ঢাকা, রবিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৫
৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, রবিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৫
৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

গরু-খাসির চেয়ে কমদামে মেলে হরিণের মাংস! চাহিদা থাকায় থামছে না শিকার

ওবায়দুল কবির সম্রাট, কয়রা
ওবায়দুল কবির সম্রাট, কয়রা
শেয়ার
গরু-খাসির চেয়ে কমদামে মেলে হরিণের মাংস! চাহিদা থাকায় থামছে না শিকার
সংগৃহীত ছবি

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবনে সবচেয়ে বেশি দেখা মেলে হরিণের। সোনালি থেকে লালচে বাদামি দেহের ওপর ছোপ ছোপ গোলাকার সাদা ফোঁটা থাকে। যার কারণে এ হরিণের নাম দেওয়া হয়েছে চিত্রা হরিণ। সুন্দরবনে পর্যটন স্পটে এখন হরহামেশাই হরিণ দেখতে পান পর্যটকেরা।

মানুষের শব্দ পেলেই ঘন বনে লুকানোর চেষ্টা করে লাজুক এ প্রাণী। তবে দিন দিন সুন্দরবনে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে শিকারি চক্রের সদস্যরা। একের পর এক নিধন করা হচ্ছে হরিণসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী। ফাঁদ পেতে, বিষটোপ দিয়ে এবং গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে এসব বন্যপ্রাণী।
এসব বন্যপ্রাণী হত্যা ও পাচার রোধে তাৎক্ষণিক শাস্তিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে, সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় হরিণের প্রতি কেজি মাংস ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, জেলা শহরে প্রতি কেজি হরিণের মাংস ৬০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা দাম নেওয়া হয়। গরু ও খাসির মাংসের তুলনায় হরিণের মাংসের দাম কম হওয়ায় সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় এ বন্য প্রাণীর মাংসের চাহিদা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। স্থান ভেদে চড়া দামেও হরিণের মাংস বিক্রি করছে চোরা শিকারিরা।

পার্শ্ববর্তী উপজেলা, জেলা ও ঢাকাতে রয়েছে হরিণের মাংসের বিশেষ কদর। এ সুযোগে সাম্প্রতিক সময়ে সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রায় শিকারি চক্রের দৌরাত্ম্য উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে।

আরো পড়ুন
উপযুক্ত বয়সে বিবাহ না করার পরিণতি

উপযুক্ত বয়সে বিবাহ না করার পরিণতি

 

এদিকে, হরিণ শিকার বন্ধে তথ্য প্রদানকারীকে বনের ভেতরের জন্য ২০ হাজার টাকা এবং বনের বাইরে ১০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা দিয়েছে বন বিভাগ। বনে শিকার বন্ধ এবং শিকারিদের ধরতে ১১ পরিকল্পনা নিয়ে বন বিভাগ অভিযান শুরু করেছে।

বনসংলগ্ন গ্রামবাসীদের অভিযোগ, শিকারিদের গডফাদার রয়েছে।

কেউ কেউ আবার রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় চলে। শিকারিরা অনেক সময় জেলের বেশ ধারণ করে সুন্দরবনে প্রবেশ করেছে। তাদের ধরতে সুন্দরবনে স্মার্ট প্রেট্রোল এবং বন বিভাগের টহল থাকলেও অদৃশ্য কারণে শিকার কমছে না।

তারা জানান, বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ম্যানেজ করে, আবার কখনো তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে চুরি করে বনে ঢুকে শিকারিরা ফাঁদ পেতে হরিণ শিকার করছে। শিকারি চক্রের কাছ থেকে অর্থ, হরিণের মাংসসহ বিভিন্ন ধরনের সুবিধা নিয়ে শিকারিদের সুযোগ করে দিচ্ছেন কিছু অসাধু বন কর্মকর্তা, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, অসাধু পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরাও।

আরো পড়ুন
টক দইয়ের সঙ্গে যেসব খাবার খাওয়া অনুচিত

টক দইয়ের সঙ্গে যেসব খাবার খাওয়া অনুচিত

 

বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য মতে, পুলিশ, র‌্যাব, কোস্টগার্ড এবং সুন্দরবন বিভাগ,গত বছরের জানুয়ারি মাস হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সুন্দরবন থেকে শিকার করা ৬টি হরিণের মাথা, একটি গুঁইসাপ, ৮টি হরিণের চামড়া, ৪৮০ কেজি মাংস, ৩৮০টি হরিণ মারার ফাঁদ জব্দ করা হয়। আটক করা হয় ১৫ জন চোরা শিকারিকে। বন বিভাগ, কোস্টগার্ড ও পুলিশ সদস্যরা এ বন্যপ্রাণী শিকারিদের আটক করা হয়। গত বছর বন্যপ্রাণী আইনে কয়রায় ৩৫টি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে ১২টি মামলা হরিণ শিকার ও চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে, যা বর্তমানে চলমান আছে।

সর্বশেষ গত বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাতে সুন্দরবনের সত্যপীরের খাল এলাকা থেকে ৮০ কেজি হরিণের মাংস উদ্ধার করে বন বিভাগ। এর আগে গত ৩ জানুয়ারি ৩৪ কেজি হরিণের মাংসসহ এক যুবককে গ্রেপ্তার করে কয়রা থানা পুলিশ। এসব বিষয়ে পৃথক দুইটি মামলা হয়েছে। আটক করা হয় ১ জনকে। 

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন ছয় হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার। এর মধ্যে স্থলভাগের পরিমাণ চার হাজার ১৪৩ বর্গকিলোমিটার এবং জলভাগের পরিমাণ এক হাজার ৮৭৩ বর্গকিলোমিটার। জীববৈচিত্র্যে ভরপুর বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন। সর্বশেষ জরিপ অনুসারে সুন্দরবনে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬০৪টি হরিণ রয়েছে।

আরো পড়ুন
কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হলেই শুল্কারোপ বাদ : ট্রাম্প

কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হলেই শুল্কারোপ বাদ : ট্রাম্প

 

যেভাবে চলে হরিণ শিকার

হরিণের নিয়মিত যাতায়াতের পথে ফাঁদ পাতেন শিকারিরা। যাতায়াতের সময় হরিণগুলো আটকে যায়। এক রাতে পেতে আসা হয় ফাঁদ। পরের রাতে গিয়ে আবার দেখা হয়। যেসব এলাকায় হরিণের বিচরণ বেশি সেসব স্থানে নাইলনের জাল পেতে, স্প্রিং বসানো ফাঁদ পেতে, কলার সঙ্গে বড়শি ঝুলিয়ে, চেতনানাশক ওষুধ দিয়ে ও তীর অথবা গুলি ছুড়ে হরিণ শিকার করা হয়।

মাছ ধরার পারমিট নিয়ে হরিণ শিকারিরা রাতের আঁধারে গোপনে বনে ঢোকেন। নাইলনের দড়ির এক ধরনের ফাঁদ ব্যবহার করেন তারা। হরিণের নিয়মিত যাতায়াতের পথে এগুলো পাতা হয়। অনেক সময় এসব ফাঁদে আটকে হরিণ মারাও যায়। আবার অনেক সময় ফাঁদে পা আটকে জালে জড়িয়ে থাকে।

এসব ফাঁদ বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে হিরণ পয়েন্ট, দুবলার চর, বঙ্গবন্ধুর চর, কালিরচর, শিসখালী, ছদনখালী, কাগানদী, মরাকাগা, কেওড়াতলী খাল, ভোমরখালী,  কুকুমারী, ভোমরখালী খাল, খলিশাবুনিয়া, বড়কুকুমারী খাল, নীল কোমল,কটকা, তালপট্টি, কচিখালি, দুবলা চান্দেরশ্বর, বগি, চরখালি এলাকায়। শিকারিরা বনের ভেতর থেকে হরিণ শিকার করে এনে লোকালয়ে থাকা সহযোগীদের হাতে পৌঁছে দেয়। বিভিন্ন জায়গায় হাতবদল হয়ে হরিণ পৌঁছে যায় নির্দিষ্ট গন্তব্যে।

