<p>আমাদের চারপাশে ভালো করে তাকালে দেখা যায় নানা রকমের গাছ। এর মধ্যে কোনো গাছ একটু বড়, কোনটা খুবই ছোট। অনেক গাছে ডালপালা নাই, অনেক গাছে ডালপালা  বেশি। কোনো কোনো গাছের আয়ু কম। তবে বেশির ভাগ গাছ অনেক দিন বাঁচে।</p> <p>যেসব গাছ বহুবছর বাঁচে, সে গাছদের বলা হয় বহু বর্ষজীবি। বহু বর্ষজীবি গাছ বেশি বছর  বাঁচে, লম্বায় ও বাডতে থাকে। লম্বায় বাড়লে শুধু হবে না, লম্বা কান্ডকে খাড়া রাখার জন্য কান্ডটিকে মোটা হতে  হবে। এজন্য বছর বছর গাছ একটু একটু করে মোটা হয়। আম, জাম, কাঁঠাল গাছ লম্বায় বাড়ার সাথে সাথে মোটা হতে থাকে। কিন্তু সব গাছই যে মোটা হয়, এমনটা নয়। তাল, খেজুর, সুপারি গাছ লম্বায় যত বেশি বাড়ে, ততোটা মোটা হয় না। এদের মধ্যে সুপারি গাছ যেন লম্বাতেই বাড়ে, মোটা হওয়ার কোনো ইচ্ছেই যেন এদের নেই।</p> <p>সুপারি গাছ মোটা হয় না কেন? </p> <p>গাছের মোটা হওয়ার জন্য কোষের সংখ্যা বাড়া দরকার। কোষের সংখ্যা বাড়াতে হলে কোষগুলো কে বিভাজিত হতে হবে।একটা কোষ থেকে দুটো,দুই থেকে চারটা, চার থেকে আট—এইভাবে কোষের সংখ্যা যেদিকে যত  বাড়বে গাছ ও সেই দিকে ততটা বাড়বে। সব গাছেরই কান্ডের ভেতর দিয়ে খাবার চলাচলের জন্য কতগুলো নল রয়েছে, নলগুলোকে নালিকা বান্ডিল বলে। নালিকা বান্ডিলের নলগুলো গাছের সারা শরীরে ছড়ানো থাকে। যেসব গাছ মোটা হয় তাদের নালিকা বান্ডিলের সাথে ক্যাম্বিয়াম নামে একধরনের কোষ যুক্ত থাকে। সময় হলে ক্যাম্বিয়াম কোষ বিভাজিত হয়ে নতুন কোষ তৈরি করে। কোষের সংখ্যা বাড়লে গাছ মোটা হতে শুরু করে। </p> <p>সুপারিগাছের বেলায় নালিকা বান্ডিলের সাথে ক্যাম্বিয়াম কোষ থাকে না। এজন্য নতুন কোষ তৈরি হয় না। যার জন্য কোষের সংখ্যাও বাড়ে না। ফলে সুপারি গাছ মোটা হতে পারে না। তাই বলে সুপারিগাছ চারা অবস্থায় যত চিকন থাকে, বড় হলে অতটা চিকন থাকে না, কিছুটা মোটা হয়। এইটুকু মোটা হওয়ার কারণ, গাছের বেড়ে ওঠার সময় অন্য কোষগুলো খুব ধীরে হলেও বাড়ে।ফলে গাছ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কান্ডও কিছুটা মোটা হয়। তবে এক সময় গিয়ে পারে দিকের বৃদ্ধির জন্য যে কোষগুলো দায়ী, সেগুলোর বৃদ্ধি প্রায় শূন্য হয়ে যায়। তাই এক সময় সুপারি গাছ আর বাড়ে না বললেই চলে।</p> <p>সূত্র : <br /> ১. উচ্চমাধ্যমিক জীববিজ্ঞান প্রথম পত্র <br /> ২. উদ্ভিদ বিজ্ঞান / ভূপেন্দ্রনাথ সান্যাল<br />  </p>