প্রবাস আয় পাঠানোয় শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
প্রবাস আয় পাঠানোয় শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র
সংগৃহীত ছবি

ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিরা সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স (প্রবাস আয়) পাঠিয়েছেন বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে উঠে এসেছে। দেশটি থেকে বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৯১.২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

গত আগস্ট মাসে রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘকাল ধরে প্রবাসী আয়ের শীর্ষ উৎস সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ছাড়িয়ে গেছে।

আগের মাসে বাংলাদেশে মোট ৩৩৪.৯৪ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত দ্বিতীয় স্থানে ছিল।

সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মী বাস করছেন। সেখানকার প্রবাসীরা প্রায় ৩২৮.৮৪ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা দেশটিকে তৃতীয় স্থানে রেখেছে।

যুক্তরাজ্যের প্রবাসীদের কাছ থেকে বাংলাদেশ ৩০৫.৫২ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে, যা এই মাসে চতুর্থ সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরক দেশ।

অন্যদিকে, মালয়েশিয়া পঞ্চম স্থানে রয়েছে। মালয়েশিয়া থেকে প্রবাসীরা ফেব্রুয়ারিতে ১৮৩.৮৭ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।

বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে রয়েছে কুয়েত, ওমান, ইতালি, কাতার ও সিঙ্গাপুর।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, প্রবাসী বাংলাদেশিরা ফেব্রুয়ারিতে ২,৫২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা আগের বছরের একই মাসের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ বেশি।

২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রবাসীরা ২,০২২ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।

চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে, জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রাপ্তির হার বছরে ২৩.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়কালে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১৮,৪৯০ মিলিয়ন ডলার। গত বছর এই পরিমাণ ছিল ১৪,৯৩৫ মিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স প্রবাহ সম্পর্কিত মাসিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মূল্যস্ফীতির চাপ, বিনিময় হারের ওঠানামা ও ক্রমবর্ধমান আমদানি ব্যয়ের কারণে বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে রেমিট্যান্স অনেক স্বস্তি দিয়েছে।

 

রেমিট্যান্স প্রবাহ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী করেছে এবং দেশজুড়ে লক্ষ লক্ষ পরিবারকে সহায়তা করেছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘রেমিট্যান্সের নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহ স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনেছে যা দারিদ্র্য হ্রাস, জীবনযাত্রার মান উন্নত ও আঞ্চলিক উন্নয়নে অবদান রেখেছে।’
 
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে,‘মহামারী-পরবর্তী চলমান অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রয়াসের পাশাপাশি রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি টিকিয়ে রাখতে, ব্যাংকিং খাতে তারল্য নিশ্চিত করতে এবং বৈদেশিক ঋণের ওপর নির্ভরতা হ্রাস করতে রেমিট্যান্স আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ 

এই সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত ছিল রেমিট্যান্সের বৃহত্তম উৎস এবং তারপরেই যুক্তরাষ্ট্র।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বৈদেশিক মুদ্রার অন্যতম বৃহত্তম উৎস।

বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে অভিবাসী কর্মীদের সহায়তা প্রদান, রেমিট্যান্সের অর্থনৈতিক সুবিধা বৃদ্ধি করা, গ্রহীতাদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি উন্নত করা এবং বিদেশে অভিবাসী কর্মীদের চাহিদা পূরণের জন্য লক্ষ্যমাত্রাভিত্তিক কৌশল গ্রহণের জন্য পরামর্শ দিয়েছে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

পোশাকশিল্পে বাড়তি করের বোঝা, রপ্তানি নিয়ে শঙ্কা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
পোশাকশিল্পে বাড়তি করের বোঝা, রপ্তানি নিয়ে শঙ্কা

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই করপোরেট করহার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতে সংকটের মধ্যে থাকা পোশাক খাতের রপ্তানিতে বাধা সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন এই খাতের উদ্যোক্তারা।

বর্তমানে তৈরি পোশাক খাতের করপোরেট করহার ১২ শতাংশ। সবুজ কারখানার জন্য এই হার ১০ শতাংশ।

তবে দেশের বিভিন্ন খাতের জন্য করপোরেট করহার ২৭.৫০ শতাংশ। তাই ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে তৈরি পোশাক খাতে করহার বাড়িয়ে ১৮ থেকে ২০ শতাংশ করতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, এনবিআর।

বিস্তারিত ভিডিওতে...

