আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন গত বছরের ৫ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হয়ে মো. ইউসূফ (৩৫) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ২৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা তিন শ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ঘটনার ৮ মাস পর আজ বুধবার চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং থানায় মামলাটি দায়ের করেন ইউসূফের বাবা মো. ইউনুছ।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিকুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘নিহত শ্রমিকের বাবা ইউনুস বাদী হয়ে সাবেক শিক্ষামন্ত্রীসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেছেন। মামলায় আরো তিন শ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এখন মামলাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জানা গেছে, মামলায় সাবেক কাউন্সিলর মোর্শেদ আক্তার চৌধুরী, ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, তৌফিক আহম্মেদ চৌধুরী, জাফর আলম চৌধুরী, আবদুস সবুর লিটন, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি, আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুম, ডবলমুরিং থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোস্তফা কামাল টিপুসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী মো. ইউনুস অভিযোগ করেছেন, ভুক্তভোগী ইউসুফ তার ছেলে। গত বছরের ৫ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টার দিকে ইউসুফ তার মাকে জানিয়েছিল, দেওয়ানহাট এলাকায় বিভিন্ন দোকানে বরফ সরবরাহ করার জন্য তিনি যাচ্ছিলেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে ইউসূফের স্ত্রীর বড় বোন তার স্ত্রীকে ফোন করে জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে দেওয়ানহাট মোড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে ইউসূফ মারা গেছেন। তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) নেওয়া হয়েছে।
তখন আন্দোলনের কারণে বিভিন্ন দিকে গণ্ডগোল থাকায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে থেকে মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে গ্রামে বাড়িতে নিয়ে যায় ইউসুফের স্ত্রীর বড় বোন। গ্রামে নিয়ে যাওয়ার পর ইউসূফের বুকের মাঝখানে গুলিবিদ্ধ দেখতে পান বলে মামলার এজহারে উল্লেখ করেছেন বাদী।
বাদী মামলার এজহারে আরো উল্লেখ করেছেন ,স্থানীয়ভাবে জানতে পেরেছি, মহিবুল, মহিউদ্দিন বাচ্চু, এম লতিফ ও আ জ ম নাছিরের নির্দেশে এজহার নামীয় বাকি আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসিমারা ৫ আগস্ট দেওয়ানহাট মোড়ে লাঠিসোঁটা, লোহার রড়, ধারালো কিরিচ, দেশি ও বিদেশি অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে দেশি ও বিদশি অস্ত্র ব্যবহার করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে ইউসূফ মৃত্যুবরণ করে। বাদী ও তার পরিবার ছেলের মৃত্যুশোকে থাকায় এবং বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক কারণে এজাহার দায়ের করতে বিলম্ব করেছেন।