<p>যশোরের কেশবপুর ও মণিরামপুরের ২৭ বিলের জলাবদ্ধতা নিরসনে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকালে ২৭ বিল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির উদ্যোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে ওই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে জলাবদ্ধতা নিরসনে ভবদহ এলাকার হরি নদীসংলগ্ন বিলে টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট (টিআরএম) প্রকল্প বাস্তবায়নসহ পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে।</p> <p>স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, যশোর জেলার অন্তর্গত কেশবপুর ও মণিরামপুর উপজেলার ভবদহ অঞ্চলে অবস্থিত ২৭ বিল। এসব বিলের চারপাশে ছয়টি ইউনিয়নের ৬৮টি গ্রাম রয়েছে। বিলে প্রায় আট হাজার হেক্টর (৫৬ হাজার বিঘা) ধানিজমি রয়েছে। প্রায় ৩৬ বছর যাবৎ বিলগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ক্রমান্বয়ে স্থায়ীরূপ লাভ করেছে। গত বছরও এ বিলে ৮০ ভাগ জমিতে বোরো আবাদ হয়নি। মানুষের বসতবাড়িতে পানি, রাস্তাঘাট, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ডুবে গেছে। মানুষের বাড়িঘর ছাড়তে হচ্ছে। দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ। কেউ মৃত্যুবরণ করলে অন্যত্র দাফন করতে হচ্ছে। এ ছাড়া ফলদ ও বনজ বৃক্ষ মারা যাচ্ছে। জলাবদ্ধতার কারণে গবাদি পশুর খাদ্যসংকটসহ জীবন-জীবিকা, কর্মসংস্থান, অর্থনীতি, শিক্ষা, খাদ্য ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।</p> <p>স্মারকলিপিতে উল্লিখিত পাঁচ দফা দাবির ভেতর রয়েছে শ্রীহরি নদী জরুরি ভিত্তিতে খনন ও পানি পাম্প আউট করে অতিদ্রুত বসতবাড়ির পানি নামিয়ে দেওয়া এবং আগামীতে বোরো আবাদ উপযোগী করে তোলা, স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে বিল কপালিয়ায় টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট-টিআরএম (জোয়ারাধার) প্রকল্প বাস্তবায়ন ও সহজ শর্তে জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া, প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে জনসম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা, সব নদী ও খাল দখলমুক্ত করা এবং সমস্যা সমাধানে লোকজ জ্ঞানের গুরুত্ব দেওয়া।</p> <p>কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেনের কাছে স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন ২৭ বিল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক বাবুর আলী গোলদার, যুগ্ম আহ্বায়ক সনজিৎ বিশ্বাস, সদস্য আব্দুল গফফার, কৃষক গাজী আব্দুল হামিদ, সৈয়দ আকমল আলী, বৈদ্যনাথ সরকার, শওকত হোসেন, রবিউল আলম, সুফিয়া পারভীন শিখা, সনৎ বসু হরি, অলিয়ার রহমান, রিপন শেখ, নওশের আলী, শহিদুল ইসলাম, রজব আলী প্রমুখ।</p> <p>বিল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক বাবুর আলী গোলদার বলেন, ২৭ বিলসহ উপজেলার বিল গরালিয়া, পাঁজিয়া পাথরা, টেপু বলধালি বিলের জলাবদ্ধতা নিরসন এবং হরিহর, আপারভদ্রা ও বুড়িভদ্রা নদী খননের মাধ্যমে পানিপ্রবাহ সচল রাখার দাবি জানাচ্ছি। </p> <p>এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসন বিষয়ে স্মারকলিপি পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপিটি প্রেরণ করা হবে।’</p>