<p>প্রায় চার বছর আগে নির্মাণ কাজ শেষ হলেও অজ্ঞাত কারণে চালু হচ্ছে না অত্যাধুনিক ১০০ শয্যার রংপুর শিশু হাসপাতালের কার্যক্রম। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার চিঠিও দিয়েছে সিভিল সার্জনের কার্যালয়। তবে, কবে নাগাদ চালু হতে পারে তা নিশ্চিত নয় কর্তৃপক্ষ। এদিকে, সব অবকাঠামো প্রস্তুত হলেও কার্যক্রমে দিনের পর দিন ঝুলে থাকায় ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের।</p> <p>রংপুরের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, রংপুরের সাবেক সদর হাসপাতালের ১ দশমিক ৭৮ একর জমির মধ্যে শিশু হাসপাতাল নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয় ২০১৭ সালের ২১ নভেম্বর। ৩১ কোটি ৪৮ লাখ ৯২ হাজার ৮০৯ টাকা মূল্যের সেই কাজটি করেছেন ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মল্লিক এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স অণিক ট্রেডিং করপোরেশন।  ২০২০ সালের ৮ মার্চ এই হাসপাতাল ভবনটি আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা সিভিল সার্জনকে হস্তান্তর করা হয়েছে।</p> <p>হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা জানান, হাসপাতালটি হয়েছে তিন তলার। মূল ভবনের প্রথম তলায় থাকবে ইমার্জেন্সি, আউটডোর, চিকিৎসকদের চেম্বার এবং ল্যাব। দ্বিতীয় তলায় অপারেশন থিয়েটার, ব্রোন ইউনিট এবং তৃতীয় তলায় ওয়ার্ড এবং কেবিন থাকবে। প্রতি তলার আয়তন ২০ হাজার ৮৮২ দশমিক ৯৭ বর্গফুট। এ ছাড়া নির্মাণ করা হয়েছে চার তলা ভিত্তির তিন তলা সুপারিনটেনডেন্ট কোয়ার্টার। সিঁড়ি বাদে প্রতি তলার আয়তন দেড় হাজার বর্গফুট। ছয় তলা ডক্টরস কোয়ার্টারের নিচতলায় গাড়ি পার্কিং, দ্বিতীয় তলা থেকে ডাবল ইউনিট। আছে ছয় তলা বিশিষ্ট স্টাফ অ্যান্ড নার্স কোয়ার্টার। দুই তলা বিশিষ্ট গ্যারেজ কাম ড্রাইভার কোয়ার্টার। নিচে দুটি গাড়ি রাখার ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে। বিদ্যুৎ সাবস্টেশন স্থাপনের জন্যও নির্মাণ করা হয়েছে একটি ভবন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ইঞ্জিন বিকল : আড়াই ঘণ্টা পর গন্তব্যে পৌঁছল মেঘনা এক্সপ্রেস" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/22/1732258023-794cdb9c73f8c687c66ee249c67e263a.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ইঞ্জিন বিকল : আড়াই ঘণ্টা পর গন্তব্যে পৌঁছল মেঘনা এক্সপ্রেস</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/11/22/1449398" target="_blank"> </a></div> </div> <p>রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৫ জুন ৬৫৯ জনবল নিয়োগের প্রস্তাবনা দিয়ে রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। এতে একজন তত্ত্বাবধায়ক, চিকিৎসকসহ প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা ১৮০, নার্সসহ দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মচারী ১১৬, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ৬৩ ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ৩০০ জন রয়েছে। আর হাসপাতালের পেছনে বছরে ৪৬ কোটি ৫৬ লাখ ৩ হাজার ৬৩৮ টাকা ব্যয় হবে বলে প্রস্তাবনায় বলা হয়েছিল।</p> <p>সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের প্রধান ফটকটি বন্ধ থাকে। ছোট একটি পকেট গেট দিয়ে যাওয়া-আসা করতে হয়। শিশু হাসপাতাল ভবনটির ক্যাম্পাস সুনসান ও নিরিবিলি। প্রতিটি কক্ষের ফটকে তালা ঝুলছে। তিনতলা ভবনে ওঠার সিঁড়িসহ সব জায়গায় তালা থাকায় ওপরে ওঠারও কোনো উপায় নেই।</p> <p>এদিকে এই হাসপাতাল ভবনের নিচতলায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাত্র তিনটি কক্ষে অস্থায়ীভাবে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আওতাধীন শিশু রোগীর বহির্বিভাগ চালু করা হয়। তবে স্বতন্ত্র এই শিশু হাসপাতালের সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা ও রোগীদেরও তেমন সাড়া নেই।</p> <p>দেখা গেছে, মাত্র তিনটি কক্ষে রংপুর মেডিক্যালের আওতাধীন অতিরিক্ত শিশু বহির্বিভাগ করা হয়েছে। দুটি কক্ষের মধ্যে একজন মেডিক্যাল কর্মকর্তা বসে আছেন। অন্য কক্ষটিতে কেউ নেই।</p> <p>এ নিয়ে কথা বলতে চাননি কেউ। তবে, এখানে সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ২০ শিশু রোগীর চিকিৎসা হয়। দুপুরের পর বন্ধ।</p> <p>শেখ ওয়াজেদুল ইসলাম রাজু নামে একজন জানান, রংপুরে একটি পূর্ণাঙ্গ শিশু হাসপাতাল নির্মাণের জন্য অনেক আন্দোলন হয়েছে। সেই দাবি পূরণ করে সদর হাসপাতালের জমিতে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট শিশু হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করেছে। কিন্তু ভবন হলো, হাসপাতাল হচ্ছে না। আমরা মনে করি এখানকার স্বাস্থ্য বিভাগের ব্যর্থতা। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে শিশু হাসপাতালে সেবা কার্যক্রম শুরু করা হোক।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="হাজীগঞ্জে ১৯ কিশোর গ্যাং সদস্য আটক" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/22/1732252670-d82319912041449cd31bdb7e7569d171.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>হাজীগঞ্জে ১৯ কিশোর গ্যাং সদস্য আটক</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/11/22/1449379" target="_blank"> </a></div> </div> <p>তিনি বলেন, ‘নগরীতে শিশু চিকিৎসকদের একাধিক শিশু হাসপাতাল আছে, সেগুলো বেসরকারি, অনেক খরচ। এই হাসপাতাল চালু হলে খরচ কমে যাবে। নগরবাসী সহজে স্বল্পমূল্যে সেবা পাবেন।’</p> <p>সুজন রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, ‘রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাসেবার নাজুক অবস্থা চলছে। এরমধ্যে শিশুদের জন্য বিশেষায়িত একটি হাসপাতাল হলো যা অত্যন্ত খুশির খবর। ওদিকে বেসরকারিভাবে একটি শিশু হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। সাইনবোর্ডও সাটিয়েছে। আমার প্রশ্ন হলো-শিশু হাসপাতালের জন্য এত আন্দোলন হলো, সেটির জন্য টেন্ডার হলো, কাজ হলো... এখন কেন চালু হচ্ছে না? আমরা কোনো কথা শুনতে চাই না, রংপুরবাসীর জন্য এই হাসপাতাল চালু চাই।’</p> <p>রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক হারুণ অর রশীদ বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে কাগজপত্র পাঠিয়েছি। অনুমোদন পেলেই হাসপাতাল চালু করা হবে।’</p>