ছোট হোক কিংবা বড় পর্দা, মাধ্যম যা-ই হোক ঈদ উপলক্ষে শিল্পীদের ব্যস্ততা থাকে তুঙ্গে। দর্শকদের ঈদের আনন্দকে বাড়িয়ে তুলতে তারা কোনো কমতি রাখেন না। এবারের ঈদ বিশেষ আয়োজনে কালের কণ্ঠকে ঈদের পরিকল্পনা নিয়ে জানিয়েছেন সাফা কবির। শুনেছেন ইমরুল নূর।
ঈদের কাজের ব্যস্ততা কেমন ছিল? কাজগুলো নিয়ে প্রত্যাশা কী রকম?
ভালোই ছিল। আসলে ঈদের সময় ব্যস্ত থাকতে তো সবারই ভালো লাগে। এবার আমার কিছু সুন্দর গল্পের কাজ আসছে, যেগুলো নিয়ে আমি আসলে খুবই এক্সাইটেড। আমি কয়েকটার নাম মেনশন করতে চাই, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘মন জানালা’, ‘প্রেম অথবা মায়া’ দুটোই পরিচালনা করেছেন সেরনিয়াবাত শাওন।
এই দুটো নাটকের গল্প আমার খুবই পছন্দ। আমি অপেক্ষা করছি নাটকগুলো কবে আসবে আর আমার দর্শকদের দেখাব। এটা ছাড়া এবার একটা কমেডি টাইপের কাজ হয়েছে। রম-কম বলা যায়। খুবই মজার একটা গল্প। নাম ‘হাউকাউ’, এই গল্পটা খুবই মজার। এ ছাড়া আরেকটা গল্প আছে ‘কানামাছি’, এটা খবুই ক্লাসিক প্রেমের একটা গল্প। এই টাইপের গল্প আসলে আমার খুব ভালো লাগে। আমার কাছে মনে হয় দেখার পর মানুষের চোখে আরাম লাগবে, মনে ভালো লাগা তৈরি হবে। এই টাইপের গল্প আমার সব সময়ই ফেভারিট। এই কাজটা নিয়েও আমি অনেক আশাবাদী। আরেকটা কাজ আছে ‘আমি শুধু তোমারই হবো’। এই কাজটাও খুব সুন্দর, দুটি ছেলেমেয়ের খুবই খুনসুটির গল্প। আমি এবার ঈদে সে কাজগুলো করার চেষ্টা করেছি, যে কাজগুলো দশর্কের দেখে ভালো লাগবে, ফিল গুড কনটেন্ট। মনে কষ্ট পাওয়া, দুঃখ পাওয়া এ রকম কোনো কাজই আমি এবার চুজ করিনি। এর কারণ হচ্ছে, আমার কাছে মনে হয় দর্শক ফিল গুড কনটেন্ট দেখতে পছন্দ করে এবং ভালো লাগা যেন তৈরি হয় এ রকম কনটেন্ট দেখতে পছন্দ করে।
এই মুহূর্তে আমাদের দেশের আশপাশে এত চাপ, এত নেগেটিভিটি চলছে তার মধ্যে আমি যদি আমার দর্শকদের একটু ভালো লাগা দিতে পারি তাহলে মনে হবে এটাতেই আমি সার্থক। আমি সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি ফিল গুড কনটেন্ট করার।
আরো পড়ুন
কুম্ভমেলায় ভাইরাল সেই মোনালিসাকে সিনেমায় নেওয়া পরিচালকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ
এবার ঈদ আপনার জন্য বরাবরের মতো একই রকম নাকি কোনো পরিবর্তন আছে?
