সপ্তম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রাঙামাটির লংগদু উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে। হাট বাজার ও গ্রাম মহল্লার চায়ের দোকানে সর্বত্র এখন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা। আজ (১২ জানুয়ারি) মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। এদিন উপজেলার সাত ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনীত সাতজন চেয়ারম্যান প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেন।
লংগদুতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন
আচরণবিধি ভেঙে গণজমায়েত করে মনোনয়নপত্র জমা
লংগদু (রাঙামাটি) প্রতিনিধি

সকাল থেকে বিশাল গণজমায়েত ও মিছিল সহকারে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের মাধ্যমে মনোনয়নপত্র জমা দেন তারা। এদিন সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাইনীমূখ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল আলী তিন শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে মোটরসাইকেলে শো ডাউনের মাধ্যমে মিছিল সহকারে মনোনয়ন জমা দিতে আসেন। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ একাধিক নেতাকর্মী মিছিলে যোগ দেন।
এ ছাড়াও আটারকছড়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অজয় চাকমা (মিত্র), কালাপাকুজ্যা ইউনিয়নের প্রার্থী মোস্তফা মিয়া, গুলশাখালী ইউনিয়নের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম, বগাচত্বর ইউনিয়নের আবুল বাশারসহ সকলেই গণজমায়েত সহকারে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
মাইনীমূখ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী এরশাদ আলী সরকার মনোনয়নপত্র জমা দেন গত ৯ জানুয়ারি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জমির উদ্দিন বলেন, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের সকল প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজের সাথে আমরা তিনজন রিটার্নিং কর্মকর্তা জড়িত। অনেক প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাইনুল আবেদীন বলেন, আমরা শুনেছি অনেক প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মুখে মাস্ক নাই। কাল (বৃহস্পতিবার) থেকে নির্বাচনী আচরণবিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিদ্যালয়ের টিনের ঘর ভেঙে বসতঘর বানাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক!
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

অবসরের চার দিন মাত্র বাকি। এর মধ্যে নিজের স্ত্রীকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়াসহ আনুষাঙ্গিক কাজকর্ম গুছিয়ে বিদ্যালয়ে থাকা ৬৬ হাত লম্বা একটি টিনের ঘর (শ্রেণি কক্ষ) ভেঙে নিয়ে নিজবাড়িতে বসতঘর তৈরি করছেন। ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার আব্দুল হোসেন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনায়েত হোসেন ভূঁইয়া রতনের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে সরেজমিনে নান্দাইল উপজেলার খারুয়া ইউনিয়নের রাজাবাড়িয়া গ্রামে অবস্থিত ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের টিনের চাল, বেড়া ও অন্যান্য উপকরণ প্রধান শিক্ষক মো. এনায়েত হোসেন ভূঁইয়ার নতুন বাড়ি ভিটার আশপাশে জড়ো করে রাখা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, প্রধান শিক্ষক মো. এনায়েত হোসেন ভূঁইয়া জানান, গত ৩১ মার্চ তিনি অবসরে গেছেন। তার স্ত্রী শামছুন্নাহার এখন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বপালন করছেন।
বিদ্যালয়ের ঘর ভেঙে ব্যক্তিগত বাড়ি নির্মাণকাজে ব্যবহারের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এনায়েত হোসেন ভুইয়া রতন বলেন, ‘গত ২৭ মার্চ তিনি বিদ্যালয়ের টিনের ঘরটি নিলামে তুলেছেন।
কীভাবে নিলাম ডাক অনুষ্ঠিত হয়েছে জানতে চাইলে এনায়েত হোসেন ভুইয়া বলেন, ‘নান্দাইলের তৎকালীন ইউএনও অরুন কৃষ্ণ পালের নির্দেশে এ কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
তবে এ বিষয়ে নান্দাইলের সাবেক ইউএনও অরুন কৃষ্ণ পাল বলেন, ‘গত ডিসেম্বর মাসে নান্দাইল থেকে অন্যত্র বদলি হয়ে যান। তিনি বদলি হওয়ার আগে এ ধরনের কোনো নির্দেশ দেননি। প্রধান শিক্ষক মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন।’
হিমেল নামে একজনকে দিয়ে ঘরটি কিনিয়েছেন বলে দাবি করেন প্রধান শিক্ষক।
জানতে চাইলে বিদ্যালয় পরিচালনা এডহক কমিটির আহ্বায়ক আজিজুল হক বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক তো আমাকে বলেছেন সবই নিয়মের মধ্যে হয়েছে। এখন কেন প্রশ্ন উঠছে। বিষয়টি জানতে হবে।’
নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমিনা সাত্তার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নিজের ইচ্ছা মতো প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের কোনো ঘর বিক্রি করতে পারেন না। এই জন্য উপজেলায় একটি কমিটি রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল যুবকের
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

