

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ট্রাম্পের শুল্কারোপ

অপ্রত্যাশিত বাণিজ্যযুদ্ধ এড়াতে কী ভাবছে দেশগুলো

বাণিজ্য ডেস্ক
বাণিজ্য ডেস্ক
শেয়ার
অপ্রত্যাশিত বাণিজ্যযুদ্ধ এড়াতে কী ভাবছে দেশগুলো

যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব বাণিজ্যিক অংশীদারের ওপর বহুল আলোচিত পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই পদক্ষেপ বিশ্ব অর্থনীতির বিদ্যমান ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়ে বাণিজ্যযুদ্ধের সূত্রপাত করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তবে যেকোনো ধরনের বাণিজ্যযুদ্ধ এড়িয়ে চলতে চান বলে মত দিয়েছেন শুল্কের আওতাধীন কয়েকটি দেশের নেতারা। ভিন্নমতও রয়েছে অনেক দেশের।

গত বুধবার হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। শত্রু-মিত্র পরোয়া না করে তিনি প্রায় সব দেশের ওপরই শুল্কারোপ করেন।

অপ্রত্যাশিত বাণিজ্যযুদ্ধ এড়াতে কী ভাবছে দেশগুলোনির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্প বলেছিলেন, যেসব দেশ মার্কিন পণ্যে শুল্কারোপ করে, সেসব দেশের পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্কারোপ করবেন। সেই কথাই রেখেছেন তিনি।

আবার সমপরিমাণ না করে অর্ধেক শুল্কারোপ করে নিজের উদারতার পরিচয় দিয়েছেন এমন দাবিও নিজেই করেন ট্রাম্প। যেমন : বাংলাদেশ মর্কিন পণ্যে ৭৪ শতাংশ শুল্কারোপ করে দাবি করে এর জবাবে তিনি বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক বেঁধে দিয়েছেন।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতিতে সব ধরনের আমদানির ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্কের একটি ভিত্তি রেখাও দেওয়া হয়েছে।

পাল্টা পদক্ষেপ নিয়ে কী ভাবছে দেশগুলো

যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশ যুক্তরাজ্যের পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্কারোপ করেছেন ট্রাম্প।

জবাবে দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী জোনাথন রেনল্ডস বলেন, ওয়াশিংটন এখনো তাঁদের ঘনিষ্ঠ মিত্র। দেশটির আরোপিত শুল্কের প্রভাব কমাতে যুক্তরাজ্য একটি বাণিজ্যচুক্তি করতে আগ্রহী।

রেনল্ডস বলেন, কেউই বাণিজ্যযুদ্ধ চায় না। আমাদের উদ্দেশ্য একটি চুক্তি নিশ্চিত করা। তবে বিকল্প পদক্ষেপ নিয়েও প্রস্তুতি রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের স্বার্থ সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় সব কিছুই করবে যুক্তরাজ্যের প্রশাসন।

অনেকটা একই সুরে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের আরেক মিত্র জাপান। শুল্কারোপের বিষয়টি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করার কথা জানিয়েছেন জাপানের প্রধান মন্ত্রিপরিষদসচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি।তিনি জানান, প্রতিশোধমূলক কোনো পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র-জাপানের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এ কারণে টোকিও এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার থেকে বিরত থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই উদ্যোগ না যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির জন্য ফলপসূ হবে, না যেসব দেশের ওপর আরোপ করা হয়েছে তাদের কোনো কাজে আসবে।

অন্যদিকে ট্রাম্পের আরোপিত ১০ শতাংশ শুল্কের জবাবে পাল্টা শুল্কারোপের কথা জানিয়েছে ব্রাজিল প্রশাসন। দেশটির পার্লামেন্টে এ সম্পর্কিত একটি বিলও পাস করা হয়েছে। একই পথে হাঁটতে চলেছেন কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী ম্যাক কার্নি। তিনিও পাল্টা শুল্কারোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এ ছাড়া পাল্টা পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী।

ক্ষতি কমাতে কী করতে পারে দেশগুলো : এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকেই যুক্তরাষ্ট্র বেশির ভাগ পণ্য আমদানি করে থাকে। ট্রাম্পের শুল্কারোপের কারণে নিজ দেশের অর্থনীতির নেতিবাচক প্রভাব এড়াতে গাড়ি নির্মাতাসহ অন্য ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোতে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে বৃহৎ রপ্তানিকারক দেশগুলো।

দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক ধার্য করেছেন ট্রাম্প। এতে সেখানকার অর্থনীতিতে কেমন প্রভাব পড়তে পারে, সে সম্পর্কে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হান ডাক সু নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী। এর ফলে তাঁরা অতিরিক্ত শুল্কের নেতিবাচক প্রভাব কমাতে পারবেন বলে আশা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

ট্রাম্প ক্ষমতায় এসেই চীনা পণ্যে শুল্কারোপ করে যাচ্ছেন। চুপ হয়ে বসে নেই বেইজিংও। ট্রাম্পের শুল্কের জবাবে তারাও পাল্টা শুল্কারোপ করেছে। এবারও পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বেইজিং। পাশাপাশি একতরফাভাবে শুল্কারোপ না করে অংশীদার দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বাণিজ্যিক সমস্যাগুলো সমাধান করতে ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীন।

যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে ট্রাম্পের আরোপিত নতুন এই শুল্ক মেক্সিকোর ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, তা পর্যবেক্ষণ করবেন বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেনবাম। তিনি বলেন, ‘কেউ আমাদের ওপর শুল্কারোপ করলেই যে একই কাজ আমাদেরও করতে হবে; এমন কোনো কথা নেই। আমাদের দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে যা কিছু প্রয়োজন, আমরা তাই করব। এটিই আমাদের উদ্দেশ্য।’ সূত্র : এপি, ইউএনবি

মন্তব্য

ঠাকুরগাঁওয়ে গম চাষ ছাড়ছেন কৃষকরা

    ♦ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কৃষকরা নতুন ফসলের দিকে ঝুঁকছেন ♦ দিন দিন কমছে গম চাষের জমি। সরকারি সহায়তার অভাব ♦ অনেকেই ভুট্টা, আলু আর সবজি চাষ করছেন ♦ গম চাষ বিলীন হওয়ার শঙ্কা কৃষি বিশেষজ্ঞদের
আরিফ হাসান, ঠাকুরগাঁও
আরিফ হাসান, ঠাকুরগাঁও
শেয়ার
ঠাকুরগাঁওয়ে গম চাষ ছাড়ছেন কৃষকরা

একসময় দেশের ‘গমের রাজধানী’ নামে পরিচিত ছিল ঠাকুরগাঁও। জেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে দোল খেত সোনালি গমের শীষ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বদলে গেছে বাস্তবতা। গম চাষ এখন যেন অস্তিত্বের সংকটে।

ধান, ভুট্টা, সরিষা, আলুসহ বিভিন্ন অর্থকরী ফসলের চাপে গম চাষ যেন কোণঠাসা হয়ে পড়েছে।

উৎপাদনে দেশের শীর্ষে থাকা ঠাকুরগাঁওয়েই আজ গম সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কৃষকরা নতুন ফসলের দিকে ঝুঁকছেন। যার ফলে গম চাষের জমি দিন দিন কমছে।

কৃষকরা বলছেন, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, জলবায়ুর পরিবর্তন, রোগবালাইয়ের প্রকোপ, আধুনিক জাতের সংকট এবং সরকারিভাবে পর্যাপ্ত সহায়তার অভাবের কারণে তাঁরা গম চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে আগামী দশকে ঠাকুরগাঁওয়ে গম চাষ প্রায় বিলীন হয়ে যেতে পারে।

উৎপাদন কমছে, কৃষকদের হতাশা বাড়ছে : ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে জেলায় গম চাষ হতো প্রায় ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় ৬৮ হাজার ৫৬০ হেক্টরে।

আর ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এসে গমের আবাদ নেমে এসেছে মাত্র ২১ হাজার ৫০ হেক্টরে।

সদর উপজেলার কৃষক মো. আবুল কালাম বলেন, ‘আগে গম চাষ করেই ভালো লাভ হতো। এখন উৎপাদন খরচ বেশি, দাম তুলনামূলকভাবে কম। রোগবালাই ও অনাবৃষ্টির কারণে ফলনও কমে যায়। তাই বাধ্য হয়ে ভুট্টা বা সরিষার দিকে ঝুঁকতে হচ্ছে।

