আল্লাহ ও নবীর অবমাননার প্রতিবাদে ১৫০ আলেমের বিবৃতি

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আল্লাহ ও নবীর অবমাননার প্রতিবাদে ১৫০ আলেমের বিবৃতি

সম্প্রতি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)-এর পাঠ্যবই সংশোধন ও পরিমার্জন কমিটির অন্যতম সদস্য রাখাল রাহা (সাজ্জাদুর রহমান) মহান আল্লাহকে নিয়ে চরম ধৃষ্টতাপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করে ফেসবুকে একটি পোস্ট প্রকাশ করেন। (পরিস্থিতির চাপে পড়ে তিনি পরবর্তী সময়ে পোস্টটি মুছে ফেলেন)। এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধের ওপর আঘাত করেছেন, যা দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। এর প্রতিবাদে দেশের বিশিষ্ট ১৫০ জন আলেম বিবৃতি দিয়েছেন।

 

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানান তাঁরা। 

বিবৃতিতে তারা বলেন, এই ধরনের বক্তব্য শুধু ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি পরিকল্পিতভাবে ধর্মীয় উত্তেজনা সৃষ্টি, সামাজিক বিভাজন উসকে দেওয়া এবং জাতীয় স্থিতিশীলতা বিনষ্টের একটি ষড়যন্ত্রমূলক প্রচেষ্টা বলেই প্রতীয়মান হয়। বিশেষত, সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক ব্যক্তি ও গোষ্ঠী ধারাবাহিকভাবে একই ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। রাখাল রাহার আগে কথিত কবি সোহেল হাসান গালিবও রাসুলুল্লাহ (সা.) সম্পর্কে চরম কুরুচিপূর্ণ ও ঘৃণ্য মন্তব্য করেছেন, যা দেশের ধর্মপ্রাণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং সুসংগঠিত পরিকল্পনার অংশ বলে প্রতীয়মান হয়, যেখানে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সামাজিক উত্তেজনা ও সংঘাত সৃষ্টি করার চেষ্টা চলছে। আমরা মনে করি, এই ষড়যন্ত্রমূলক তৎপরতাগুলো আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ইতোপূর্বে শিক্ষাক্ষেত্রেও রাখাল রাহা বিভিন্ন বিতর্কিত সংশোধন ও পরিবর্তনের মাধ্যমে ইসলামী সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং জাতীয় মূল্যবোধের প্রতি অবমাননাকর দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছেন।

উল্লেখ্য, নবম-দশম শ্রেণির বাংলা বইতে ‘আদিবাসী’ গ্রাফিতি সংযোজনের মাধ্যমে তিনি নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেন, যা দেশের সামাজিক স্থিতিশীলতাকে মারাত্মক হুমকির মুখে ফেলেছিল।

বাংলাদেশের আলেম সমাজ রাখাল রাহার সাম্প্রতিক ধৃষ্টতাপূর্ণ ফেসবুক পোস্টের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে এবং সরকারের কাছে জোরালোভাবে দাবি করছে যে:

রাখাল রাহাকে (সাজ্জাদুর রহমান) অবিলম্বে এনসিটিবির পাঠ্যবই সংশোধন ও পরিমার্জন কমিটি থেকে অপসারণ করতে হবে। তার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া বক্তব্যের জন্য প্রচলিত আইনের আওতায় দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

দীর্ঘমেয়াদী সমাধান হিসাবে ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধের সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় আইনি কাঠামো শক্তিশালী করতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধর্ম অবমাননা এবং উসকানিমূলক প্রচার প্রতিরোধে বিদ্যমান আইন ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টান্ত পর্যালোচনা করে বাংলাদেশেও উপযুক্ত আইন প্রণয়ন করা জরুরি। আমরা বিশ্বাস করি, সরকার যদি এ ধরনের অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তাহলে ভবিষ্যতে আরও বড় সংকট তৈরি হতে পারে এবং দেশের সাধারণ জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়তে পারে।

