বিএনপি

স্বৈরাচারের প্রতি ক্ষোভ ও ক্রোধ থেকেই ভাঙচুরের জনস্পৃহা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
স্বৈরাচারের প্রতি ক্ষোভ ও ক্রোধ থেকেই ভাঙচুরের জনস্পৃহা
ফাইল ছবি

দেশের চলমান পরিস্থিতিতে বিবৃতি দিয়েছে বিএনপি। এতে দলটি বলেছে, পতিত পরাজিত পলাতক স্বৈরাচার এবং তার দোসরদের উসকানিমূলক আচরণ, জুলাই আগস্টের রক্তক্ষয়ী ছাত্র গণ-অভ্যুত্থান সম্পর্কে অশালীন এবং আপত্তিকর বক্তব্য মন্তব্য দেশের জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ এবং ক্রোধের জন্ম দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী ওই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে বিতাড়িত পতিত পরাজিত পলাতক স্বৈরাচার এবং তার দোসরদের উস্কানিমূলক আচরণ, জুলাই আগস্টের রক্তক্ষয়ী ছাত্র গণ-অভ্যুত্থান সম্পর্কে অশালীন এবং আপত্তিকর বক্তব্য মন্তব্য দেশের জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ এবং ক্রোধের জন্ম দিয়েছে।

এরই ফলশ্রুতিতে বুধবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পতিত স্বৈরাচারের স্মৃতি, মূর্তি, স্থাপনা ও নামফলকসমূহ ভেঙে ফেলার মতো জনস্পৃহা দৃশ্যমান হয়েছে।’

এতে বলা হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত ৬ মাসেও পলাতক স্বৈরাচার এবং তাদের দোসরদের আইনের আওতায় আনতে যথেষ্ট কার্যকর পদক্ষেপ জনসম্মুখে দৃশ্যমান করতে সফল হয়নি বলে জনমনে প্রতিভাত হয়েছে, ফলে জনগণ আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার মতো বেআইনি কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত হচ্ছে। একটি সরকার বহাল থাকা অবস্থায় জনগণ এভাবে নিজের হাতে আইন তুলে নিলে দেশে বিদেশে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হতে পারে।

‘অথচ জুলাই ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী জনগণের প্রত্যাশা ছিল দেশে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।

যা বর্তমান সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া বাঞ্ছনীয় ছিল। বর্তমানে দেশে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ নানান ধরনের দাবি-দাওয়া নিয়ে যখন-তখন সড়কে “মব কালচারের” মাধ্যমে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি করছে। যা সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে মুন্সিয়ানা দেখাতে ব্যর্থ হচ্ছে।’

বিবৃতিতে বিএনপি বলেছে, জুলাই-আগস্টের ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারদের রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা এবং আহতদের যথাযথ চিকিৎসা ও পুনর্বাসন, নিন্দিত ঘৃণিত পলাতক স্বৈরাচার এবং তার দোসরদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা, পরাজিত ফ্যাসিস্টদের উসকানিমূলক তৎপরতা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ অতি জরুরি অগ্রাধিকার, অথচ এসব বিষয়ে দৃশ্যমান এবং উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই।

বিএনপি আরো বলেছে, এখনও প্রশাসনকে পতিত ফ্যাসিস্ট শাসকের দোসরমুক্ত করা হয়নি, বিচার বিভাগে কর্মরত ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনও বিদ্যমান, পুলিশ প্রশাসনে গণ-অভ্যুত্থানবিরোধী সক্রিয় সদস্যরা এখনও কর্মরত। এমতাবস্থায় সরকার জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে সফলতা অর্জন করতে পারবে কিনা, তা যথেষ্ট সন্দেহের উদ্রেক করে।

দলটি এ-ও বলেছে, ‘বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে জনগণের নিত্যদিনের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করা জরুরি, দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা গায়েবি মামলার কোনো সুরাহা এখনও হয়নি। গণতন্ত্রকামী জনগণ ফ্যাসিবাদী আমলের দায়ের করা মিথ্যা মামলায় এখনও হয়রানির শিকার হচ্ছে, অথচ এ বিষয়ে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখেনি।’

বিএনপির বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, জুলাই ছাত্র গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে মানুষের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার, মানবাধিকারসহ ভোটাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যথাশীঘ্র সম্ভব একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করাই এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।

