<p style="text-align:justify">এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে ‘এ’ গ্রেড (জিপিএ ৪ দশমিক ৩৩) পেয়ে পাস করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শহীদ সবুজ মিয়া (১৯)। এ বছর ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে শ্রীবরদী সরকারি কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল সবুজ। তার এই রেজাল্টে শিক্ষকরা-সহপাঠীরা আনন্দিত হলেও সন্তান ও ভাই হারানোর শোকে পরিবারে চলছে বিষাদের কান্না।</p> <p style="text-align:justify">জানা যায়, গত ৪ আগস্ট শেরপুর জেলা শহরের খরমপুর এলাকায় আওয়ামী দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন সবুজ মিয়া। এরপর থেকেই পরিবারের কারো মুখে হাসি নেই। প্রতিনিয়ত চলছে কান্না আর আহাজারি। আজ মঙ্গলবার এইচএসসি ২০২৪-এর ফলাফল প্রকাশ হলে দেখা যায়, নিহত সবুজ জিপিএ ৪ দশমিক ৩৩ গ্রেড পয়েন্ট (‘এ’ গ্রেড) পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ফলাফল শুনে আরো শোকাহত হয়েছে তার পরিবার।</p> <p style="text-align:justify">ছেলের ছবি বুকে নিয়ে মা সমেজা বেগম আহাজারি করে বলছিলেন, আমার ছেলে ভালো রেজাল্ট করেছে ঠিকই। কিন্তু এ রেজাল্টতো আমাদের কোনো কাজে আসবে না। আমরা চাই প্রকৃত দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে ন্যায়বিচার করা হোক। আমরা হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।</p> <p style="text-align:justify">শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়াকাজিরচর ইউনিয়নের রূপারপাড়া গ্রামের প্যারালাইজড রোগী আজাহার আলীর ছেলে সবুজ মিয়া। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবুজ ছিল দ্বিতীয়। বড় বোনের বিয়ে হওয়ার পর তার বাবা প্যারালাইজড হয়। এরপর সবুজ নিজেই পরিবারের দায়িত্ব নেন। পড়ালেখার পাশাপাশি স্থানীয় একটি দোকানে (ওষুধের ফার্মেসি) কাজ করতেন। তার সেই আয়ে চলতো পাঁচ সদস্যের পরিবার। কিন্তু তাকে হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে পরিবারটি। </p> <p style="text-align:justify">পরিবার চালানোর পাশাপাশি নিজের আয়ে পড়াশোনা করতেন শ্রীবরদী সরকারি কলেজে। সেখান থেকেই এ বছর ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি ২০২৪ পরীক্ষায় বসেছিলেন। কয়েকটি পরীক্ষা হওয়ার পর হঠাৎ দেশব্যাপী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়। সেই আন্দোলনে যোগ দিয়ে আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্তদের ছোঁড়া বন্দুকের গুলিতে প্রাণ হারায় মেধাবী ছাত্র সবুজ।</p> <p style="text-align:justify">শ্রীবরদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম আলিফ উল্লাহ আহসান জানান, নিহত সবুজ একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। ৬ সদস্যের সংসারের খরচ বহন করে নিজের লেখাপড়া চালিয়ে এই রেজাল্ট করা কম কথা নয়। তার এই রেজাল্টে আমরা শিক্ষকরাসহ তার সহপাঠীরাও আনন্দিত। শুধু তার পরিবার সন্তান ও ভাই হারানোর শোকে এ আনন্দ নিতে পারছে না। আমরা তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি। শোকাহত অসহায় পরিবারের পাশে আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো।<br />  </p>