জানা গেছে, খুলনার কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের আংটিহারা ও জোড়শিং এলাকায় হরিণ শিকারি চক্রের আধিপত্য বেশি। আর হরিণ পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বজবজা ও খাসিটানা বন টহল ফাঁড়ি এলাকা। এ ছাড়া মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের নয়ানি, হড্ডা, খোঁড়লকাটি, বানিয়াখালী, শেখেরকোনা ও তেঁতুলতলার চর; কয়রা সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর, ৫ নম্বর ও ৬ নম্বর কয়রা; উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের পাথরখালী, কাটকাটা; মহারাজপুর ইউনিয়নের পূর্ব মঠবাড়ি, পবনা, মঠেরকোনা গ্রাম হরিণশিকারি চক্রের তৎপরতা রয়েছে। এসব গ্রামে হরিণ শিকারিরা রাতে ও দিনে দলবদ্ধভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ করে নিয়মিত হরিণ শিকার করে। এসব এলাকায় হরিণ শিকার করে বিক্রি করতে গিয়ে অনেকে ধরাও পড়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে।

আরো পড়ুন
হাসপাতাল ছেড়ে কোথায় উঠবেন খালেদা জিয়া?

হাসপাতাল ছেড়ে কোথায় উঠবেন খালেদা জিয়া?

 

দক্ষিণ বেদকাশির বাসিন্দা আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘একপাশে গহিন জঙ্গল অপরপাশে বসতি। মাঝে ছোট একটি নদী। শীতের সময় নদীর খালে পানি কম থাকে। পেশাদার হরিণ শিকারিরা গোপনে সুন্দরবনে ঢুকে নাইলনের দড়ির ফাঁদ পেতে রাখে। আবার কলা ও রুটি দিয়ে বিষ টোপ দিয়ে রাখে। চলাচলের সময় হরিণ ওই ফাঁদে আটকে যায়। তারপর বনরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে হরিণের মাংস বিক্রি করা হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘গত কিছু দিন ধরে এলাকায় হরিণ শিকারিদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বন বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের খুশি করতে ও তদবির হিসেবে হরিণের মাংস সরবরাহ করে থাকে শিকারিরা। শিকারিদের বন বিভাগের লোকজন চেনেন। কিন্তু তাদের কখনো গ্রেপ্তার করেন না। আবার আটক করা হলেও বের হয়ে তারা আবারও শুরু করে।’ 

সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী সাংবাদিক শুভ্র শচীন বলেন, ‘কয়রা উপজেলাটি সুন্দরবন সংলগ্ন উপজেলাটিকে ঘিরে রেখেছে কপোতাক্ষ, কয়রা এবং শাকবাড়িয়া নদী। উপজেলাটির তিন দিক নদীবেষ্টিত এবং ৭টি ইউনিয়নই সুন্দরবনের সীমানায় অবস্থিত। উপজেলাটির গ্রামগুলোর বেশিরভাগই শ্রমজীবী মানুষ। সুন্দরবনের পাশের এসব গ্রামের প্রতিটি পরিবারই সুন্দরবনকেন্দ্রিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তারাই বেশি হরিণ শিকারের সাথে যুক্ত।’

আরো পড়ুন
রাবিতে বহিরাগত শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার, মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা

রাবিতে বহিরাগত শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার, মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা

 

এ উপজেলার ৩০টির বেশি চোরাশিকারি চক্র সুন্দরবনের হরিণ নিধন করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কর্মসংস্থান হারিয়ে বনজ সম্পদ আহরণসহ নানা উপায়ে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল মানুষের আয় কমেছে। যে কারণে বনজীবীদের কেউ কেউ জীবিকার তাগিদেও এসব কাজে লিপ্ত হচ্ছে।’

কয়রা থানার ওসি জি এম ইমদাদুল হক বলেন, ‘সব অপরাধ দমনে কয়রা থানা পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সাম্প্রতিক হরিণ শিকার বেড়েছে। আমাদের অভিযান ও আমরা বাড়িয়েছি। একজনকে মাংসসহ গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, কয়রার সুন্দরবন-সংলগ্ন এলাকা থেকে এক হরিণ শিকারির কাছ থেকে তিনি এ মাংস এনেছেন। আমরা হরিণ শিকারি ও এদের মদদ দাতাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