রানীশংকৈল উপজেলার কৃষক মো. মানিক মিয়া বললেন, ‘ধান চাষে লাভ নেই, গম চাষেও ঝামেলা বাড়ছে। এখন অনেকেই ভুট্টা, আলু আর সবজি চাষ করছে, কারণ সেগুলোতে লাভ বেশি।’

যে কারণে কমছে গম চাষ : শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. বেলাল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘একসময় উত্তরবঙ্গে ব্যাপক হারে গম চাষ হতো। বিশেষ করে ঠাকুরগাঁও জেলায় সবচেয়ে বেশি গম চাষ হতো। কিন্তু গত কয়েক দশক ধরে নানা কারণে গম চাষ কমে গেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো আবহাওয়া পরিবর্তন এবং কৃষকদের বিকল্প ফসলের দিকে ঝোঁক।’ তিনি আরো বলেন, ‘গমের পরিবর্তে কৃষকরা এখন ভুট্টা, আলু, সরিষা ও অন্যান্য অর্থকরী ফসলের দিকে ঝুঁকছেন। কারণ এসব ফসলের উৎপাদন বেশি হয় এবং বাজারদরও ভালো। ফলে গম চাষ থেকে কৃষকরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।’

ভুট্টা ও অন্যান্য ফসলের দাপট : কৃষকদের ভাষ্য মতে, গমের তুলনায় ভুট্টা চাষ সহজ, ফলন ভালো হয় এবং বাজারদরও ভালো। ফলে তাঁরা গম ছেড়ে ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কৃষক আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘গমের চেয়ে ভুট্টার দাম ভালো, চাষ করতেও সুবিধা। তাই গম বাদ দিয়ে ভুট্টা করছি। শুধু আমি নই, আশপাশের সবাই এখন গম ছেড়ে অন্য ফসলে যাচ্ছে।’

সরকারি তথ্য মতে, ঠাকুরগাঁওয়ে ভুট্টার আবাদ প্রতিবছর বাড়ছে। কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভুট্টার পাশাপাশি সরিষা ও আলুর আবাদও বাড়ছে, যা গম চাষের জমি কমিয়ে দিচ্ছে।

গম চাষ ধরে রাখতে হলে সরকারকে আরো উদ্যোগী হতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আধুনিক জাতের বীজ সরবরাহ, প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে না পারলে কৃষকরা গম চাষে আগ্রহ হারাবেন।

বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট দিনাজপুরের পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি বিষয়ক পরিচালক ডা. মো. মাহফুজ বাজ্জাজ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা মূলত ভুট্টা এবং আলু চাষের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছেন। যার জন্য ঠাকুরগাঁও জেলাসহ উত্তরাঞ্চলে গমের চাষ কমে যাচ্ছে। গমের চাষ ধরে রাখার জন্য আমরা মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দিয়ে আসছি। এ ছাড়া কৃষকদের নিয়ে সব সময় মাঠ দিবস পরিচালনা করছি যেন কৃষকরা গমের চাষে উদ্বুদ্ধ হন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, সরকার উচ্চ ফলনশীল গমের জাত উদ্ভাবনে কাজ করছে এবং কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। কিন্তু কৃষকদের মতে, মাঠ পর্যায়ে সেই সুবিধা এখনো পুরোপুরি কার্যকর হয়নি।

আগামী দিনের শঙ্কা ও সম্ভাবনা : কৃষক ও বিশেষজ্ঞরা শঙ্কা প্রকাশ করছেন, এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ২০ বছরে ঠাকুরগাঁও থেকে গম চাষ পুরোপুরি বিলীন হয়ে যেতে পারে। কৃষক মাহমুদ ইব্রাহিম বলেন, ‘গম আমাদের আদি ফসল। কিন্তু যদি লাভ না হয়, তাহলে কি চাষ করা সম্ভব? সরকার যদি সঠিক পদক্ষেপ নেয়, তাহলে হয়তো আবার গম চাষে ফিরে আসতে পারব।’

