<p style="text-align:justify">যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে নিয়ে কয়েক বছর ধরে সমালোচনা ছিল যে তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্য নন। তবে এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে যাওয়া জো বাইডেন তাঁকে ডেমোক্রেটিক পার্টির পরবর্তী প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দিয়েছেন। বাইডেনের পদাঙ্ক অনুসরণ করে জ্যেষ্ঠ ডেমোক্র্যাটরাও তাঁকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন।</p> <p style="text-align:justify">তাই আরেক মেয়াদে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়া ঠেকাতে ডেমোক্র্যাটদের আশার আলো এখন কমলা।<br /> কমলা হ্যারিস যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট। এমন একটি পদে আসীন হওয়া সত্ত্বেও ৫৯ বছর বয়সী এই রাজনীতিক বাইডেনের চেয়ে ভালো, নাকি খারাপ প্রেসিডেন্ট হবেন, তা নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের দোটানা কাটাতে দীর্ঘ সংগ্রাম চালাতে হয়েছে তাঁকে।</p> <p style="text-align:justify">গত ১২ মাসে এক অন্য কমলা হ্যারিসের দেখা মিলেছে। আর বাইডেনের সমর্থন পাওয়ার পর তিনি ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে রয়েছেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের অর্জনের প্রশংসা করে এক বিবৃতিতে কমলা বলেন, আধুনিক যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বাইডেনের অর্জন অতুলনীয়। একই সঙ্গে ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়ন পাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।</p> <p style="text-align:justify">তিনি আরো বলেন, ‘ট্রাম্পকে হারানোর জন্য ডেমোক্রেটিক পার্টি ও দেশকে ঐক্যবদ্ধ করতে আমার সক্ষমতার মধ্যে যা কিছু সম্ভব, তার সবই করব।’</p> <p style="text-align:justify">বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক চড়াই-উতরাইয়ের মধ্যে ডেমোক্রেটিক পার্টির পূর্ণ সমর্থন অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন কমলা।</p> <p style="text-align:justify">নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে যেতে ৮১ বছর বয়সী বাইডেনের ওপর প্রবল চাপ এবং পরবর্তী প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় থাকা সত্ত্বেও বাইডেনের প্রতি অনুগত ছিলেন কমলা। এ কারণে দলের ভেতরে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি।</p> <p style="text-align:justify">ফলে নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর লড়াই অনেকটাই নিশ্চিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আর ট্রাম্পকে হারাতে পারলে তিনিই হবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট।</p> <p style="text-align:justify">এর আগে ২০১৬ সালে ট্রাম্পের কাছে পরাজিত হওয়ায় ওই ইতিহাস গড়া হয়নি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ও সাবেক ফার্স্ট লেডি হিলারি ক্লিনটনের।</p> <p style="text-align:justify">অভিবাসী জামাইকান বাবা ও ভারতীয় মায়ের ঘরে জন্ম নেওয়া কমলার বেড়ে ওঠা ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে। অধিকারকর্মী পরিবারে বেড়ে ওঠার সুবাদে অল্প বয়সেই পদযাত্রায় অংশ নেন তিনি।</p> <p style="text-align:justify">অধিকার ও ন্যায়বিচার নিয়ে আগ্রহী কমলা হ্যারিস ক্যালিফোর্নিয়ার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান। পরে মার্কিন আইন সভা কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্য নির্বাচিত হন।</p> <p style="text-align:justify">২০২০ সালে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রাইমারিতে বাইডেনের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন কমলা। এমনকি বাইডেনের সমালোচনাও করেছিলেন। তবে বাইডেনের রানিং মেট হিসেবে জোটবদ্ধ হয়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে হারাতে মুখ্য ভূমিকা রাখেন।</p> <p style="text-align:justify">যদিও হোয়াইট হাউসে তাঁর যাত্রা সুখকর প্রমাণিত হয়নি। সমালোচকরা বলছেন, ভাইস প্রেসিডেন্টের কাজটি অনেক কর্মকর্তার কাছে বিব্রতকর এবং এই কাজে উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি করতে পারেননি কমলা।</p> <p style="text-align:justify">অন্যদিকে রিপাবলিকানরা বরাবরই কমলা হ্যারিসকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে অক্ষম আখ্যা দিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে।</p> <p style="text-align:justify">যদিও গত ফেব্রুয়ারিতে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে কমলা হ্যারিস বলেন, ‘আমি দায়িত্ব (প্রেসিডেন্ট) পালনে প্রস্তুত। এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।’ সর্বশেষ গত সোমবার কমলা হ্যারিস নির্বাচনে ট্রাম্পকে হারানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। আর এমনটা হলে যুক্তরাষ্ট্রে নয়া ইতিহাস গড়বেন এই নারী রাজনীতিক।</p> <p style="text-align:justify"><em>সূত্র : এএফপি</em></p> <p> </p>