সুন্দরবন খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘হরিণ শিকার বন্ধে আমরা হরিণের মাংস ক্রেতা, বিক্রেতা ও শিকারিদের চিহ্নিত করছি। ১১টি বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা করে এগোচ্ছি। সব স্টেশন কর্মকর্তাদের ইতিমধ্যে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমাদের কেউ হরিণ শিকারিদের সহায়তা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হরিণ শিকারের বিষয়ে আমাদের “জিরো টলারেন্স” থাকবে সব সময়।’

আরো পড়ুন
প্রকল্প এলাকা ঘুরে কাজ শুরুর নির্দেশ দিলেন জেলা প্রশাসক

প্রকল্প এলাকা ঘুরে কাজ শুরুর নির্দেশ দিলেন জেলা প্রশাসক

 

খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, ‘বন বিভাগ হরিণ শিকারিদের প্রতিনিয়ত ধরছে। এ ছাড়া স্মার্ট পেট্রোলিং টিমও হরিণ শিকারিদের ধরতে কাজ করছে। মূলত শুষ্ক মৌসুমে সুন্দরবনের ভেতরে খাল ও নদীতে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় হরিণের বিচরণ বেড়ে যায়। সে কারণে চোরা শিকারিরা এ সময় বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। এসব শিকারিদের ধরতে বন বিভাগ তৎপর রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বন্যপ্রাণী হত্যা ও পাচার রোধে শিকারিদের ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করেছে বন বিভাগ। হরিণের ক্ষেত্রে বনের ভেতরে অপরাধ উদঘাটনের তথ্য দেওয়ায় ২০ হাজার টাকা এবং বনের বাইরে ১০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া আছে। বনে শিকার বন্ধ এবং শিকারিদের ধরতে ১১ পরিকল্পনা নিয়ে বন বিভাগ অভিযান শুরু করেছে।’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

লালমাইয়ে অস্ত্রসহ আ. লীগ নেতার ছেলে গ্রেপ্তার

সদর দক্ষিণ-লালমাই (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
সদর দক্ষিণ-লালমাই (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
শেয়ার
লালমাইয়ে অস্ত্রসহ আ. লীগ নেতার ছেলে গ্রেপ্তার
ছবি: কালের কণ্ঠ

কুমিল্লার লালমাইয়ে যৌথবাহিনীর অভিযানে লাইসেন্সবিহীন অবৈধ এয়ারগান ও দেশীয় তৈরি অস্ত্রসহ সালা উদ্দিন সুমন (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ রবিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে লালমাই থানার সেকেন্ড অফিসার আবদুল্লাহ আল ফারুক তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তার সুমন লালমাই উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সামছুল হক চেয়ারম্যানের ছেলে।

আরো পড়ুন

তিন মামলায় হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

তিন মামলায় হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

 

পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যৌথবাহিনী শনিবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে উপজেলার বেলঘর দক্ষিণ ইউনিয়নের জালগাঁও গ্রামস্থ নিজবাড়ি থেকে তাকে আটক করে।

আটকের সময় তার হেফাজত থেকে একটি লাইসেন্সবিহীন অবৈধ এয়ারগান, ২৭টি এয়ারগান বুলেট, ৫টি দেশীয় তৈরি অস্ত্র ও একটি ২২০ সিসির পালসার মোটরসাইকেল (বৈধ কাগজপত্রবিহীন) জব্দ করা হয়েছে।

ভুশ্চি বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক আমিনুর রহমান বলেন, ‘লালমাই আর্মি ক্যাম্প, লালমাই থানা ও ভুশ্চি বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের যৌথ অভিযানে শনিবার গভীর রাতে অবৈধ এয়ারগান ও দেশীয় তৈরি অস্ত্রসহ সালাউদ্দিন সুমন নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। তিনি এয়ারগান দিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন মানুষকে ভয় দেখাতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার এয়ারগানের ভয়ে পেছনে যেতে গিয়ে একজন ব্যক্তির দুই পা ভেঙেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

আরো পড়ুন

পহেলা বৈশাখ আমাদের সম্প্রীতির অন্যতম প্রতীক : প্রধান উপদেষ্টা

পহেলা বৈশাখ আমাদের সম্প্রীতির অন্যতম প্রতীক : প্রধান উপদেষ্টা

 

