জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে মাদকের আসামি ধরতে ঝাঁপ দিয়ে নদীতে ডুবে জয়পুরহাট র্যাব-৫ ক্যাম্পের সাহেদুজ্জামান নামের এক সহকারী পরিদর্শকের মৃত্যু হয়েছে। সাহেদ দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার তেনা গ্রামের রিয়াজ ইসলামের ছেলে। শনিবার বিকেলে পাঁচবিবির ছোট যমুনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।
জয়পুরহাট র্যাব-৫ এর ক্যাম্প কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাইমেনুর রশিদ জানান, মাদক বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে ওই দিন বিকেলে পাঁচবিবির বড় মানিক এলাকায় ছোট যমুনা নদীর পাশে মাদকসেবীদের ধরতে অভিযান চালায় র্যাব।
আসামি ধরতে নদীতে ঝাঁপ, র্যাব কর্মকর্তার মৃত্যু
জয়পুরহাট প্রতিনিধি

সম্পর্কিত খবর

হালদা নদীতে মা মাছের ডিম ছাড়ার মৌসুমেও বন্ধ নেই বালু উত্তোলন
- দক্ষিণ এশিয়ার প্রাকৃতিক একমাত্র মৎস্য প্রজননকেন্দ্র হালদা নদী
বালু তোলায় দুজনকে একলাখ টাকা অর্থদণ্ড
রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননকেন্দ্র হালদা নদীতে মা মাছের ডিম ছাড়ার মৌসুমেও বন্ধ নেই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। নদী থেকে রাতের অন্ধকারে ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে বাল্কহেড (নৌযান) ভর্তি করার সময় দুজনকে আটক করে একলাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
গতকাল মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাতে দিকে হালদা ও কর্ণফুলী নদীর মোহনা রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের কচুখাইন গ্রামের গণি মিয়ার ঘাটে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিসান বিন মাজেদের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
জরিমানাপ্রাপ্তরা হলেন- মুহাম্মদ ইউসুফ ও মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। তারা দুজনেই ভোলার সদর উপজেলার বাসিন্দা।
রাউজান উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, ‘হালদা নদী থেকে বালু তোলা এবং ড্রেজার ও বাল্কহেডে পরিবহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে তীরবর্তী এলাকার কিছু অতি লোভী ব্যক্তি।

শমশেরনগর ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল গ্রেপ্তার
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাত ২টার দিকে ডিবি পুলিশের সহায়তায় কমলগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কমলগঞ্জ থানার ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেন।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে পুলিশসহ ৩ মাদক কারবারি আটক
বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার ও রামু প্রতিনিধি

কক্সবাজারের রামুতে ইয়াবাসহ এক পুলিশ সদস্যসহ তিনজনকে আটক করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। গতকাল মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাতে অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করা হয়।
কক্সবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার রাতে রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের মন্ডলপাড়ার একটি বাসায় এই অভিযান চালিয়ে ইয়াবাসহ পুলিশ সদস্যসহ তিনজন মাদক কারবারিকে আটক করা হয়। এ সময় তল্লাশি চালিয়ে তাদের কাছ থেকে ৭ হাজার ৫০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার এবং তাদের ব্যবহৃত প্রাইভেট কার জব্দ করা হয়েছে।
অভিযানে আটককৃতরা হলেন- সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ থানার পাঙ্গাস গ্রামের আব্দুল ওয়াদুদ খানের ছেলে রামু থানার ওয়ারলেস অপারেটর জাহিদুল ইসলাম (৩৩), চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার কচুয়াই থানার কমল মুন্সির হাট এলাকার বাবুল চৌধুরীর ছেলে অভিজিৎ চৌধুরী (৩৫) ও চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার বাইন্যারহাট, ডাবুয়া এলাকার নান্টু চৌধুরীর ছেলে পূষন চৌধুরী (৩৭)।
কক্সবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ‘পুলিশ সদস্য জাহিদুল ইসলাম মন্ডলপাড়া গ্রামে ভাড়া বাসায় ইয়াবা কারবার চালিয়ে আসছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় বাড়িতে সামনে পার্কিং করা প্রাইভেট কার থেকে ৭ হাজার ৫০০টি ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নতুন শেড নির্মাণ, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী
- প্রত্যাবাসন নিয়ে বিভ্রান্তির শংকা
স্থানীয় রাজনীতিবিদরাও উদ্বিগ্ন
তোফায়েল আহমদ, কক্সবাজার

