গরু-খাসির চেয়ে কমদামে মেলে হরিণের মাংস! চাহিদা থাকায় থামছে না শিকার

ওবায়দুল কবির সম্রাট, কয়রা
ওবায়দুল কবির সম্রাট, কয়রা
শেয়ার
গরু-খাসির চেয়ে কমদামে মেলে হরিণের মাংস! চাহিদা থাকায় থামছে না শিকার
সংগৃহীত ছবি

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনে সবচেয়ে বেশি দেখা মেলে হরিণের। সোনালি থেকে লালচে বাদামি দেহের ওপর ছোপ ছোপ গোলাকার সাদা ফোঁটা থাকে। যার কারণে এ হরিণের নাম দেওয়া হয়েছে চিত্রা হরিণ। সুন্দরবনে পর্যটন স্পটে এখন হরহামেশাই হরিণ দেখতে পান পর্যটকেরা।

মানুষের শব্দ পেলেই ঘন বনে লুকানোর চেষ্টা করে লাজুক এ প্রাণী। তবে দিন দিন সুন্দরবনে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে শিকারি চক্রের সদস্যরা। একের পর এক নিধন করা হচ্ছে হরিণসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী। ফাঁদ পেতে, বিষটোপ দিয়ে এবং গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে এসব বন্যপ্রাণী।
এসব বন্যপ্রাণী হত্যা ও পাচার রোধে তাৎক্ষণিক শাস্তিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় হরিণের প্রতি কেজি মাংস ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, জেলা শহরে প্রতি কেজি হরিণের মাংস ৬০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা দাম নেওয়া হয়। গরু ও খাসির মাংসের তুলনায় হরিণের মাংসের দাম কম হওয়ায় সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় এ বন্য প্রাণীর মাংসের চাহিদা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। স্থান ভেদে চড়া দামেও হরিণের মাংস বিক্রি করছে চোরা শিকারিরা।

পার্শ্ববর্তী উপজেলা, জেলা ও ঢাকাতে রয়েছে হরিণের মাংসের বিশেষ কদর। এ সুযোগে সাম্প্রতিক সময়ে সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রায় শিকারি চক্রের দৌরাত্ম্য উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে।

আরো পড়ুন
উপযুক্ত বয়সে বিবাহ না করার পরিণতি

উপযুক্ত বয়সে বিবাহ না করার পরিণতি

 

এদিকে, হরিণ শিকার বন্ধে তথ্য প্রদানকারীকে বনের ভেতরের জন্য ২০ হাজার টাকা এবং বনের বাইরে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা দিয়েছে বন বিভাগ। বনে শিকার বন্ধ এবং শিকারিদের ধরতে ১১ পরিকল্পনা নিয়ে বন বিভাগ অভিযান শুরু করেছে।

বনসংলগ্ন গ্রামবাসীদের অভিযোগ, শিকারিদের গডফাদার রয়েছে।

কেউ কেউ আবার রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় চলে। শিকারিরা অনেক সময় জেলের বেশ ধারণ করে সুন্দরবনে প্রবেশ করেছে। তাদের ধরতে সুন্দরবনে স্মার্ট প্রেট্রোল এবং বন বিভাগের টহল থাকলেও অদৃশ্য কারণে শিকার কমছে না।

তারা জানান, বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ম্যানেজ করে, আবার কখনো তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে চুরি করে বনে ঢুকে শিকারিরা ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করছে। শিকারি চক্রের কাছ থেকে অর্থ, হরিণের মাংসসহ বিভিন্ন ধরনের সুবিধা নিয়ে শিকারিদের সুযোগ করে দিচ্ছেন কিছু অসাধু বন কর্মকর্তা, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, অসাধু পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরাও।

আরো পড়ুন
টক দইয়ের সঙ্গে যেসব খাবার খাওয়া অনুচিত

টক দইয়ের সঙ্গে যেসব খাবার খাওয়া অনুচিত

 

বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য মতে, পুলিশ, র‌্যাব, কোস্টগার্ড এবং সুন্দরবন বিভাগ,গত বছরের জানুয়ারি মাস হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সুন্দরবন থেকে শিকার করা ৬টি হরিণের মাথা, একটি গুঁইসাপ, ৮টি হরিণের চামড়া, ৪৮০ কেজি মাংস, ৩৮০টি হরিণ মারার ফাঁদ জব্দ করা হয়। আটক করা হয় ১৫ জন চোরা শিকারিকে। বন বিভাগ, কোস্টগার্ড ও পুলিশ সদস্যরা এ বন্যপ্রাণী শিকারিদের আটক করা হয়। গত বছর বন্যপ্রাণী আইনে কয়রায় ৩৫টি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে ১২টি মামলা হরিণ শিকার ও চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে, যা বর্তমানে চলমান আছে।