লালমাই থানার ওসি মো. শাহ আলম বলেন, ‘যৌথবাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার সালা উদ্দিন সুমনের হেফাজত থেকে একটি অবৈধ এয়ারগান, ২৭টি এয়ারগান বুলেট, ৫টি দেশীয় দেশীয় অস্ত্র ও একটি ২২০ সিসির পালসার মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’

মন্তব্য

মেহেরপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সালাম গ্রেপ্তার

মেহেরপুর প্রতিনিধি
মেহেরপুর প্রতিনিধি
শেয়ার
মেহেরপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সালাম গ্রেপ্তার
সংগৃহীত ছবি

মেহেরপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট মহা. আব্দুস সালামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ রবিবার (১৩ এপ্রিল) দিবাগত মধ্যরাতে শহরের বড়বাজার তার নিজ বাসভবনে অভিযান চালিয়ে ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। 

অ্যাডভোকেট মহা. আব্দুস সালাম কেন্দ্রীয় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। তাকে বর্তমানে মেহেরপুর সদর থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে।

আরো পড়ুন
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হতে পারে আজ

টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হতে পারে আজ

 

মেহেরপুর সদর থানার ওসি মেছবাহ উদ্দিন বলেন, ‘ডিবি পুলিশ তাকে আটক করে থানা হেফাজতে দিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।’

মন্তব্য

মুক্তি পেলেন নারায়ণগঞ্জের সাবেক ছাত্রদল নেতা জাকির খান

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
শেয়ার
মুক্তি পেলেন নারায়ণগঞ্জের সাবেক ছাত্রদল নেতা জাকির খান
সংগৃহীত ছবি

মুক্তি পেয়েছেন নারায়ণগঞ্জের সাবেক ছাত্রদল নেতা আলোচিত জাকির খান। ২২ বছর পলাতক ও পরে বন্দি থাকার পর রবিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্ত হন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেল সুপার মো. ফোরকান ওয়াহিদ।

আরো পড়ুন

উপহাস থেকে চাচাতো ভাইকে হত্যা

উপহাস থেকে চাচাতো ভাইকে হত্যা

 

এদিকে আলোচিত এই নেতাকে বরণ করতে সকাল থেকেই হাজার হাজার সমর্থক শত শত গাড়িবহর নিয়ে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে সামনে এসে উপস্থিত হন।

পরে কারমুক্ত জাকির খানকে নিয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড, চাষাঢ়া, ২নং রেলগেইট হয়ে দেওভোগ এলাকায় প্রবেশ করেন। এসময় জাকির খানকে সবাই ফুলেল শুভেচ্ছা দেন। 

উল্লেখ্য, আলোচিত ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলাসহ চারটি হত্যা মামলাসহ মোট ৩৩ মামলার আসামি ছিলেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খান। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর র‌্যাব-১১-এর একটি অভিযানে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আরো পড়ুন

আ. লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় বিএনপির ৬ নেতা আহত, আটক ৩

আ. লীগ নেতাকর্মীদের হামলায় বিএনপির ৬ নেতা আহত, আটক ৩

 

এরপর ধাপে ধাপে বিভিন্ন মামলায় জামিন পান তিনি। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি সাব্বির আলম হত্যা মামলার রায়ে তিনি এবং মামলার অন্য আসামিরা খালাস পান।

মন্তব্য

উপহাস থেকে চাচাতো ভাইকে হত্যা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
শেয়ার
উপহাস থেকে চাচাতো ভাইকে হত্যা
ছবি : কালের কণ্ঠ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উপহাস থেকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাতে সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের খাঁটিহাতা গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড হয়। হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তির নাম মো. জামাল মিয়া (৪৫)। তিনি খাঁটিহাতা গ্রামের শনু মিয়ার ছেলে।

ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহত জামাল মিয়ার ছেলে দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসে রয়েছেন। জামাল মিয়ার চাচাতো ভাই বাবুল মিয়ার ছেলেরও সম্প্রতি বিদেশে যাওয়ার কথা। এ নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় বাবুল তার চাচাতো ভাই জামালকে উপহাস করেন।

একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে দুই পরিবারের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে জামাল মিয়া আঘাতপ্রাপ্ত হন।
গুরুতর আহত জামাল মিয়াকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন জানান, ‘খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