ঢাকা, সোমবার ২৪ মার্চ ২০২৫
১০ চৈত্র ১৪৩১, ২৩ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, সোমবার ২৪ মার্চ ২০২৫
১০ চৈত্র ১৪৩১, ২৩ রমজান ১৪৪৬

সুন্দরবনে ২২ বছরে ২৫ বার আগুন

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
সুন্দরবনে ২২ বছরে ২৫ বার আগুন
সংগৃহীত ছবি

সুন্দরবনে গত ২২ বছরে ২৫ বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সবগুলোই ঘটেছে পূর্ব সুন্দরবন এলাকায়। এসব আগুনের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন বলছে, বেশির ভাগ আগুন লেগেছে জেলে-মৌয়ালদের অসাবধানতায়। যদিও এ নিয়ে বনজীবীদের দ্বিমত আছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনে এবার আগুন জ্বলছে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের কলমতেজী ফরেস্ট টহল ফাঁড়ি এলাকায়। এর আগের আগুনটি ছিল ২০২১ সালের মে মাসে পূর্ব সুন্দরবনে দাসের ভারানির পাশের অঞ্চলে। সব মিলিয়ে ২০০২ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ঘটা ২৪টি অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত করেছে পূর্ব বন বিভাগ।

আরো পড়ুন
আল্লাহর জিকিরে অন্তরের প্রশান্তি

আল্লাহর জিকিরে অন্তরের প্রশান্তি

 

বন বিভাগের তদন্ত প্রতিবেদনগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২৪টি আগুনের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২৩ লাখ ৫৩৩ টাকা।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অগ্নিকাণ্ডে প্রাণী-বৈচিত্র্য ও পরিবেশের ক্ষতি ধরা হয় আনুমানিক হিসাবে। ফলে এই হিসাবে যে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র আসেনি, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।  

এ ছাড়া প্রতিবেদনগুলো বিশ্লেষণে দেখা যায়, অধিকাংশে আগুনের সূত্রপাতের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, জেলে-মৌয়ালদের অসাবধানতায় আগুন। অর্থাৎ জেলে-মৌয়ালদের বিড়ি-সিগারেট বা মৌমাছি তাড়াতে জ্বালানো মশাল থেকেই সবচেয়ে বেশি আগুনের সূত্রপাত হয়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা আগুন লাগার কারণ নিয়ে দ্বিমত আছে বনজীবীদের।

আরো পড়ুন

স্মৃতিশক্তি বাড়াতে ৪ সুপারফুড

স্মৃতিশক্তি বাড়াতে ৪ সুপারফুড

 


আজ বিকেল ৩টা নাগাদ এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত প্রায় ৮ ঘণ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। পর্যাপ্ত পানির অভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে। বনরক্ষীরা ফায়ারলাইন কেটে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ৭টার দিকে সুন্দরবনের কলমতেজী ফরেষ্ট টহল ফাঁড়ির আওতাধীন টেপারবিল এলাকায় ধোঁয়া উঠতে দেখে এলাকাবাসী।

এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যায় বনরক্ষীরা। তবে বনের খাল থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে আগুন লাগায় পানির উৎসের অভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে। আগুন যেন বনের ব্যাপক এলাকাজুড়ে ছড়াতে না পারে সে জন্য আগুনের চারপাশে ফায়ারলাইন কাটা শুরু করেছেন বনরক্ষীরা। খালে জোয়ার হলে নৌপথে পানির পাম্প নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বশীলরা।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা ফরেস্টার বিপুলেশ্বর দাস জানিয়েছেন, আশপাশে পানির কোনো উৎস নেই। বনের খাল থেকে প্রায় দুই থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে গহিন বনের মধ্যে আগুন জ্বলছে। খালে জোয়ার হলে নৌপথে পানির পাম্প নেওয়া হবে।

ধানসাগর এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য পান্না মিয়া বলেন, শনিবার সকালে সুন্দরবনের কলমতেজী টহল ফাঁড়ির টেপারবিল এলাকার বনের  মধ্যে আগুনের ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। বিষয়টি ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

গরম নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
গরম নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস

সারা দেশে আগামী আট দিন তাপমাত্রা বেড়ে গরম বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সোমবার সকাল ৯টা পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। পাশাপাশি সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।

এ ছাড়া আগামীকাল মঙ্গল ও পরদিন বুধবারও তাপমাত্রা দিন ও রাতে বেড়ে গরম পড়তে। 

আরো পড়ুন
উচ্চ রক্তচাপ বাড়ায় যে খাবারগুলো

উচ্চ রক্তচাপ বাড়ায় যে খাবারগুলো

 

আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ার অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, এ সময় দিন ও রাতের তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে।

 