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘ঠাকুরগাঁও জেলায় গমের চাষ কমে যাওয়ার মূলত যে কারণগুলো রয়েছে তার মধ্যে হচ্ছে বাজার দাম কম, উৎপাদন খরচ বেশি ও প্রতিকূল আবহাওয়া।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা কৃষকদের গম চাষে আগ্রহী করতে কাজ করছি। নতুন জাতের বীজ ও প্রযুক্তি কৃষকদের কাছে পৌঁছাতে চাইছি। তবে কৃষকদেরও নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করতে হবে।’

 

 

 

মন্তব্য

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধে ফেঁসে যাচ্ছে অ্যাপল

    দি ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন
বাণিজ্য ডেস্ক
বাণিজ্য ডেস্ক
শেয়ার
চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধে ফেঁসে যাচ্ছে অ্যাপল
চীনের সাংহাইতে অ্যাপলের একটি স্টোর

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুরু করা বাণিজ্যযুদ্ধের ফলে সবচেয়ে বড় আঘাতটি যেন পেতে যাচ্ছে অ্যাপল। একদিকে যুক্তরাষ্ট্রে বাড়তি শুল্ক প্রতিষ্ঠানটির ব্যয় বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে চীনের পাল্টা প্রতিক্রিয়া অ্যাপলের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজারে পণ্য বিক্রিতে ধস নামাতে পারে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী টিম কুকের জন্য রীতিমতো ভূ-রাজনৈতিক দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে এটি।

গত ২ এপ্রিল ট্রাম্প যখন সব বড় বাণিজ্য অংশীদারের ওপর ‘পারস্পরিক’ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন, এর পরদিনই শেয়ারবাজারে অ্যাপলের মূল্য ৩১১ বিলিয়ন ডলার কমে যায়।

৪ এপ্রিল চীন পাল্টা জবাবে সব মার্কিন পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক ও দুর্লভ খনিজ পদার্থ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে অ্যাপলের শেয়ারের দর আরো পড়ে যায়। হার্ডওয়্যারের ওপর নির্ভরতা থাকায় এই ধাক্কা অন্যান্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের তুলনায় অ্যাপলের জন্য অনেক বেশি।

টিম কুক এর আগেও ট্রাম্পকে খুশি করার চেষ্টা করেছেন। শপথ গ্রহণের পরপরই তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চার বছরে ৫০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দেন।

বিশ্লেষকদের মতে, এটি ছিল মূলত ট্রাম্পকে খুশি করে শুল্ক থেকে রেহাই পাওয়ার কৌশল। প্রথম মেয়াদে যেমনটা হয়েছিল। কিন্তু এবার সেই কৌশল কাজ করেনি।

বর্তমানে ট্রাম্প চীনের ওপর ৫৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন, যেখানে অ্যাপলের প্রায় ৯০ শতাংশ আইফোন উৎপাদিত হয়।

এই শুল্ক যুক্ত হয়েছে আগের শুল্কের সঙ্গে। এ ছাড়া ভারতে ২৬ শতাংশ ও ভিয়েতনামে ৪৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। যেখানে অ্যাপল বিকল্প উৎপাদনকেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছিল। এখন সেই পরিকল্পনাও ঝুঁকির মুখে।

ইউবিএসের বিশ্লেষক ডেভিড ভগট জানান, প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া প্রায় সাত কোটি আইফোন চীনে তৈরি হয়।

উৎপাদন খরচের ওপর প্রযোজ্য শুল্ক প্রতিটি আইফোনে প্রায় ৩৩০ ডলার বাড়তি ব্যয় সৃষ্টি করতে পারে। গ্রাহকের কাঁধে এই বোঝা চাপানো কঠিন, কারণ আগে থেকেই আইফোনের বিক্রি স্থবির হয়ে পড়েছে। এর দাম আরো বাড়লে গ্রাহক হারানোর ঝুঁকি বাড়বে। আবার শেয়ারহোল্ডার ও সরবরাহকারীদের ওপর চাপ দিলেও মুনাফার মার্জিন ৪৬ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশে নেমে যেতে পারে এবং প্রতি শেয়ারে আয় ২০ শতাংশ কমে যেতে পারে বলে মনে করছেন ভগট।

