সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় ভাড়া বাসা থেকে ৮ মাস বয়সী শিশুকে অপহরণের পর বিক্রি করে দেওয়া হয়। এ ঘটনার ৮দিন পর যশোর থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় অপহরণ চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে রায়গঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানান।
সিরাজগঞ্জ
৮ মাসের শিশুকে অপহরণের পর বিক্রি, ৮ দিন পর যশোর থেকে উদ্ধার
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

উদ্ধার হওয়া শিশু দিঘি মনি (৮ মাস) সিরাজগঞ্জ শহরের গয়লা মহল্লার বাপ্পী মন্ডলের মেয়ে। গ্রেপ্তাররা হলেন, বগুড়ার ধুনট উপজেলার চরখাদুলী গ্রামের মৃত গোলজার সেখের ছেলে কালাম সেখ (৪০) ও একই উপজেলার কুড়িগাতি গ্রামের মৃত রইচ উদ্দিনের ছেলে হারুন অর রশিদ (৪৪)।
ওসি মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, সিরাজগঞ্জ শহরের গয়লা মহল্লার বাপ্পী মন্ডল তার স্ত্রী মরিয়ম খাতুন ও মেয়ে শিশু দিঘি মনিকে নিয়ে রায়গঞ্জ উপজেলার রনতিথা গ্রামের বাদশা মিয়ার বাসায় ভাড়া থাকেন। ৩০ মার্চ দুপুরে শিশুটির মাকে ঘোল (মাঠা) খাইয়ে অচেতন করে ওই বাড়ি থেকে শিশু দিঘি মনিকে অপহরণ করা হয়।
এরপর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ৪ এপ্রিল রংপুর থেকে কালাম সেখকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৫ এপ্রিল রায়গঞ্জ থেকে এ চক্রের অপর সদস্য হারুন অর রশিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৬ এপ্রিল দুপুরে যশোরের কোতয়ালী উপজেলার তালবাড়িয়া গ্রামের সামিউল ইসলামের হেফাজত থেকে অপহৃত শিশু দিঘি মনিকে উদ্ধার করা হয়।
ওসি আরো বলেন, ৪২ বছর বয়সী সামিউল ইসলাম নি:সন্তান। ভূয়া বাবা-মা সেজে স্টাম্পের মাধ্যমে চুক্তি করে ৮০ হাজার টাকায় তার কাছে শিশু দিঘি মনিকে বিক্রি করা হয়েছিল। এ চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। উদ্ধার হওয়া শিশুটিকে সুস্থ অবস্থায় বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সম্পর্কিত খবর

বৈশাখের ছুটিতে নদী-প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখতে পারেন বরিশালে
রফিকুল ইসলাম, বরিশাল