বিবৃতিদাতা ১৫০ আলেম বলেন, সরকার, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় মূল্যবোধ রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ নেবে। অন্যথায়, সৃষ্ট অসন্তোষ আরও ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে, যা জাতীয় স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

বিবৃতিদাতারা হলেন-

আল্লামা সাইয়্যেদ কামালুদ্দীন জাফরী, প্রফেসর ড. এবিএম হিজবুল্লাহ, মুফতী মুহা. কাজী ইব্রাহীম, মাওলানা লিয়াকত আলী, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযাহ, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরি, ড. খলীলুর রহমান আল মাদানী, মাওলানা শরীফ মুহাম্মাদ, ড. গিয়াসউদ্দীন তালুকদার, মাওলানা খুবাইব বিন তায়্যিব (জিরি), মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, ড. মানজুরে এলাহি, ড. আবুল কালাম আজাদ বাশার, ড. মুহাম্মদ গোলাম রববানী, ড. মীর মনজুর মাহমুদ, প্রফেসর ড. সায়্যেদ মাকসুদুর রহমান, প্রফেসর ড. মো. মুস্তাফিজুর রহমান, প্রফেসর ড. মুখতার আহমেদ, হাফেজ হাবিবুল্লাহ মুহাম্মাদ ইকবাল, মাওলানা মোশতাক ফয়েজী, শায়খ আহমাদ বিন ইউসুফ আল আযহারী, শায়খ হারুন আজিজী নদভী, মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দিক কুয়াকাটা, মুফতি সাইফুল ইসলাম, মাওলানা রুহুল আমিন সাদী (সাইমুম সাদী) ড. ইউসুফ সুলতান, শায়েখ মুরতাজা হাসান ফয়জী মাসুম, ড. মো. রফিকুল ইসলাম আল মাদানী, ড. রশিদ আহমদ।

মাওলানা ফখরুদ্দীন আহমাদ, মুহাদ্দিস মাহমুদুল হাসান, মাওলানা আবদুল্লাহ আল-আমিন, মুফতি আমির হামজা, শায়খ কামরুল ইসলাম সাইদ আল আনসারী, শায়খ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাযযাক, মুফতি মনোয়ার হোসেন, শায়খ আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, মুফতি আরিফ বিন হাবিব, সৈয়দ হাসান আল আযহারী, মাওলানা রাফী বিন মুনির, শায়খ জামাল উদ্দীন, মাওলানা আবদুল মজিদ, মাওলানা মহিউদ্দীন ফারুকী, মুফতী লুৎফুর রহমান ফরায়েজী, শায়খ সাদিকুর রহমান আল-আযহারী, মুফতী মুহাম্মদ আলী, মুফতী আব্দুল্লাহ মাসুম, মাওলানা মীযান হারুন, মুফতি রেজাউল করিম আবরার, ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব, মুফতি মুহিউদ্দীন কাসেমী, মাওলানা আবদুল্লাহ আল ফারুক কাসেমী, মাওলানা আলী হাসান তৈয়ব, সৈয়দ শামছুল হুদা, মাওলানা গাজী সানাউল্লাহ রাহমানী, মাওলানা মিরাজ রহমান, ড. আবুল কালাম আজাদ মাদানী, ড. বি এম মফিজুর রহমান আল আজহারী, মুফতী শামছুদ্দোহা আশরাফী, মুফতি নোমান কাসেমী, শায়খ মোল্লা নাজিমুদ্দীন, মুফতি জিয়াউর রহমান, উস্তায আবু ত্বহা মুহাম্মাদ আদনান, মুফতি হেদায়েত উল্লাহ খান আজাদি, মাওলানা গাজি ইয়াকুব, মুফতী সাঈদ আহমাদ, মুফতি নুরুজ্জামান নাহিদ, মাওলানা আফীফ ফুরকান, মুহাদ্দিস মাওলানা আ.ন.ম. আকরাম হোসাইন, মাওলানা সিফাত হাসান, মহিউদ্দিন কাসেমী, মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসউদ, মুফতি আরিফ জাব্বার কাসেমী, মুফতি আবদুল গাফফার, মাওলানা নিজাম বিন মুহিব, মুহাম্মাদ নূরুল্লাহ, মাওলানা যুবায়ের আহমাদ, মাওলানা মুস্তাফিজ রহমানী,মুফতী আমজাদ হোসাইন আশরাফী, মাওলানা আমিন ইকবাল, মাওলানা ইমরান রাইহান, মাওলানা জহির উদ্দিন বাবর, মাওলানা নাজমুল হাসান, শায়খ ইউসুফ ওবায়দী, উস্তাদ আহমদ রফিক, মাওলানা হাছিব আর রহমান, শেখ ফজলুল করীম মারুফ, মাওলানা এম হাসিবুর রহমান, মাওলানা আসআদ বিন সিরাজ, মাওলানা এহসানুল হক, মাওলানা ইয়াহইয়া তাকী, মাওলানা মনিরুল ইসলাম মজুমদার, হাফেজ মাওলানা মুফতী আবু মুহাম্মদ রহমানী, মাওলানা আব্দুল কাহহার।