 

মন্তব্য

‘পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে বিদেশি ল ফার্ম নিয়োগ করা হয়েছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শেয়ার
‘পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে বিদেশি ল ফার্ম নিয়োগ করা হয়েছে’

দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে আমরা বিদেশি ল ফার্ম নিয়োগ করেছি। কারণ আমরা সিস্টেমেটিক্যালি এ ধরনের সমস্যা আগে ফেস করিনি। করলেও এ ধরনের প্রচেষ্টা আগে নেওয়া হয়নি। এই প্রথম আমরা এই উদ্যোগ নিচ্ছি।

এটা দেশের আইনে শুধু হবে না, বিদেশিদের সঙ্গে আমাদের সংযোগ স্থাপন করতে হবে।

আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করছি। আর দেশের কয়েকটি পরিবার ও গোষ্ঠী দেশের বিপুল টাকা পাচার করেছে। পাচার করা টাকা ফেরত আনা একটি জটিল প্রক্রিয়া।

এসব অর্থ ফেরত আনতে এক বছরের বেশি সময় লাগবে।

আজ শুক্রবার বিকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম অফিসের সম্মেলন কক্ষে ‘অর্থ পাচার প্রতিরোধ ও সমসাময়িক ব্যংকিং ইস্যু’ বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

অর্থ পাচারের বিষয়ে ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, হয়ে গেছে যা, তা হয়ে গেছে। কিন্তু ভবিষ্যতে এমন কোনো কিছু যেন না হয়, তা আমরা ঠিক করতে আসছি।

এজন্য আমরা প্রয়োজনীয় রেগুলেটারি সংশোধন করতে চাই। 

প্রথম ধাপে পাচার হওয়া সম্পদকে স্থিতিশীল অবস্থায় আনার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, আমরা অ্যাসেটগুলোকে ফ্রিজ করার চেষ্টা করছি। বিভিন্ন দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং মিউচুয়াল লিগাল অ্যাসিস্ট্যান্সের বিষয়ে চিঠি পাঠানো হচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ল ফার্মের সঙ্গে কথা বলেছি এবং খুব শিগগিরই তাদের হায়ার (নিয়োগ) করার পরিকল্পনা রয়েছে। 

তিনি বলেন, আমরা এমন ল ফার্মের সঙ্গে যোগাযোগ করছি, যারা অ্যাসেট ট্রেসিংয়ের কাজ করে (মানে কার সম্পদ কোথায় আছে, সেটা খুঁজে বের করা)।

যদিও আমরা কিছু তথ্য জানি, তবে সেগুলো ভাসা ভাসা। স্পেসিফিক, এক্স্যাক্ট ডকুমেন্টেশন ছাড়া কোনো তথ্য কোর্টে গ্রহণযোগ্য হবে না। 

এই কাজের জন্য বিদেশি অ্যাসেট ট্রেসিং ফার্মগুলোর সহায়তা নেওয়া হবে জানিয়ে গভর্নর বলেন, তাদের সহায়তায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, কম্পানি বা সম্পদের সুনির্দিষ্ট তথ্য শনাক্ত করতে হবে। আমরা এখনই কিছু সহযোগিতা পাচ্ছি, তবে কাজটা মোটেও সহজ নয়। এটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আমাদের লক্ষ্য আগামী ৬ মাসের মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশের অ্যাসেট ফ্রিজ করা। এটাকে আমরা ইনিশিয়াল অ্যাচিভমেন্ট হিসেবে দেখছি। একবার ফ্রিজ হলে এরপর বিষয়টি কোর্টে যাবে, সেখানে মামলা মোকদ্দমা হবে। এরপরই সেই অ্যাসেট ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।

দেশে আগে মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে দেখানো হত জানিয়ে আহসান এইচ মনসুর বলেন, খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি ৯-১০ শতাংশ দেখানো হত। কিন্তু প্রকৃতভাবে দেখা গেছে ১৩-১৪ শতাংশ। গত মাসে সেটি দেখা গেছে ৮-৯ শতাংশে আছে। সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি স্বস্তির দিকেই আছে। আগামী বছর সেটিকে ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনতে পারব।

কী পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে এমন প্রশ্নে গভর্নর বলেন, সব মিলিয়ে আমার ধারণা, আড়াই থেকে তিন লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে। এরমধ্যে চট্টগ্রামে বড় শিল্পগ্রুপ ও তাঁর পরিবারও আছে। বেক্সিমকোর পাচার হওয়ার অর্থ ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো। এগুলো শুধু বড় গ্রুপ। ছোটগুলোকে আপাতত দেখছি না। 

আদালতের মাধ্যমে না গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে টাকা ফেরানোর চেষ্টা জানিয়ে তিনি বলেন, সব বিষয় আদালতের মাধ্যমে নয়, আউট অব কোর্ট সেটেলমেন্ট বলে একটা কথা আছে। তার আগে সব তথ্য নিতে হবে। যখন সব তথ্য থাকবে তখন তারা নেগোসিয়েশনে আসবে। নেগোসিয়শনে গেলে সব তথ্য নিয়েই যাওয়া লাগবে। না হলে তো আমরা ঠকে যাব।