সর্বশেষ গত বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাতে সুন্দরবনের সত্যপীরের খাল এলাকা থেকে ৮০ কেজি হরিণের মাংস উদ্ধার করে বন বিভাগ। এর আগে গত ৩ জানুয়ারি ৩৪ কেজি হরিণের মাংসসহ এক যুবককে গ্রেপ্তার করে কয়রা থানা পুলিশ। এসব বিষয়ে পৃথক দুইটি মামলা হয়েছে। আটক করা হয় ১ জনকে। 

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন ছয় হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার। এর মধ্যে স্থলভাগের পরিমাণ চার হাজার ১৪৩ বর্গকিলোমিটার এবং জলভাগের পরিমাণ এক হাজার ৮৭৩ বর্গকিলোমিটার। জীববৈচিত্র্যে ভরপুর বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন। সর্বশেষ জরিপ অনুসারে সুন্দরবনে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬০৪টি হরিণ রয়েছে।

আরো পড়ুন
কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হলেই শুল্কারোপ বাদ : ট্রাম্প

কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হলেই শুল্কারোপ বাদ : ট্রাম্প

 

যেভাবে চলে হরিণ শিকার

হরিণের নিয়মিত যাতায়াতের পথে ফাঁদ পাতেন শিকারিরা। যাতায়াতের সময় হরিণগুলো আটকে যায়। এক রাতে পেতে আসা হয় ফাঁদ। পরের রাতে গিয়ে আবার দেখা হয়। যেসব এলাকায় হরিণের বিচরণ বেশি সেসব স্থানে নাইলনের জাল পেতে, স্প্রিং বসানো ফাঁদ পেতে, কলার সঙ্গে বড়শি ঝুলিয়ে, চেতনানাশক ওষুধ দিয়ে ও তীর অথবা গুলি ছুড়ে হরিণ শিকার করা হয়।

মাছ ধরার পারমিট নিয়ে হরিণ শিকারিরা রাতের আঁধারে গোপনে বনে ঢোকেন। নাইলনের দড়ির এক ধরনের ফাঁদ ব্যবহার করেন তারা। হরিণের নিয়মিত যাতায়াতের পথে এগুলো পাতা হয়। অনেক সময় এসব ফাঁদে আটকে হরিণ মারাও যায়। আবার অনেক সময় ফাঁদে পা আটকে জালে জড়িয়ে থাকে।

এসব ফাঁদ বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে হিরণ পয়েন্ট, দুবলার চর, বঙ্গবন্ধুর চর, কালিরচর, শিসখালী, ছদনখালী, কাগানদী, মরাকাগা, কেওড়াতলী খাল, ভোমরখালী,  কুকুমারী, ভোমরখালী খাল, খলিশাবুনিয়া, বড়কুকুমারী খাল, নীল কোমল,কটকা, তালপট্টি, কচিখালি, দুবলা চান্দেরশ্বর, বগি, চরখালি এলাকায়। শিকারিরা বনের ভেতর থেকে হরিণ শিকার করে এনে লোকালয়ে থাকা সহযোগীদের হাতে পৌঁছে দেয়। বিভিন্ন জায়গায় হাতবদল হয়ে হরিণ পৌঁছে যায় নির্দিষ্ট গন্তব্যে।

জানা গেছে, খুলনার কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের আংটিহারা ও জোড়শিং এলাকায় হরিণ শিকারি চক্রের আধিপত্য বেশি। আর হরিণ পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বজবজা ও খাসিটানা বন টহল ফাঁড়ি এলাকা। এ ছাড়া মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের নয়ানি, হড্ডা, খোঁড়লকাটি, বানিয়াখালী, শেখেরকোনা ও তেঁতুলতলার চর; কয়রা সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর, ৫ নম্বর ও ৬ নম্বর কয়রা; উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের পাথরখালী, কাটকাটা; মহারাজপুর ইউনিয়নের পূর্ব মঠবাড়ি, পবনা, মঠেরকোনা গ্রাম হরিণশিকারি চক্রের তৎপরতা রয়েছে। এসব গ্রামে হরিণ শিকারিরা রাতে ও দিনে দলবদ্ধভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ করে নিয়মিত হরিণ শিকার করে। এসব এলাকায় হরিণ শিকার করে বিক্রি করতে গিয়ে অনেকে ধরাও পড়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে।

আরো পড়ুন
হাসপাতাল ছেড়ে কোথায় উঠবেন খালেদা জিয়া?

হাসপাতাল ছেড়ে কোথায় উঠবেন খালেদা জিয়া?