শায়খ ড. আব্দুস সালাম আজাদী, মাওলানা শরিফুল ইসলাম রিয়াদ, মাওলানা বদরুজ্জামান, মাওলানা মুফতী আফিফ ফুরকান, মুফতী ড. খলীলুর রহমান, মাওলানা এমদাদুল হক, মাওলানা জুবায়ের আহমেদ, মুফতি মুহাম্মাদ হেদায়েতুল্লাহ, মাওলানা মাকসুদ আল-আজমী, মাওলানা নাজমুল ইসলাম, মুফতি আম্মার বিন নূর, মাওলানা মির্জা আরাফাত, শাইখ সালাহউদ্দীন মাক্কী, মাওলানা উমায়ের বিন রশিদ, মাওলানা আবদুস সালাম যুক্তিবাদী, মাওলানা এমদাদ হোসেন, মাওলানা নুরুল কারীম আকরাম, মাওলানা গোলাম রব্বানী, মাওলানা মুস্তাফা, শায়খ জারির ইবনে আব্দুল্লাহ জাফরী, মুফতী নুরুন্নবী, মুফতী মাহমুদ হাসান, মাওলানা মাহফুজুর রহমান, মুফতী তানভীর আহমদ, মুফতী আল আমিন, মুফতী সুলাইমান খান, মুফতী সালমান শেখ, হাফেজ মাওলানা হাসানুজ্জামান, মাওলানা নজির হোসাইন, মাওলানা হোসাইন আহমদ, মুফতী আব্দুল্লাহ, মুফতী রফিকুল ইসলাম, মুফতী আবুল হাসান, মাওলানা ইমদাদুল হক, মাওলানা রবিউল ইসলাম, মাওলানা আশরাফুল ইসলাম, মুফতী ফাহিম আহমাদ, মাওলানা হাসান বনিক, মুফতী যোবায়ের হাসান, মাওলানা আল আমিন রংপুরী, মাওলানা ফরিদ উদ্দীন, মুফতী মুহাম্মদ আলী যশোরী, মুফতী শরীফুল ইসলাম, মাওলানা রাশেদুল ইসলাম, হাফেজ জাহিদ হাসান, মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন, মাওলানা আনিসুর রহমান, মাওলানা সাব্বির আহমদ, মাওলানা আবুল কাসেম আদিল, মুফতী দেলোয়ার হোসাইন, মাওলানা খলিলুর রহমান, মাওলানা রুহুল আমিন, মাওলানা আব্দুর রহমান কোব্বাদি, মুফতি মোহাম্মাদউল্লাহ, মুফতি  ইমামুদ্দিন, মুফতি আবদুল আজিজ কাসেমি, মুফতি জুবায়েব আবদুল্লাহ কাসেমি, মাওলানা শাহজাহান আল হাবিবি। 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

