<p>গরু ও খাসির তুলনায় হরিণের মাংসের দাম কম হওয়ায় ইকবাল মোড়ল (২৩) নামের এক যুবক মাংস কিনতে যান। এ সময় ৩০ কেজি মাংস কিনে ফেরার পথে জনতার হাতে আটক হন তিনি।</p> <p>ইকবাল পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের কাশিমনগর গ্রামের মৃত আমিন উদ্দিন মোড়লের ছেলে। সুন্দরবনে অবৈধভাবে হরিণ শিকার করে উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলা ও জেলা শহরে তার মাংস বিক্রয় করা হয়। </p> <p>শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে প্রায় ৩০ কেজি হরিণের মাংস নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে ফেরার চেষ্টা করেন ইকবাল। এ সময় কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের কালনা বাজারে সড়কে রক্তের দাগ দেখে তাকে আটক করে স্থানীয়রা।</p> <p>কয়রা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাজেত আলী ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, মোটরসাইকেলে বস্তায় ঝুলিয়ে হরিণের মাংস নিয়ে পার্শ্ববর্তী পাইকগাছা উপজেলার দিকে যাচ্ছিলেন ওই যুবক। রাস্তায় রক্তের দাগ ও তার আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে স্থানীয়রা। এ সময় বস্তা খুলে হরিণের মাংস দেখতে পায় তারা। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে পুলিশে সোপর্দ করে।</p> <p>ইকবাল জানান, কয়রার সুন্দরবন এলাকা থেকে মনিরুল ইসলাম নামের এক হরিণ শিকারির কাছ থেকে এই মাংস দুই হাজার ৪০০ টাকা দিয়ে ক্রয় করেন ইকবাল। তিনি এর আগেও মনিরুলের কাছ থেকে মাংস ক্রয় করেন। মনিরুলের সঙ্গে আগে থেকেই ইকবালের পরিচয় ছিল বলে জানান তিনি।</p> <p>কয়রা উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, একপাশে লোকালয় অন্য পাশে সুন্দরবন। মাঝে ছোট একটি নদী। সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকায় কয়েকটি চক্র অনেক আগে থেকেই হরিণ শিকারের সঙ্গে জড়িত। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়মিত অভিযানে তাদের তৎপরতা কিছুটা কমলেও বর্তমানে ব্যাপক হারে বেড়েছে হরিণ শিকার। বিশেষ করে খুলনার কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের আংটিহারা ও জোড়শিং এলাকায় হরিণ শিকারি চক্রের আধিপত্য বেশি। পেশাদার হরিণ শিকারিরা গোপনে সুন্দরবনে ঢুকে নাইলনের দড়ির ফাঁদ পেতে রাখেন। চলাচলের সময় হরিণ ওই ফাঁদে আটকে যায়। তারপর বনরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে হরিণের মাংস বিক্রি করা হয়। কয়রাসহ জেলা শহর ও পার্শ্ববর্তী উপজেলা নিয়ে চড়া দামে বিক্রয় করে শিকারি চক্র।</p> <p>কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জি এম ইমদাদুল হক জানান, হরিণের মাংস উদ্ধারের ঘটনায় বন্যপ্রাণী আইনে একটি মামলা হয়েছে। এই মামলায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। হরিণ শিকারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার অভিযান চলছে।</p>