বাংলাদেশ ডক্টরস প্লাটফর্ম ইন ফিনল্যান্ড-এর আয়োজনে

‘জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে বাংলা: আমাদের করণীয়’ বিষয়ে ভার্চুয়াল আলোচনা

ড. মো. মঞ্জুরে মওলা, ফিনল্যান্ড থেকে
ড. মো. মঞ্জুরে মওলা, ফিনল্যান্ড থেকে
শেয়ার
‘জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে বাংলা: আমাদের করণীয়’ বিষয়ে ভার্চুয়াল আলোচনা

বিশ্ব মাতৃভাষা দিবস ও অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ‘জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে বাংলাঃ আমাদের করণীয়’ বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ ডক্টরস প্লাটফর্ম ইন ফিনল্যান্ড (বিডিপিএফ) আয়োজন করে ভার্চুয়াল আলোচনা।

গত শনিবার (১৩ মাঘ ১৪২৭) ফিনল্যান্ডের স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় জুমের মাধ্যমে অনলাইন আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচ্য বিষয় ‘জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে বাংলা: আমাদের করণীয় ’ নিয়ে আজকের আলোচনার আলোচক ছিলেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, অধ্যাপক আবু ইউসুফ মোঃ আবদুল্লাহ এবং মেজর জেনারেল (অবঃ) ড. মোঃ ফসিউর রহমান।

অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, বাংলা ভাষাকে দেশের সর্ব স্তরের শিক্ষা ক্ষেত্রে বাদ্ধতামুলক ব্যবহারের জন্য আইন পাস করা অতীব জরুরী ।

বিভিন্ন দেশের ইতিহাস, উপাত্য এবং সমকালীন উদাহরণের ওপর ভিত্তি করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে শিশুদের শিক্ষার মাধ্যম বাংলা হওয়া উচিত, সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা তা অবশ্যই বাংলা ভাষাতে হতে হবে । বিদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ইংরেজী শিক্ষার নামে দেশের মানুষ তথা জাতির সাথে প্রতারনা করছে । যারা এ ধরনের শিক্ষা নামক প্রতারনামূলক শিক্ষা- ব্যবসার সাথে জরিত তাদের বিচার হওয়া উচিত । জাতিসংঘের একটি আঞ্চলিক অফিস ঢাকাতে স্থাপন হলে তা আমাদের বাংলাভাষাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে স্থান পেতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।

মেজর জেনারেল (অবঃ) ড. মোঃ ফসিউর রহমান তার পেশাগত জীবনের অভিজ্ঞতাগুলোকে সামনে রেখে খুব আবেগের সাথে বলেন, বিশ্বের চল্লিশটি দেশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতি সংঘের অধীনে করছেন, যারা সর্বদাই চেষ্টা করেন বা করে থাকেন, বাংলা ভাষা যেন সিউওরেলিউনার দেশের মতো অন্য দেশেও সরকারি ভাষাতে স্থান পায় । তিনি আরো বলেন, প্রাণের কথা বলে আমাদের বাংলা ভাষা । বিদেশিরা আমাদের ভাষাকে খুব মিষ্টি ভাষা বলেই জানেন । তাই আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে আজকের আলোচনার বিষয়কে বাস্তবে রূপ দেবার জন্য ।

অধ্যাপক আবু ইউসুফ মোঃ আবদুল্লাহ তার বক্তব্যে বলেন, একটি স্ট্রাকচারল রোড ম্যাপ থাকা দরকার যা বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষাতে স্থান পাবার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে । একি সাথে বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষার সারিতে নিয়ে যাবার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালগুলো অনবদ্য ভূমিকে পালন করতে পারে । তিনি তার বক্তব্যে যোগ করেন, বাংলা ভাষার পাশা পাশি, আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে ইংরেজী ভাষাও আমাদের অধ্যায়ন করতে হবে । যা বিশ্বের সকল মানুষের কাছে আমাদের বাংলাভাষাকে পরিচিত করার নতুন পথ দেখাতে পারে । আজকের আলোচনার প্রশ্ন পর্বে, অনেক প্রশ্নের মধ্যে গুটি কয়েক প্রশ্ন উপস্থান করা যেতে পারে এভাবে,

জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে বাংলা- এ ক্ষেত্রে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা কি হওয়া দরকার, ডক্টর সাবরিদ্দিন মির্জা, সিনিয়র রিসার্স ফেলো, হারর্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাষ্ট্র।

জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা- এ ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর কি কি ভূমিকা পালন করতে পারে, ডুসেন্ট জহিরুল ইসলাম, হেলসিংকি বিশ্ববিদ্যালয়, ফিনল্যান্ড।

প্রতিটি পরিবার থেকে বাংলা ভাষাকে এগিয়ে নেবার উদাহরন দিয়ে মন্তব্য করেন, অধ্যাপক কামরুল ইসলাম, ল্যাপলান্ড বিশ্ববিদ্যালয় ফিনল্যান্ড। ভার্চুয়াল আলোচনায় বিশ্বের ১৩ টি দেশের যে ডক্টরগন উপস্থিত হতে পেরেছিলেন তারা হলেন- বাংলাদেশ থেকে অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান, অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ মোঃ আবদুল্লাহ, মেজর জেনারেল (অবঃ) ড. মোঃ ফসিউর রহমান, অধ্যাপক মনতাজ আলী ( দক্ষিন আফ্রিকা), ড. সাইদ মাহমুদ খান (অস্ট্রেলিয়া), তারিকুল ইসলাম সাজিব (ডেনমার্ক), ডক্টর সাবরিউদ্দিন মির্জা, সিনিয়র রিসার্স ফেলো, হারর্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় (যুক্তরাষ্ট্র), শাহেনুল ইসলাম পালোয়ান (রাশিয়া-ডেনমার্ক), মোঃ মিনহাজ –উল হক (ইতালি), সহযোগি অধ্যাপক গাজি সালাউদ্দিন (সুইডেন), সহযোগী অধ্যাপক ড. মাহবুব রহমান (ফ্রান্স), ড. , অধ্যাপক রবিউল আহসান ( সৌদি আরব), অধ্যাপক ড. মহাম্মদ আর এ খন্দকার (যুক্তরাজ্য) অধ্যাপক , ড. মোঃ মহিদুল খান (এস্তোনিয়া) ড. মোহাম্মদ আহসানুল হক আরিফ (ডেনমার্ক) , ফিনল্যান্ড থেকে ড. মাহবুব রহমান, ড. তাহমিনা খানম, ড.কাশিফ নিজাম খান, ড. হাসান মাহমুদ আমিনুল ইসলাম, ড. মোহাম্মদ আশরাফুল হক, ড. মোঃ সানাউল হক, ড. জুলিয়াস ফ্রান্সিস গোমেজ, ড. করিম উল্লাহ, ড. এস এম হারুন-অর-রশিদ, ড. কামুরল হোসেন, ড. সাকিরা হাসান, ড. শরিফ চৌধুরী, ড. গোলাম মোঃ সারোয়ার, ড. মনজুর আলম, ড. এস এম সফিকুল আলম, ড. এ এইচ এম সামসুজ্জোহা, ড. জহিরুল ইসলাম, ড. ইয়াছিনুর রহমান এবং ড. মোঃ মঞ্জুরে মওলা ।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

তুরস্কে বাংলাদেশি প্রবাসীদের ঈদ পুনর্মিলনী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
তুরস্কে বাংলাদেশি প্রবাসীদের ঈদ পুনর্মিলনী
সংগৃহীত ছবি

তুরস্কের ইস্তানবুলে ঈদ পুনর্মিলনী করেছেন বাংলাদেশি প্রবাসীরা। বিখ্যাত সাহাবী হযরত আবু আইয়ুব আল-আনসারী (রা.) এর কবর সংলগ্ন নিউ ওয়াল্ড ফাউন্ডেশনের অডিটোরিয়ামে এই পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, কুরআন তিলাওয়াত, দেশাত্মবোধক ও ইসলামী সঙ্গীত, খেলাধুলা ও প্রাণবন্ত মূকাভিনয় করা হয়। পরে লটারির মাধ্যমে পুরস্কার বিতরণ করে যোগ করা হয় বাড়তি আনন্দ।