অন্যদিকে চীনের বাজারেও শঙ্কা রয়েছে। সেখানে অ্যাপলের রাজস্ব গত বছর ৮ শতাংশ কমেছে। দেশটির ভোক্তারা হয়তো অ্যাপলকে ট্রাম্পের প্রতীক হিসেবে দেখছেন। এর মধ্যে হুয়াওয়ে, অপ্পো, শাওমির মতো দেশীয় ব্র্যান্ড জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। চীন সরকারও হয়তো অ্যাপলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পারে। যেমন সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির প্রতিযোগিতা নিয়ন্ত্রক সংস্থা অ্যাপ স্টোরের ফি নিয়ে তদন্তের চিন্তা করছে।

এখন প্রশ্ন—চীন ও দক্ষিণ এশিয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় অ্যাপলের অন্য বিকল্প কোথায়? ট্রাম্প প্রশাসনের উত্তর যুক্তরাষ্ট্র। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সহজ নয়। ৫০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি অনেকটাই প্রচারণামূলক। এর আগে অ্যাপল ৩৫০ বিলিয়ন বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েও বাস্তবায়ন করেনি।

উচ্চ প্রযুক্তি ও শ্রম খরচের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন উৎপাদন করা প্রায় অসম্ভব। টিএসএমসির আরিজোনায় চিপ উৎপাদনকেন্দ্র চালু করতেই অনেক বছর লেগেছে। এখন যদি আইফোন উৎপাদনের যাবতীয় সরবরাহকারীদের যুক্তরাষ্ট্রে আনা হয়, তাতে বিশাল ব্যয় ও সময় লাগবে।

 

মন্তব্য
শুল্কঝড়ে ওলটপালট মার্কিন পুঁজিবাজার

মন্দায় পড়বে আমেরিকা, ভুগবে বিশ্ব

বাণিজ্য ডেস্ক
বাণিজ্য ডেস্ক
শেয়ার
মন্দায় পড়বে আমেরিকা, ভুগবে বিশ্ব

আমেরিকাকে গ্রেট বানাতে বিশ্ব অর্থনীতিতে তীর ছুঁড়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু তাঁর সেই তীর বিদ্ধ করতে শুরু করেছে খোদ মার্কিন অর্থনীতিকেই। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের জেরে যেন ওলটপালট হয়ে গেছে মার্কিন পুঁজিবাজার। উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও মন্দার আভাস দিতে শুরু করেছে বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।

তাদের মতে, ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপ ব্যাকফায়ার করবে, যা পুঁজিবাজারের পরিস্থিতি দেখেই আঁচ করা যাচ্ছে।

মন্দায় পড়বে আমেরিকা, ভুগবে বিশ্বওয়াল স্ট্রিটের অন্যতম প্রধান সূচক হলো এসঅ্যান্ডপি ৫০০। ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর দুই দিনে ১০.৫ শতাংশের বেশি কমেছে এই সূচকের পয়েন্ট। একই অবস্থা ন্যাসড্যাক ও ডাও জোন্সের মতো এক্সচেঞ্জ সূচকগুলোর।

ন্যাসড্যাকে দুই দিনে সূচকের পতন ঘটেছে ১১.৪ শতাংশ। ২০২০ সালের পর এই ধরনের পরিস্থিতি দেখা যায়নি মার্কিন বাজারে।

শীর্ষ ৫০০ কম্পানি মূল্য হারিয়েছে ৫৩৬ বিলিয়ন ডলার। এই তালিকা থেকে বাদ যায়নি বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক থেকে শুরু করে প্রযুক্তি মোগলদের কম্পানিও।

এর আগে করোনা মহামারিতে ২০২০ সালে মার্কিন পুঁজিবাজার থেকে দুই দিনে খোয়া গেছে ৩৩০ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যেই ট্রাম্প শুল্কের পাল্টা হিসাবে মার্কিন পণ্যে ৩৪ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে বেইজিং, যা পরিস্থিতিকে আরো বেশি করে শুল্কযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে আমেরিকা। কিন্তু শুল্কের জেরে সেই সব পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে মার্কিন বাজারে। এর জেরে মন্দার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে মার্কিন অর্থনীতিতে।

