<p>বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বিদেশি জাতের গরু চুরির হিড়িক পড়েছে। কখন গোয়াল থেকে গরু চুরি হয় এই আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন এলাকার কৃষক ও খামারিরা। প্রতি রাতেই কোনো না কোনো এলাকায় হানা দিচ্ছে সংঘবদ্ধ চোরের দল। </p> <p>জানা যায়, গত এক মাসে এ উপজেলায় কমপক্ষে ১০টি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। পাকা সড়কের পাশে অরক্ষিত গোয়ালঘর, তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে গরু চুরির ঘটনা বেড়েছে বলে ধারণা পুলিশের। রাতের বেলায় যেসব সড়কে আলো থাকে না কিংবা অনেকটা নির্জন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বেশি উন্নত বিশেষ করে সেসব এলাকায় চুরির ঘটনা বেশি ঘটছে। প্রতিবছরই এ সময় চুরির ঘটনা বেড়ে যায়।</p> <p>সর্বশেষ রবিবার (৫ জানুয়ারি) ভোর ৪টায় উপজেলার সুলতানহাটা গ্রামের মজিবর আকন্দের ছেলে দুলাল আকন্দের গোয়ালঘর থেকে বিদেশি জাতের চারটি গরু চুরি করে ট্রাকে তুলে নিয়ে গেছে দূর্বৃত্তরা। দুলাল আকন্দ জমি চাষাবাদের পাশাপাশি বাড়িতে গবাদিপশু পালন করেন। ধুনট-সারিয়াকান্দি পাকা সড়কের পাশেই তার বাড়ি। অন্য দিনের মতো শনিবার রাত ৩টার পর গরুগুলো গোয়লঘরে রেখে পাশের ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। এ সুযোগে চোরেরা গোয়াল ঘরের পাশে পাকা সড়কে মিনি ট্রাক দাঁড় করিয়ে রাখে। এরপর চোরেরা গোয়ালঘর থেকে বিদেশি জাতের চারটি গরু চুরি করে ট্রাকে তুলে নিয়ে যায়।</p> <p>একই কৌশলে গত ২৭ ডিসেম্বর উপজেলার কান্তনগর-চরপাড়া গ্রামের জিল্লুর রহমানের ছেলে আব্দুল হান্নান ও জাহিদুল ইসলামের চারটি বিদেশি জাতের গরু চুরি করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়া ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে উপজেলার পশ্চিম গুয়াডহরী গ্রামের আশরাফ আলীর গোয়ালঘর থেকে দুটি বিদেশি জাতের গরু চুরি হয়েছে।</p> <p>সংঘবদ্ধ চোরের দল নানা কৌশলে একের পর এক কৃষকের গোয়ালঘর থেকে গরু চুরি করে যাচ্ছে। পুলিশের নজরদারির অভাব ও রাত্রিকালীন টহল না থাকার কারণে চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না বলে অনেকের অভিযোগ। পুলিশের দায়িত্বহীনতা নিয়েও ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক কৃষকদের মধ্যে বিরাজ করছে চরম ক্ষোভ। চুরির ভয়ে কৃষক ও খামারিরা গরু পালনে আগ্রহ হারাচ্ছেন।</p> <p>স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ জমানো সঞ্চয়, ধারদেনা কিংবা ঋণ নিয়ে গরু কিনে তা লালন পালন করে থাকেন। সংসারে একটু সচ্ছলতা আনতে তারা অনেক কষ্ট করে থাকেন। গরুর দুধ বিক্রি করে পরিবারের খরচের টাকা যোগান। কৃষিনির্ভর পরিবারগুলো গরু দিয়ে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে। আর গরু চোরেরা যখন এসব মূল্যবান গরু চুরি করে নিয়ে যায় তখন হতদরিদ্র এসব পরিবারগুলো নিঃস্ব হয়ে পড়ে।</p> <p>ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম বলেন, গরু চুরি ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে কয়েকজন গরুচোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া চোরাই গরু উদ্ধারেও পুলিশ কাজ করছে। গরুর মামলার বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।</p>