অর্থ পাচারে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনেকে কি জড়িত আছে এমন প্রশ্নে গভর্নর বলেন, অমূলক তথ্যের ভিত্তিতে কাউকে চাকরিচ্যুত করার পক্ষে আমি নই। সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকলে আমরা ব্যবস্থা নেব। দুদক বা রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা যদি তথ্য প্রমাণ দেয় যে কেউ জড়িত আছে আমরা ব্যবস্থা নেব। যাদের বিরুদ্ধে তথ্য আছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, দেশের অর্থনীতিতে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক যে প্রচেষ্টা চালিয়েছে, তাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। তিনি বলেন, দেশের ব্যালেন্স অব পেমেন্টে এখন আর কোনো ঘাটতি নেই। বিশাল ঘাটতি ছিল, সেটা আমরা মিটিয়ে এনেছি। আমাদের রিজার্ভও এখন স্থিতিশীল এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। আমাদের রপ্তানি বাড়ছে। বিভিন্ন রকমের গোলযোগ, আন্দোলন ইত্যাদি সত্ত্বেও রপ্তানি মুখ থুবড়ে পড়েনি। গত আট-নয় মাসের তথ্য বলছে, এখনো রপ্তানি ডাবল ডিজিট প্রবৃদ্ধি দেখাচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের উপপরিচালক মো. জোবাইর হোসেনের সঞ্চলনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন ও বিএফআইইউ এর পরিচালক মো. আনিসুর রহমান, চট্টগ্রাম অফিসের পরিচালক মো. সালাহ উদ্দীন, মো. আরিফুজ্জামন, মো. আশিকুর রহমান, স্বরুপ কুমার চৌধুরীসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম অফিসের কর্মকর্তা, বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক, বিএফআইইউ এর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
 

 

 

মন্তব্য
ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা

১৫ মাসে ভারত হয়ে ৪৬২ মিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
১৫ মাসে ভারত হয়ে ৪৬২ মিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি
সংগৃহীত ছবি

সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যে আকস্মিক ভারত বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে। অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের ফলে বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা করলেও এমনটি মনে করছেন না ব্যবসায়ীরা।

তবে পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ‍্যমে গত ১৫ মাসে ভারতীয় রুট ব্যবহার করে ৩৬টি দেশে ৪৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ‍্যমে রপ্তানির পরিমাণ ৩৪ হাজার ৯০০ টনের বেশি।

ভারত সরকার ২০২০ সালের ২৯ জুন তাদের স্থল শুল্ক স্টেশন, বন্দর এবং বিমানবন্দর দিয়ে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির জন্য বাংলাদেশকে এই সুবিধা দিয়েছিল। পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সূত্র জানিয়েছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ‍্যমে রপ্তানি হওয়া পণ্যের মধ্যে ছিল ব্লাউজ, ট্রাউজার, টি-শার্ট, শিশুদের পোশাক ইত্যাদি। প্রধান বাজারগুলোর মধ্যে ছিল যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও ফ্রান্স, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া।

বিজিএমইএ তথ্য অনুযায়ী, মোট রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৬৪০ কোটি ৫ লাখ টাকা।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ৩৬ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ।

এ বিষয়ে বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, আমরা বিশ্লেষণ করে দেখেছি গত ১৫ মাসে ভারতের মাধ্যমে মোট ৩৬টি ট্রান্সশিপমেন্ট হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারত বলছে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলে তাদের ভূখণ্ড দিয়ে নেপাল বা ভুটানে পণ্য রপ্তানির ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না। অর্থাৎ সম্ভবত ৩৪টি দেশেই ভারতের মাধ্যমে শিপমেন্টে আমাদের সমস্যা হবে।

এর ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুটি দিকই আছে। আমাদের পরনির্ভরশীলতা কমিয়ে নিজস্ব সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

টাইটানদের ছাড়িয়ে যেতেই কি ভার্সাচি কিনল প্রাদা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
টাইটানদের ছাড়িয়ে যেতেই কি ভার্সাচি কিনল প্রাদা

ইতালির ফ্যাশন পাওয়ারহাউস ‘প্রাদা’ বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছে যে তারা মার্কিনভিত্তিক ক্যাপরি হোল্ডিংস থেকে তাদের জাঁকজমকপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বী ‘ভার্সাচি’-কে ১.৩৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৬ হাজার ৭১০ কোটি টাকা) মূল্যে অধিগ্রহণ করতে যাচ্ছে — যা ফ্যাশন দুনিয়ার ভারসাম্যে বড় রদবদলের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

বৃহস্পতিবার প্রাদা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক লাক্সারি প্রতিষ্ঠান ক্যাপরি হোল্ডিংসের কাছ থেকে ভার্সাচিকে তারা অধিগ্রহণ করছে। যার মাধ্যমে এক ছাদের নিচে আসছে ইতালির দুটি প্রভাবশালী ফ্যাশন ব্র্যান্ড।
 
এর আগে ২০১৮ সালে ক্যাপরি হোল্ডিংস প্রায় ২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারে ভার্সাচিকে কিনেছিল।

পাঁচ বছর পর তারা যে দামে বিক্রি করছে, তা আগের দামের তুলনায় অনেকটাই কম।

এই চুক্তি ২০২৫ সালের দ্বিতীয়ার্ধে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে তৈরি হবে একটি ইতালিয়ান বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের জায়ান্ট, যার বার্ষিক রাজস্ব ৬ বিলিয়ন ইউরোরও বেশি — যা এলভিএমএইচ ও কেরিংয়ের মতো ফরাসি জায়ান্টদের জন্য সরাসরি চ্যালেঞ্জ।

প্রাদার নির্বাহী পরিচালক ও দীর্ঘদিনের পথপ্রদর্শক পাত্রিজিও বার্তেল্লি বলেন, আমরা ভার্সাচিকে প্রাদা গ্রুপে স্বাগত জানাতে পেরে আনন্দিত। আমরা সৃজনশীলতা, কারুশিল্প ও ঐতিহ্যের প্রতি একসঙ্গে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এই চুক্তিটি ডিসকাউন্টে হয়েছে। ২০১৮ সালে ক্যাপরি হোল্ডিংস ভার্সাচিকে ১.৮৩ বিলিয়ন ইউরোতে কিনেছিল, কিন্তু দুর্বল বিক্রয় ও ট্রাম্প যুগের ট্যারিফের কারণে তাদের কম মূল্যের (১.২৫ বিলিয়ন ইউরো) প্রস্তাবে সম্মত হতে হয়েছে।

এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হচ্ছে, ডোনাটেলা ভার্সাচি — যিনি ১৯৯৭ সালে ভাই জিয়ানি ভার্সাচি-এর হত্যাকাণ্ডের পর হাউসের নেতৃত্ব নিয়েছিলেন — ১ এপ্রিল সৃজনশীল পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তিনি এখন ব্র্যান্ডের প্রধান ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে থাকবেন।

তার পরিবর্তে আসছেন ডারিও ভিটালে, যিনি প্রাদার তরুণ, সাহসী সাব-ব্র্যান্ড মিউ মিউ-এর উত্থানের পেছনে মুখ্য শক্তি — যা ইঙ্গিত করছে যে ভার্সাচি সম্ভবত ঝাঁ-চকচকে গ্ল্যামার থেকে জেন-জেড ঘরানার দিকে মোড় নিতে পারে।

যদিও প্রাদা বলেছে, তারা ভার্সাচির মূল পরিচয় মুছে ফেলবে না, বরং নিজেদের শিল্পদক্ষতা ও পরিচালন দক্ষতা দিয়ে সেটিকে সমৃদ্ধ করবে। তবে বিশ্লেষকরা এটিকে ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।

বার্নস্টেইনের বিলাসবহুল পণ্যের বিশ্লেষক লুকা সোলকা বলেন, এটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ চাল। প্রাদা তার মূল ব্যবসা থেকে বিচ্যুৎ হয়ে পড়তে পারে, যেমনটা আগের জিল স্যান্ডার ও হেলমুট ল্যাংয়ের ক্ষেত্রে হয়েছে।

২০২৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে ভার্সাচির রাজস্ব ১৫ শতাংশ কমে ১৯৩ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে, যেখানে প্রাদা তাদের ২০২৪ সালের আয়ে ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি দেখিয়েছে যেখানে নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৮৩৯ মিলিয়ন ইউরোতে, আর রাজস্ব বেড়ে হয়েছে ৫.৪ বিলিয়ন ইউরো।

প্রাদার সিইও আন্দ্রেয়া গুয়েরা বলেন, এটি হবে একটি দীর্ঘ যাত্রা এবং এর জন্য সুশৃঙ্খল বাস্তবায়ন প্রয়োজন হবে। ভার্সাচির অপার সম্ভাবনা আছে, তবে পরিবর্তনে সময় প্রয়োজন হবে।

তবে এটি ফ্রান্সের ওপর পাল্টা চাল। এই অধিগ্রহণ শুধু একটি আর্থিক পদক্ষেপ নয় — এটি একটি উদ্দেশ্যের ঘোষণা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফরাসি ব্র্যান্ডগুলো ইতালির সবচেয়ে খ্যাতিমান ব্র্যান্ডগুলো অধিগ্রহণ করেছে যেমন— গুচি, ফেন্ডি, বোতেগা ভেনেতা। এই চুক্তির মাধ্যমে প্রাদা পাল্টা চাল চালল। তবে কৌশলটি সফল হবে কি না তা এখনো দেখা বাকি।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