মন্তব্য

ঈদুল ফিতরের ট্রেনযাত্রা শুরু

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ঈদুল ফিতরের ট্রেনযাত্রা শুরু
ফাইল ছবি

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অগ্রিম টিকিটে ঘরমুখো মানুষের প্রথম যাত্রা শুরু হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ৬টায় রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনের মাধ্যমে শুরু হলো এবারের ঈদুল ফিতরের ট্রেনযাত্রা। 

প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে সকাল থেকেই ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে কমলাপুর স্টেশনে। অনেকে ভোরের আলো না ফুটতেই হাজির হয়েছেন স্টেশনে।

 

আরো পড়ুন
এবার জুটি বেঁধে একমঞ্চে বুবলী-তৌসিফ

এবার জুটি বেঁধে একমঞ্চে বুবলী-তৌসিফ

 

এদিকে সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় চলাচল করা ট্রেনগুলোও চলবে বিশেষ ব্যবস্থায়। আজ যারা যাত্রা করছেন, তাদের অগ্রিম টিকিট গত ১৪ মার্চ বিক্রি করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। আর এই টিকিট বিক্রি কার্যক্রম চলে ২০ মার্চ পর্যন্ত।

এদিকে বিনা টিকিটের যাত্রীরা যেন ট্রেনে চড়তে না পারে এবং নাশকতা ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

কমলাপুর, বিমানবন্দর, জয়দেবপুর, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেট, রাজশাহী, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্টেশনে জিআরপি, আরএনবি, বিজিবি ও স্থানীয় পুলিশ এবং র‍্যাবের সহযোগিতায় সার্বক্ষণিক প্রহরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই সঙ্গে নাশকতা প্রতিরোধে চলন্ত ট্রেন, স্টেশন ও রেললাইনে আরএনবি, জিআরপি ও রেলওয়ে কর্মচারীদের কার্যক্রম আরো জোরদার করা হয়েছে। 

পাশাপাশি র‍্যাব, বিজিবি, স্থানীয় পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্রিয় সহযোগিতায় নাশকতাকারীদের কঠোরভাবে দমনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সেনাবাহিনী দুর্বল হলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব টিকে থাকবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
সেনাবাহিনী দুর্বল হলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব টিকে থাকবে না

সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনীবিরোধী আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেশে বিভাজন তৈরি করতে পারে এবং কৌশলগতভাবে রাষ্ট্রকেই দুর্বল করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সেনাবাহিনী দুর্বল হয়ে পড়লে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব টিকে থাকবে না। সেই সময়ে প্রতিবেশী দেশ হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়বে। এই পরিস্থিতিই চাচ্ছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসররা।

 

সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক আক্রমণাত্মক বক্তব্য ও বিষোদগার সম্পর্কে এমন কথা বলেন তারা। সামরিক বিশেষজ্ঞ রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (রাওয়া) প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) আব্দুল হক গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য সময় এখন খুবই স্পর্শকাতর। ফ্যাসিস্ট হাসিনার রেখে যাওয়া প্রেতাত্মারা খুব সরব। দক্ষতার সঙ্গে তারা পরিস্থিতি পাল্টে ফেলতে চাচ্ছে।

বিভিন্নভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তারা কিন্তু গত ১৬ বছর বসে ছিল না। অর্থবিত্ত চুরি-ডাকাতি করেছে, দেশের সম্পদ পাচার করেছে। কিছু লোক বাইরে চলে গেছে; আর যারা দেশে আছে, তারা সম্মিলিতভাবে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে সেনাবাহিনীকে সাধারণ মানুষের মুখোমুখি দাঁড় করাতে চাচ্ছে।
জনগণকেও সরকারের মুখোমুখি করাতে চাচ্ছে। ত্রিমুখী একটি সংঘর্ষ লাগানোর অপচেষ্টায় তারা লিপ্ত। এই অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনায় প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বন্ধুরা তাদের পরামর্শ দিচ্ছে, উৎসাহ দিচ্ছে এবং সর্বোপরি সাহায্য করছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সেনাবাহিনী হচ্ছে একটি দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। সেনাবাহিনী দুর্বল হয়ে পড়লে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব টিকে থাকবে না।

