<p>ব্রিটেনের সিটিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগের জন্য ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে পড়েছেন। বাংলাদেশের পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে জড়িত একটি কেলেঙ্কারিতে তাঁর সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে বলে ব্রিটিশ দৈনিক ফিন্যানশিয়াল টাইমস প্রতিবেদন করেছে। দুর্নীতিবিরোধী প্রচেষ্টার দায়িত্বে থাকা সিদ্দিকের নামে তাঁর ফুফু, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কিত একাধিক সম্পত্তির খবর বেরিয়ে এসেছে।</p> <p>ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস ফিলিপ সিদ্দিকের সম্পদের উৎস ব্যাখ্যা এবং তাঁর ফুফুর সঙ্গে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থের যোগসূত্র স্পষ্ট করার দাবি জানিয়েছেন। তিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারকে ‘এই প্রশ্নের উত্তর না দেওয়া পর্যন্ত তাঁকে দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণ’ করার আহ্বান জানিয়েছেন।</p> <p>টিউলিপ বর্তমানে ব্রিটেনের অর্থ মন্ত্রণালয়ের (ট্রেজারি) অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) হিসেবে আর্থিক খাতের অপরাধ-দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে আছেন। তিনি ও তাঁর পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে।</p> <p>যদিও স্টারমার সিদ্দিককে সমর্থন অব্যাহত রেখেছেন, একজন জ্যেষ্ঠ লেবার কর্মকর্তা দলীয় নেতৃত্বের পক্ষে তাঁর আর্থিক লেনদেনকে ‘রক্ষা করা কঠিন’ হয়ে পড়ছে এবং তাঁর অবস্থান ক্রমেই অস্থির হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেছেন।</p> <p>ফিন্যানশিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৪ সালে লন্ডনের কিংস ক্রসের কাছে একটি দুই শয়নকক্ষের ফ্ল্যাট কোনো অর্থ পরিশোধ ছাড়াই সিদ্দিকের মালিকানায় আসে। তিন বছর আগে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে সংযুক্ত ডেভেলপার আব্দুল মোতালিফ এক লাখ ৯৫ হাজার পাউন্ডে ফ্ল্যাটটি কিনেছিলেন। সিদ্দিক এখনো সম্পত্তির মালিক।</p> <p>এদিকে সানডে টাইমস জানিয়েছে, টিউলিপ হ্যাম্পস্টেডের আরেকটি সম্পত্তিতে থাকতেন, যা তাঁর বোন মঈন গনিকে দিয়েছিলেন। গনি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ওকালতি করেছেন। টিউলিপ লন্ডনের ইস্ট ফিঞ্চলিতে ২.১ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন। বাড়িটির মালিক আব্দুল করিম, ব্রিটেন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য।</p> <p>গত বছর শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তাঁর শাসনামলের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিদেশে সম্পত্তি অর্জনের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ করেছে।</p> <p>টিউলিপ কিছুই ভুল করেননি বলে দাবি করা হলেও কিভাবে তিনি কিংস ক্রসের ফ্ল্যাটের মালিক হলেন সে সম্পর্কে বিরোধপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন। ল্যান্ড রেজিস্ট্রি থেকে পাওয়া তথ্যমতে, লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে এমএ শেষ করার পরপরই ২০০৪ সালের নভেম্বরে টিউলিপ ফ্ল্যাটটির মালিকানা লাভ করেন। সে সময় তাঁর জ্ঞাত আয়ের কোনো উত্স ছিল না। সম্পত্তিটির বন্ধকি বা মূল্যের বিষয়ে কোনো তথ্যও পাওয়া যায়নি। ফলে এটা স্পষ্ট যে সম্পত্তিটি কেনা হয়নি, বরং তাঁকে হস্তান্তর করা হয়েছিল। সূত্র : ফিন্যানশিয়াল টাইমস</p>