 

অনুষ্ঠানে বিশেষ আকর্ষণ ছিল ‘সবুজের বুকে লাল- ঈদ মোবারক’ ফটো ফ্রেম। এই ফ্রেম শুধু ঈদের আনন্দই নয়, বরং মনে করিয়ে দিয়েছে ২০২৪ এর জুলাই বিপ্লবের— ‘জন্মভূমি অথবা মৃত্যু’— শীর্ষক অমর স্লোগানটিকে।

আরো পড়ুন
নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে যা বললেন মির্জা ফখরুল

নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে যা বললেন মির্জা ফখরুল

 

আয়োজক কমিটি বেকদের (BEKDER)এর পূর্ববর্তী সফল আয়োজনগুলোর প্রশংসা শুনে অনুষ্ঠানে যোগ দেন মিসর, ফিলিস্তিন, আলজেরিয়া, ভারত ও পাকিস্তানের শিক্ষার্থীরাও।  

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি খাবার, পানীয়, বাহারি মিষ্টান্ন ও দেশীয় ঝাল খাবার পরিবেশন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বেকদেরের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহযোগী অধ্যাপক ড. আ.ফ.ম. শাহেন শাহের উদ্বোধনী বক্তব্যের পরেই বিশেষ অতিথি হিসেবে নিউ ওয়াল্ড ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মেহমেত গোকসু শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। তিনি কমিউনিটির মরহুম তরিকুল ইসলামকে স্মরণ করেন এবং বেকদের সভাপতি ড. হাফিজুর রহমনকে ধন্যবাদ জানান।

অতিথি পর্বে বেকদেরের দায়িত্বশীলদের মধ্যে ড. রহমতুল্লাহ রফিক, ড. জাহিদুল ইসলাম সরকার, ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন, ড. নূরুদ্দিন হামিম, মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান, ডা. সিরাজুল ইসলাম, যাকির হোসেন ও ড. ফেরদৌস বক্তব্য দেন।

এতে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক পরিষদের সভাপতি উপাধ্যক্ষ মুহাম্মদ মাকসুদুর রহমান।

সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন বেকদেরের সেক্রেটারি জেনারেল ও কারাবুক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. আ.স.ম. মাহমুদুল হাসান। 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

লন্ডনের কিংসমেডাও মাঠে ঈদের নামাজ পড়লেন তারেক রহমান

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
লন্ডনের কিংসমেডাও মাঠে ঈদের নামাজ পড়লেন তারেক রহমান
সংগৃহীত ছবি

লন্ডন স্থানীয় সময় সকাল ৯টার সময় কিংসটন এলাকার কিংসমেডাও স্টেডিয়ামে ঈদের জামাতে অংশ নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। পশ্চিম লন্ডনের সর্ববৃহৎ খোলা মাঠের ঈদের নামাজে অংশ নিতে সকাল ৯টার কিছু সময় পরে মাঠে আসেন তিনি।

তারেক রহমানের পাশে ছিলেন বেগম খালেদা জিয়ার ব‍্যক্তিগত চিকিৎসক ড. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও যুক্তরাজ‍্য বিএনপি নেতা কামাল উদ্দিন। এ সময় বিএনপির বেশ কিছু নেতাকর্মী সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন।

আগের দিন থেকেই জানা গিয়েছিল আবহাওয়া ভালো থাকলে তারেক রহমান এই খোলা মাঠে ঈদের নামাজে অংশ নেবেন। যদি আবহাওয়া খারাপ থাকত তাহলে তিনি কিংস্টন মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করতেন।

ঈদের নামাজের পর তারেক রহমান কুশল ও কোলাকুলি করেন লন্ডনের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা কমিউনিটি ব‍্যক্তিবর্গ ও বিএনপি নেতাদের সঙ্গে।

এদিকে প্রায় এক দশক পর মা খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদ করার সুযোগ পেলেন তারেক রহমান।