একাধিক বিশেষজ্ঞ সংস্থার রিপোর্টেও এই আশঙ্কার কথা উঠে এসেছে, যার জেরে ভয় গ্রাস করছে লগ্নিকারীদের মধ্যে। ক্ষতি থেকে বাঁচতে বাজার থেকে অর্থ সরিয়ে নিচ্ছেন তাঁরা। এর জেরেই জটিল হচ্ছে আমেরিকার আর্থিক পরিস্থিতি। 

ট্রাম্প গত বুধবার বিশ্বজুড়ে সব দেশের পণ্য আমদানিতে গড়ে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। এর মধ্যে বাংলাদেশসহ ৬০টি দেশের ওপর উচ্চমাত্রায় শুল্ক আরোপ করেন। এর পরই ধস নামে মার্কিন পুঁজিবাজারে। ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্সের হিসাব অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুই দিনে ৫০০ সম্পদশালী হারিয়েছেন ৫৩৬ বিলিয়ন ডলার। শুধু শুক্রবারেই হারিয়েছেন ৩২৯ বিলিয়ন ডলার। কভিড-১৯ মহামারির পর এত বড় পতন আর হয়নি। ব্লুমবার্গের সম্পদ সূচক অনুসারে, প্রায় ৯০ শতাংশ ধনী ব্যবসায়ীর ভাগ্যের পতন ঘটেছে এই দুই দিনে। গড়ে তাঁদের ৩.৫ শতাংশ সম্পদ হ্রাস পেয়েছে।

সবচেয়ে বেশি সম্পদ হারিয়েছেন মার্কিন ধনকুবেররা। শুধু শুক্রবারেই ইলন মাস্কের টেসলার শেয়ারের দাম কমেছে ১০ শতাংশের বেশি। এতে মাস্কের নেট সম্পদ কমেছে ৩১ বিলিয়ন ডলার। এই বছরে ইলন মাস্কের সম্পদ কমেছে ১৩০ বিলিয়ন ডলার। পণ্য সরবরাহে বিলম্ব ও ট্রাম্প প্রশাসনে মাস্কের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে পুঁজিবাজারে বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা কম্পানি টেসলার শেয়ারের দাম আগে থেকেই হ্রাস পাচ্ছিল। ইলন মাস্ক থেকে পিছিয়ে নেই মেটাপ্রধান মার্ক জাকারবার্গও। দুই দিনে তাঁর কম্পানির শেয়ারের দর পড়েছে ১৪ শতাংশ। আর তাঁর সম্পদমূল্য কমেছে ২৭ বিলিয়ন ডলার।

ব্যবহৃত গাড়ি বিক্রির কম্পানি কারভানার সিইও আর্নেস্ট গার্সিয়া দুই দিনে হারিয়েছেন দুই বিলিয়ন ডলার। এদিন কম্পানিটির শেয়ারের দাম ২৮ শতাংশ কমে যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে যে অল্প কয়েকজন ধনকুবের ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের প্রভাব থেকে তাৎক্ষণিক রক্ষা পেয়েছিলেন, তাঁদের একজন কার্লোস স্লিম। তিনি মেক্সিকোর শীর্ষ ধনী। গত বুধবার ট্রাম্প বেশ কয়েকটি দেশের ওপর নতুন করে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন, তালিকায় নেই মেক্সিকোর নাম। ট্রাম্পের সেদিনের শুল্কের খাঁড়া থেকে বেঁচে যাওয়ার পর গত শুক্রবার তাঁর কম্পানির শেয়ারদর কমে প্রায় ৫ শতাংশ এবং তিনি হারান ৫.৫ বিলিয়ন ডলার।

মার্কিন অর্থনীতিতে মন্দার পূর্বাভাস : ট্রাম্পের শুল্কনীতির প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি নিশ্চিতভাবেই বাড়বে। কমবে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যের অবসানের শুরু হলো বলা যায়। এখন তারা পারস্পরিক দর-কষাকষির যুগে চলে যাবে; বহুপক্ষীয় ব্যবস্থার ধার আর বিশেষ ধারবে না। 