 

দক্ষিণ বেদকাশির বাসিন্দা আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘একপাশে গহিন জঙ্গল অপরপাশে বসতি। মাঝে ছোট একটি নদী। শীতের সময় নদীর খালে পানি কম থাকে। পেশাদার হরিণ শিকারিরা গোপনে সুন্দরবনে ঢুকে নাইলনের দড়ির ফাঁদ পেতে রাখে। আবার কলা ও রুটি দিয়ে বিষ টোপ দিয়ে রাখে। চলাচলের সময় হরিণ ওই ফাঁদে আটকে যায়। তারপর বনরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে হরিণের মাংস বিক্রি করা হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘গত কিছু দিন ধরে এলাকায় হরিণ শিকারিদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বন বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের খুশি করতে ও তদবির হিসেবে হরিণের মাংস সরবরাহ করে থাকে শিকারিরা। শিকারিদের বন বিভাগের লোকজন চেনেন। কিন্তু তাদের কখনো গ্রেপ্তার করেন না। আবার আটক করা হলেও বের হয়ে তারা আবারও শুরু করে।’ 

সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী সাংবাদিক শুভ্র শচীন বলেন, ‘কয়রা উপজেলাটি সুন্দরবন সংলগ্ন উপজেলাটিকে ঘিরে রেখেছে কপোতাক্ষ, কয়রা এবং শাকবাড়িয়া নদী। উপজেলাটির তিন দিক নদীবেষ্টিত এবং ৭টি ইউনিয়নই সুন্দরবনের সীমানায় অবস্থিত। উপজেলাটির গ্রামগুলোর বেশিরভাগই শ্রমজীবী মানুষ। সুন্দরবনের পাশের এসব গ্রামের প্রতিটি পরিবারই সুন্দরবনকেন্দ্রিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তারাই বেশি হরিণ শিকারের সাথে যুক্ত।’

আরো পড়ুন
রাবিতে বহিরাগত শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার, মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা

রাবিতে বহিরাগত শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার, মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা

 

এ উপজেলার ৩০টির বেশি চোরাশিকারি চক্র সুন্দরবনের হরিণ নিধন করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কর্মসংস্থান হারিয়ে বনজ সম্পদ আহরণসহ নানা উপায়ে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল মানুষের আয় কমেছে। যে কারণে বনজীবীদের কেউ কেউ জীবিকার তাগিদেও এসব কাজে লিপ্ত হচ্ছে।’

কয়রা থানার ওসি জি এম ইমদাদুল হক বলেন, ‘সব অপরাধ দমনে কয়রা থানা পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সাম্প্রতিক হরিণ শিকার বেড়েছে। আমাদের অভিযান ও আমরা বাড়িয়েছি। একজনকে মাংসসহ গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, কয়রার সুন্দরবন-সংলগ্ন এলাকা থেকে এক হরিণ শিকারির কাছ থেকে তিনি এ মাংস এনেছেন। আমরা হরিণ শিকারি ও এদের মদদ দাতাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

সুন্দরবন খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘হরিণ শিকার বন্ধে আমরা হরিণের মাংস ক্রেতা, বিক্রেতা ও শিকারিদের চিহ্নিত করছি। ১১টি বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা করে এগোচ্ছি। সব স্টেশন কর্মকর্তাদের ইতিমধ্যে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমাদের কেউ হরিণ শিকারিদের সহায়তা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হরিণ শিকারের বিষয়ে আমাদের “জিরো টলারেন্স” থাকবে সব সময়।’

আরো পড়ুন
প্রকল্প এলাকা ঘুরে কাজ শুরুর নির্দেশ দিলেন জেলা প্রশাসক

প্রকল্প এলাকা ঘুরে কাজ শুরুর নির্দেশ দিলেন জেলা প্রশাসক

 

খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, ‘বন বিভাগ হরিণ শিকারিদের প্রতিনিয়ত ধরছে। এ ছাড়া স্মার্ট পেট্রোলিং টিমও হরিণ শিকারিদের ধরতে কাজ করছে। মূলত শুষ্ক মৌসুমে সুন্দরবনের ভেতরে খাল ও নদীতে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় হরিণের বিচরণ বেড়ে যায়। সে কারণে চোরা শিকারিরা এ সময় বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। এসব শিকারিদের ধরতে বন বিভাগ তৎপর রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বন্যপ্রাণী হত্যা ও পাচার রোধে শিকারিদের ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করেছে বন বিভাগ। হরিণের ক্ষেত্রে বনের ভেতরে অপরাধ উদঘাটনের তথ্য দেওয়ায় ২০ হাজার টাকা এবং বনের বাইরে ১০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া আছে। বনে শিকার বন্ধ এবং শিকারিদের ধরতে ১১ পরিকল্পনা নিয়ে বন বিভাগ অভিযান শুরু করেছে।’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

