শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের বয়স যত বাড়ছে, ততই নানামুখী চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে। আজ ৮ ফেব্রুয়ারি সরকার গঠনের ছয় মাস পূর্ণ হচ্ছে। সেই সঙ্গে এ সরকারকে ব্যর্থ করতে ভিতরে-বাইরে চলছে ষড়যন্ত্র। আশার কথা, এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে এগিয়ে যাচ্ছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় মাস
সময়ের সঙ্গে বেড়েছে চ্যালেঞ্জ
অনলাইন ডেস্ক

সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে বিশ্বনেতাদের সহায়তা চাইছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও পরিচয়ের সূত্র ধরে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা করছেন তিনি। অভ্যুত্থান-পরবর্তী ছাত্র-জনতার আকাক্সক্ষা অনুসারে দেশের সংস্কার কর্মসূচি ও অর্থনৈতিক পুনর্গঠন নিয়েও তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভা ছাড়াও সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে ড. ইউনূস একের পর এক নেতার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন।
সরকার গঠনের পর ছয় মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী হিসেবে মাঠে নামানোর চেষ্টা করছে সরকার। তবে জনবল, অস্ত্র, যানবাহনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে সে প্রচেষ্টা খুব একটা সাফল্য পাচ্ছে না। এরই মধ্যে পুলিশের মনোবল ফেরত আনতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। রাজধানীর যানজট নিরসনেও ট্রাফিক পুলিশ চেষ্টা করছে। পুলিশে নতুন জনবল নিয়োগ হলে যানজট নিরসন এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে বলে আশা করছেন সরকারের সংশ্লিষ্টরা।
সরকারের কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ ও সংস্কার কার্যক্রমের পাশাপাশি বেড়েছে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা। ছাত্রদের জুলাই ঘোষণা নিয়ে এখনো মতৈক্য প্রতিষ্ঠা হয়নি। জুলাই অভ্যুত্থানের পর ৮ আগস্ট যে রাজনৈতিক ঐকমত্য নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়েছিল, ছয় মাস পরে এসে নির্বাচন ইস্যুতে সেখানে কিছুটা মতদ্বৈধতা দেখা যাচ্ছে। এ সরকার যখন ছয় মাস পূর্তিতে পা দিয়েছে, সে মুহূর্তেও নির্বাচন কবে হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ঘোষণা নেই।
রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ছাড়াও সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশের অর্থনৈতিক স্থবিরতা। একের পর এক কারখানা বন্ধ হচ্ছে। বেকার হচ্ছে শত শত শ্রমিক। গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট কাটেনি। উপরন্তু সরকার জ্বালানির দাম বাড়িয়েই চলেছে। রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি বাড়ছে। উন্নয়ন ব্যয় কমছে অথচ বাড়ছে অনুন্নয়ন খরচ। শীতে সবজির দাম কমলেও মূল্যস্ফীতি এখনো ২ অঙ্কের কোঠায়। এরই মধ্যে ভোক্তার খরচ বাড়াতে কিছু ক্ষেত্রে ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। ব্যাংকগুলোতে এখনো তারল্যসংকট রয়ে গেছে। ডলারসংকটও কাটেনি। কাঁচামাল আমদানিতে ব্যর্থ হয়ে ঘোষণা দিয়ে অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের কারখানা বন্ধ করে দিচ্ছে। ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তারা আস্থার সংকটে ভুগলেও সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে আস্থা ফেরানোর মতো কোনো বার্তা আসেনি। অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের সুপারিশ করলেও সে সুপারিশ অনুযায়ী এখনো কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করেনি সরকার।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন সম্প্রতি দেশের অর্থনীতির স্বাধীন পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও জনজীবন এবং ব্যবসাবাণিজ্যে স্বস্তি আনার মতো কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা এখন পর্যন্ত অর্থনীতিতে তেমন কোনো চাঞ্চল্য দেখছি না। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর অনেক খাতভিত্তিক সংস্কার কর্মসূচি নিয়েছে। অর্থনীতিকেন্দ্রিক কিছু সংস্কার আমরা লক্ষ করছি। তবে এখন পর্যন্ত জনগণের জীবনে কিংবা ব্যবসাবাণিজ্যের অঙ্গনে স্বস্তি আনার মতো কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।’
সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন।
সম্পর্কিত খবর

