ক্ষমতা নেওয়ার প্রথম ১০০ দিনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। গত ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে পুলিশের অনুপস্থিতি এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। ছিনতাই, ডাকাতি ও হত্যাকাণ্ড জনমনে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করে। ভুক্তভোগী এবং সাধারণ মানুষ সবাই বলছেন অপরাধ দমনে সরকারকে ‘আরো কঠোর’ হতে হবে।
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ, কী পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার?
অনলাইন ডেস্ক

বিবিসির সঙ্গে আলাপে এ রকম দাবি জানালেন সিদ্ধিরগঞ্জের ইজিবাইকচালক মোহাম্মদ শামীম। ঋণ করে কেনা শামীমের ইজিবাইকটি গত সপ্তাহে ছিনতাই করেছে দুর্বৃত্তরা। কৌশলে অজ্ঞান করে লুটে নেওয়া হয় তার আয়-রোজগারের একমাত্র অবলম্বন। বর্তমান পরিস্থিতিকে নাজুক উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত তিন মাসে ডজনের বেশি ইজিবাইক ছিনতাই হয়েছে, এর মধ্যে চারজন চালককে খুন করা হয়েছে।
‘রাতে গাড়ি নিয়ে বাইর হইতে অনেক মানুষের কষ্ট হচ্ছে। মানে ভয় পাইতেছে। কারণ কখন কোন দিক দিয়া আসে, ছুরি আঘাত করে, আহত করে বা নিহত করে।’ সারা দেশে ইজিবাইকচালকদের মধ্যে একটা ছিনতাই আতঙ্ক কাজ করছে বলেও উল্লেখ করেন মি. শামিম।
শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর বিভিন্ন জায়গায় মব সৃষ্টি করে গণপিটুনি দিয়ে বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। গত ১০ নভেম্বর রোববার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সানারপাড় বাসস্ট্যান্ডে এক পুলিশ সদস্যকে ‘ভুয়া পুলিশ’ আখ্যা দিয়ে গণপিটুনি দেওয়া হয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পুলিশ জানায়, আক্রান্ত ব্যক্তি ভুয়া পুলিশ নন, বাংলাদেশ পুলিশের একজন সদস্য। পকেটমার ভুয়া পুলিশ গুজব রটিয়ে তাকে গণপিটুনি দেওয়ার ব্যবস্থা করে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আল মামুন বিবিসিকে জানান, ৫ আগস্টের পর এক মাসের মতো পুলিশের অনুপস্থিতি অপরাধ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। এখন সেনাবাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে টহল এবং পুলিশিং চলছে। ‘নিয়মিত পুলিশিংটা আমি আসার আগ পর্যন্ত বন্ধই ছিল। সেপ্টেম্বরের ৭ তারিখে আমি জয়েন করার পর আস্তে আস্তে পুলিশিংটা দৃশ্যমান হয়েছে। এখন আমরা ফুল ফিল্ডওয়ার্কে আছি। আগে চারটা টহল বের হতো, এখন যানবাহন সংকটে দুইটা টহল বের হয়। একটা ভাড়া নেই, আরেকটা সরকারি গাড়ি আছে। থানার গাড়ি তো পুড়ায় দিছে অনেকগুলো,’ বলেন আল মামুন।
রাজধানী ঢাকার মধ্যে মোহাম্মদপুর এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির বিষয়টি সবচেয়ে আলোচিত হয়েছে। সেখানে বিহারি ক্যাম্পে খুনোখুনি, প্রকাশ্যে ছিনতাই, ডাকাতি, সশস্ত্র মহড়ার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি উন্নতির জন্য মোহাম্মদপুরে বিশেষ অভিযান হয়েছে। জেনেভা ক্যাম্পসহ বিভিন্ন স্থান থেকে শতাধিক সন্দেহভাজনক আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে।
কিন্তু এখনো মানুষের আতঙ্ক কাটেনি বলেই জানান এলাকার একজন বাসিন্দা জেসমিন। তার ভাষায়, ‘এখন একটু পরিস্থিতি ভয়াবহ। কেমন যেন একটা আতঙ্কে আছি আমরা। আগে রাতে বারোটা একটায় মানুষ যাইতে পারছে বাইরে। এখন তো মানুষ ভয়ের চোটে বাইরায় না।’