সেই সময় আমাদের প্রতিবেশী দেশ হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়বে। এই পরিস্থিতিই চাচ্ছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসররা। শুধু ফ্যাসিস্ট না, ফ্যাসিস্টের চেয়ে যদি কঠিন শব্দ থাকে সে শব্দ হাসিনা ও তার দোসরদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়। শুধু অর্থ লুটপাট না, এ দেশের মানুষের চরিত্রও ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে ওরা। এই চরিত্র ধ্বংস শুধু নিজেদের দলের মধ্যে না, প্রশাসনের চরিত্র ধ্বংস করেছে, পুলিশের চরিত্র ধ্বংস করেছে, রাষ্ট্রের যত স্টেকহোল্ডার রয়েছে, সবার চরিত্র ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে। তারা জনগণের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে। তারাই এখন চাচ্ছে দেশের পরিস্থিতি নানাভাবে অস্থিতিশীল করতে। এ জন্য দুর্বল লোকজন খুঁজে বের করছে। পরিস্থিতি বোঝার জন্য ম্যাচুরিটি লাগে। বুঝতে হবে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর ভিতে নাড়া দিতে হয় না। এতে নিজেদেরই ক্ষতি হয়। পরিপক্বতার অভাবে তাদের দলকে দুর্বল ভাববে মানুষ। দলটার প্রতি সাধারণ মানুষ আগ্রহ দেখিয়েছিল; কিন্তু সেনাবাহিনী প্রধান, সেনাবাহিনীর প্রতি রুখে দাঁড়ানোর হুমকি, দেশকে টালমাটাল করার চেষ্টা যারা করে, তাদের প্রতি তো মানুষ আস্থা রাখতে পারবে না। তারা ভুল করেছে। যেকোনো মূল্যে আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি সামরিক ও সামাজিক বিশেষজ্ঞ হিসেবে বলব, এখনো যদি পরিস্থিতির অবনতি হয়, মানুষ আর্মির কাছে চলে যাবে। এখন যদি আর্মি উঠিয়ে নেওয়া হয়, তাহলে দেশের পরিস্থিতি কী হতে পারে আপনারা কল্পনা করতে পারছেন? রাস্তায় হাঁটার মতো পরিস্থিতি থাকবে না। এই বিষয়টি অনেকে বোঝেন না। যদি গণ্ডগোল লাগে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসই বলবেন, আর্মি নামাও। তখন বাধ্য হয়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে হবে। আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা এই পরিস্থিতিই সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। সামরিক বাহিনী সম্পর্কে ঘরোয়াভাবে যে কথা বলা যায়, প্রকাশ্যে তা বলা উচিত না। সেনাবাহিনী প্রধান একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তাঁর মর্যাদার সঙ্গে সেনাবাহিনীর মর্যাদাও জড়িত। কেউ যদি ঘরোয়া আলোচনায় কিছু বলে থাকেন, সেটা প্রকাশ করা ঠিক না। কেউ কি তাদের ঘরের কথা বাইরে প্রকাশ করেন? কোনো ব্যক্তির নিজস্ব মতামত থাকতেই পারে। সেই মতামত তো বাইরে প্রকাশ করা ঠিক হয়নি। উনি তো কাউকে ডেকে নিয়ে যাননি। যাঁরা এই অপরিপক্ব কাজটি করেছেন, তাঁরাই  এখন বলছেন, আমাদের ভুল হয়ে গেছে।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. বায়েজিদ সরোয়ার বলেন, ‘ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময় জনগণের পক্ষে একাত্ম থাকে। ২০২৪-এর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে বা জুলাই বিপ্লবের সময় সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী বাঁকবদলকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে আন্দোলনকারী জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল। পরবর্তী সাত মাসে পুলিশসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দুর্বল অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে আইন-শৃঙ্খলা, জননিরাপত্তা ও অন্তর্বর্তী সরকারের শক্তিশালী কার্যকর শক্তি হলো সেনাবাহিনী। এমন পরিস্থিতিতে সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে একটি পক্ষের আক্রমণাত্মক বক্তব্য ও বিষোদগার অত্যন্ত দুঃখজনক  ও অনভিপ্রেত ঘটনা। আমরা জটিল ও কঠিন সময় পার করছি। এই সময় জুলাই বিপ্লবের অসাধারণ সাহসী ও বীরত্বসুলভ ভূমিকা পালনকারী কিছু তরুণ নেতার (বর্তমানে এনসিপি নেতা)  সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনীবিরোধী আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেশে বিভাজন তৈরি করতে পারে এবং কৌশলগতভাবে রাষ্ট্রকেই দুর্বল করতে পারে। এখন সব পক্ষের ধৈর্য ও বিচক্ষণতা কাম্য। এই ক্রান্তিলগ্নে প্রয়োজন ঐক্যের।’

