<p>রাজশাহীতে নিজ বাসা থেকে অপহরণের শিকার সেই নারী চিকিৎসকের সন্ধান মেলেনি। তার সন্ধান না মিললেও মিলেছে অপহরণের জন্য ব্যবহৃত গাড়িটি। এটি ৩০ ঘণ্টা পর শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে অপহরণের অভিযোগে ভুক্তভোগী চিকিৎসকের বাবা বাদী হয়ে রাজশাহী নগরের চন্দ্রিমা থানায় একটি মামলা করেন।</p> <p>সোমবার ভোরে রাজশাহী নগরীর নিজ বাসা থেকে অপহরণের শিকার হন ওই চিকিৎসক। একই সঙ্গে অপহরণের কাজে ব্যবহৃত গাড়িতে অপহরণকারী ব্যক্তিরা ওই চিকিৎসকের বাবাকেও তুলে নিয়ে যায়। পরে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা এলাকায় রাস্তায় চিকিৎসকের বাবাকে ফেলে যায় তারা। অপহরণকারী ব্যক্তিরা ওই চিকিৎসকের মাকে (৫১) পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।</p> <p>অপহরণের শিকার ওই চিকিৎসক রাজশাহীর একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ থেকে সম্প্রতি ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি (বিডিএস) শেষ করেছেন। তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। তাদের বাসা রাজশাহী নগরে।</p> <p>রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার সাবিনা ইয়াসমিন জানান, পুলিশের দিক থেকে ওই চিকিৎসককে উদ্ধারের সব ধরনের তৎপরতা চালানো হচ্ছে। এখন পর্যন্ত তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। ইতিমধ্যে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গ থানা থেকে তার বাবাকে নিয়ে আসা হয়েছে।</p> <p>পুলিশ অপহরণের কাজে ব্যবহৃত গাড়িটি নম্বরসহ শনাক্ত করতে পেরেছে। এই নম্বর বিভিন্ন থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে এখন কড়া নজরদারি চলছে।</p> <p>চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান বলেন, বাদী অপহরণকারী ব্যক্তিদের চিনতে পেরেছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। তবে তিনি এজাহারভুক্ত আসামিদের বিষয়ে কিছু জানাতে চাননি।</p> <p>অপহৃত চিকিৎসকের মামা জানান, মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে তার দুলাভাইকে আবার থানায় ডেকে নেওয়া হয়। তিনি কথা বলতে পারছেন, কিন্তু ভীষণ অসুস্থ। তাকে অনেক নির্যাতন করা হয়েছে। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আর অচেতন করার জন্য ইনজেকশন দেওয়ার কারণে তিনি শারীরিকভাবে দুর্বল।</p> <p>সোমবার অপহৃত চিকিৎসকের মা জানিয়েছিলেন, ওই দিন ভোরে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য তার স্বামী মসজিদে যান। এ সময় তিনি বাইরের ফটকে তালা লাগিয়ে চাবি সঙ্গে নিয়ে যান। একটু পরই তালা খোলার শব্দ পেয়ে তিনি এগিয়ে যান। এত তাড়াতাড়ি নামাজ না পড়ে ফিরে আসছেন কি না, তা দেখতে গিয়ে বুঝতে পারেন, অপহরণকারী ব্যক্তিরা তার স্বামীকে জিম্মি করে চাবি নিয়ে এসেছে। এ সময় অপহরণকারী ব্যক্তিরা তাকে ধরে দেয়ালের সঙ্গে মাথা ঠুকে দেয়। মাথায় তালা দিয়ে আঘাত করে।</p> <p>তিনি আরো বলেন, তার গলা চেপে ধরে অপহরণকারীরা। তাকে ছেড়ে দিলে দৌড় দিয়ে নিচে নেমে রাস্তার ওপর পড়ে যান তিনি। ততক্ষণে অপহরণকারীরা তার মেয়ে ও স্বামীকে নিয়ে চলে যায়।</p>