দেশে মাদকসেবীর সংখ্যা দেড় কোটি, ৮০ শতাংশই কিশোর-তরুণ

মোবারক আজাদ
মোবারক আজাদ
শেয়ার
দেশে মাদকসেবীর সংখ্যা দেড় কোটি, ৮০ শতাংশই কিশোর-তরুণ
প্রতীকী ছবি

দেশে মাদকসেবী প্রায় দেড় কোটি। এর মধ্যে এক কোটি মাদকাসক্ত এবং বাকি ৫০ লাখ মাঝেমধ্যে মাদক সেবন করে। মাদকাসক্তদের ৮০ শতাংশই কিশোর-তরুণ। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মাদকাসক্তদের ৩০ শতাংশ শুধু নেশার খরচ জোগাতে অপরাধ ও অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। সম্প্রতি বেসরকারি সংস্থা মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা (মানস) এসব তথ্য জানায়। 

আর দেশে দেশে যত রকমের অপরাধের ঘটনা ঘটছে তার বড় অংশ ঘটছে মাদকসংশ্লিষ্টতায়। মাদক সেবনের টাকা জোগানো ও কেনাবেচা নিয়ে সংঘটিত অপরাধ এখন সর্বত্র।

মাদকাসক্তি আধুনিক সময়ের ভয়ংকর ব্যাধিগুলোর অন্যতম এবং দিনে দিনে এই সমস্যা আরো প্রকট হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মাদকের নেশার টাকা জোগাতে মাদকসেবীরা মা-বাবা, ভাই-বোনের মতো আপনজনকেও খুন করতে দ্বিধা করছে না।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ওপরও হামলা চালাচ্ছে মাদকাসক্তরা। সম্প্রতি বেশ কিছু পারিবারিক অপরাধমূলক ঘটনা ও পুলিশের তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে।

অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, মাদকাসক্তির বহু কারণের মধ্যে সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় অন্যতম। এ ছাড়া ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক অস্থিরতা, দারিদ্র্যের কশাঘাত, বেকারত্বের নৈরাশ্যও দায়ী।

মাদকসেবীদের মধ্যে একটি বড় অংশ বেকার। তারা মাদকের টাকা জোগাড় করতেই ঘরে-বাইরে চুরি-ছিনতাই ও খুনখারাবির মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে অহরহ। রাস্তায় মাদকসেবীদের বেপরোয়া গাড়ি চালানো, ট্রাফিক আইন অমান্য করার মতো ঘটনাগুলোও বাড়ছে।

ফলে সড়ক দুর্ঘটনা, অকালমৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, দেশে প্রায় ৩২ ধরনের মাদক সেবন চলে। মাদকের কারণে সার্বিকভাবে কী পরিমাণ অপরাধ ঘটছে, তার কোনো একক জরিপ না থাকলেও মাদকদ্রব্য জব্দ ও আসামি গ্রেপ্তারের পরিসংখ্যান বলছে, মাদকের বিস্তার দিন দিন ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে এবং প্রতিনিয়িত দেখা যাচ্ছে মাদকসংশ্লিষ্টতার কারণে ঘটছে চাঞ্চল্যকর অপরাধ। মাদকাসক্ত অনেকে নেশার টাকা না পেয়ে পরিবারের সদস্যদেরও খুন করছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, একটি পরিবারে একজন সদস্য মাদকাসক্ত হয়ে পড়লে সেই পরিবারে নেমে আসে বিভীষিকাময় পরিবেশ। মাদককে ঘিরে যেসব সমস্যা তৈরি হয় তা একটি পরিবারকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে নিয়ে যায়। তছনছ হয়ে পড়ে সাজানো সংসার। মাদক সমস্যা পারিবার থেকে ছড়িয়ে পড়ে সমাজে। শেষ পর্যন্ত তা রাষ্ট্রীয় সমস্যায় পরিণত হয়।