যে মুহূর্তে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের একটি সমূহ সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হতে চলেছে, এমন সময়েই ক্যাম্পে নতুন করে ঘর ( রোহিঙ্গা শেড) নির্মাণের কাজও চলছে। ক্যাম্পে নতুন ঘর নির্মাণের কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি নিয়ে আবারও বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। নতুন আবাসনের ব্যবস্থায় একদিকে স্থানীয় এলাকাবাসী যেমন ক্ষোভে ফুঁসছে, তেমনি প্রত্যাবাসনে রোহিঙ্গাদের নিরুৎসাহিত হওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
নতুন ঘর নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে উদ্বিগ্ন কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার বাসিন্দারা।
নতুন ঘর নির্মাণের বিষয়টি আরো বেশি আলোচনায় এসেছে এর সুনির্দিষ্ট কারণ না জানানোর জন্য।
'সওয়ার' নামের যে এনজিওটি ক্যাম্পে নতুন ঘর নির্মাণের কাজ করছে তারা বলছে, পাহাড় ধ্বসের ঝুঁকিতে থাকা রোহিঙ্গাদের জন্য এগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। এদিকে রোহিঙ্গা শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার- আরআরআরসি সংবাদকর্মীদের বলেছেন, 'নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্যই নতুন ঘর।'
আবার গতকাল সকালে অতিরিক্ত আরআরআরসি মো শামসুদ দৌজা কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন ভিন্ন কথা।
এদিকে স্থানীয় লোকজন বলছেন, 'গত কয়েক মাসে প্রচুর রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে এসেছেন। তাদের জন্য এসব করা হচ্ছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নতুন শেড নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে বিএনপির কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি ও উখিয়া-টেকনাফ সংসদীয় আসনের সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী গতকাল বিকেলে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ক্যাম্পে নতুন করে আবাসনের ব্যবস্থা নেওয়ার ঘটনায় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় আবার পিছুটান পড়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। এমনকি প্রত্যাবাসনের পুরো ব্যবস্থাপনায় সৃষ্টি হতে পারে বিভ্রান্তি।'
তিনি বলেন, 'যেখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘ মহাসচিবকে নিয়ে ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন এবং মায়ানমার সরকারও এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে স্বদেশে ফেরানোর বিষয়ে ইতিবাচক, সেখানে নতুন করে শেড নির্মাণের আর কোনো দরকার থাকার কথা নয়।'
উখিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরোয়ার জাহান চৌধুরী ক্যাম্পে নতুন শেড নির্মাণের ঘটনাটিকে 'প্রত্যাবাসন বিরোধি' কাজ কিনা তা সরকারি ভাবে খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, 'কোনো কোনো মহল সরকারের প্রত্যাবাসন ভণ্ডুল করতে নানা কৌশল এঁটে চলেছে।'
অপরদিকে জামায়াতে ইসলামীর কক্সবাজার জেলা শাখার আমির মাওলানা নূর আহমদ আনোয়ারী বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এ মুহূর্তে ক্যাম্পে নতুন ঘর নির্মাণের ফলে প্রত্যাবাসনের দিকে এগিয়ে যাওয়াকে ব্যহত করবে। সেই সাথে আমরা শঙ্কিত, মায়ানমার থেকে নতুন করে আরো রোহিঙ্গা এপারে পাড়ি দিতেও উৎসাহিত হতে পারে।'
তিনি বলেন, 'আর কোনো ভাবেই বিলম্ব নয়, রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতেই হবে।'
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ১৪ নম্বর হাকিম পাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কাঁটাতারের সঙ্গে লাগোয়া বন বিভাগের পাহাড়ে চলছে এই নতুন করে ১২২টির অধিক শেড নির্মাণের কাজ। শেডগুলো নির্মাণ ঘিরে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয় লোকজন বনবিভাগের সঙ্গে শেয়ারের ভিত্তিতে সেখানে সামাজিক বনায়ন করেছিল। রোহিঙ্গা ঢলের সময় (২০১৭) কিছু বনভূমিতে শেড নির্মিত হয়েছিল। বাদবাকি বনভূমিতে গাছপালা ছিল।
স্থানীয় বাসিন্দা নূরুল আবসার নামের সামাজিক বনায়নের একজন উপকারভোগি কালের কণ্ঠকে জানান, 'যেখানে এখন শেডগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে সেটি ২০০৮ সালের সৃজিত বন বিভাগের সামাজিক বনায়নের জায়গা। সেখানে জলাধারও ছিল। উক্ত জলাধার ভরাট করে ঘরগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। শেডগুলো তৈরি করছে ' সাওয়াব' নামের একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও)। দেড়শ রোহিঙ্গা পরিবারের জন্য এগুলো নির্মাণে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে।' এসব বিষয় নিয়ে লিখিতভাবে উপকারভোগিরা সরকারের সংশ্লিষ্টদের জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী আকস্মিক রোহিঙ্গা শেড নির্মাণের বিষয়টিকে 'সন্দেহের' চোখে দেখছেন। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমি এলাকার একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। অথচ আমাকেও না জানিয়ে রাতারাতি পাহাড় ও শত শত গাছ কেটে এনজিওটি শেডগুলো নির্মাণ করছে।'
তিনি বলেন, 'সরকারি পাহাড়ে এনজিওটি গাছপালা ও পাহাড় কেটে শেড তৈরির পাশাপাশি সেখানে 'আমিনা ভিলেজ' লিখে একটি সাইনবোর্ডও টাঙ্গিয়েছে। জমির মালিক বন বিভাগ আর সেখানে নামকরণ হচ্ছে 'আমিনা ভিলেজ' নামে- এ টনাটি রিতীমত রহস্যময় বলেও জানান ইউপি চেয়ারম্যান।
সওয়াব নামের এনজিওটির কো-অর্ডিনেটর আতাউল্লাহ বলেন, 'যথারীতি রোহিঙ্গা বিষয়ক প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে শেডগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। পাহাড় ও গাছ কাটার কথা তিনি অস্বীকার করেছেন। তিনি সাইনবোর্ড প্রসঙ্গে বলেন, কোনো একজনের দানের টাকায় কাজ করার কারণেই এটি লাগানো হয়েছে। তবে অনুমতি রয়েছে কিনা তা জানাননি তিনি।'