<p>অতীতে এ দেশে গৃহস্থালির কাজে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল বাঁশের তৈরি কুলা, চালন, ঝুড়ি, সাজি, থামা, গোলা, মাথাল ও পলোসহ বাহারি রকমের টেকসই পণ্য। তবে প্লাস্টিকের তৈরি পণ্যের ভিড়ে বর্তমানে বাজারে বাঁশের তৈরি এসব সামগ্রীর চাহিদা দিনদিন কমে যাচ্ছে। এতে এসব কুটিরশিল্পের সঙ্গে জড়িতরা তাদের জীবিকার মাধ্যম হারাতে বসেছে। ধুঁকছে অর্থনৈতিক সংকটেও। এ কারণে অনেকে তাদের পেশাও বদল করেছেন।</p> <p>ফরিদপুরের সালথার সাহাপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশ থেকে চটা বের করে নিপুণ হাতের কারুকাজে স্বপ্ন বুনছেন ঋষি সম্প্রদায়ের কৃষ্ণ দাস, প্রভাস দাস, রানী দাস ও অনামিকা দাস। কৃষিনির্ভর এলাকাটিতে তারা বারোমাসই এই পণ্য তৈরি করেন। এতে তারা বর্তমানে শ্রমের দাম না পেলেও বংশপরম্পরায় বাঁশের পণ্য বানানোই তাদের নেশা। তাই এখনও কুটিরশিল্পের এই কাজটি তাদের করতে দেখা গেছে।</p> <p>ঋষি সম্প্রদায়ের কৃষ্ণ দাস, রানী দাস ও অনামিকা দাস কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে বাঁশের কুলা-ডালা ও চালনসহ নানা ধরনের পণ্য নিজেদের হাতে তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলাম আমরা। কিন্তু বাজারে প্লাস্টিকের পণ্যের দাম কম হওয়ায় এবং বাঁশের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের তৈরি পণ্যের কদর দিন দিন কমে যাচ্ছে। বর্তমানে অনেক পরিবার শখ করে বাঁশ দিয়ে তৈরি কিছু পণ্য গৃহস্থালির কাজের ব্যবহার করছেন, তাই এখনো এ শিল্পীটি টিকে আছে। এ অবস্থায় আমরা তেমন ভালো নেই। খেয়ে না খেয়ে আমাদের জীবন চলছে। সরকার যদি আমাদের পুঁজি ব্যবস্থা করে দেয়, তাহলে আমরা অন্য ব্যবসা করে একটু ভালোভাবে চলতে পারব।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="প্লাস্টিকের বিনিময়ে গাছের চারা দিল বসুন্ধরা শুভসংঘ" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/15/1731667852-e06d061a77a7bde916b8a91163029d41.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>প্লাস্টিকের বিনিময়ে গাছের চারা দিল বসুন্ধরা শুভসংঘ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/shuvosangho/2024/11/15/1446946" target="_blank"> </a></div> </div> <p>শুধু  কৃষ্ণ দাস, রানী দাস ও অনামিকা দাস নয়, সারা দেশে এমন অনেক মানুষ আছে যারা এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। বর্তমানে প্লাস্টিকের ভিড়ে তারা তাদের জীবিকার একমাত্র বাহন হারাতে বসেছে। কেউ কেউ অন্য পেশায় যেতে পারলেও অনেকেই উপযুক্ত পেশা খুঁজে পাচ্ছেন না। তাই তাদের দাবি এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখা হোক, যাতে শিল্পও টিকে থাকে তারাও জীবিকা নির্বাহ করতে পারে।</p> <p>অনেকে বলছেন, বাজারে প্লাস্টিকের সামগ্রীর সরবরাহ বন্ধ থাকলে পরিবেশবান্ধব এসব পণ্য টিকে থাকবে। বেঁচে থাকবে ঋষি সম্প্রদায়ের এসব জীবন জীবিকা।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বাঁশের তৈরি পলো" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/02/1730492611-28c03d3961c2e936cc6234f52d82e965.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বাঁশের তৈরি পলো</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2024/11/02/1441759" target="_blank"> </a></div> </div> <p>ফরিদপুর বেসিকের উপ-মহাব্যস্থাপক মানছুরুল করিম বলেন, ‘বর্তমান সরকার প্লাস্টিক পণ্য ও পলিথিন ব্যবহার বন্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় আমরাও প্লাস্টিক পণ্য পরিহার করে শিল্পবান্ধব দেশীয় বাঁশের পণ্য তৈরি করে বাজারজাত করার জন্য এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের উৎসাহিত করছি।’</p>