<p>রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর দরুদ পাঠ করা গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। এটি প্রত্যেক মুমিনের আত্মিক উন্নতি ও দুনিয়া-আখিরাতে সাফল্য লাভের স্বর্ণসিঁড়ি। আল্লাহ তাআলা ও তাঁর সম্মানিত ফেরেশতারা নবীর শানে দরুদ পড়েন।</p> <p>কোরআনে দরুদ পাঠের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে—‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা নবীর প্রতি দরুদ পাঠ করেন। হে ঈমানদাররা! তোমরাও নবীর প্রতি দরুদ ও সালাম পাঠ করো।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৫৬)</p> <p>রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নাম উচ্চারণ করলে বা শুনলে দরুদ শরিফ পাঠ করতে হয়। জীবনে অন্তত একবার দরুদ পাঠ করা ফরজ। দরুদের আমল সর্বদা ও সর্বাবস্থায় করা যায়। এর জন্য নির্দিষ্ট সময় বা স্থানের কোনো শর্ত নেই। যত বেশি পাঠ করা হবে তত মঙ্গল।</p> <p>দরুদ পাঠে আল্লাহর রহমত লাভ : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করবে আল্লাহ তাআলা তার ওপর ১০ বার রহমত নাজিল করবেন, তার ১০টি গুনাহ মিটিয়ে দেওয়া হবে এবং তার জন্য ১০টি মর্যাদা উন্নীত করা হবে। (নাসায়ি, হাদিস : ১২৯৭)</p> <p>দরুদ পাঠে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি : দরুদ পাঠের পরকালীন পুরস্কার হলো রাসুল (সা.)-এর পাশাপাশি অবস্থানের সৌভাগ্য লাভ করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি আমার ওপর বেশি দরুদ পাঠ করবে, কিয়ামতের দিন সে-ই আমার অধিকতর নিকটবর্তী থাকবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৪৮৪)</p> <p>দরুদ না পড়া জাহান্নামের পথ : দরুদ পাঠ করা না হলে বা অবহেলা করা হলে তা জাহান্নামের পথে নিয়ে যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমর প্রতি দরুদ পাঠাতে ভুলে যায় সে জান্নাতের পথই ভুলে যায়।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৯০৮)</p> <p>দরুদ পাঠে দোয়া কবুল হয় : দরুদ ছাড়া দোয়া দ্রুত কবুল হয় না। উমর (রা.) বলেন, ‘নবী করিম (সা.)-এর ওপর সালাত (দরুদ) পাঠ না করা পর্যন্ত দোয়া আসমান ও জমিনের মাঝে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে এবং এর কিছুই আল্লাহর কাছে উত্থিত হয় না।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৪৮৬)</p> <p><strong>নির্বাচিত কিছু দরুদ</strong></p> <p>নামাজে পঠিতব্য দরুদে ইবরাহিমই সবার কাছে পরিচিত। এ ছাড়া বিভিন্ন দরুদ পড়া যায়। সবচেয়ে ছোট ও সংক্ষিপ্ত দরুদ হলো ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’। আর সর্বোত্তম দরুদ হলো দরুদে ইব্রাহিম।</p> <p>হাদিসে বর্ণিত কিছু দরুদ এখনে উল্লেখ করা হলো—</p> <p>১. কাব ইবনে উজরা (রা.) বলেন, ‘একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের মাঝে বেরিয়ে এলেন। তখন আমরা বললাম, আমরা আপনার প্রতি সালাম জানানোর প্রক্রিয়া জানতে পেরেছি। এখন আপনার প্রতি দরুদ কিরূপে পড়তে হবে? তখন তিনি বলেন, তোমরা বলবে—আল্লাহুম্মা সল্লি আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা সল্লাইতা আলা ইব্রাহিমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহিম, ইন্নাকা হামিদুম মজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা বারাকতা আলা ইব্রাহিমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহিম, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ।’ (বুখারি, হাদিস : ৩৩৭০)</p> <p>২. জায়েদ ইবনে খারিজা (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, তোমরা আমার ওপর দরুদ পাঠ করো এবং বেশি বেশি দোয়া করো—আল্লাহুম্মা সল্লি আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ।’ (নাসায়ি, হাদিস : ১২৯২)</p> <p>৩. উকবা ইবনে আমের (রা.) বলেন, ‘তোমরা বলবে—আল্লাহুম্মা সল্লি আলা মুহাম্মাদিনিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৯৮১)</p> <p>৪. রুয়াইফি ইবনে সাবেত আনসারি (রা.) বলেন, “রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি নবী (সা.)-এর ওপর দরুদ পড়বে এবং বলবে, ‘আল্লাহুম্মা আনজিলহুল মাক আদাল মুকাররাবা ইন্দাকা ইয়াওমাল কিয়ামাহ’ তার জন্য আমার সুপারিশ সুনিশ্চিত হয়ে যাবে। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস : ৯৩৬)</p> <p> </p>