<p style="text-align:justify">আজ থেকে ২০০ বছরেরও বেশি আগে ডুবে যাওয়া ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির জাহাজের ধ্বংসাবশেষকে বিশেষ সুরক্ষা দিল ব্রিটিশ সরকার। ইংল্যান্ডের ডরসেট উপকূলের অদূরে আর্ল অব অ্যাবারগাভেনি নামের বাণিজ্যিক জাহাজটি ডুবে যাওয়ায় প্রায় ২৫০ জন প্রাণ হারিয়েছিল। যুক্তরাজ্যের জানা ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ জাহাজ দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি হিসেবেই বিবেচিত ওই ঘটনা। আর্ল অব অ্যাবারগাভেনিতে অন্যান্য মালপত্রের সঙ্গে ছিল ৬০টির বেশি রুপার বাট ভরা পেটি।</p> <p style="text-align:justify">এগুলো আর কখনোই পাওয়া যায়নি। এ জাহাজের ক্যাপ্টেন ছিলেন ব্রিটেনের বিখ্যাত রোমান্টিক কবি উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থের ভাই জন ওয়ার্ডসওয়ার্থ। এক হাজার ৩০০ টনের জাহাজ আর্ল অব অ্যাবারগাভেনি ১৮০৫ সালে ইংল্যান্ডের পোর্টসমাউথ থেকে তখনকার ইংরেজশাসিত ভারতবর্ষের বাংলা ও চীনের উদ্দেশে যাত্রা করেছিল। ঝড়ের কবলে পড়ে জাহাজটি বালুর চরে ধাক্কা খেয়ে ওয়েমাউথের উপকূল থেকে প্রায় এক মাইল দূরে ডুবে যায়।</p> <p style="text-align:justify">গতকাল বুধবারই ব্রিটিশ সরকার জাহাজটির নিমজ্জিত ধ্বংসাবশেষকে বিশেষ সুরক্ষিত মর্যাদা দিয়েছে। ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণ বিষয়ক সংস্থা ‘হিস্টোরিক ইংল্যান্ড’ কর্তৃপক্ষ এ জন্য সুপারিশ করেছিল। সরকার সুরক্ষা দেওয়ার অর্থ হচ্ছে জাহাজটির ধ্বংসাবশেষের কাছাকাছি সাগরে বিনোদনের জন্য ডাইভ করা যাবে, তবে সেখানকার কিছু ধরা যাবে না।</p> <p style="text-align:justify">হিস্টোরিক ইংল্যান্ডের প্রধান নির্বাহী ডানকান উইলসন বলেন, ‘আমরা জোয়ারভাটা ও সমুদ্রের স্রোতের বিষয়ে কিছু করতে পারব না, তবে মানুষের কার্যকলাপের ক্ষতি ঠেকাতে পারি।’</p> <p style="text-align:justify">জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করা লোকজনের মধ্যে ছিলেন ডরসেটের পোর্টল্যান্ড মিউজিয়ামের কর্মকর্তা ডেভিড কার্টার। তিনি বলেছেন, আর্ল অব অ্যাবারগাভেনি ছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির সবচেয়ে বড় ও উত্কৃষ্ট জাহাজ। হিস্টোরিক ইংল্যান্ডের উইলসন সাহেবের তথ্য মতে, চীন থেকে চা পরিবহনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল জাহাজটি।</p> <p style="text-align:justify">কবি ওয়ার্ডসওয়ার্থের পরিবারের সঙ্গে ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। হিস্টোরিক ইংল্যান্ডের প্রধান নির্বাহী ডানকান উইলসন বিবিসিকে বলেন, ক্যাপ্টেন জন ওয়ার্ডসওয়ার্থ তাঁর ভাই কবি উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ যাতে নিশ্চিন্ত মনে সাহিত্যচর্চা করতে পারেন সে জন্য সমুদ্রের লাভজনক পেশাকে বেছে নিয়েছিলেন।</p> <p style="text-align:justify">প্রমাণ হিসেবে তিনি বলেন, ভাই ক্যাপ্টেন জনের মৃত্যুর পর কবির সাহিত্যকর্মের গতি রুদ্ধ হয়ে যায়। প্রসঙ্গত, ডুবে যাওয়ার সময় জাহাজটিতে থাকা রুপাসহ অন্যান্য মালের মূল্য ছিল ৭০ হাজার পাউন্ড। আজকের অঙ্কে তা প্রায় ৭৫ লাখ পাউন্ড। সূত্র : বিবিসি</p>