সাত সকালে ব্রজমোহন (বিএম) স্কুল মাঠে প্রাভাতী অনুষ্ঠান দিয়ে পহেলা বৈশাখের শুরু। সেখানে পরানো হবে রাখি। বর্ষবরণের গানের আয়োজনও থাকছে। তারপর বর্ষবরণের সমবেত গান নিয়ে আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু হবে।
শোভাযাত্রার দীর্ঘ বিরতির পর বিকেলে বিএম স্কুল মাঠেই উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর আয়োজনে দুই দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার আয়োজন থাকছে। পহেলা বৈশাখে শোভাযাত্রার পর থেকে বিকেল মেলা শুরুর আগ পর্যন্ত এই দীর্ঘ সময়টা পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব মিলে ঘুরতে বের হন অনেকেই।
কীর্তনখোলা নদীর পাড় ঘেঁষে সবুজের বেষ্টনী। আছে নদী তীরে ঝাউ বন। এখনো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পামগাছের সারি। শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশ।
কীর্তনখোলা নদীর পাড়
বরিশাল শহরের অদূরেই কীর্তনখোলা নদী তীরে এ জায়গাটি কীর্তনখোলা তীরের বেরিবাঁধের একটি অংশ। যেখানে আছে ঝাউবন। তার পাশের এ জায়গাকে ত্রিশ গোডাউন বলে।
মুক্তিযোদ্ধা পার্ক
বরিশাল নগরের বান্দরোডে কীর্তনখোলা নদী ঘিরে গড়ে উঠেছে আরেক বিনোদনকেন্দ্র মুক্তিযোদ্ধা পার্ক। ঝাউ-কাঠবাদাম, নানা প্রজাতির দেশি-বিদেশি ফুল ও বনজ গাছে ছায়া সুনিবিড় এই পার্কে এলে নগরের ইটপাথর আর কোলাহল থেকে একটু স্বস্তি মেলে। প্রায় ৪ হাজার বর্গমিটার আয়তনের পার্কটিতে ৬২টি বসার আসন আছে। নদীতীরের প্রশস্ত সড়ক ধরে হেঁটে কীর্তনখোলার অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় এখান থেকে। এখান থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ট্রলারে ভ্রমণ করা যায় নদী। যাওয়া যায় ত্রিশ গোডাউন রিভারভিউ পার্কে। বিনামূল্যে পার্কটি ঘুরে দেখার সুযোগ থাকায় নগরবাসীর কাছে পার্কটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
প্ল্যানেট পার্ক
বরিশালে যতগুলো শিশু বিনোদনকেন্দ্র আছে, তার মধ্যে অন্যতম বান্দরোডের প্ল্যানেট পার্ক। ৫০ টাকা প্রবেশ ফি এই পার্কের। ভেতরে আছে শিশুদের জন্য ৮টি রাইড। প্রতিটি রাইডের জন্য টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা। রাইডগুলোর মধ্যে আছে প্লেন, ট্রেন, হর্স রাইডার, সুপার চেয়ার, ফ্লাওয়ার কাপ, শান্তা মারিয়া, প্যাডেল বোট ও প্যারাট্রুপার। এ ছাড়া পুরো পার্কের মধ্যে শিশুদের জন্য আছে রাইড ছাড়াও ঘুরে দেখার মতো নানা স্থান।