দুর্যোগের মেঘ দেখছে মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক জেপি মরগ্যান। ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার তিন দিনের মধ্যে মন্দার পূর্বাভাস দিল তারা। চলতি বছরেই আমেরিকান অর্থনীতি মন্দার মুখোমুখি হতে পারে বলে তাদের অনুমান। কম্পানির প্রধান অর্থনীতিবিদ মাইকেল ফেরোলি বলেছেন, ‘চলতি বছরের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) সংকুচিত হতে পারে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির কারণেই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে চলেছে। আর যুক্তরাষ্ট্রে মন্দা হলে তার প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতেও পড়বে। সারা বিশ্বে মন্দার আশঙ্কা ৬০ শতাংশ, জানিয়েছে জেপি মরগ্যান। এর আগে তাদের পূর্বাভাস ছিল, মন্দার আশঙ্কা ৪০ শতাংশ।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে এ প্রসঙ্গে ফেরোলি বলেন, ‘শুল্কের চাপে আমাদের জিডিপি সংকুচিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছি। গত বছর জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল ১.৩ শতাংশ। চলতি বছরে আমরা ০.৩ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি আশা করছি না।’ বেকারত্ব বৃদ্ধির পূর্বাভাসও দিয়েছেন ফেরোলি। তাঁর আশঙ্কা, চলতি বছরে আমেরিকার অর্থনীতি মন্দার মুখোমুখি হলে বেকারত্বের হার ৫.৩ শতাংশে উঠে যেতে পারে।

এদিকে ২ এপ্রিল নতুন শুল্কনীতি ঘোষণার আগেই গোল্ডম্যান স্যাকস পূর্বাভাস দেয়। তারাও মন্দার আশঙ্কা ২০ থেকে ৩৫ শতাংশে উন্নীত করে এবং তারা বলে, অর্থনীতির মৌল ভিত্তিগুলো আগের বছরের মতো অতটা শক্তিশালী নয়।

বহুজাতিক ব্যাংক এইচএসবিসি জানিয়েছে, মন্দার আশঙ্কা নিয়ে আলাপ-আলোচনা আরো বাড়বে। তারা আরো বলেছে, এখন শেয়ারবাজার, বন্ড ও মুদ্রাবাজারের যে অবস্থা, তাতে মন্দার বাস্তবতা এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এইচএসবিসির বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, তাঁরা বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করে শেয়ারবাজার পর্যবেক্ষণ করেছেন। সেই পর্যবেক্ষণ থেকে তাঁরা বুঝতে পারছেন, বিনিয়োগকারীরা এরই মধ্যে মনে করছেন, চলতি বছরের শেষ নাগাদ মন্দা আসার আশঙ্কা প্রায় ৪০ শতাংশ। এই আশঙ্কার কারণেই শেয়ারের বর্তমান দাম এবং বাজারে বিনিয়োগকারীদের কার্যকলাপ কিছুটা প্রভাবিত হচ্ছে; অর্থাৎ মন্দা আসার আশঙ্কা মাথায় রেখেই বাজারে কেনাবেচা চলছে।

এর মানে এই নয় যে মন্দা নিশ্চিতভাবেই আসবে, তার আশঙ্কা ৪০ শতাংশ; বরং শেয়ারবাজার বর্তমানে যে পরিস্থিতিতে আছে, তা সেই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই তৈরি হয়েছে।

এ ছাড়া অন্যান্য গবেষণা সংস্থা যেমন—বার্কলেস, বোফা প্লোবাল রিসার্চ, ডয়চে ব্যাংক, আরবিসি ক্যাপিটাল মার্কেটস ও ইউবিএস গ্লোবাল ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টের মতো প্রতিষ্ঠানও সতর্কতা জারি করেছে। তারা বলছে, ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি জারি থাকলে চলতি বছরের শেষ নাগাদ মার্কিন অর্থনীতি মন্দার কবলে পড়ার ঝুঁকি বাড়বে।

ট্রাম্প জানিয়েছেন, ৯ এপ্রিল থেকে এই বর্ধিত শুল্ক কার্যকর করা হবে। তবে কোনো দেশ যদি এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতা করতে চায়, সে পথও খোলা আছে। শুল্ক আরোপের ফলে বিভিন্ন দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি অনেক কমে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের পূর্বাভাস, আমদানি কমতে পারে অন্তত ২০ শতাংশ। সার্বিকভাবে মার্কিন অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়বে। সূত্র : রয়টার্স, হিন্দুস্তান টাইমস, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