ঈদ শেষে ফিরতি যাত্রায়ও স্বস্তি, এখনো ঢাকা ছাড়ছে মানুষ
নিজস্ব প্রতিবেদক

পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। দুর্ভোগহীন অন্য রকম এক ঈদ যাত্রায় স্বস্তিতে বাড়ি ফিরেছিল ঘরমুখো মানুষ। একইভাবে স্বস্তিতে ঢাকায় ফিরছে তারা।
তবে সরকারি দীর্ঘ ছুটি থাকায় এখনো জমে ওঠেনি ফিরতি যাত্রা।
ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে টানা ৯ দিনের ছুটি চলছে। সরকারি ছুটি অনুযায়ী, আগামী শনিবার (৫ এপ্রিল) পর্যন্ত ছুটি উপভোগ করবেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ট্রেনে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ, ফিরছেও : বুধবার কমলাপুর রেলস্টেশন ও বিমানবন্দর স্টেশনে বাড়ি ফেরা মানুষের ভিড় দেখা গেছে। অনেক কর্মজীবী ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন। ঈদের সময় প্রিয়জনের কাছে যাওয়ার সময়-সুযোগ করতে না পারা অনেকে এখন বাড়ি ফিরছেন। ফিরতি ট্রেনগুলোর বেশির ভাগ আসন পূর্ণ থাকলেও তুলনামূলকভাবে আগের চেয়ে চাপ কম।
বুধবার কমলাপুর রেলস্টেশনে যাত্রীর তেমন ভিড় দেখা যায়নি। বেশির ভাগ ট্রেন খালি আসন নিয়েই ছেড়ে গেছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ফিরতি যাত্রা এখনো স্বস্তিদায়ক থাকলেও আগামী কয়েক দিনের মধ্যে চাপ বাড়তে শুরু করবে।
যাত্রীরা জানিয়েছেন, এবারের ব্যবস্থাপনা আগের চেয়ে অনেক ভালো ছিল। স্টেশনে আগেভাগে এলেও অতিরিক্ত ভিড় বা বিশৃঙ্খলার মুখে পড়তে হয়নি।
বুধবার কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের এক যাত্রী দুপুর ১টায় ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেন। ফয়সাল মাহমুদ নামের ঢাকাগামী ওই যাত্রী জানান, গত ২৭ মার্চ তিনি বাড়ির উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। আসার সময় তেমন ঝামেলায় পড়তে হয়নি। ফিরতি যাত্রায়ও ট্রেন অনেকটা ফাঁকাই দেখছেন।
কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসের এক যাত্রী বলেন, ‘ভাবছিলাম ট্রেন পেতে কষ্ট হবে, কিন্তু স্টেশনে এসে দেখলাম পরিস্থিতি স্বাভাবিক। ট্রেনে উঠতে কোনো ঝামেলা হয়নি, সময়মতো ছাড়ার বিষয়টিও স্বস্তিদায়ক।’
কমলাপুর রেলস্টেশনের মাস্টার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এবারের ঈদ যাত্রায় ট্রেন চলাচল স্বস্তিদায়ক ছিল। তবে শেষ দিকে পোশাক কারখানাগুলো ছুটি হওয়ায় স্টেশনে উপচে পড়া ভিড় ছিল। ট্রেন ছাড়তে দেরি বা কোনো ধরনের ভোগান্তি হয়নি যাত্রীদের।’
