<p>সাধারণভাবে তিন বছর বয়সের পরে কোনো শিশুরই বিছানায় প্রস্রাব করার কথা নয়। তবে ছেলেশিশুর ক্ষেত্রে পাঁচ বছর বয়স ও মেয়েশিশুর ক্ষেত্রে তিন বছর বয়স পর্যন্ত বিছানায় প্রস্রাব করা মেনে নেওয়া যেতে পারে। এর বেশি বয়সে বিছানায় প্রস্রাব করতে থাকলে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন আছে। এ রোগ সম্পর্কে জানাচ্ছেন—<em><strong> প্রফেসর ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল</strong></em></p> <p><strong>কারণগুলো</strong></p> <p>♦ ছোটকাল থেকে শিশুকে যেভাবে প্রস্রাব-পায়খানা করার প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তার ওপর শিশুর প্রস্রাব-পায়খানা করার অভ্যাস গড়ে ওঠে। অনেক মা শিশুর ৯-১০ মাস বয়স থেকে মুখে শিস দিয়ে এক প্রকারের আওয়াজ করে শিশুকে সময়মতো প্রস্রাব করান। শিশুর ৯ থেকে ১৫ মাস বয়সের মধ্যে এই প্রশিক্ষণ শুরু করা উচিত। এই প্রশিক্ষণ পরে শিশুর বিছানায় প্রস্রাব না করার পক্ষে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। অনেক মা-বাবা ও অভিভাবক এ ব্যাপারে একেবারেই অবহেলা করেন, শিশু যখন যেখানে খুশি প্রস্রাব করছে, দেখেও উদাসীন থাকার কারণে শিশুর প্রশিক্ষণ হয় না এবং এ ধরনের শিশুরা পরে অনেক দিন ধরে বিছানায় প্রস্রাব করে।</p> <p>♦ শিশুর মানসিক অশান্তি, অনিরাপত্তা বোধ, নতুন স্থান, বিছানা পরিবর্তন, হতাশা; মা-বাবা থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া। এই সব ঠিক হলে অনেক সময় সুফল পাওয়া যায়।</p> <p>♦ কিডনি ও প্রস্রাবযন্ত্রের কোথাও কোনো ত্রুটি থাকলে বিশেষত মূত্রনালির সংক্রমণ, বহুমূত্র রোগের কারণে—যেমন ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস ও মেলিটাস, ক্রনিক রেনাল ফেলিওর।</p> <p>♦ মলদ্বারে সুতাকৃমি জড়ো হওয়ার কারণে ঘুমের মধ্যে শিশু মলদ্বার চুলকায়। তার জন্যও শিশু বিছানায় প্রস্রাব করে।</p> <p><strong>চিকিৎসা</strong></p> <p>♦ সন্ধ্যার পর জলীয় পদার্থ কম খাওয়ানো বা না চাইলে খেতে না দেওয়া</p> <p>♦ রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে, প্রয়োজনে ভোররাতে আরেকবার উঠিয়ে প্রস্রাব করানো</p> <p>♦ শিশু বিছানায় প্রস্রাব করছে, তা নিয়ে শিশুকে কোনোরূপ তিরস্কার না করা বা না শাসানো বা এর ফলে যে সমস্যা হচ্ছে, তা মোটেও বুঝতে না দেওয়া। কারণ এমনিতেই সে লজ্জিত, এর জন্য তাকে ভয় দেখালে বা ভর্ৎসনা করলে শিশু আরো উদ্বিগ্ন ও উত্তেজিত থাকবে।</p> <p>♦ মায়ের উচিত শিশুকে একটি ডায়েরি দেওয়া এবং তাতে সপ্তাহের যে দিনে সে বিছানায় প্রস্রাব করবে না, সেই দিনটির তারিখে একটা তারকা বা স্টার চিহ্ন নির্দিষ্ট করা। এরপর শিশুকে বলতে হবে, সপ্তাহে কয়েকটি তারকা চিহ্ন লাভ করলে সে তার ইচ্ছানুযায়ী একটা পুরস্কার পাবে। এভাবে সে-ই সংগ্রাম করতে চাইবে। এই পদ্ধতিতে প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে উপকার পাওয়া যায়।</p> <p>♦ শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে ওষুধের সাহায্যে চিকিৎসা</p>