<p style="text-align:justify">হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা নদীতে চলছে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। দিন-রাত ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করার কারণে হুমকির মুখে রয়েছে নদী ও নদীর পারের শত শত বিঘা ফসলি জমি এবং বাড়িঘর। এ ছাড়া অবাধে বালু তোলার কারণে ভেঙে যাচ্ছে এলাকার রাস্তাঘাট, বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি। </p> <p style="text-align:justify">খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির প্রভাবশালী নেতাদের কাঁধে ভর করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বালু উত্তোলনের মহোৎসব করছেন। এতে একদিকে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে, আরেক দিকে লাখ লাখ টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। এমতাবস্থায় বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।</p> <p style="text-align:justify">জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক, দুর্গাপুর, পাহাড়পুর, পারকুল ও কুমারকাদাঁ এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে আওয়ামী লীগের একটি বিশাল চক্র। এই চক্রে রয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য আ. মতিন আছাব, দুলাল আহমদ, ফজলু মিয়া, ইউপি সদস্য জুয়েল, স্থানীয় বিএনপি নেতা আব্দুল বারিক রনি, রুয়েল মিয়া, সাজু মাহমুদ, আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আমিন, সাজ্জাদ, ফখরুল মিয়া, আলী হোসেন, মৌলভীবাজারের বাহাদুরপুর গ্রামের রনি মিয়াসহ স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতৃবৃন্দ। তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে এলাকার বিএনপি ও আওয়ামী লীগের আরো বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি।</p> <p style="text-align:justify">স্থানীয়রা জানায়, চক্রটি এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে নদী থেকে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে আসছেন। কেউ এ বিষয়ে কথা বললে দেওয়া হয় হুমকি। ফলে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে নারাজ। দিনের পর দিন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে চক্রটি হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এমতাবস্থায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।</p> <p style="text-align:justify">ওই এলাকার তারেক মিয়া বলেন, চক্রটি খুবই প্রভাবশালী। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই নানাভাবে হয়রানি করে সাধারণ লোকজনদের। তাদের বালু তোলার কোনো অনুমতি নেই। অথচ তারা দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশ নষ্ট করে বালু উত্তোলন করে আসছে। কাজল মিয়া বলেন, ‘আমার সবজির জমিতে তারা জোরপুর্বক বালু স্তূপ করে রেখেছে। তারা আমাকে বলেছিল ক্ষতিপূরণ দিবে কিন্তু দিইনি।’</p> <p style="text-align:justify">হবিগঞ্জ জেলা বাপার সাধারণ তোফাজ্জুল সোহেল বলেন, ‘নদীর তলদেশ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন আমাদের পরিবেশের জন্য মরাত্মক হুমকি। এখন এর প্রভাব তেমন একটা না পড়লেও পরবর্তীতে বিস্তর প্রভাব ফেলবে বালু তোলার ঘটনায়। তাই পরিবেশ রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের এসব বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’</p> <p style="text-align:justify">অভিযোগের বিষয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বলেন, ‘আমার এলাকায় নদী ভাঙন রোধে একটি বড় উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। এই প্রকল্পে এলাকার কিছু যুবকসহ লোকজন কুশিয়ারা নদী থেকে বালু-মাটি দিচ্ছে। বালু তোলার বিষয়ে আমি জড়িত নই।’</p>