শীতার্ত মানুষের পাশে বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত : হাবিব

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি
শেয়ার
শীতার্ত মানুষের পাশে বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত : হাবিব
ছবি : কালের কণ্ঠ

শীতার্ত মানুষদের পাশে বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব।
 
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঈশ্বরদী বাজার এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরণ ও বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ঈশ্বরদীর অনেক বড় ব্যবসায়ী আছেন, যারা ইচ্ছে করলেই শীতার্ত মানুষদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করে তাদের শীত নিবারণ করতে পারেন। ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতাদের শীতার্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানো দরকার।

তাহলে অসহায় মানুষগুলো শীতের নিদারুণ কষ্ট থেকে কিছুটা বাঁচবে।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আজমল হোসেন ডাবলু, পৌর বিএনপি নেতা আব্দুল জব্বার, মাহবুব আলম দুলাল মন্ডল, সাবেক ছাত্রদল নেতা রফিকুল ইসলাম নয়ন, তুহিন সিদ্দিক, শেখ বেলাল প্রমুখ।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

পাহাড়ে মিলল শিশুর গলা কাটা লাশ

কুমিল্লা উত্তর প্রতিনিধি
কুমিল্লা উত্তর প্রতিনিধি
শেয়ার
পাহাড়ে মিলল শিশুর গলা কাটা লাশ
সংগৃহীত ছবি

কুমিল্লায় নিখোঁজের দুই দিন পর মো. রিফাত হোসেন (৯) নামের এক শিশুর গলা কাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে লালমাই পাহাড়ের সদর দক্ষিণ উপজেলার চণ্ডীমুড়া অংশ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

সদর দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহত শিশু মো. রিফাত হোসেন পার্শ্ববর্তী বরুড়া উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের মো. রশিদের ছেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রিফাত নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও রিফাতকে না পেয়ে রবিবার তার পরিবার পুলিশে অভিযোগ দেয়। সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় চণ্ডীমুড়া পাহাড়ে শিশুর গলা কাটা লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে শনাক্ত করে।

সদর দক্ষিণ থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল তার পরিবার বরুড়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। আজ আমার এলাকায় লাশ পাওয়া গেছে। তার গলা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা ছিল এবং শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। আমরা লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি।

ময়নাতদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।’

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

৮ বছরেও শুরু হয়নি সাংবাদিক শিমুল হত্যার বিচার

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
শেয়ার
৮ বছরেও শুরু হয়নি সাংবাদিক শিমুল হত্যার বিচার
ছবি : কালের কণ্ঠ

চাঞ্চল্যকর সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুল হত্যার অষ্টম বার্ষিকীতে নানা কর্মসূচি পালন করেছে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর প্রেস ক্লাব। এ উপলক্ষে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে কালো পতাকা উত্তোলন, কালো ব্যাজ ধারণ, শিমুলের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, প্রতিবাদসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

আরো পড়ুন
ইন্দুরকানীতে চলছে জনসমীক্ষা, জিয়ানগর নামে উপজেলা চান সাঈদীপুত্র

ইন্দুরকানীতে চলছে জনসমীক্ষা, জিয়ানগর নামে উপজেলা চান সাঈদীপুত্র

 

শাহজাদপুর প্রেস ক্লাব চত্বরে সংগঠনের সভাপতি এম এ জাফর লিটনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন হোসেন, সাবেক সভাপতি বিমল কুন্ডু, সহসভাপতি রাসেল সরকার, সাংবাদিক আবুল কাশেম, জহুরুল ইসলাম, জাকারিয়া মাহমুদ, মির্জা হুমায়ুন ও প্রয়াত শিমুলের স্ত্রী নুরুন্নাহার প্রমুখ।

আরো পড়ুন
পুলিশকে অনলাইনে মামলা রুজুর ব্যবস্থা চালুর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

পুলিশকে অনলাইনে মামলা রুজুর ব্যবস্থা চালুর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

 

বক্তারা বলেন, ‘২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি শাহজাদপুরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘষ চলার সময় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সমকাল পত্রিকার শাহজাদপুর প্রতিনিধি শিমুল গুলিবিদ্ধ হন।