লক্ষ্মীপুরে করাতকলের মোটর দিয়ে পানি তুলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কাউছার হোসেন (২৪) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
আজ রবিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে সদর উপজেলার শাকচর ইউনিয়নের হাজিরবাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত কাউছার শাকচর গ্রামের হাজী আলী হোসেনের বাড়ির ওমর ফারুকের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাজিরবাজার এলাকায় কাউছারদের করাতকল রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ‘ঘটনাটি শুনে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

৭ সন্তানকে নিয়ে এক মায়ের আকুতি
আল নোমান শান্ত, দুর্গাপুর

স্বামী মারা গেছেন দুই বছর আগে। এরপরই জীবনে নেমে সীমাহীন কষ্ট। এখন সাত সন্তান ও শাশুড়ি নিয়ে ছোট্ট একটি ঘরে বসবাস। সকালে দুমুঠো খেলেও দুপুরে মেলে না।
নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার চন্ডিগড় ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মউ গ্রামের বাসিন্দা সুলেমা খাতুন।
গতকাল শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, সন্তানদের পেটে ক্ষুধা, মা সুলেমার চোখে মুখে চিন্তার ভাঁজ। দুপুরে খাওয়া হয়নি কারোই। ঘরে আছে অল্প চাল কিন্তু তরকারি নেই কিছুই, রাতে কি খাবে এই ভেবে বসে আছেন ঘরের সামনে।
সুলেমা খাতুন জানান, বেঁচে থাকতে স্বামীও ভিক্ষা করতেন। তিনিও অন্যের বাড়ি কাজ করতেন। তখনও কষ্টে দিন কেটেছে তাদের।
তিনি বলেন, ‘মাঝে মধ্যে আশেপাশের বাড়িতে কাজ পেলে করি। যা পাই তাই সন্তানদের লইয়া খাই। কিন্তু সব সময় কাজ থাকে না। দুই-তিন আগে পাশের বাড়ির মাসুদের মা কিছু চাউল দিছিল, ওগুলো সন্তানদের খাওয়াচ্ছি। বড় ছেলে আইসক্রিম বিক্রি করতে বের হয়েছে, যদি কয়ডা টাকা পায় তাহলে কিছু যদি আনে নইলে তো এভাবেই থাকতে হবে।’
প্রতিবেশী হাসিনা বেগম বলেন, ‘সুলেমা সন্তানদের নিয়ে এখন খুবই কষ্টে দিনাতিপাত করছে। আমরা প্রতিবেশী যতুটুকু পারি সাহায্য করি কিন্তু সব সময় তো আমরাও পারি না, তখন শুনি তারা না খেয়ে আছে। ছোট ছোট পোলাপানগুলোরে মাদরাসায় ভর্তি করাই তো সবার কাছে সাহায্য চাইতেছে। পাইলে ভর্তি করাতে পারবো নইতো পারতো না। ঘরেও খাওন নাই, এমনেই কষ্টে বেঁচে আছে। কেউ যদি তার জন্য এগিয়ে আসতো তাহলে ভালো হত।’
মো. আকবর আলী নামের আরেকজন বলেন, ‘সুলেমার জামাইও অসুস্থ আছিলো ভিক্ষা করতো, তখনও কষ্টে গেছে। এখনও কষ্টই করতাছে পোলাপানগুলোরে নিয়ে। খাইতে পারলে খা, না পাইলে না খাইয়া থাকে। খুবই কষ্ট করতেছে তারা।’
সুলেমার আকুতি ছোট সন্তানদের অল্পস্বল্প পড়াশোনা করানোর আর পেট ভরে দুবেলা খাওয়ানোর। কিন্তু অর্থের অভাবে বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না সন্তানরা। অভাব অনটনে যেখানে দুবেলা মুখে খাবার তুলে দিতে পারছে না, ক্ষুধা পেটে দিন কাটে সেখানে পড়াশোনা যেন দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। পূরণ হবে কি তার এই ইচ্ছা!

মোংলায় অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার
মোংলা প্রতিনিধি

মোংলা নদী থেকে অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রবিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহটি উদ্ধার করে নৌ পুলিশ।
মোংলা নৌ পুলিশের ইনচার্জ মো. লুৎফুল কবির জানান, আজ রবিবার দুপুরে মোংলার পানির ঘাট এলাকায় নদীতে অর্ধগলিত একটি মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে নারীর লাশটি উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ।
তিনি আরো জানান, অজ্ঞাত মরদেহটি শনাক্তে মরদেহের আঙুলের ছাপ নিয়েছে পিবিআই। ময়নাতদন্তের জন্য দুপুরেই মরদেহটি বাগেরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।