পার্কের ঠিক বিপরীত পাশের রয়েছে বঙ্গবন্ধু উদ্যান (বেলস পার্ক)। এই উদ্যাগ ঘীরে সব সময়ই মানুষের ঢল নামে। তবে যে কোনো উৎসবকে ঘীরে সেটা জনস্রোতে রুপ নেয়। উদ্যানে খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। আরো আছে বিশাল মাঠ। আপনি চাইলে পরিবার-পরিজন নিয়ে সেই মাঠে বসে আড্ডা দিতে পারেন। উদ্যান ঘেঁষেই রয়েছে গ্রীণ সিটি পার্ক। প্রায় ৯ বছর পর এই পার্কে সিটি করপোরেশন জনপ্রতি ১০টা প্রবেশ ফি নির্ধারণ করেছে। এখানে শিশুদের জন্য কয়েকটি খেলনা রয়েছে। সবগুলো খেলনাই ফ্রিতে শিশুরা ব্যবহার করতে পারবে।
লাল গির্জা
বরিশাল নগরীর জীবনানন্দ দাশ সড়কের (বগুড়া রোড) পাশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে লাল গির্জাটি। লাল ইটের তৈরি বলে স্থানীয় মানুষের কাছে এটি ‘লাল গির্জা’ হিসেবে পরিচিত। প্রাচীন এ গির্জারকেতাবি নাম ইপিফানি গির্জা হলেও এটি অক্সফোর্ড মিশন নামেই বেশি পরিচিত। গির্জাটি ১২২ বছর আগে গ্রিক স্থাপত্য শৈলীর অনুকরণে নির্মিত হয়েছে। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণে গির্জাটি দেখতে এখনো ঝকঝকে তকতকে রয়েছে।
গির্জার দক্ষিণ পাশে শানবাঁধানো বড় পুকুর। পুকুরের টলটলে জলে গির্জার মোহনীয় প্রতিবিম্ব নজরকারে পর্যটকদের। মূল গির্জাটির রং লাল হলেও এর আঙিনায় পরতে পরতে সবুজের সমারোহ। সুদৃশ্য পামগাছে ঘেরা গির্জার চারদিকের সীমানা। ভেতরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে পরিচ্ছন্ন-পরিপাটি গাঢ় সবুজ আঙিনা, বৃক্ষশোভিত উদ্যান, মাঠ, ফুল ও ঔষধি বাগান। অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন এই গির্জায়।
বিএম কলেজ ক্যাম্পাস
অক্সফোর্ড মিশন চার্চ ঘুরে হাটা পথের দুরত্বে সরকারি বজ্রমোহন (বিএম) কলেজ। কলেজে কবি জীবনানন্দ দাশের অনেক স্মৃতি রয়েছে। প্রধান ফটকে লেখা ‘সত্য প্রেম পবিত্রতা’। কলেজের লাল-সাদা রঙের মূল দোতলা ভবন এক চমৎকার স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন। ভবন পেরোলেই বিশাল মাঠ। এক কোনায় জীবনানন্দ দাশ চত্বর। জীবনানন্দ দাশ হিন্দু ছাত্রাবাস রয়েছে। তার পাশেই বিএম স্কুল মাঠে উদীচীর বৈশাখী মেলা বসে।
লাকুটিয়া জমিদার বাড়ি
বিএম কলেজ থেকে মাত্র ৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত লাকুটিয়া জমিদার বাড়ি। জমিদার রাজচন্দ্র রায় আনুমানিক ১৭০০ খ্রিস্টাব্দে বরিশালের লাকুটিয়া গ্রামে এ জমিদার বাড়িটি নির্মাণ করেন। বাংলার ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যশৈলীর পাশাপাশি ইউরোপীয় স্থাপত্যের ছোঁয়াও রয়েছে নকশায়। বাড়ির মূল কাঠামোটি দোতলা। সেখানে রয়েছে কারুকাজ করা দরজা, জানালা, নকশা করা ছাদ এবং বিস্তত বারান্দা। বাড়ির অঙ্গনে আছে বিশাল এক পুকুর এবং সুন্দর উদ্যান।

