<p>বৃহত্তর নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে অসংখ্য মাদরাসা ও দ্বিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আকস্মিক বন্যা শুরু হওয়ার পর এসব মাদরাসা হয়ে উঠেছে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সব মানুষের আশ্রয়স্থল। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ শুধু মানুষকে আশ্রয় দেয়নি; বরং নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের খাবারেরও ব্যবস্থা করছে।</p> <p>স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, বন্যাপ্লাবিত প্রায় অঞ্চলের বহুতলবিশিষ্ট প্রায় প্রতিটি মাদরাসা ও মসজিদে বন্যার্ত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। নিম্নে উল্লেখযোগ্য এমন কয়েকটি মাদরাসার তথ্য তুলে ধরা হলো।</p> <p><strong>১. ওলামা বাজার মাদরাসা </strong></p> <p>ফেনী জেলার ঐতিহ্যবাহী দ্বিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দারুল উলুম আল হোসাইনিয়া ওলামা বাজার। জেলার সোনাগাজী উপজেলায় অবস্থিত এই মাদরাসায় বহুসংখ্যক বন্যার্ত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। স্থানীয়দের সহায়তায় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ প্রতি বেলায় এক হাজার মানুষের খাবার পরিবেশন করছে।</p> <p><strong>২. জামেয়া রশীদিয়া </strong></p> <p>ফেনী জেলার আরেকটি বড় দ্বিনি প্রতিষ্ঠান জামেয়া রশীদিয়া। বন্যা শুরু হওয়ার প্রথম দিন থেকে মাদরাসাটি সাধারণ মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে। নিজেরা চরম দুর্ভোগের ভেতর দিয়ে গেলেও আশ্রয় গ্রহণকারীদের জন্য নিয়মিত খাবার পরিবেশন করছে। স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, মাদরাসায় আনুমানিক তিন হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।</p> <p><strong>৩. আশরাফুল উলুম </strong></p> <p>ফেনী জেলার দাগনভূঞায় অবস্থিত আশরাফুল উলুম মাদরাসায় প্রতি বেলায় তিন শ মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।</p> <p><strong>৪. শর্শদি মাদরাসা </strong></p> <p>আল জামিয়া আল ইসলামিয়া দারুল উলুমের অবস্থান ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নে। প্রাচীন এই মাদরাসায় আশ্রয় নিয়েছে অসংখ্য মানুষ। এখানে প্রতিদিন দুই বেলা দুই হাজার মানুষের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে।</p> <p><strong>৫. ইব্রাহিমিয়া মাদরাসা </strong></p> <p>নোয়াখালীর সেনবাগে অবস্থিত জামেয়া ইসলামিয়া ইব্রাহিমিয়ায় প্রতিবেলায় আনুমানিক আড়াই শ বন্যার্ত মানুষের খাবার রান্না করা হচ্ছে।</p> <p><strong>৬. আশরাফুল উলুম </strong></p> <p>নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে অবস্থিত জামিয়া মোহাম্মদিয়া আশরাফুল উলুমে আশ্রয় দিয়েছে দুই শতাধিক মানুষ। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ তাদের খাবারের ব্যবস্থা করছে।</p> <p><strong>৭. মারকাজুল কোরআন </strong></p> <p>নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে অবস্থিত মারকাজুল কোরআন মাদরাসা কমপ্লেক্সে আশ্রয় নিয়েছে অর্ধশতাধিক বন্যার্ত ব্যক্তি।</p> <p><strong>৮. কারিমিয়া মোহাম্মাদিয়া </strong></p> <p>লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুরে অবস্থিত কারিমিয়া মোহাম্মাদিয়া মাদরাসা। এই মাদরাসায় আশ্রয় নিয়েছে তিন শতাধিক বন্যার্ত ব্যক্তি। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ তাদের খাবারের ব্যবস্থা করছে।</p> <p><strong>৯. আউলিয়া নগর মাদরাসা </strong></p> <p>লক্ষ্মীপুর জেলার কলমনগরে অবস্থিত আউলিয়া নগর মাদরাসায় আশ্রয় নিয়েছে দুই শতাধিক মানুষ। মাদরাসার পক্ষ থেকে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।</p> <p><strong>১০. রওজাতুল উলুম </strong></p> <p>কুমিল্লা সদরের মাদরাসা জামিয়া মাদানিয়া রওজাতুল উলুম। এখানে আশ্রয় নিয়েছে পাঁচ শতাধিক মানুষ। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ তাদের খাবারের ব্যবস্থা করছে।</p> <p>এ ছাড়া নোয়াখালী জেলার কালিকাপুর এমদাদুল উলুম কওমি মাদরাসা, জামিয়া আহলিয়া আমানতপুর মাদরাসা, নাজিরপুর ইসলামিয়া আরাবিয়া মাদরাসা, চৌমুহনি ইসলামিয়া আরাবিয়া মাদরাসা, লাকড়িয়াকান্দি খাদিজাতুল কুবরা মহিলা মাদরাসা, গোপালপুর বাজার ফাতেমা (রা.) মহিলা মাদরাসা, জামিয়া মিফতাহুল উলুম ধন্যপুর, জামিয়া মাদানিয়া, দত্তেরহাট ইত্যাদি মাদরাসায় সাধারণ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।</p> <p><em>প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে কৃতার্থ করেছেন নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জ থেকে মুফতি ইমামুদ্দীন ও মুফতি মুহাম্মাদ নিজামুদ্দীন, ফেনীর মহিপাল থেকে মাওলানা মিযানুর রহমান এবং কুমিল্লা সদর থেকে মাওলানা আবদুর রহীম। প্রতিবেদক তাদের সঙ্গে কথা বলে ২৬ আগস্ট রাতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেন।</em></p> <p> </p>