চিকিৎসার জন‍্য গত ৮ জানুয়ারি লন্ডনে আসেন বেগম খালেদা জিয়া।

মন্তব্য

আমিরাতে প্রবাসীদের ঈদ

আমিরাত প্রতিনিধি
আমিরাত প্রতিনিধি
শেয়ার
আমিরাতে প্রবাসীদের ঈদ

মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাতে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। আবুধাবির শেখ জায়েদ গ্র্যান্ড মসজিদে দেশটির সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রবিবার (৩০ মার্চ) স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ২৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়।

দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে আমিরাতজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে মুসলিমদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর।

এদিকে ফুজাইরাতে স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ২৫ মিনিটে দেশটির প্রথম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। দুবাইয়ে ৬টা ২৮ মিনিটে, আল আইনে ৬টা ২৬ মিনিটে, শারজাহ ও আজমানে ৬টা ২৮ মিনিটে এবং অন্য প্রদেশগুলোতেও ৬টা ২৫মিনিট থেকে ৬টা ৩২ মিনিটের মধ্যে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

প্রবাসীরা ভোরবেলা থেকে ঈদের নামাজে সামিল হতে ছুটে যান নিকটস্থ মসজিদ বা ঈদগাহে। তাঁরা ঈদের নামাজ শেষে একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি করেন।

বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে যোগাযোগের মাধ্যমে ঈদের শুভেচ্ছা ও কুশলাদি বিনিময় করেন সবাই। 

দেশের মতো প্রবাসে ঈদের আনন্দে কিছুটা ঘাটতি থাকলেও আমিরাতে ঈদ উপলক্ষে সরকারি ছুটি ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলে ৩-৪দিনের ছুটি হওয়ায় প্রবাসীদের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ।
 

মন্তব্য

বাংলাদেশিসহ লাখো বিদেশির স্বপ্ন ধূলিসাতের উপক্রম

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বাংলাদেশিসহ লাখো বিদেশির স্বপ্ন ধূলিসাতের উপক্রম
সংগৃহীত ছবি

জাতীয় নিরাপত্তা সুরক্ষিত করার অভিপ্রায়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দুটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী এবং রিফিউজি হিসেবে গ্রিনকার্ড আবেদনের প্রক্রিয়া ঝুলে গেছে অনির্দিষ্টকালের জন্য। এর ফলে কয়েক হাজার বাংলাদেশিসহ ১০ লাখের বেশি বিদেশির নিরাপদে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হতে চলেছে। কারণ এমন আদেশ রদ না হলে চলমান অবৈধ অভিবাসী তাড়ানোর অভিযান থেকে এসব আবেদনকারী রেহাই পাবেন না বলে অভিজ্ঞজনেরা মন্তব্য করেছেন।

অভিবাসন দপ্তরের অভিভাবক হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গণমাধ্যমে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তাঁর প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন।

তাই সাবেক প্রেসিডেন্ট বাইডেনের আমলে বেআইনিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকে পড়া অনেক সন্ত্রাসী, খুনি, দাগি আসামি ও মাদক পাচারকারী আমাদের সমাজে মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করেছেন। এসব অবৈধ অভিবাসীর অনেকে ইতোমধ্যে নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছেন। চুরি-ছিনতাই-রাহাজানিতেও জড়িত থাকার অভিযোগে অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। 

এমন যুক্তি অবান্তর হিসেবে অভিহিত করে ন্যাশনাল ইমিগ্রেশন জাস্টিস সেন্টারের পরিচালক আজাদেহ ইরফানি বলেছেন, সব অভিবাসীকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে ট্রাম্প প্রশাসন ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের নীতি-নৈতিকতার পরিপন্থি।

