<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত মেগাপ্রকল্পগুলো একেবারে বন্ধ না হলেও গুরুত্ব কমেছে। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত প্রকল্পগুলো চালু রাখার বিষয়ে মৌখিক নির্দেশ দিলেও কার্যত এসব স্থবির হয়ে পড়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নে ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকার দেশের আট মেগাপ্রকল্পকে ফাস্ট ট্র্যাক হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। অর্থসংকটের কারণে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন ধীরগতিতে এগোলেও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত মেগাপ্রকল্পে এর প্রভাব পড়েনি। আওয়ামী লীগ সরকারের এসব প্রকল্পের কাজ চলছিল বেশ জোরেশোরেই। বাজেটে অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হতো এসব প্রকল্পে। চলতি অর্থবছরের এডিপিতেও বরাদ্দের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পাশাপাশি প্রকল্পগুলো তদারকি বাড়াতে গঠিত হয় ফাস্ট ট্র্যাক প্রজেক্ট মনিটরিং কমিটি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই ছিলেন এই কমিটির সভাপতি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত মেগাপ্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আগে তিন মাস পর পর মনিটরিং কমিটির বৈঠক হতো। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো বৈঠক হয়নি। নেই কোনো পর্যালোচনাও। প্রকল্পগুলোর বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো দিকনির্দেশনাও দেয়নি অন্তর্বর্তী সরকার। তদারকিও গেছে কমে। সাধারণ অন্যান্য প্রকল্পের মতো বাস্তবায়িত হচ্ছে ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত প্রকল্পগুলো। অর্থছাড়েও নেই গতি। এতে বেশির ভাগ প্রকল্প বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে থাকলেও দেখা দিয়েছে ধীরগতি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) সূত্রে জানা গেছে, ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত আটটি প্রকল্পের মধ্যে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। চলমান সাতটি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে মেট্রো রেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, রামপাল মৈত্রী বিদ্যুৎ প্রকল্প, মহেশখালী-মাতারবাড়ী সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ এবং দোহাজারী-রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু-মায়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গল লাইন ডুয়াল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্প। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে তিন লাখ ১৩ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ রয়েছে দুই লাখ আট হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। বাকি দুই লাখ ৮৪ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় করা হচ্ছে। শুরু থেকে গত নভেম্বর পর্যন্ত গড় ভৌত অগ্রগতি ৯০.৯৪ শতাংশ। প্রকল্পগুলোর আওতায় খরচ হয়েছে মোট বরাদ্দের ৭৮.১৬ শতাংশ অর্থ। সাত প্রকল্পের মধ্যে কয়েকটির কাজ শেষ হওয়ার পথে। বাকিগুলোও বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে। সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রতি মাসে ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত মেগাপ্রকল্পগুলো পরিদর্শন করে অগ্রগতি প্রতিবেদন তৈরি করে আইএমইডি। সেই প্রতিবেদনের ওপর মনিটরিং কমিটির বৈঠক হতো। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পর থেকে আইএমইডি প্রতিবেদন তৈরি করলেও মনিটরিং কমিটির কোনো বৈঠক হচ্ছে না। এতে তদারকি কমার পাশাপাশি কমেছে অর্থছাড়। এতে আগের গতিতে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে তেমন তাড়া দেখা যাচ্ছে না। ফলে আগের মাসগুলোর তুলনায় বাস্তবায়ন অগ্রগতির হার তুলনামূলকভাবে কমে গেছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত মেগাপ্রকল্পের বিষয়ে জানতে চাইলে আইএমইডির পিআরএলে থাকা সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত প্রকল্পগুলোর বিষয়ে আলাদা করে তেমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এগুলোর বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়নি। বাস্তবায়নকাজ চলমান। তবে আগের মতো অগ্রাধিকার পাচ্ছে না, গুরুত্বও কিছুটা কমেছে। কারণ আগের মতো প্রজেক্ট মনিটরিং কমিটির কোনো বৈঠকও হচ্ছে না। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি বলেন, আগে তিন মাস পর পর নিয়মিত বৈঠক হতো, এখন এসব নিয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। আগের মতো পর্যালোচনাও হচ্ছে না। অর্থছাড়ে সমস্যা না থাকলেও কিছুটা ধীরগতি রয়েছে। সাধারণ অন্যান্য প্রকল্পের মতো এগুলো চলছে। তবে আইএমইডি থেকে আগের মতো পরিদর্শন করে নিয়মিত প্রতিবেদন তৈরি করা হয়, কিন্তু মনিটরিংয়ের কারণে আগে যেমন প্রকল্প পরিচালকরা তটস্থ থাকতেন, সেটি এখন দেখা যায় না। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তফা কে মুজেরী কালের কণ্ঠকে বলেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া এবং কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হলে সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে বর্তমান সরকার। সে ক্ষেত্রে আগের সরকারের আমলে নেওয়া অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্পগুলোর বিষয়ে গুরুত্ব কম পেতে পারে। তবে প্রত্যাশা থাকবে বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নকাজ দ্রুত শেষ করার। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত মেগাপ্রকল্পের অগ্রগতি প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিভাগের রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে ৯৯.৫০ শতাংশ, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দোহাজারী-কক্সবাজার-ঘুমধুম রেলপথের কাজ শেষ হয়েছে ৯৮.৮০ শতাংশ। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের কাজ শেষ ৯৩.২২ শতাংশ, মেট্রো রেল লাইন-৬-এর কাজ হয়েছে ৯০ শতাংশ, মহেশখালী-মাতারবাড়ীর কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ এগিয়েছে ৯০.৪০ শতাংশ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৬৭.৮১ শতাংশ।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর মেগাপ্রকল্পগুলো মধ্যে অপ্রয়োজনীয় বিবেচনায় একটি রেল প্রকল্প বাদ দেওয়া হয়েছে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু থেকে মায়ানমারের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত সিঙ্গল লাইন ডুয়াল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> প্রকল্প থেকে বাদ গেছে রামু-ঘুমধুম পর্যন্ত রেলপথ অংশের নির্মাণকাজ। প্রকল্পটির রামু-ঘুমধুম অংশ বাস্তবায়নে এডিবির অর্থায়নে অপারগতা এবং মায়ানমারের সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে ট্রান্স এশিয়ান রেল সংযোগ স্থাপন আপাতত সম্ভব নয় বলে বাদ দেওয়া হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"> </p>