সড়কে চাপ নেই : ঈদের চাপ কেটে গেছে। রাজধানীর প্রবেশপথ ও বহির্মুখগুলোতে নেই যাত্রীদের চিরচেনা উপচে পড়া ভিড়। বরং এখনো অনেকে যেমন ঢাকা ছাড়ছেন, আবার কেউ কেউ ঈদ শেষে ঢাকায় ফিরছেন।
বুধবার সকালে রাজধানীর অন্যতম প্রবেশমুখ হিসেবে পরিচিত গাবতলী বাস টার্মিনাল ও এর আশপাশের এলাকায় দেখা যায়, স্বজনদের সঙ্গে ঈদ কাটিয়ে ঢাকায় ফিরছেন অনেক কর্মজীবী। গ্রাম থেকে ঢাকায় প্রবেশ করা গাড়িগুলো থেকে বেশ ভালোই যাত্রী নামতে দেখা গেছে। একইভাবে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া গাড়িগুলোর আসনও তেমন ফাঁকা থাকছে না।
রাজদূত পরিবহনের টিকিট কাউন্টারের এক কর্মী বলেন, ‘আমাদের ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া গাড়িগুলোর কোনোটারই সিট ফাঁকা যাচ্ছে না। আবার ঢাকামুখো গাড়িও সব আসনে যাত্রী নিয়েই ফিরছে।’
রাজাপুর ট্রাভেলসের টিকিট বিক্রেতা কামাল বলেন, কাঙ্ক্ষিত যাত্রী আছে। তবে ঈদের আগের দিনের মতো উপচে পড়া ভিড় নেই। মানুষ স্বস্তিতে যাওয়া-আসা করছে।
সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে তিশা প্লাস কাউন্টারের আব্দুল হাকিম নামের একজন জানান, ঈদের আগের তুলনায় এখন যাত্রী ভালো আছে। ঢাকা ছাড়ার গাড়িতেও সিট ফাঁকা থাকছে না, ঢাকায় ফেরার গাড়িতেও সিট ফাঁকা নেই।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক কাজী মো. জুবায়ের মাসুদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এবারের ঈদ যাত্রায় বাস মালিক সমিতির অবস্থা তেমন ভালো না। ঈদ যাত্রার যাত্রী নামিয়ে ফিরতি যাত্রায় বাস খালি আসায় অনেক লস গুনতে হয়েছে মালিকদের। তার পরও যাত্রীদের স্বস্তির যাত্রা উপহার দিতে পেরে আমরা সন্তুষ্ট।’
গণপরিবহনে যাত্রী কম : ঢাকার রাস্তাগুলো এখনো বেশ ফাঁকা। যাঁরা ঢাকায় আছেন, যানজটহীন পরিবেশ উপভোগ করছেন। গণপরিবহনগুলোর যাত্রীসংখ্যা স্বাভাবিকের তুলনায় কম।
যাত্রীরা বলছেন, তাঁরা এখন এক থেকে দেড় ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে পারছেন ১৫ মিনিটেই। অন্যদিকে পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, এত অল্প যাত্রীতে তেলের খরচই উঠবে না।
সরেজমিনে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, কল্যাণপুর, শ্যামলী, কলেজগেট, আসাদগেট, ধানমণ্ডি, কারওয়ান বাজার ও বাংলামোটর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গত দুই দিনের তুলনায় সড়কে পথচারী চলাচল ও যানবাহন বেড়েছে। তবে বেশির ভাগ গণপরিবহনে আসন ফাঁকা থাকছে।