এর ফলে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের স্বাভাবিক অপেক্ষার সময় ৮ থেকে ১০ মাসের চেয়ে অনেক বাড়বে। এভাবে তারা ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী অভিযানের শিকারও হতে পারেন। যদিও ট্রাম্প অঙ্গীকার করেছেন, কেবল গুরুতর অপরাধী অবৈধ অভিবাসীরা তাঁর টার্গেট। কিন্তু ইতোমধ্যে অনেক গ্রিনকার্ডধারী এবং ভিসাধারীকেও গ্রেপ্তারের পর বহিষ্কার করা হয়েছে।
গাজায় আগ্রাসনের নিন্দা ও প্রতিবাদ সমাবেশে নেতৃত্ব দেওয়ায় গ্রিনকার্ডধারী ছাত্রীসহ ভিসাধারী শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার ছাড়াও ইতোমধ্যে ৩ শতাধিক ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টের ভিসা বাতিলের তথ্য জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিয়ো।

এদিকে, সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক বছরে অর্থাৎ বাইডেনের শেষ সময়ে ৭৬ হাজার ৮০০ বিদেশি রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। একই সময়ে রিফিউজি হিসেবে গ্রিনকার্ডের আবেদন করেছেন ৪০ হাজার বিদেশি। এগুলো শুনানির অপেক্ষায় ছিল। এখন তা অনির্দিষ্টকালের জন্য ঝুলে গেল।

এর আগের পেন্ডিং লাখ লাখ আবেদনের ভাগ্যও অনিশ্চিত হয়ে পড়ল বলে ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড সিটিজেনশিপ সার্ভিসের কর্মকর্তারা ২৮ মার্চ এ সংবাদদাতাকে জানিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলাদেশিও আছেন যারা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল অথবা এলডিপির কর্মী-সংগঠক হিসেবে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন। 

এ ছাড়া জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী ঘরানার অনেক নেতা-কর্মীও রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। তাদের ভাগ্যও অনিশ্চিত হয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে অ্যাটর্নিরা উল্লেখ করেছেন। যদিও ট্রাম্পের এসব আদেশ অমানবিক হিসেবে অভিহিত করে মানবাধিকার ও অভিবাসনদের অধিকার-মর্যাদা নিয়ে কর্মরত সংগঠনের পক্ষ থেকে আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি চলছে বলে সর্বশেষ সংবাদে জানা গেছে। এদিকে ইউএসসিআইএস সূত্রে জানা গেছে, গ্রিনকার্ডধারীদেরও গ্রেপ্তারের পর বহিষ্কারের ঝুঁকি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় সিটিজেনশিপের আবেদনের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বিদ্যমান সব রীতি উপেক্ষা করে এহেন বহিষ্কারের পন্থা অবলম্বন করায় গ্রিনকার্ডধারীদের মধ্যে সিটিজেনশিপের আবেদনের হিড়িক পড়েছে। 

জানা গেছে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রিনকার্ডধারীর সংখ্যা ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি। আর গ্রিনকার্ড পাওয়ার অর্থই হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস ও কাজের আইনগত অধিকার পাওয়া। গ্রিনকার্ডধারীকেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের বিধি আছে যদি তারা গুরুতর কোনো অপরাধে দি ত হন, তাহলে সেই দি ত ব্যক্তির গ্রিনকার্ড কেড়ে নেওয়া হয়। এবং কেড়ে নেওয়ার নির্দেশটি জারি করেন একজন ইমিগ্রেশন জজ। একইভাবে গুরুতর কোনো অপরাধে লিপ্ত ন্যাচারালাইজড সিটিজেনের সিটিজেনশিপও বাতিলের বিধি রয়েছে, তবে সেটি খুব কম সময়ই ঘটে থাকে। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা শিক্ষাঙ্গনে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভকারীদেরও টার্গেট করেছেন, যা নিয়ে তুমুল বিতর্ক চললেও ধরপাকড় এবং ভিসা বাতিলের উদ্যোগ থেকে বিন্দুমাত্র পিছপা হয়নি ইমিগ্রেশন বিভাগ। 

সরকারি সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে গ্রিনকার্ডধারী ১৩ মিলিয়ন অভিবাসীর মধ্যে অন্তত ১০.৮ মিলিয়ন তথা ১ কোটি ৮ লাখের মতোই সিটিজেনশিপের আবেদনের যোগ্য। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাস করছে আরিজোনা স্টেটে, ১ লাখ ৯৩ হাজার।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