স্কুলে সন্তানকে নিয়মিত আনা-নেওয়া করা একজন অভিভাবক বলেন, ‘আমি ২০১০ সালের পর থেকে ঢাকায় আছি। আমরা কখনো আমাদের এলাকার মধ্যে এমন নিউজ পাইনি। গণ্ডগোলের পর থেকে যখন এ রকম দেখতেছি, তখন আতঙ্ক তো থাকবেই ‘
‘চলন্ত রিকশা থেকে বয়স্ক একজনের কানের দুলটা ছিঁড়ে নিয়ে গেছে। রক্ত ঝরছে। এটা দেখার পর থেকে আমার বাচ্চাকে আমি বাসা থেকে হিজাব পরায় নিয়ে আসি, স্কুলের কাছে এসে হিজাবটা খুলি।’
আইনশৃঙ্খলার অবনতির বিষয়টি অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তবে পরিচয় প্রকাশ করে মিডিয়ায় বক্তব্য দিতে অনিচ্ছুক অনেকে। একজন নারী বলেন, ‘সন্ধ্যার পরে বের হওয়াটা যেন খুব একটা সিরিয়াস ব্যাপার। মনে হয় যে তাড়াতাড়ি বাসায় ঢুইকা যাই।’ তার ভাষায়-গত কিছুদিনের ঘটনায় এখন আতঙ্ক কাজ করে।
‘আমরা তো স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক। যে সরকারই আসুক, যেই আসুক, আমাদেরকে কেউ খাওয়াবে না পরাবে না। খাবারটা নিজেই আর্ন করে খেতে হবে। তাহলে আমাদের মূল চাওয়াটা হচ্ছে সেইফটিটা যেন সরকারের থেকে পাই।’
মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আলী ইফতেখার হাসানের দাবি- বিশেষ অভিযানের পর এলাকার পরিস্থিতি অনেকটাই তার ভাষায় নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ‘গত আড়াই মাসে দুটো ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। আমরা দ্রুততম সময় ডাকাতির ঘটনায় আসামি গ্রেপ্তার করেছি। আমরা রহস্য উদঘাটন করেছি। কিছু আসামি পলাতক আছে। ঘটনা ঘটতে পারে, কিন্তু ঘটনার প্রতিকার পাচ্ছে কি না জনগণ, সেটাই হলো বিবেচ্য বিষয়। সেই হিসেবে আমরা বলতে পারি, আমরা সফলতার সাথে মোকাবেলা করছি চ্যালেঞ্জগুলো। চ্যালেঞ্জ থাকবেই।’
মোহাম্মদপুর থানাটি ৫ আগস্টে অগ্নিসংযোগ এবং ব্যাপক লুটপাটের শিকার হয়। এলাকার পরিস্থিতির কারণ নিয়ে হাসান বিবিসিকে বলেন,
‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটা শূন্যতা ছিল। সেই সুযোগে যারা পেশাদার অপরাধী, সেই লোকগুলো পুরোদমে তাদের অপরাধ বাড়িয়ে দিয়েছিল। পরিস্থিতি খারাপ হয়েছিল, এখন আল্লাহর রহমতে আবার পরিস্থিতি অনেকটা ভালো হয়েছে এবং ডে বাই ডে এটা ভালোই হবে- এটা আমি আশা করি।'
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাবে গত তিন মাসে গণপিটুনিতে খুন হয়েছেন অন্তত ৬৮ জন। এ সময় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৭৮টি। একই সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুরাও হামলার শিকার হয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারম্যান জেড আই খান পান্না বিবিসিকে বলেন, ‘নরসিংদী কারাগার থেকে যে জঙ্গিরা বের হইছিল, সেটার ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নিছে। সেখান থেকে যে আর্মসগুলো যে লুট হইছিল, সেগুলো কতটা উদ্ধার হইছে। সেগুলো নিছিল কে? তারপরে রাতারাতি আমরা দেখলাম যে সাজাপ্রাপ্ত দীর্ঘদিন যাবৎ চিহ্নিত সন্ত্রাসী মুক্তি পাইছে কারাগার থেকে। কী গ্রাউন্ডে পাইলো না পাইলো কিছুই জানি না। এইগুলা তো হতাশা আনে।’ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সরকারের কতটা নিয়ন্ত্রণ আছে সে প্রশ্ন রাখেন মি খান।