কারামুক্ত জাকির খান
অনলাইন ডেস্ক

নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খান কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। আজ রবিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। এর আগে ৭ জানুয়ারি আলোচিত ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলায় জাকির খানসহ সব আসামি বেকসুর খালাস পান।
দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর র্যাব-১১ এর একটি অভিযানে রাজধানী ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার। এ হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন জেলা বিএনপির সভাপতি, বর্তমান তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব এবং নিহতের বড় ভাই তৈমুর আলম খন্দকার বাদী হয়ে সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের নামে ফতুল্লা থানায় মামলা দায়ের করেন।

ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন বিজয়পুরের মৃৎশিল্পীরা
শাহীন আলম, কুমিল্লা

বাঙালির নিজস্ব শিল্প, সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের অংশ মৃৎশিল্প। বৈশাখ এলে কদর বেড়ে যায় এ মৃৎশিল্পের। সারা বছর তৈজসপত্র তৈরি করে কোনো রকম জীবিকা চালালেও বৈশাখের মেলার অপেক্ষায় থাকে এ শিল্পের কারিগররা। সারা দেশের অধিকাংশ মেলায় তৈজসপত্র চাহিদা মেটায় বিজয়পুরের মৃৎশিল্প।
মৃৎশিল্পের কারিগররা বলছেন, প্রায় ৬৪ বছর ধরে কুমিল্লার ঐতিহ্য টিকিয়ে রেখেছে বিজয়পুরের মৃৎশিল্প। ১৯৬১ সালের ২৭ এপ্রিল কুমার ও পাল বংশের ১৫ জনের আমানতের মোট ১৫৭ টাকা ৫০ পয়সা মূলধন দিয়ে যাত্রা শুরু করে বিজয়পুর মৃৎশিল্প। পরে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খানের পরামর্শে ওই ১৫ জন নিয়ে ‘বিজয়পুর মৃৎশিল্প সমবায় সমিতি’ নামে একটি সমবায় সমিতি গড়ে ওঠে। এই সমিতির মূল লক্ষ্যই হচ্ছে গ্রামের বেকার নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান করা।
গতকাল শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে গাঙকুল গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, বৈশাখী মেলার তৈজসপত্রের চাহিদা মেটাতে গ্রামের নারী-পুরুষ মিলেমিশে মাটির হাঁড়ি-পাতিল, রবিঠাকুর, কাজী নজরুল, গণেশসহ বিভিন্নজনের প্রতিকৃতি। পুতুল, হাতি, ঘোড়া, নৌকা, টিয়া, সিংহ, দোয়েল, কচ্ছপ, মাছ, হাঁস, প্লেট, মগ, গ্লাস, চায়ের কাপ তৈরি হচ্ছে সমানতালে। গ্রামের এক অংশ নারী তা আবার রোদে শুকাচ্ছেন। কেউ আবার ফুলদানীতে রঙ তুলিতে আঁকছেন।
গাঙকুল গ্রামের রেখা রানী পাল ও শিখা রানী পাল কালের কণ্ঠকে বলেন, এই গ্রামের মাটির বানানো জিনিসপত্র দেশের বাহিরেও নেওয়া হয়।
বিজয়পুরের শংকর মৃৎশিল্পের মালিক শংকর পাল কালের কণ্ঠকে বলেন, অন্যান্য বৈশাখের তুলনায় এবার বিক্রি ভালো হচ্ছে। বৈশাখ উপলক্ষে আগেই ডিজাইন দেওয়া থাকে। ওই ডিজাইন বানানোর পর দোকানে নিয়ে আসি। আমার কাছ থেকে খুচরা বিক্রেতারা বিভিন্ন আইটেমের মাল মেলায় নিয়ে যান।
মাটির তৈজসপত্র কিনতে আসা সদর দক্ষিণ উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. পারুল আক্তার মজুমদার কালের কণ্ঠকে বলেন, আমি সব সময় মাটির জিনিসপত্র ব্যবহার করি। এটি ব্যবহার করতে ভালো লাগে। কুমিল্লা ঐতিহ্য হচ্ছে মাটি, এই মাটিই হচ্ছে খাঁটি। আমার ঘরের অধিকাংশ আসবাবপত্র মাটির তৈরি। এমনকি পানির জগও মাটির তৈরি কারণ মাটির তৈরি জিনিসপত্রে পানি রাখলে পানি ঠাণ্ডা থাকে। আমার দেখায় অনেকেই মাটির জিনিস ব্যবহার করছে। আগের সময় দেখেছি দাদা নানারা মাটির প্লেটে খেতেন এখন আবার সে ঐতিহ্য ফিরে আসছে।
‘বিজয়পুর রুদ্রপাল মৃৎশিল্প সমবায় সমিতি’ চন্দন পাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ঘরের আসবাবপত্র বানিয়ে অন্তত ৫০টি পরিবারের কর্মসংস্থান হয়েছে। মাঝখানে আমার গ্যাস থাকায় আমরা সিরামিকের পণ্য তৈরি করছিলাম। ২০১৬ সালে আমাদের গ্যাস বন্ধ করে দেওয়ার পর এখন আর সিরামিকের কিছু বানানো হয় না।
তিনি আরো বলেন, বিগত সময়ে বৈশাখী মেলায় না হওয়ায় আমরা লোকসান দিয়েছি। কারণ মেলা উপলক্ষে যে মাল বানানো হয় এই মাল অন্য সময়ে কম চলে। আগে গ্যাস থাকায় অনেক মাল বিদেশে রপ্তানি হয়েছে। এখন রপ্তানি কমে গেছে। এই কারখানায় মাসে ৫ লক্ষ টাকা খরচ আছে কিন্তু আমরা খুব বেশি লাভবান হচ্ছি না । সমিতির মূল লক্ষ্য হচ্ছে কর্মসংস্থান। বর্তমানে কারখানায় ৫০ জন কাজ করছে গ্যাস থাকলে আরো ৫০ জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যেত।
বিজয়পুর রুদ্রপাল মৃৎশিল্প সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক অরুন চন্দ্র পাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ১৯৬১ সাল থেকে বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের কাজ শুরু হয়। প্রথমে গ্রামের ঘরে ঘরে হাতে এই শিল্পের কাজ করা হলেও এখন সময়ের পরিবর্তে মেশিনের সাহায্যে তৈজসপত্র বানানো হয়। এই তৈজসপত্রের মালামাল পুড়াতে আমাদের অনেক ব্যয় হয়। লাকড়ি ও খরের দাম দিন দিন বাড়ছে। তাছাড়া শ্রমিকদের মজুরি দিয়ে এখন পোষায় না। গ্যাসের ব্যবস্থা করা হলে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের আরো কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হত। এখন এ কারখানায় ৫০ জন কাজ করে তখন ১০০ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হত।
কুমিল্লার গাঙকুল গ্রামে বৈশাখী মেলা উপলক্ষে মাটির তৈজসপত্রে রঙ তুলিতে আঁকছেন নারীরা। ছবি : কালের কণ্ঠ

