<p>জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় এডিপি (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) ও উপজেলা উন্নয়ন তহবিলের কাজে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এসব প্রকল্পের মধ্যে কোনোটির অর্ধেক, আবার কোনোটির কাজ না করেই টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। অস্তিত্বহীন নামেও প্রকল্প নিয়ে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রকল্প নিয়ে অর্থ লোপাটের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রকৌশলী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।</p> <p>উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্র জানা যায়, মেলান্দহ উপজেলা ১১টি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে গঠিত। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ও উপজেলা উন্নয়ন তহবিল থেকে উপজেলার রাস্তাঘাট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ ও অবকাঠামো উন্নয়নে প্রকল্প নেওয়া হয়। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ২৮টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২৮টি প্রকল্প এবং প্রকল্পের তদারকি ও আনুষ্ঠানিক ব্যয়সহ ৯৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এরমধ্যে ১৩টি প্রকল্পের ২৬ লাখ টাকার কাজ প্রকল্প কমিটির মাধ্যমে করা হয়। ১০টি প্রকল্পের ৫৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার কাজ দরপত্রের মাধ্যমে ও ৩টি প্রকল্পের ১৫ লাখ টাকার কোটেশনের মাধ্যমে করা হয়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="স্ত্রীর শরীর থেকে ১৫০ গজ দূরে পড়ে ছিল ২ হাত-মাথা, স্বামী গ্রেপ্তার" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/12/1731387052-d99119ca42e35bfa7fbc7fba9ab1d88a.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>স্ত্রীর শরীর থেকে ১৫০ গজ দূরে পড়ে ছিল ২ হাত-মাথা, স্বামী গ্রেপ্তার</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/11/12/1445684" target="_blank"> </a></div> </div> <p>উপজেলা উন্নয়ন তহবিল থেকে ১৫টি প্রকল্প নেওয়া হয়। এর মধ্যে ১৫টি প্রকল্প ও প্রকল্পের তদারকি ও আনুষ্ঠানিক ব্যয়সহ ৮১ লাখ ৩৯ হাজার ৯৭ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই ১৫ প্রকল্পের মধ্যে ৪টি প্রকল্পের ১৬ লাখ টাকার কাজ দরপত্রে করা হয়। ১১টি প্রকল্পের ৫৪ লাখ ১৯ টাকার কাজ কোটেশনের মাধ্যমে করা হয়।</p> <p>এডিপির প্রকল্প এলাকা সরেজমিনে ঘুরে ও খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণের প্রকল্প নিলেও ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ করা হয়নি। মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের শৌচাগার মেরামত ও আদ্রা ইউনিয়নের মল্লিকা ডাঙ্গা এলাকায় রাস্তা সংস্কারের কোনো চিহ্ন নেই। ফুলকোচা ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে বসার বেঞ্চ নির্মাণের কথা থাকলেও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামানের বাড়ির পাশে একটি মাত্র বেঞ্চ দেখা গিয়েছে। আরসিসি পাইপ সরবরাহে নামে সাড়ে তিন লাখ টাকার একটি প্রকল্প থাকলেও কোথাও সরবরাহ করা হয়নি। কমিটির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা প্রকল্পের কাজ না করেই টাকা তুলে আত্মসাৎ করা হয়েছে। দরপত্রের মাধ্যমে করা প্রকল্পের কিছু কিছু কাজ হয়েছে।</p> <p>উপজেলা উন্নয়ন তহবিলের ১৫টি প্রকল্পের খোঁজখবর নিয়েও ঘুরে দেখা যায়, ১৫ প্রকল্পের মধ্যে ৪টি প্রকল্প দরপত্রের মাধ্যমে করা হয়েছে। ১১টি প্রকল্প কোটেশনের মাধ্যমে করা হয়েছে। কোটেশনের মাধ্যমে করা প্রকল্পের ব্যাপক নিয়ম দুর্নীতি ও লুটপাট হয়েছে। মেলান্দহ বাজার থেকে খাশিমারা বাজার রাস্তায় ইউ-ড্রেন নির্মাণ নামে প্রকল্প রয়েছে। তবে সরেজমিনে গিয়ে ওই প্রকল্প নামে কোনো রাস্তা খুঁজে পাওয়া যায়নি। উপজেলা অফিসার্স ক্লাবের নামে ৫ লাখ টাকার প্রকল্পে ক্লাবটির বাইরের অংশে কোনো কাজ দেখা যাইনি। উপজেলার বিভিন্ন রাস্তায় আরসিসি পাইপ সরবরাহে ১০ লাখ টাকার প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে মেরামত ও রং করণে ৬ লাখ টাকার প্রকল্পে নামমাত্র বাসভবনে রং করা হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় সোলার লাইট স্থাপন প্রকল্পে আংশিক লাইট স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া বেশিরভাগ লাইট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িতে স্থাপন করা হয়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="পাহাড়ি-বাঙালি মিলেমিশে এলাকার উন্নয়নে এগিয়ে যেতে হবে : ওয়াদুদ" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/12/1731386161-e06d061a77a7bde916b8a91163029d41.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>পাহাড়ি-বাঙালি মিলেমিশে এলাকার উন্নয়নে এগিয়ে যেতে হবে : ওয়াদুদ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/11/12/1445681" target="_blank"> </a></div> </div> <p>জাহানারা লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘উপজেলা বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমাদের বিদ্যালয়ে ফুটবল বা ক্রিকেট খেলার কোনো সামগ্রী বা ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ করেনি। এবং দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে কোনো স্কুলব্যাগ বিতরণ করেনি।’</p> <p>মেলান্দহ পৌরসভা কামদেববাড়ি এলাকার শিক্ষার্থী আফরিন জান্নাত আঁখি বলেন, ‘মেলান্দহ বাজার থেকে খাশিমারা বাজার এই নামে কোনো রাস্তা নেই। মাহমুদপুর ইউনিয়নের একদম ভিতরে খাশিমারা বাজার ওই বাজারে গেলে মাহমুদপুর বাজার যেতে হয়। এই প্রকল্প করছে অর্থ আত্মসাৎ করার জন্য। এসব ভুয়া নামে প্রকল্প তৈরি করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে।’</p> <p>মেলান্দহ উপজেলা অফিসার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘ক্লাবের জন্য কত টাকা বরাদ্দ ছিল তা আমার জানা নেই। আর বরাদ্দের টাকা কে তুলেছে তাও জানি না। যারা প্রকল্পের কমিটিতে ছিল তারা ভালো বলতে পারবে। তবে ক্লাবের ভেতরে কিছুটা কাজ হয়েছে।’</p> <p>উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী (এলজিইডি) শুভাশিষ রায় বলেন, ‘প্রকল্পের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে বলতে পারব। তাছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কিছু বলতে পারব না।’ এ ছাড়া এসব প্রকল্পের বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাননি উপজেলা প্রকৌশলী।</p> <p>উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমি কয়েক মাস আগে এই উপজেলা এসেছি। এসব প্রকল্পের বিষয়ে আমার কোনো কিছু জানা নেই। যেসব অভিযোগ উঠেছে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’</p>