‘আমি তো দেখি হোম মিনিস্টার (উপদেষ্টা) অনেক সময় শুনেও না শোনার ভান করেন, উত্তর দিতে চান না, এভয়েড করে যান। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তার নিয়ন্ত্রণে নাই। পুলিশ অসহযোগিতা করতেছে, এতে কোনো সন্দেহ নাই। আনসার নন-কো-অপারেশন করবে, এতেও কোনো সন্দেহ নাই। খোঁজ নিয়ে দেখেন, সারা দেশের অবস্থা কী? চাঁদাবাজি চলছে সেই আগের মতো। ইজারাদারি প্রথা- আমার জায়গায় আপনি আসছেন, আপনার জায়গায় আমি আসছি- এই চলতেছে। হাট-বাজার দখল চলছে।’
আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কোনো সাক্ষাৎকার দেননি। তবে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বিবিসিকে বলেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে পরিস্থিতি উন্নতির লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।
‘আমরা আশা করি যে ছয় মাসের একটা টাইমফ্রেমের মধ্যে আগামী তিন মাসের মধ্যে আমরা পুরোপুরি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারব। এবং পুলিশ পুরোপুরি ফাংশনাল হবে,’ বলেন আসিফ মাহমুদ।
তিনি জানান, সে লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় খোদা বক্সকে নিয়োগ করা হয়েছে। ‘আইনশৃঙ্খলা হচ্ছে প্রায়োরিটি ওয়ান। কারণ এটার সাথে মানুষের জীবনযাত্রা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মানুষের নিরাপত্তা ওতপ্রোতভাবে জড়িত,’ বলেন আসিফ মাহমুদ।
সরকার জানাচ্ছে, নতুন করে পুলিশ ও আনসার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আর জননিরাপত্তার স্বার্থে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সেনাবাহিনীকে মাঠে রাখার চিন্তা-ভাবনাও আছে অন্তর্বর্তী সরকারের।
‘২২ তারিখ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার আছে। আমরা চাই খুব দ্রুত সেনাবাহিনী তার যে নিয়মিত কার্যক্রম স্বাভাবিক কার্যক্রম সেটাতে ফিরে যাক। সরকার চায় তারা দ্রুত ফিরে যাক। তবে পুলিশ সম্পূর্ণভাবে রিভাইভ করা এবং আমাদের যে অভ্যন্তরীণ অন্য বাহিনীগুলো, যারা আইনশৃঙ্খলা দেখে থাকে, তাদের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি কন্ট্রোলে আসার পরপরই সেনাবাহিনী ব্যারাকে ফিরে যাবে,’ বলেন আসিফ মাহমুদ।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার সেনা সদর এক ব্রিফিং করে জানিয়েছে, সেনাবাহিনী দেশের সাত শতাধিক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। লুট হয়ে যাওয়া ছয় হাজার অস্ত্র, দুই লক্ষাধিক গুলি উদ্ধার করেছে এবং এতে সম্পৃক্ত আড়াই হাজার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে।
ব্রিফিংয়ে সেনা সদরের কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান বলেন, পরিস্থিতি আরো উন্নতির জন্য সমন্বিতভাবে কাজ করছে সেনাবাহিনী।
‘ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পাওয়ার পরের যে স্ট্যাটিস্টিক, সেটাতে আগের তুলনায় অপরাধের নথিভুক্ত রেকর্ডের সংখ্যা কমেছে। তার মানে পরিস্থিতির অবনতি হয়নি। সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা সবাইকে সম্পৃক্ত করে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে এবং আমরা আশা করছি, ভবিষ্যতে সিচুয়েশন আরো ভালো হবে,’ বলেন কর্নেল খান।
সূত্র : বিবিসি বাংলা
সম্পর্কিত খবর