লেখক ও মনোচিকিৎসক এম এ মোহিত কামাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি মনে করি, মাদক হচ্ছে মস্তিষ্কের রাসায়নিক দানব। কোনো কোনো মাদক ব্রেইনে ঢুকে এক বছর পর্যন্ত অ্যাক্টিভ ফর্মে থাকে এবং চিন্তা-ভাবনা, আবেগ-অনুভূতি সব নিয়ন্ত্রণ করে। এ নিয়ন্ত্রণ সুশৃঙ্খল থাকে না, বিশৃঙ্খল করে দেয়। ব্যক্তি সহিংস হয়ে পড়ে, নিষ্ঠুর আচরণ শুরু করে। এক পর্যায়ে মাদকাসক্তরা রাগের বশে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খুনখারাবিও করতে দ্বিধা করে না। মা-বাবার মুখে বালিশ চাপা দিতে পারে, তাদের ওপর ছুরি-বঁটি চালাতে পারে। সাধারণ মানুষ এসব কর্ম করতে পারে না। অনেকে বলেন, আমার সন্তান এমন (বিশৃঙ্খল আচরণ) করছে, তার ভেতর দানব ঢুকে গেছে, সেটা বের করে দেন। এই সমস্যা বর্তমানে অনেক পরিবারেই রয়েছে।’

এই মনোচিকিৎসক আরো বলেন, ‘কোথাও কোথাও দেখা যায় মাদকাসক্তরা পুলিশের ওপর হামলা করছে। সুতরাং সবাইকে এর প্রতিরোধে, প্রতিকারে এগিয়ে আসতে হবে এবং আইনের সুরক্ষা বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে সার্বিক অপরাধ কমে আসবে।’

ঢাকার মানসিক ও মাদকাসক্তি চিকিৎসা কেন্দ্রের মেন্টাল হেলথ কাউন্সেলর নুসরাত সাবরিন চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বেশির ভাগ পরিবার মাদকসেবীর কথা চেপে রাখে। এ নিয়ে কারো সঙ্গে বলতে চায় না বা চিকিৎসার প্রয়োজন মনে করে না। এভাবেও কিন্তু মাদকসেবী দিন দিন বাড়ছে।’

সাম্প্রতিক কয়েকটি হত্যাকাণ্ড : গত ১৪ মার্চ টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার মহিষমারা ইউনিয়নে নেশার টাকা না দেওয়ায় মাদকাসক্ত ছেলে রাজিবের হাতে মা রেজিয়া খাতুন (৫০) খুন হন। ৮ মার্চ যশোর জেলায় পারিবারিক কলহের জেরে শরিফুল ইসলাম (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে খুন করেন তাঁর মাদকাসক্ত ছেলে মো. রমেন (২১)। ৪ মার্চ রংপুরের মিঠাপুকুরে মাদকাসক্ত ছোট ভাই শরিফুল ইসলামের (৪০) হাতে বড় ভাই আতিয়ার রহমানের (৫৫) মৃত্যু হয়। ৬ মার্চ খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার বেলছড়িতে বাবা আব্দুর রহিম (৭০) এবং মা আমেনা বেগমকে (৬০) কুপিয়ে জখম করেন মাদকাসক্ত ছেলে আবুল কালাম (৩৮)।

এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি মৌলভীবাজার শহরতলির জগন্নাথপুর গ্রামে সাত বছর বয়সী ছেলে মাহিদকে মারধর করে হত্যা করেন মাদকাসক্ত বাবা খোকন মিয়া।

গত ২২ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামে মাদক সেবনের টাকা না দেওয়ায় ছেলে রিফাত (১৮) তাঁর বাবা শফিকুল ইসলামকে (৪৫) ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন। এ ছাড়া ১ ডিসেম্বর মাগুরার আঠারোখাদা গ্রামে চাহিদা অনুযায়ী টাকা না পেয়ে মাদকাসক্ত ছেলে মো. মফিজুর তাঁর বাবাকে ছুরিকাঘাত করেন। এতে বাবা সুরমান শেখের মৃত্যু হয়।