আনন্দ শোভাযাত্রা
সপ্তাহব্যাপী মারমাদের প্রাণের উৎসব ‘সাংগ্রাই’ শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান

বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে বান্দরবানে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী পাহাড়ি সম্প্রদায় মারমাদের প্রাণের উৎসব সাংগ্রাই। রবিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল ৮টায় উৎসব উদযাপন পরিষদের আয়োজনে পৌর শহরের রাজার মাঠ থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। জেলা প্রশাসক মিস শামীম আরা রিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস মং মারমা, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিরামনী, উৎসব কমিটির আহ্বায়ক চুনু মং মারমাসহ বিভিন্ন দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তরা।
শোভাযাত্রায় মারমা, চাকমা-তঞ্চঙ্গ্যা, ম্রো, বম, ত্রিপুরাসহ বান্দরবানে বসবাসরত ১১টি পাহাড়ি সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষরা নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন পোশাক-পরিচ্ছদ পরে অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে বয়স্ক পূজার আয়োজন করা হয়।
এ অনুষ্ঠানে বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের মোমবাতি, নগদ অর্থ ও নতুন পোশাক উপহার দেওয়া হয়।
নতুন বছরকে বরণ এবং পুরনো বছরের বিদায়কে ঘিরে পার্বত্য এলাকার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলো নিজস্ব সামাজিক ঐতিহ্য নিয়ে সমন্বিতভাবে বিভিন্ন উৎসব পালন করছে। মারমা সম্প্রদায় সাংগ্রাইং, ম্রো সম্প্রদায় চাংক্রান, খেয়াং সম্প্রদায় সাংগ্রান, চাকমা সম্প্রদায় বিজু, তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় বিষু ও ত্রিপুরা সম্প্রদায় বৈসু, এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের এই উৎসবকে সমষ্টিগতভাবে বৈসাবি বলা হয়।
বান্দরবানে মারমাদের সাংগ্রাইয়ের মূল আকর্ষণ জলকেলি উৎসব।
পাহাড়িদের এই ঐতিহ্যবাহী উৎসব দেখতে ও অংশ নিতে বাঙালিরাও ভিড় জমায়। এবার মারমাদের সাংগ্রাই উৎসব দেখতে বান্দরবানে বহু পর্যটকের আগমন ঘটেছে।