লন্ডনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন জামায়াত আমির
অনলাইন ডেস্ক

লন্ডনে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ্ আবু তাহের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সম্প্রতি তারা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় গিয়ে দেখা করেন।
আজ মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক প্রেসসচিব, সাংবাদিক ও লেখক মারুফ কামাল খান তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ তথ্য জানিয়েছেন।
মারুফ কামাল খান বলেছেন, ‘ইউরোপ সফর শেষে লন্ডন পৌঁছে সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান ও নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ্ আবু তাহের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দেশে ফিরেছেন।
তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়ার সঙ্গে জামায়াতের দুই শীর্ষ নেতার সাক্ষাতে কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা জানা যায়নি।
মারুফ কামাল খান আরো বলেন, ‘বেগম জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য বিলেত যাওয়ার আগে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানও সস্ত্রীক তার বাসায় গিয়ে দেখা করেছিলেন। সেই সাক্ষাৎ নিয়েও বিশদ কিছু জানা যায়নি।’

‘ক্ষমা চাইলে হবে না, প্রথম আলোর লাইসেন্স বাতিল করতে হবে’
অনলাইন ডেস্ক

ঈদুল ফিতরের প্রাক্কালে প্রথম আলো পত্রিকার একটি ঈদ শুভেচ্ছা কার্টুনে ‘ঈদ মোবারক’ লেখার পাশাপাশি কুকুরের ছবি প্রকাশের ঘটনায় দেশের আলেম-ওলামা ও সাধারণ মুসলিম জনতা ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন।
এটি প্রথম আলোর প্রথম এমন ঘটনা নয়। ২০০৭ সালেও ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করে কার্টুন প্রকাশের অভিযোগে পত্রিকাটির বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল। সে সময় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা উবায়দুল হকের উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন সম্পাদক মতিউর রহমান।
তিনি শপথ নিয়েছিলেন যে ভবিষ্যতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়, এমন কিছু প্রকাশ করবেন না।
কিন্তু এবার ঈদ উপলক্ষে প্রকাশিত কার্টুনে কুকুরের ছবি ব্যবহার করে সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তারা বলছেন, ‘এবার আর ক্ষমা চাইলে হবে না, প্রথম আলোর লাইসেন্স বাতিল করতে হবে।
আবার অনেকে বলছেন, ‘এটা মুসলমানদের অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া, যা কখনোই সমীচীন নয়। প্রথম আলো মুসলমানদের ঈমানের ওপর আঘাত এনেছে।’
বিস্তারিত ভিডিওতে...

বিসিএস প্রার্থীদের ‘মার্চ টু যমুনা’
নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজেদের দাবি আদায়ে ‘লং মার্চ ফর যমুনা’ কমর্সূচি শুরু করেছেন আন্দোলনরত বিসিএস প্রার্থীরা। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) কার্যালয়ের সামনে থেকে যমুনা অভিমুখে এই পদযাত্রা শুরু হয়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তারা শাহবাগের ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শেষ করে ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা গ্রহণের দাবিতে গত কয়েক দিন থেকেই আন্দোলনরত করে যাচ্ছেন তারা।
এর আগে আজ সকাল থেকে পিএসসির আশপাশের এলাকায় জড়ো হতে থাকেন চাকরিপ্রার্থীরা। পরে একসঙ্গে জড়ো হয়ে পিএসসির সামনে এসে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা। চাকরিপ্রার্থীরা পিএসসির সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান। তারা পিএসসির সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ এপ্রিল ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানিয়ে একদল চাকরিপ্রার্থী পিএসসির সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন।
ওই দিন চাকরিপ্রার্থীরা বলেন, ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয় ২০২৪ সালের ২২ ডিসেম্বর। ৬ মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও এখনো অর্ধেক প্রার্থীর ভাইভা শেষ হয়নি। যে গতিতে পিএসসি এগোচ্ছে, তাতে আরো এক বছর সময় লাগবে ৪৪তম বিসিএসের ভাইভা শেষ করতে। এর মধ্যে ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা রয়েছে।
তাদের দাবি, বাকি থাকা ভাইভা প্রার্থীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি প্রকাশ করতে হবে। চলতি বছরের মে মাসের মধ্যে ভাইভা শেষ করা। জুন মাসের মধ্যে চূড়ান্ত ফলাফল দিতে হবে। এ ছাড়া চাকরিপ্রত্যাশীরা, নন-ক্যাডার বিধি ২০২৩ বাতিলের দাবি জানান।

কাল ঢাকায় আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের ২ উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক

তিন দিনের সফরে আগামীকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় আসছেন। তাদের সঙ্গে যোগ দিতে পারেন মায়ানমারে নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতও।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা যায়, গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতায় বসেন ট্রাম্প। তার প্রশাসনের প্রথম প্রতিনিধিদলের এই সফরে বাংলাদেশে সংস্কার ও গণতান্ত্রিক উত্তরণ, ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপ, রোহিঙ্গা সংকটে সহায়তা এবং মায়ানমারের পরিস্থিতিসহ ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কের নানা বিষয়ে আলোচনা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ওয়াশিংটনে নিয়োজিত বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার প্রথমে ঢাকায় পৌঁছাবেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চুলিক। পরে আরেকটি ফ্লাইটে আসবেন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হেরাপ। বাংলাদেশে অ্যান্ড্রু হেরাপের সফরসঙ্গী হিসেবে মায়ানমারে নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুসান স্টিভেনসনের যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী সফরের প্রথম দিনের শুরুতে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন।
আগামী বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানসহ সরকারের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী।