<p>কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ভুয়া বিজ্ঞপ্তি ছাপিয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী পদে নিয়োগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব বিজ্ঞপ্তি ছড়িয়ে চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে আগাম টাকা নিচ্ছে তারা। ভুয়া চাকরি পাওয়া ব্যক্তিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। এই ঘটনায় কুড়িগ্রাম ও ঢাকায় পৃথক সাধারণ ডায়েরি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।</p> <p>কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রতারক চক্রটি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো, প্যাড তৈরি করে তারা এই প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়া অসংখ্য রোল নম্বর দিয়ে রেজাল্ট সিট তৈরি, ব্যাংক ড্রাফট করা, নিয়োগ পত্র তৈরি, যোগদান পত্র সবই রয়েছে। এই কাজগুলো এত সূক্ষ্মভাবে করেছে যে সাধারণ চাকরিপ্রার্থী বা কোনো অভিভাবকই খুব সহজে এই জালিয়াতি ধরতে পারবে না।</p> <p>পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, এই চক্রটির অধিকাংশ সদস্যই রংপুরের পীরগঞ্জের বাসিন্দা ও রংপুর রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা এর সঙ্গে জড়িত। ইতোমধ্যেই তাদের মোবাইল ফোন ট্রাকিং করে পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশের বিশেষ ইউনিট। </p> <p>কালের কণ্ঠের হাতে আসা ভুয়া বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে, ৩০ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের হুবহু লোগো ও প্যাড নকল করে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তাতে দেবদাস দত্ত মজুমদান নামের এক ব্যক্তিকে রেজিস্ট্রার বানানো হয়েছে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে প্রভাষক, ও কর্মকর্তা ও কর্মচারী পদে শতাধিক পদ সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যে-সব বিভাগের অনুমোদন নেই বা কোনো দিনই সেসব বিভাগ চালু করা হবে না এমন বিষয় উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। </p> <p>২০২৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর দেওয়া ১১ জন সেমিনার সহকারীকে যোগদানের একটি পত্রে দেখা গেছে, ২১তম সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত মোতাবেক চলতি মাসের ৬, ৭ ও ১০ তারিখের যোগদানকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর নামের তালিকা প্রকাশ করে।</p> <p>এ ছাড়া চলতি বছরের ১০ মার্চ সেকশন অফিসার গ্রেড-২ পদে নিয়োগ দেওয়া হয় রংপুরের পীরগঞ্জের বড় মজিদপুর গ্রামের আব্দুল হামিদ মিয়ার মেয়ে শেফা আক্তার বানুকে। ওই নিয়োগপত্রে বলা হয়েছে, ‘৯ ফেব্রুয়ারি/২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত সেকশন অফিসার গ্রেট-২ পদে নিয়োগ বাছাই বোর্ডের সুপারিশ ও ৮-৩-২৩ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১৭তম সভার অনুমোদন ক্রমে আপনাকে স্থায়ী পদে নিয়োগ দেওয়া হলো।’ </p> <p>পীরগঞ্জের কুমারখালি গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে আরিফুল ইসলামকে সেকশন অফিসার গ্রেড-২ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এ ছাড়া চলতি মাসের আগস্টে সেমিনার সহকারী পদে রংপুরের পীরজাবাদ যুগিপাড়ার আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে মানিক মিয়াকেও নিয়োগ দেওয়া হয়। শুধু এই তিনজনই নয়, এমন অসংখ্য চাকরি প্রত্যাশীকে চাকরির দেওয়া হয়েছে। </p> <p>বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, দেবদাস দত্ত মজুমদান নামের যে রেজিস্ট্রারের কথা বলা হয়েছে ওই নামে বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ নেই। সেটি ফেক।</p> <p>কুড়িগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে এম জাকির হোসেন বলেন, ‘আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়টি নতুন। এখনো কোনো সার্কুলেশন দেওয়া হয়নি। নিয়োগ করা হয়নি কাউকে। ভুয়া নিয়োগের বিষয়টি আমরা জানতাম না। পরে আমাদের নজরে এসেছে। আমরা ইতোমধ্যে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি। </p>