<p>পবিত্র কোরআনে সুরা আদিয়াতের ৫টি আয়াতে মহান আল্লাহ স্থলজ প্রাণী ঘোড়ার কতিপয় অবস্থা বর্ণনা করেছেন। তিনি শপথ করে বলেছেন যে মানুষ পালনকর্তার প্রতি খুবই অকৃতজ্ঞ। পক্ষান্তরে ঘোড়া মনিবের প্রতি কত কৃতজ্ঞ। সে নিজের জীবন বিপন্ন করে কত কঠোর খিদমতই না করে থাকে। বিশেষত যুদ্ধ ক্ষেত্রে ঘোড়া কত না ত্যাগ-তিতিক্ষা শিকার করে। আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীতে অসংখ্য নিয়ামত মানুষের জন্য রেখেছেন। তার মধ্যে একটি নিয়ামত হলো ঘোড়া। ঘোড়াকে সম্ভ্রান্ত জীব বলা হয়ে থাকে। আর এই ঘোড়ার প্রতি মানুষের নিষ্ঠুরতাও চোখে পড়ে।</p> <p>ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা পরিষদের আশপাশে বেশকিছু দিন ধরে দিন-রাত একটি ঘোড়াকে অবাধে বিচরণ করতে দেখা গেছে। কারো ঘোড়া হয়তো ছুটে এসেছে এমন ধারণা করলেও অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও মালিকের খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় দৃশ্যমান হয় ঘোড়াটির পেছনের দুই পায়ে পচন ধরার চিহ্ন। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটে। ঘোড়াটির গায়ে একটা ক্ষত লক্ষ করা গেছে। শরীরের ক্ষতে মশা-মাছি বসায় যন্ত্রণা সহ্য করছে এই বোবা প্রাণীটি। তবে ঘোড়াটিকে শিশুরা খেলার ছলে পেটাচ্ছে, সুযোগ পেলে বড়রাও থেমে থাকছে না।</p> <p>গত প্রায় দুই মাস পার হলেও একই স্থানে এই ঘোড়ার অবস্থান দেখে এখন অনেকেই ওই ঘোড়াটিকে কিছু করছেন না। ক্ষত স্থান দিন দিন ভালো হচ্ছে। আগে কিছুক্ষণ হেঁটে দাঁড়িয়ে থাকলেও এখন সারাক্ষণ ঘাস ছাড়াও লোকজনের দেওয়া এটা সেটা খাচ্ছে। সন্ধ্যার পর উপজেলা পরিষদের লাইটের নিচে ঘোরাফেরা করছে। রাত গভীর হলে পাশের উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষের বারান্দায় গিয়ে শুয়ে-দাঁড়িয়ে থাকছে। ঘোড়ার এমন আচরণে অনেকেই হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন।</p> <p>খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘোড়াটি উপজেলার আচারগাঁও এলাকার একজনের ছিল। তবে সূত্র যার নাম বলেছে তিনি ঘোড়াটি এখন নিজের বলে অস্বীকার করেছেন।</p> <p>অনুসন্ধানে জানা যায়, এই ঘোড়াটিকে মালিক গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে লালন-পালন করেছেন। এক সময় শরীরে তেজ ছিল বলে তার খাবারের অভাব ছিল না। ঘোড়াটির মালিক প্রতিদিন অর্থ আয় করেছে। ঘোড়াটি গত প্রায় এক মাস আগে অসুস্থ হওয়ার কারণে একে চিকিৎসাসেবা না দিয়ে রাতের অন্ধকারে রাস্তায় ফেলে রেখে গেছে। বর্তমানে ঘোড়াটি কিছুটা সুস্থ হওযায় অনেকের চোখে পড়ছে। তবে এখনো পেছনের দুই পায়ে ব্যাপক ফোলা ও ঘা রয়েছে। সঠিক চিকিৎসা করাতে পারলে হয়তো পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে ঘোড়াটি।</p> <p>জানতে চাইলে নান্দাইল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হারুন অর রশিদ কালের কণ্ঠকে জানান, তিনি গত প্রায় দুই মাস ধরেই এর চিকিৎসা করাচ্ছেন। তবে লাগাতার চিকিৎসা করানো যাচ্ছে না। কারণ ঘোড়াটিকে অনেক সময় খোঁজ করেও পাওয়া যায় না। এটির পচন রোগ হয়েছে। ঘোড়ার একবার এই রোগ হলে ধারাবাহিক চিকিৎসা প্রয়োজন। তার পরও আমরা নজরে রাখছি। বেশ কয়েকজন জানিয়েছেন এই ঘোড়াটির মালিক ঘোড়াটি গুরুতর অসুস্থ হলে নান্দাইল-হোসেনপুর সড়কের পাশে ফেলে যায়।</p>