মনোচিকিৎসকরা বলছেন, মাদক সেবনে শারীরিক ও মানসিক উভয় প্রকার ক্ষতি হয়। নিয়মিত মাদক সেবনে ব্যক্তির সুস্থ চিন্তা-চেতনা সম্পূর্ণ লোপ পায়। এ কারণে কোনো ঘটনা, পরিস্থিতি কিংবা কোনো বিষয়ে সঠিক বিচার-বিবেচনা, মূল্যায়ন এবং অনুধাবন করার ক্ষমতা স্বাভাবিক থাকে না। এরই পরিণামে সন্তানের হাতে মা-বাবা খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, রাহাজানি নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অপরাধ ও সমাজ বিশ্লেষকরা বলছেন, মাদকসেবীদের বেশির ভাগই বয়সে তরুণ। তাদের অনেকের মধ্যে হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। ফলে তারা মাদক সেবনের টাকা সংগ্রহ করতে পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা কিংবা ছিনতাইকালে সামান্য টাকার জন্য খুনের মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা সংবাদমাধ্যমে প্রায়ই দেখা যায়। কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের একাংশ মাদক সেবনের টাকা জোগাড়ে চুরি-ছিনতাইসহ খুনের মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যও বলছে, খুন, ধর্ষণ, পরকীয়া, দাম্পত্য কলহ, অর্থ লেনদেন, হত্যা, সন্ত্রাসী কার্যক্রম সব কিছুর মূলেই রয়েছে এই মাদকের নেশা।

মাদকে শারীরিক ক্ষতির কথা উল্লেখ করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় রাসায়নিক পরীক্ষাগারের কর্মকর্তারা জানান, পুরনো মাদকের পাশাপাশি নতুন অনেক মাদকও দেশে আসছে। নতুন মাদকের মধ্যে আইস সেবনের ফলে অনিদ্রা, অতি উত্তেজনা, মানসিক অবসাদ, বিষণ্নতা, স্মৃতিভ্রম, মস্তিষ্ক বিকৃতি, স্ট্রোক, হৃদরোগ, কিডনি ও লিভারের জটিলতা হতে পারে। এভাবে প্রতিটি মাদকই মানবদেহের ভয়াবহ ক্ষতির কারণ।

মাদক নিরাময় কেন্দ্রের তথ্য অনুসারে, মাদকাসক্ত হওয়ার প্রধান কারণ হলো মাদকের সহজলভ্যতা। এ ছাড়া পারিবারিক কলহ, বেকারত্ব, প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির অসামঞ্জস্যতা, বিবাহবিচ্ছেদে সংসার ভেঙে যাওয়া, প্রেম ও চাকরিতে ব্যর্থতা থেকে হতাশা ইত্যাদি কারণেও যুবসমাজ মাদকের প্রতি আসক্ত হচ্ছে। এভাবে স্কুল, কলেজ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক পৌঁছে গেছে অনেক আগ থেকেই। বেশির ভাগ মাদক ব্যবহারকারী বন্ধুবান্ধবের পাল্লায় পড়াকে দোষারোপ করে। প্রথমবারের মতো মাদক গ্রহণের জন্য কৌতূহল অনেক ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে কাজ করে।

এদিকে বিভিন্ন এলাকায় মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান চললেও অভিযান চালানো হয় না বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। ফলে দেশে বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপদ মাদক গ্রহণের স্থানে পরিণত হচ্ছে বলে জনপরিসরে আলোচনা আছে।

অপরাধ ও সমাজ বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মাদক নিয়ন্ত্রণ শুধু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের একার পক্ষে সম্ভব নয়। মাদকাসক্তি প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলনের বিকল্প নেই। মাদকের এই নীল দংশন থেকে যুবসমাজকে বাঁচাতে হলে গড়ে তুলতে হবে পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা। এতে সমাজ, পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানকে নিজ নিজ জায়গা থেকে কাজ করতে হবে। এ ছাড়া দেশে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে মাদকের সরবরাহ চেইন বন্ধ করতে চোরাচালানকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ঢাকায় বজ্রবৃষ্টির আভাস