নির্বাচনমুখী জরুরি সংস্কার সাধন করে দ্রুত নির্বাচনের আয়োজন করাই বর্তমান সরকারের প্রধানতম ম্যান্ডেট। অথচ জনআকাঙ্ক্ষা উপেক্ষা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিজেরাই এই অগ্রাধিকারকে প্রাধান্য না দিয়ে অন্যান্য বিষয়ে অধিক মনোযোগী বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

এতে আরো বলা হয়, ‘পতিত ফ্যাসিস্ট এবং স্বৈরাচারের স্মৃতিচিহ্ন নিশ্চিহ্ন কিংবা নির্মূলের মধ্যেই ফ্যাসিবাদের মূলোৎপাটন নিহিত নয় বরং ফ্যাসিবাদবিরোধী আদর্শিক চিন্তা, শক্তি ও প্রভাবের আদর্শিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠা এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী গণঐক্যকে দৃঢ় ভিত্তি দেওয়া এবং জাতীয় ঐক্যের রাজনৈতিক সংস্কৃতির চর্চাই উত্তম পন্থা। জনগণের মধ্যে এই ধরনের বার্তা ছড়িয়ে দিতে আমাদের সকলেরই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।’

‘বিএনপির উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, সরকার উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্ষমতা প্রকাশ করতে না পারলে রাষ্ট্র ও সরকারের স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়বে। এই পরিস্থিতিতে উগ্র নৈরাজ্যবাদী গণতন্ত্র বিরোধী দেশি-বিদেশি অপশক্তির পাশাপাশি পরাজিত ফ্যাসিস্টদের পুনরুত্থানের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে, যার উপসর্গ ইতিমধ্যেই দৃশ্যমান।’

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি দলটি আহ্বান জানিয়েছে, পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করুন। অন্যথায়, দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির প্রসার ঘটবে। সুতরাং, কঠোরভাবে আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করে রাষ্ট্র ও সরকারের ভূমিকা দৃশ্যমান করা এখন সময়ের দাবি।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ওয়াসায় ১৫০ জনের নিয়োগ নিয়ে যা বলল ‘আমজনতার দল’

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ওয়াসায় ১৫০ জনের নিয়োগ নিয়ে যা বলল ‘আমজনতার দল’
ছবি ভিডিও থেকে নেওয়া

ওয়াসায় দৈনিক মজুরিভিত্তিক ১৫০ জনকে নিয়োগ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে আমজনতার দল।

আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান আমজনতার দলের সদস্যসচিব মো. তারেক রহমান।

তিনি বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ওপর এত বড় আঘাত এর আগে কেউ করেনি। বিধিবহির্ভূতভাবে ১৫০ জনকে নিয়োগ দিয়েছে আমাদের ছাত্র উপদেষ্টা এবং সমন্বয়করা।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তার পিএস মোয়াজ্জেম হোসেনকে দিয়ে এই নিয়োগের সিংহভাগ সুপারিশের মাধ্যমে দিয়েছেন। আরেক উপদেষ্টা নাহিদও ওয়াসায় সুপারিশ করে নিয়োগ দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘নাম রয়েছে নুসরাত তাবাসসুমের, তৌহিদের, নাজমুলের। স্বচ্ছ ও ন্যায়সঙ্গত পদ্ধতিতে নিয়োগ না দিয়ে স্বজনপ্রীতি, ঘুষ এবং অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে এই নিয়োগ সম্পন্ন করেছে উপদেষ্টা ও সমন্বয়করা।

কোটার বিরুদ্ধে লড়াই করে এভাবে নিয়োগ প্রত্যাশা করি না।’

সংবাদ সম্মেলন চলাকালে তিনি বলেন, ‘ছাত্র উপদেষ্টাদের এমন নিয়োগ জালিয়াতি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পাশাপাশি নৈতিকতা পরিপন্থী। এই নিয়োগ জালিয়াতিতে জড়িত থাকায় আসিফ মাহমুদ ও তার পিএসকে বহিষ্কার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। নাহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে দুদক কর্তৃক তদন্ত করতে হবে।

তারেক বলেন, ‘সচিবালয় ও সরকারি অফিস থেকে ছাত্র প্রতিনিধি নামে কর্তৃত্ববাদী সমন্বয়কদের অপসারণ করতে হবে। সবিচদের দুই পাশে আমরা যে শিশুসচিব দেখি তাদের সরাতে হবে। মংলা বন্দর শ্রমিক সংঘের প্রধান উপদেষ্টার পদ হতে হান্নান মাসুদ ও অন্যান্য সমন্বয়কদের অপসারণ করতে হবে।’ ব্যবস্থা না নিলে আমজনতার দল দুর্বার আন্দোলনে যাবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে হলে আলেম সমাজকে নিয়ে ভাবতে হবে : এম বাহাউদ্দীন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
রাষ্ট্র ক্ষমতায় যেতে হলে আলেম সমাজকে নিয়ে ভাবতে হবে : এম বাহাউদ্দীন
ছবি: কালের কণ্ঠ

