<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকার আশুলিয়ায় পারিবারিক বিরোধের এক পর্যায়ে সেছলেকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মা স্বপ্না বেগম (২৮)। পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে পেরে স্বপ্নাসহ পরিকল্পনায় জড়িত বাবাকেও হত্যা করে আত্মহত্যার গল্প সাজান ছেলে হিমেল (২২)। একই সঙ্গে হত্যা করেন চার বছরের ছোট বোন জান্নাতুলকে। সম্প্রতি আশুলিয়ার এমন একটি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআইয়ের ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খুদা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত ৪ অক্টোবর ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ থানার বারুয়াখালী এলাকা থেকে তরিকুল ইসলাম তারেক ওরফে হৃদয় (২৮) এবং গত ২৪ অক্টোবর আশুলিয়ার জিরাবো এলাকা থেকে আরেক আসামি তানভীর হাসান হিমেলকে (২২) গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার তানভীর হাসান হিমেল নিহত বাচ্চু মিয়ার প্রথম স্ত্রীর ছেলে। আর তরিকুল ইসলাম তারেককে আসামি হিমেলকে হত্যার জন্য ভাড়া করেছিলেন তাঁর বাবা নিহত মিজানুর রহমান বাচ্চু। পিবিআই জানায়, আশুলিয়ার উত্তর ভাদাইল এলাকার চারতলা ভবনের চতুর্থ তলায় নিজেদের ফ্ল্যাটে থাকতেন মিজানুর রহমান বাচ্চু (৫৩), তাঁর চতুর্থ স্ত্রী স্বপ্না বেগম (২৮), মেয়ে জান্নাতুল (৪) ও প্রথম স্ত্রীর সন্তান তানভীর হাসান হিমেল।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হিমেলের সঙ্গে পারিবারিক বিরোধে জড়িয়ে পড়েন স্বপ্না বেগম। হিমেলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন স্বামী-স্ত্রী মিলে। সে অনুসারে হিমেলকে হত্যার জন্য তরিকুল ইসলাম তারেক ওরফে হৃদয়কে ভাড়া করেন মিজানুর রহমান বাচ্চু। পরে নিজের ফ্ল্যাটের সঙ্গে সংযুক্ত একটি কক্ষে থাকতে দেন এবং নিজেদের সঙ্গেই খাবারের ব্যবস্থা করেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পিবিআই আরো জানায়, ঘটনার ১০ থেকে ১২ দিন আগে হিমেলকে হত্যার পরিকল্পনার ব্যাপারে আলোচনা করেন বাচ্চু। এ সময় বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে বাসায় ফিরলে তাঁদের পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে পারেন হিমেল। নিজেকে হত্যার পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে পরে তরিকুলের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে সব কথা স্বীকার করেন তরিকুল। পরে হিমেলের কাছে কান্নাকাটি করে তরিকুল ক্ষমা চান। এরপর হিমেল নিজেই তরিকুলকে নিয়ে বাবা ও সত্মাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সে অনুযায়ী গত ১২ সেপ্টেম্বর বাবা এবং সত্মা ও সেবানকে হত্যা করে কক্ষ থেকে স্বর্ণালংকার লুট করে আত্মহত্যার নাটক সাজান।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঘটনার পর স্বপ্না বেগমের বোন মোছা. লাবন্য আক্তার বাদী হয়ে মামলা করলে মামলাটির তদন্তভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে হিমেল ও তারেককে গ্রেপ্তার করা হয়। বাবা, সত্মা ও সেবানকে হিমেলের হত্যা করার বর্ণনা দিতে গিয়ে পিবিআই জানায়, গত ১২ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টার দিকে স্বপ্না বেগম মেয়ে জান্নাতুলকে নিয়ে স্কুলে চলে যান। এ সময় মিজানুর রহমান বাচ্চু তাঁর কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন। সকাল পৌনে ৯টার দিকে আসামি তরিকুল ইসলাম তারেক ওরফে হৃদয় ও তানভীর হাসান হিমেল বাচ্চুর শয়নকক্ষে ঢুকে তাঁকে হত্যা করেন। এরপর তাঁরা স্বপ্না বেগম ও জান্নাতুলের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। সকাল ১০টা ১০ মিনিটে স্বপ্না বেগম মেয়ে জান্নাতুলকে নিয়ে বাসায় এসে কলিংবেল চাপলে হিমেল ভেতর থেকে দরজা খুলে দেন। স্বপ্না বেগম শোয়ার ঘরে ঢুকে বাচ্চুকে ডাক দেন। তখন আসামি তারেক স্বপ্না বেগমকে হত্যা করেন। এ সময় জান্নাতুল চিৎকার করে উঠলে হিমেল তাকেও হত্যা করেন। পরে আলমারিতে থাকা স্বর্ণালংকার লুট করে পরিকল্পনার অংশ হিসেবে রুমের ভেতরে কেরোসিন তেল দিয়ে আগুন লাগিয়ে কাঁচি দিয়ে ইস্পাত শিটের দরজা ছিদ্র করে বাইরে থেকে দরজার ভেতরের হ্যাজভোল্ট লাগিয়ে দেন হিমেল ও তারেক।</span></span></span></span></p>