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ঢাকায় বজ্রবৃষ্টির আভাস
সংগৃহীত ছবি

ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ ছাড়া বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি ঝরতে পারে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। 

সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

আরো পড়ুন
মহেশপুর সীমান্তে ২ বাংলাদেশিকে ফেরত দিল বিএসএফ

মহেশপুর সীমান্তে ২ বাংলাদেশিকে ফেরত দিল বিএসএফ

 

এতে আরো বলা হয়েছে, এ সময় আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে অস্থায়ীভাবে মেঘলা থাকতে পারে।

সেই সঙ্গে পশ্চিম/দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে।

এদিকে সকাল ৬টায় ঢাকায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৬৫ শতাংশ। 
 

মন্তব্য

একনজরে আজকের কালের কণ্ঠ (২১ মার্চ)

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার

ভোট পেছানোর কারণ নেই : ড. ইউনূস

বাসস
বাসস
শেয়ার
ভোট পেছানোর কারণ নেই : ড. ইউনূস
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ড. কমফোর্ট ইরোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক। ছবি : পিআইডি

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং কোনো দাবির কারণে ভোট পিছিয়ে দেওয়া হবে না।’

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ড. কমফোর্ট ইরোর নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় অধ্যাপক ইউনূস এ কথা জানান।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, সরকার নির্বাচনের জন্য দুটি সম্ভাব্য সময়সীমা নির্ধারণ করেছে এবং নির্ধারিত এ তারিখ পরিবর্তন করা হবে না।

তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, যদি রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে সীমিতসংখ্যক সংস্কার চায়, তাহলে নির্বাচন এই বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে।

আর যদি বৃহত্তর সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের কোনো কারণ নেই।’ পাশাপাশি, তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।’

রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই।

তবে দলের যে সব নেতার বিরুদ্ধে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধসহ অন্যান্য অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, তাদের বাংলাদেশের আদালতে বিচার করা হবে।’

তিনি আরো জানান, জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানী মিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সম্ভাব্য অপরাধের অভিযোগ থাকায় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) মামলা করার বিষয়টি সরকার বাতিল করেনি। ‘এটি এখনও আলোচনার টেবিলে রয়েছে’ বলে তিনি মন্তব্য করেন।

প্রধান উপদেষ্টা আরো জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে।

সরকারের নীতিনির্ধারণে দিকনির্দেশনা দিতে জুলাই সনদ চূড়ান্ত করা ও স্বাক্ষরের পরিকল্পনাও রয়েছে বলে তিনি জানান।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের কর্মকর্তারা এই সপ্তাহে রোহিঙ্গা বিদ্রোহী নেতা আতাউল্লাহর গ্রেপ্তারকে সরকারের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতির ইতিবাচক লক্ষণ হিসেবে প্রশংসা করেন।

কর্মকর্তারা আরো জোর দিয়ে বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যের বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণকারী আরাকান আর্মির সঙ্গে সরকারের আরো কার্যকর যোগাযোগের প্রয়োজন।’

অধ্যাপক ইউনূস জানান, ঢাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ সহায়তা ত্বরান্বিত করতে কাজ করছে এবং আসন্ন জাতিসংঘের বিশেষ সম্মেলনের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি বৈশ্বিক মনোযোগ আকর্ষণ করার আশা করছে।

ড. কমফোর্ট ইরো ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে অপতথ্য ছড়ানোর মোকাবেলায় সহায়তার আশ্বাস দেন।

অধ্যাপক ইউনূস ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তোলার আকাঙ্ক্ষার কথা জানান। তবে, তিনি দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশবিরোধী অপতথ্য প্রচারের একটি বড় অংশ ভারতীয় গণমাধ্যম থেকেই আসছে।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