মেজর জেনারেল (অব.) মো. নাঈম আশফাকুর চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেক নাগরিকের একটাই উদ্দেশ্য হওয়া উচিত, ইন্টিগ্রেশন। আমাদের অবজেক্টিভ হওয়া দরকার ঐক্য। ভিন্নমত থাকতেই পারে। একেকজনের একেক ধরনের মতামত হবে—এটাই বিউটি অব ডেমোক্রেসি। কিন্তু দেশের ইউনিটিকে ধ্বংস করা কারোরই উচিত না। বিশেষ করে যাঁরা কোনো রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের নেতৃত্বে আছেন। তিনি স্টুডেন্ড লিডার অথবা পলিটিক্যাল লিডার হলে তাঁর প্রতিটি বক্তব্যের প্রতিটি শব্দ জনগণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ জনগণ তাঁর প্রতিটি শব্দ তাঁর অনুপস্থিতিতে ইন্টারপ্রিটেশন করবে এবং নিজেদের মতো করে বুঝে নেবে। এ জন্য তিনি কী বাক্য, শব্দ ব্যবহার করবেন, তার প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে, কী কী পদ্ধতিতে হতে পারে, এসব দিক বিবেচনা করে মন্তব্য করা উচিত।  বিশেষ করে পোস্ট জুলাই রেভল্যুশনের পরের যে অবস্থা, আমরা একটি জটিল সময় পার করছি, রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ চলছে, সব সংস্কার তো আর এত দ্রুত করা যাবে না। রাষ্ট্রের যে প্রতিষ্ঠানগুলো খুবই দুর্বল অবস্থায় আছে, সেগুলোর সংস্কার দরকার। নির্বাচনও এগিয়ে আসছে। এই সময় সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনী সম্পর্কে নেতিবাচক এবং ঐক্যবিনষ্টকারী বক্তব্য অপ্রত্যাশিত।  কারো প্ররোচনায় এ ধরনের বক্তব্য এসেছে কি না সেটাও জানার বিষয়। আমার মতে, আমাদের ঐক্যের দিকেই এগিয়ে যাওয়া উচিত। অনৈক্যের দিকে নয়। ‘আমি’ ও ‘আপনি’ এই সব শব্দ বাদ রেখে এখন ‘আমরা’ বলতে হবে। ‘আমরা’ কখন, কিভাবে বলতে পারব তার ওপর কাজ করা উচিত। যা ঘটেছে তা অনভিপ্রেত, অনাকাঙ্ক্ষিত। সেনাবাহিনীকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য সাধারণ জনগণও মেনে নিচ্ছে না। আপনি একদিকে বলবেন সেনাবাহিনীই হচ্ছে জাতীয় ঐক্য ও দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য শেষ ভরসা, আবার এই সংস্থার দিকে আঙুল তুলছেন। এটা শুধু সেনাবাহিনীর দিকে আঙুল তোলা নয়, রাষ্ট্রের দিকেও আঙুল তুলছেন।”

মন্তব্য

অপপ্রচার থামাতে এক মাস আগেই অনুরোধ করেছিলেন সেনাপ্রধান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
অপপ্রচার থামাতে এক মাস আগেই অনুরোধ করেছিলেন সেনাপ্রধান
ফাইল ছবি

সেনাবাহিনীর প্রতি আক্রমণাত্মক কথা না বলার আহ্বান আরো এক মাস আগেই জানিয়েছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি বলেছিলেন, ‘একটা কমন জিনিস আমি দেখতে পাচ্ছি, সেনাবাহিনী এবং সেনাপ্রধানের প্রতি বিদ্বেষ কারো কারো। কিন্তু কী কারণে, আজ পর্যন্ত আমি এটা খুঁজে পাইনি।’

ওই দিন সেনাপ্রধান আরো বলেন, ‘আমরা হচ্ছি একমাত্র ফোর্স, যেটা আপনাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছি, দাঁড়িয়ে আছি প্ল্যাটফরমে।

অবকোর্স নেভি অ্যান্ড এয়ারফোর্স। নেভি, এয়ারফোর্স উই অল। আমাদের সাহায্য করেন, আমাদের আক্রমণ করবেন না। আমাদের অনুপ্রাণিত করেন, আমাদের উপদেশ দেন।
আমাদের প্রতি আক্রমণ করবেন না। উপদেশ দেন, আমরা অবশ্যই ভালো উপদেশ গ্রহণ করব। আমরা একসঙ্গে থাকতে চাই এবং দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’

কিন্তু সেনাপ্রধানের সেই অনুরোধেও ঐক্য বিনষ্টকারীদের অপচেষ্টা থামেনি।

কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশি অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট বেশ কিছুদিন ধরেই সেনাপ্রধান সম্পর্কে কটূক্তি ও  অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।

সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বিস্ময়করভাবে নিজের ফেসবুক পোস্টে  ‘ক্যান্টনমেন্টের চাপ’-এর কথা বলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেন। তবে হাসনাতের এই বক্তব্য তাঁর দলের অনেকেই সমর্থন করতে পারেননি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনীবিরোধী আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেশে বিভাজন তৈরি করতে পারে এবং কৌশলগতভাবে রাষ্ট্রকেই দুর্বল করতে পারে।  দেশ এখন একটি কঠিন ও জটিল সময় পার করছে।

এমন পরিস্থিতিতে সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে একটি পক্ষের আক্রমণাত্মক বক্তব্য ও বিষোদগার অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত ঘটনা।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