পরের দিন তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় প্রয়াত সাংবাদিকের স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় ৩৮জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। কিন্তু ৮ বছর অতিবাহিত হলেও আজও মামলার বিচারকার্য শুরু হয়নি। মামলাটি আসামিদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে স্থগিত অবস্থায় রয়েছে।
এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে এ হত্যা মামলার দ্রুত বিচারকার্য শুরুর দাবি করেছেন গণমাধ্যমকর্মী ও নিহতের স্বজনরা।

মন্তব্য

ইন্দুরকানীতে চলছে জনসমীক্ষা, জিয়ানগর নামে উপজেলা চান সাঈদীপুত্র

পিরোজপুর প্রতিনিধি
পিরোজপুর প্রতিনিধি
শেয়ার
ইন্দুরকানীতে চলছে জনসমীক্ষা, জিয়ানগর নামে উপজেলা চান সাঈদীপুত্র
সাঈদীপুত্র মাসুদ সাঈদী। ছবি : সংগৃহীত

জিয়ানগর নাম পুনর্বহালের জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করে উপজেলাবাসী। এরই প্রেক্ষিতে আজ সোমবার ইন্দুরকানী উপজেলার নাম পরিবর্তন করে সাঈদীর দেওয়া জিয়ানগর নাম পুনর্বহালে জনমত যাচাইয়ে উপজেলার তিন স্থানে জনসমীক্ষার আয়োজন করেছে মন্ত্রণালয়।

এদিকে পিরোজপুরের ‘ইন্দুরকানী’ উপজেলার নাম ‘জিয়ানগর’ পুনর্বহাল করার দাবি জানিয়েছেন সাঈদীপুত্র মাসুদ সাঈদী। তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে আবেদনের কপির ছবিসহ এই তথ্য শেয়ার করেন তিনি।

মাসুদ সাঈদী বলেন, ২০০২ সালের ২১ এপ্রিল পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক এমপি আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ঐকান্তিক চেষ্টা ও পরিকল্পনায় মাত্র তিনটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হয় ‘জিয়ানগর’ উপজেলা। আল্লামা সাঈদীর আমন্ত্রণে জিয়ানগর উপজেলা উদ্বোধন করেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ২০০২ সালে উপজেলাটি উদ্বোধন হওয়ার পর থেকে ২০০৬ সালে এমপির মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত এই সময়কালে জিয়ানগর উপজেলার সকল অবকাঠামোগত উন্নয়ন আল্লামা সাঈদীর হাত ধরেই হয়েছে।

তিনি বলেন, ২০০৯ সালে ষড়যন্ত্রের নির্বাচনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আরোহণ করে।

এরপর আল্লামা সাঈদীর জন্মস্থান শুধু এই রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় শেখ হাসিনা গোটা উপজেলার সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেন। এরপর ২০১৭ সালে জিয়ানগর উপজেলার নাম পরিবর্তন করে ‘ইন্দুরকানী’ রাখা হয়। ওই সাল থেকে হাসিনার পতন হওয়া পর্যন্ত এই উপজেলা সরকারি নথিপত্রে ইন্দুরকানী নাম হলেও এলাকাবাসী শুরু থেকেই এই উপজেলাকে জিয়ানগর নামেই ডাকে।

সাঈদীপুত্র জানান, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে খুনি হাসিনার পতনের পর সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দ্বায়িত্ব গ্রহণ করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল, বিশিষ্ট সংবিধান বিশেষজ্ঞ এ এফ হাসান আরিফ।

আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় পরিবর্তন করে রাখা ইন্দুরকানীকে পুনরায় জিয়ানগর করার দাবিতে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বিপ্লব পরবর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের সঙ্গে সাঈদীপুত্র ৫ সেপ্টেম্বর সাক্ষাৎ করেন। হাসান আরিফের নিকট জিয়ানগর উপজেলাবাসীর পক্ষে তিন হাজারের অধিক মানুষের স্বাক্ষর সম্বলিত নাম পরিবর্তনের আবেদন করেন।

মাসুদ সাঈদী আরো বলেন, ‘সাক্ষাৎকালে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ আমাকে আমার প্রয়োজনের থেকেও অনেক বেশি সময় দিয়েছিলেন। আব্বার মামলা ও চিকিৎসার নামে পিজি হাসপাতালে এনে হত্যার বিষয়েও অনেক কিছু জানতে চেয়েছিলেন। তার কথা খুব মনোযোগ দিয়ে তিনি শুনেছিলেন।

আশ্বস্ত করেছেন—আল্লামা সাঈদীর হাতে গড়া উপজেলা আবার জিয়ানগর নামেই ফিরবে।’

জিয়ানগর নাম পুনর্বহালের বিষয়ে জনমত যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে উপজেলার তিনটি স্থানে জনসমীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। এমন উদ্যোগে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের বর্তমানে দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকেও ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