<p>উষ্ণ আবহাওয়া এবং শারীরিক পরিশ্রমের ফলে ঘাম হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু যখন কোনো কারণ ছাড়াই শরীরের নির্দিষ্ট অংশে অতিরিক্ত ঘাম হয়, তখন এটি বেশ অস্বস্তিকর এবং সমস্যাজনক হয়ে ওঠে। এ ধরনের অবস্থাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে 'হাইপারহাইড্রোসিস' বলা হয়। মোট জনসংখ্যার প্রায় ১% এই সমস্যার সম্মুখীন হন।<br /> বিজ্ঞানীরা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিতভাবে আবিষ্কার করতে পারেননি ঠিক কী কারণে শরীরের নির্দিষ্ট অংশে অতিরিক্ত ঘাম হয়। তবে ধারণা করা হয়, এটি হাইপারথ্যালামাসের ত্রুটির কারণে হয়ে থাকে। মস্তিষ্কের  হাইপারথ্যালামাস নামের অংশ শরীরের ঘাম উৎপাদন ও নিয়ন্ত্রণ করে।</p> <p>যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের ভাসকুলার সার্জন মার্ক হোয়াইটলি জানান, সামাজিকভাবে সবচেয়ে ক্ষতিকর ঘামের সমস্যা হলো হাতের তালু ঘামা। এটি  করমর্দনের সময় অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলে দেয়। বাংলাদেশে উষ্ণ আবহাওয়ায় অতিরিক্ত ঘামের সাথে দুর্গন্ধও সৃষ্টি হয় যা আরও অস্বস্তিকর।</p> <p>অতিরিক্ত ঘামের সমস্যার সমাধানে বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে। চিকিৎসকরা ওষুধ, বোটক্স ইনজেকশন বা সার্জারি পরামর্শ দিয়ে থাকেন।</p> <p>বগলের নিচে অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা থাকলে বোটুলিনাম টক্সিন ইনজেকশন কার্যকর হতে পারে। এটি ঘাম তৈরি করা গ্রন্থিগুলোর কার্যক্ষমতা থামিয়ে দেয়, ফলে ঘাম তৈরি হয় না। তবে এই পদ্ধতি স্থায়ী নয় এবং প্রতি ছয় থেকে নয় মাসে পুনরাবৃত্তি করতে হয়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ইনজেশকন নেওয়া একেবারেই ঠিক নয়।</p> <p>অনেক সময় ঘামের সমস্যার স্থায়ী সমাধান পেতে এন্ডোস্কোপিক ট্রান্সথোরাসিক সিম্যাথেকটমি নামক সার্জারি করা হয়। এই সার্জারির মাধ্যমে ঘাম তৈরি হওয়ার গ্রন্থিগুলোর সাথে সংযুক্ত স্নায়ুর সংযোগ ছিন্ন করা হয়। এই পদ্ধতির প্রায় ৯৯% সফলতা পাওয়া যায়। তবে সার্জারির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, যেমন শরীরের অন্যান্য অংশে অতিরিক্ত ঘাম এবং ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা।</p> <p><strong>কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন</strong><br /> নিয়মিতভাবে শরীরের নির্দিষ্ট কোনো অংশ ঘামলে, যদি ঘাম দৈনন্দিন কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে, যদি হঠাৎ ঘামের সমস্যা শুরু হয়, কিংবা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ঘাম হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। এছাড়া পারিবারিকভাবে অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা থাকলে বা নির্দিষ্ট সময়ে, যেমন রাতে, ঘাম হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ প্রয়োজন।</p> <p>অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা সমাধানের জন্য সময়মত চিকিৎসা গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। নিজে থেকে কোনো ওষুধ গ্রহণ না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়াই উত্তম।<br />  </p>