‘বাংলাদেশে ৯২ শতাংশ মুসলিম। বাংলাদেশের আলেম সমাজ শৃঙ্খলা মেনে চলে। যারা রাষ্ট্র ক্ষমতা যাওয়ার জন্য চিন্তা করছেন, তাদের আলেম সমাজকে নিয়ে ভাবতে হবে।’

আজ সোমবার (১৭ মার্চ) রাজধানীর মহাখালীর গাউসুল আজম কমপ্লেক্সে মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের পেশাজীবী অরাজনৈতিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন আয়োজিত ইফতার মাহফিলে সংগঠনের সভাপতি এ এম এম বাহাউদ্দীন এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আলেমদের অভিলাষ নেই। আলেম সমাজকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে ভাবতে হবে। যে নেতৃত্ব দিতে চায় তার সবার সমর্থন দরকার।’

তিনি আরো বলেন, ‘দেশ থেকে দুর্নীতি দূর করতে হবে।

নাহিদ ও সারজিস সবাই মাদরাসার ছাত্র। তাদের মধ্যে জ্ঞানের ভাণ্ডার লুকিয়ে আছে। অনেকেই এই (মাদরাসার) পরিচয় দিতে চান না। তাদের এই জ্ঞানকে কাজে লাগাতে হবে।
বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফরম হিসাবে কাজ করবে।’

আরো পড়ুন
সাকিবের সঙ্গে নিজের তুলনা করতে চান না হামজা

সাকিবের সঙ্গে নিজের তুলনা করতে চান না হামজা

 

এ এম এম বাহাউদ্দীন বলেন, ‘আমাদের সমাজে শৃঙ্খলা ভেঙে গেছে। এমন কোনো অপরাধ নেই, যা বর্তমান বিশ্বে সংঘটিত হচ্ছে না। বিশ্বের অনেক সম্পদশালী রাষ্ট্র কিন্তু সমাজটাকে ঠিক করতে না পারার কারণে তারা আজ অনেক পিছিয়ে। বাংলাদেশের সৌভাগ্য বাংলাদেশে আলেম সমাজ খুবই সুশৃঙ্খল।

বাংলাদেশের আলেম সমাজ অত্যন্ত সংগঠিত।’

জমিয়াতুল মোদার্রেছীন আয়োজিত ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, জামায়াতে ইসলামির সহকারী মহাসচিব মাওলানা আব্দুল হালিম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতা মোশাররফ হোসেন, সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ওলামা বিভাগের সেক্রেটারি মাওলানা খলীলুর রহমান মাদানী, তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার সাবেক প্রিন্সিপাল মাওলানা জয়নুল আবেদীন, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম ও প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবু জাফর খান, জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের  মহাসচিব মাওলানা সাব্বির আহমদ মমতাজী, সিনিয়র সহ-সভাপতি কবি মাওলানা রুহুল আমীন, জমিয়তে হিযবুল্লাহ’র নাজেমে আ’লা ড. সৈয়দ মোহাম্মদ শরাফত আলী, ছাত্রদলের সহসভাপতি ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল প্রমুখ।

ইফতার মাহফিলে দোয়া পরিচালনা করেন- ছারছীনা দরবার শরীফের পীরসাহেব মাওলানা শাহ আবু নছর নেছার উদ্দীন আহমদ হুসাইন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

জনগণ মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার আগেই নির্বাচন দিন : দুলু

নাটোর প্রতিনিধি
নাটোর প্রতিনিধি
শেয়ার
জনগণ মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার আগেই নির্বাচন দিন : দুলু
ছবি : কালের কণ্ঠ

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, ‘জনগণ মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার আগেই নির্বাচন দিন। সংস্কারের মুলা ঝুলিয়ে নির্বাচন বিলম্বিত করার কোনো সুযোগ নেই।’

সোমবার বিকেলে নাটোরের খাজুরা ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত আলোচনাসভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুলু এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘দেশ চরম সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

