বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে লাগাতর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি)।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলন থেকে এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়। বিএসপির সভাপতি আশীষ কুমার দাশের সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন অধ্যাপক অশোক তরু। বিএসপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায়ের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বক্তৃতা করেন মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাবেক সভাপতি মনিন্দ্র কুমার নাথ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুরঞ্জন ঘোষ, বিএসপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট লিটন বনিক ও প্রাণতোষ তালুকদার, সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের প্রতিনিধি প্রদীপ কান্তি দে, সাংবাদিক শ্যামল কান্তি নাগ, জয়পুরহাট প্রতিনিধি বন্ধনা রানী মণ্ডল, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি অজয় ভট্টাচার্য্য, নোয়াখালী প্রতিনিধি জয়ন্ত কুমার ভৌমিক, অনিল সাধু প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে আশীষ কুমার দাশ বলেন, সারাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চলছে। তাদের ভূমি ও মন্দির জোরপূর্বক দখল করা হচ্ছে। বর্তমানে হিন্দু মালিকদের ২৬ লাখ একর জমি বেদখল আছে। যেখানে অন্য ধর্মের উপাসনালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে।
রাজনৈতিক কারণেই বছরের পর বছর এটা করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, যত নির্যাতন নিপীড়ন চলুক না কেন, কেউ দেশ ছেড়ে যাবেন না। আমরা এই দেশের ভূমিপুত্র। আমরা আমাদের বাপ-দাদার মাটি ছাড়বো না।
বরং সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তুলবো।
অধ্যাপক অশোক তরু বলেন, ১৯৪৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত সনাতন সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘর-মন্দির ভাঙচুর, সম্পদ লুণ্ঠন, হত্যা, গুম, খুন, ধর্ষণ, ধর্মান্তরিত ও ধর্মীয় অবমাননার অজুহাতে হিন্দুদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু একটি ঘটনারও সঠিক বিচার পাওয়া যায়নি। বরং উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপপ্রচার ও বিদ্বেষ ছড়ানোর মাধ্যমে হিন্দুদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর যখন সকল অপচেষ্টার বিরুদ্ধে হিন্দুরা রুখে দাঁড়িয়েছে, তখন সনাতনী সম্প্রদায়ের কাণ্ডারি চিন্ময় প্রভুকে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অনেকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা করা হয়েছে।
অবিলম্বে চিন্ময় প্রভুর মুক্তিসহ সনাতনী জাগরণ জোটের ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানান সনাতন পার্টির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায়।
তিনি বলেন, দাবি না মানলে রাজপথে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। যে আন্দোলন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে সনাতনী সম্প্রদায়ের কোন বন্ধু নেই। বরং তাদেরকে অতীতে ভোটব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ভোটব্যাংক নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় বিগত সরকার সনাতনী পার্টিকে নিবন্ধন দেয়নি। বৈষম্যের শিকার সনাতনীদের মুক্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কোন বিকল্প নেই বলে উল্লেখ করেন তিনি।
কর্মী সম্মেলনে বলা হয়, অনতিবিলম্বে ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’ প্রণয়ন করতে হবে। সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে। সারাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চলছে, এটা বন্ধ করতে হবে। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে অচিরেই জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ অন্যান্য প্রতিনিধিদের মুক্তি দিতে হবে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।