ঈদ একই রকম আছে। ছোটবেলার ঈদ এক রকম হয়, বড় হওয়ার পর সেটা আবার ডিফরেন্ট। এখনকার ঈদটা আমার কাছে মনে হয় সমান্তরাল, এই যে প্রত্যেকবার ঈদ হচ্ছে, করছি। কিন্তু ঈদের অবশ্যই একটা আনন্দ আছে। ঈদ বলেই তো আমাদের এত সব আয়োজন, এত কাজ করা, কষ্ট করা, দর্শকদের রেসপন্সের জন্য ওয়েট করা। সো এই জায়গা থেকে ঈদ নিয়ে ডেফিনিটলি আমি এক্সাইটেড। এখন আমার এক্সাইটমেন্টের আরেকটা কারণ হচ্ছে ঈদে আমার কাজ রিলিজ হয়। ওই কাজগুলো দর্শক দেখবে বা পরিবারের সদস্যদের দেখাব। প্রত্যেকবার যেমন পরিবারের সদস্যরা কিংবা আত্মীয়-স্বজনরা জিজ্ঞেস করতে থাকে ‘এবার ঈদে তোমার কয়টা নাটক আসছে, কী আসছে?’ তখন আমি এক্সাইটেড হয়ে তাদের বলি আমার এটা আসছে, ওটা আসছে। সো এটা আমার কাছে মনে হয় ঈদের সবচেয়ে বড় আনন্দ যে মানুষকে বলতে পারা ঈদে আমার কাজ রিলিজ যাচ্ছে, আপনারা আমার এই নাটকগুলো দেখতে পারবেন। এটা আমার কাছে সবচেয়ে খুশির ব্যাপার।
এবার ঈদে পরিকল্পনা কী? কী করা হবে?
এবার ঈদে আমি অনেক দাওয়াত খাব। প্রত্যেকবার আমাকে নিয়ে মানুষের একটা অভিযোগ থাকে যে আমি বাসা থেকে বের হই না, কোথাও যাই না। তাই এবার চিন্তা করেছি সব জায়গায় দাওয়াত খেতে যাব, সবার সঙ্গে গল্প করব ও ছবি তুলব। তাই এবার এটাই আমার প্রথম এজেন্ডা।
আরো পড়ুন
সাংস্কৃতিক দলসহ রুনা লায়লাকে পাকিস্তানে আমন্ত্রণ শেহবাজ শরিফের
ঈদ নিয়ে শৈশবের কোনো মধুর স্মৃতি মনে পড়ে?
ছোটবেলার একটা ইনোসেন্ট ফিলিংস জীবন থেকে হারিয়ে গেছে। যেমন- ঈদের নতুন জামা কিনে সেটা লুকিয়ে রাখা। এখন আর এটা হয় না। আগে যে রকম বলত ‘এই ঈদে কী কিনেছো’, এখন আর কেউ ঈদের জামা দেখতেও চায় না। মনে হয় আমরা অনেক বড় হয়ে গেছি। ছোটবেলার ওই ব্যাপারটা খুব মিস করি যে, একটা নতুন কাপড় কিনে লুকিয়ে রেখে এবং প্ল্যান করা ঈদের প্রথম দিন, দ্বিতীয় দিন, তৃতীয় দিন সকালে কী পরব, রাতে কী পরব। এখন আর এটা একদমই কাজ করে না। এই জিনিসটাই খুব মিস করি।
ঈদের কেনা কাটায় কী পছন্দ?
আমার বাবা, মা এবং কাজিনস আছে। তাদের জন্য অল্প স্বল্পই কেনাকাটা হয়েছে। কয়েক বছর ধরে নিজের জন্য আসলে কোনো কিছুই কিনি না। এর জন্য মা আবার খুব রাগ হন। বাবা-মা আমাকে যে কাপড়টাই কিনে দেন আমি ওটাই পরি।
ঈদ সালামি প্রসঙ্গে জানতে চাই...
এখন তো বড় হয়েছি ঈদ সালামি দিতেই হয় ছোটদের। আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে এখন অনেক ছোট ছোট মানুষ হয়েছে যাদের সালামি দিতে হয়। আমি নিজেও পাই বড়দের থেকে। সালামি পাওয়া এবং দেওয়া দুটোই তো ঈদের মজা। তবে লাস্ট কয়েক বছর থেকে খেয়াল করছি সালামি আসে আর যায়। আমি সালামি পাই ঠিকই কিন্তু ওটা আর ব্যাগে ঢোকে না, পাস হয়ে যায়। কারণ ছোটদের দিতে হয়।
ঈদের দিন পোশাক কী ধরনের পরতে পছন্দ করেন?
ঈদের সকালে খুবই আরামদায়ক একটা সফট কালারের কাপড় পরতে পছন্দ করি। এবার সকালে আইস ব্লু কালারের একটা জামা পরা হবে।