কেউ কারো কথা শুনছে না, মানছে না। দেশকে একটা নিয়মের মধ্যে আনতে সবার আগে দরকার জাতীয় সংসদ নির্বাচন। দেশের মানুষকে বোকা ভাবলে চলবে না। দেশের মানুষ সব বোঝে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার মধ্যেই রাষ্ট্রের সব সংস্কারের উল্লেখ রয়েছে। আলাদা করে আর কোনো সংস্কার প্রয়োজন নেই।’  

আরো পড়ুন
চাঁদাবাজির অভিযোগে যুবদল-ছাত্রদলের ৪ নেতাকে গণপিটুনির পর পুলিশে সোপর্দ

চাঁদাবাজির অভিযোগে যুবদল-ছাত্রদলের ৪ নেতাকে গণপিটুনির পর পুলিশে সোপর্দ

 

দুলু বলেন, ‘দেশের মানুষ স্বপ্ন দেখেছিল, রাষ্ট্র সংস্কার হবে, সরকারি অফিস-আদালতে ঘুষ দূর্নীতি কমবে। কিন্তু হয়েছে তার উল্টো, দেশে ঘুষ-দুর্নীতি কমেনি।

বরং বেড়েছে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি মারাত্মকভাবে অবনতি হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কারের কথা বলে অযথা সময় নষ্ট করছে, দেশের মানুষের জীবন মান রক্ষার জন্য দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে।’

দুলু আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ তাদের দোসরদের সব ষড়যন্ত্র সর্ম্পকে দেশের মানুষকে সজাগ থাকতে হবে। গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ তাদের দোসররা যে জুলুম-দুঃশাসন চালিয়েছে তা ভুলে গেলে চলবে না।

খাজুরা ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা মাঠে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুর রহিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাহফিলে আরো বক্তব্য দেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহিম নেওয়াজ, সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান আসাদ, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান শাহীন, জিল্লুর রহমান খান চৌধুরী ওরফে বাবুল চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম আফতাব, জেলা যুবদল সভাপতি এ হাই তালুকদার ডালিম, জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু ও সদর থানা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সানোয়ার হোসেন তুষার।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ষড়যন্ত্র রুখতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : নজরুল ইসলাম খান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ষড়যন্ত্র রুখতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : নজরুল ইসলাম খান
সংগৃহীত ছবি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও শ্রমিক নেতা নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। এক দফা দাবি ছিল ফ্যাসিবাদের পতন এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। একটা অর্জন হয়েছে, ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। কিন্তু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা আমাদের চালিয়ে যেতে হবে।

এ ব্যাপারে যেকোনো ষড়যন্ত্র, প্রচেষ্টা রুখে দেওয়ার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’ 

সোমবার (১৭ মার্চ) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলের সামনে খোলা মাঠে আয়োজিত ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা একটা পরিবর্তন অর্জন করেছি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মালিকানা নিয়ে একটি বিশেষ দলের অপচেষ্টা ছিল।

যা আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আজকেও একটা অপচেষ্টা দেখছি আমরা। বছরের পর বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করতে করতে, একটা পর্যায়ে এসে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা একটা পরিবর্তন অর্জন করেছি। লড়াইয়ের শেষ পর্যায়ে এসে এ দেশের ছাত্র-জনতা যে অবদান রেখেছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে আমরা স্মরণ করি।
এই অর্জন সারা দেশের মানুষের। এই অর্জন সারা দেশের ছাত্র, জনতা, শ্রমিক সবার।’

একই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ১৭ বছর ধরে লড়াই করেছি গণতন্ত্রের জন্য। যে দেশে ভোটাধিকার নেই, সে দেশে গণতন্ত্র আছে, তা বলা যায় না। আমাদের মূল লড়াই ছিল ভোটাধিকারের লড়াই।

আমরা ১৭ বছর ধরে ভোট দিতে পারিনি। এখন আমাদের ভোটাধিকার ফিরে পেতে চাই। আমাদের আন্দোলনের ফসল আপনারা (সরকার)। যদি আপনারা মানুষের গণতান্ত্রিক ভোটাধিকার হরণ করতে চান, বাংলাদেশের মানুষ ঘরে বসে থাকবে না। স্বাধীনতার পরের সরকারকে এ দেশের মানুষ সর্বোচ্চ সাপোর্ট দিয়েছিল, কিন্তু আবার ইন্না লিল্লাহিও পড়েনি। সেই শিক্ষাটা আপনারা গ্রহণ করবেন।’

আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারসহ ড্যাবের নেতা ও সারা দেশ থেকে আসা সংগঠনের সদস্যরা।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