ইউনূস-মোদির বৈঠক হচ্ছে
অনলাইন ডেস্ক

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের (সিএও) একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বাসসকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
রোহিঙ্গা সংকট ও সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার হাইরিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমানও দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
বুধবার (২ এপ্রিল) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমরা ভারতের সঙ্গে এই বৈঠক (দুই দেশের নেতাদের মধ্যে) আয়োজনের অনুরোধ করেছি... এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে ড. খলিলুর বলেন, বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নেতারা সংস্থাটির ভবিষ্যৎ কার্যক্রম নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করবেন, তাই অধ্যাপক ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠক হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
আগামী ৪ এপ্রিল অধ্যাপক ইউনূসকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিমসটেকের চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করা হবে।
বিমসটেক সম্মেলন ২ থেকে ৪ এপ্রিল থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

কালুরঘাটে রেল ও সড়ক সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ১৪ মে
অনলাইন ডেস্ক

কর্ণফুলী নদীর ওপর কালুরঘাটে আগামী ১৪ মে নতুন রেল ও সড়ক সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম (বীরপ্রতীক)। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন বলেও জানান তিনি।
বুধবার (২ এপ্রিল) চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ইঞ্জিনিয়ার ওমরের কবর জিয়ারত ও ওমরের পরিবারের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন উপদেষ্টা। শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে তিনি এ কথা বলেন।
ফারুক-ই-আজম বলেন, ‘আগামী ১৪ মে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আসবেন চট্টগ্রামের সন্তান প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। খুব সম্ভাবনা রয়েছে এ সময় তিনি এই সেতু নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করবেন।’
তিনি বলেন, ‘শহীদ পরিবার তাদের প্রিয়জনকে আর ফিরে পাবেন না, তবে আমরা তাদের পাশে আছি। অন্যায় করলে বিচার হবে না, এমনটি হতে পারে না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ, বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. গোলাম সারোয়ার, উপজেলা জামায়াতের আমির ডা. খোরশেদুল আলম ও নায়েবে আমির ডা. আবু নাছের প্রমুখ।

ভারতের সংখ্যালঘু অধিকার লঙ্ঘনের প্রভাব বাংলাদেশেও পড়ছে : দেবপ্রিয়
অনলাইন ডেস্ক

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘নয়াদিল্লির মনে রাখা উচিত তাদের দেশে মুসলিমসহ সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের বিরূপ প্রভাব বাংলাদেশেও পড়ছে।’
ভারতের পাক্ষিক ম্যাগাজিন ফ্রন্টলাইনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) ম্যাগাজিনটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।
ফ্রন্টলাইনের এক প্রশ্নের জবাবে দেবপ্রিয় বলেন, ‘সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা গণনার একাধিক উপায় আছে।
উপরন্তু বাংলাদেশের অনেক ধর্মীয় সংখ্যালঘু ঐতিহাসিকভাবে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছে।
সুতরাং ভারত যখন বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সঙ্গে হওয়া আচরণ নিয়ে মন্তব্য করে, তখন দেশটিকে অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে তার নিজের সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কী আচরণ হচ্ছে, সেটাও অন্যরা খতিয়ে দেখছে।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একজন সদস্য হয়ে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বাংলাদেশে নিরাপদ কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি হয়তো এ প্রশ্নের জন্য সেরা উদাহরণ নই। আমি দুইবার ভারতে শরণার্থী হয়েছিলাম। প্রথমবার, ১৯৬০-এর দশকের দাঙ্গার পর—১৯৬৪ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত এবং দ্বিতীয়বার ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়। কিন্তু আমার মা-বাবা কখনোই বাংলাদেশ ছেড়ে যাননি।
তিনি আরো বলেন, ‘আমার পরিবারের বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও বিচার বিভাগীয় ইতিহাসে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। আমার মা আওয়ামী লীগের একজন সংসদ সদস্য ছিলেন এবং আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিযুক্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ছিলেন। কিন্তু এই ব্যক্তিগত সম্পর্কগুলো আমার পেশাদারি এবং তথ্যভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করে না।’
ব্যক্তিগতভাবে আমি বাংলাদেশে থাকার ঝুঁকিগুলো মেনে নিয়েছি। তবে আমি বিশ্বাস করি যে পরিচয়ভিত্তিক রাজনীতি যেখানে একটি ভূমিকা রাখে, এমন যেকোনো দেশের যেকোনো নাগরিকের জন্যই এ ধরনের ঝুঁকি বিদ্যমান। আমি আরো বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের সমাজের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ধর্মনিরপেক্ষতা, মানবাধিকার এবং সব সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের—হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিগত সংখ্যালঘু এবং সমতলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর—সুরক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অন্তর্ভুক্তির প্রতি এই অঙ্গীকারই জাতি গঠনের মূল ভিত্তি।
বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক নীতিগুলোর মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষতার পরিবর্তে বহুত্ববাদকে প্রতিষ্ঠিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ বিষয়ে দেবপ্রিয় বলেন, ‘বিষয়টি এখনো আলোচনার টেবিলে। এই পর্যায়ে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানো অপরিণত কাজ হবে, কারণ এটি এখনো পর্যালোচনাধীন।’